শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
আহমদ শাহ দুররানি
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
আহমদ শাহ দুররানি ( পশতু: احمد شاه دراني; দারি: احمد شاه درانی) বা আহমদ শাহ আবদালি (احمد شاه ابدالي) ছিলেন আফগান দুররানি সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ও আধুনিক আফগানিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা।[৭][৮][৯] ১৭৪৭ খ্রিস্টাব্দের জুলাইয়ে কান্দাহারের লয়া জিরগা কর্তৃক তিনি আফগান রাজা নির্বাচিত হন এবং সেখানে তিনি তার রাজধানী স্থাপন করেন। [১] প্রাথমিকভাবে পাঠান গোত্রগুলির সমর্থনে[১০] আহমদ শাহ আফগান রাজা নির্বাচিত হলেও পরবর্তীতে ভারতের মুঘল সাম্রাজ্য ও মারাঠা সাম্রাজ্য, পশ্চিমে ইরানের আফশারীয় সাম্রাজ্য এবং উত্তরে তুর্কিস্তানের বুখারা আমিরাত পর্যন্ত তাঁর সাম্রাজ্য বিস্তার করেন এবং কয়েক বছরের মধ্যে তিনি পশ্চিমে খোরাসান থেকে পূর্বে উত্তর ভারত পর্যন্ত আর পূর্বে আমু দরিয়া থেকে দক্ষিণে আরব সাগর পর্যন্ত নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রসারিত করেন।[৮][১১][১২]

অধিগ্রহণের পরপরই আহমদ শাহ 'শাহ দুর-ই-দুররান', "বাদশাহ, মুক্তার মুক্তা" উপাধি গ্রহণ করেন এবং তাঁর নামে আবদালি গোত্রের নাম পরিবর্তন করে "দুররানি" রাখেন। আহমদ শাহ দুররানির মাজার কান্দাহারের কেন্দ্রস্থলে কিরকা শরীফ ( চাদরের মাজার ) সংলগ্নে অবস্থিত, যেখানে নবী মুহাম্মদ সা. এর পরিহিত একটি চাদর রয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়। আফগানরা প্রায়ই আহমদ শাহকে আহমদ শাহ বাবা, 'আহমদ শাহ পিতা' বলে উল্লেখ করেন। [৭][১৩][১৪][১৫]
আহমাদ শাহ যুবক বয়সে আফসারিদ রাজ্যের সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন এবং অতিশীঘ্রই তিনি ৪ হাজার আব্দালি পশতুন সৈন্যের কমান্ডার হিসেবে দ্বায়িত্ব পালনের সুযোগ পান।[১৬] ১৭৪৭ সালের জুনে পারস্যের নাদের শাহ আফসার মৃত্যুবরণ করলে, আব্দালী কুরাশান-এর আমীর হন। তার পশতুন উপজাতি ও তাদের জোটদের নিয়ে তিনি পূর্ব দিকের মুঘল ও মারাঠা সাম্রাজ্য, পশ্চিম দিকে পারস্যের আফসারিবাদ সাম্রাজ্য ও উত্তর দিকে বুখারার খানাত পর্যন্ত তার সীমানা নির্ধারণ করেন।[৮][১৭] কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি কুরাশানদের কাছ থেকে পশ্চিম থেকে পূর্বে কাশ্মির ও উত্তর ভারত এবং আমু দারায়ার কাছ থেকে উত্তর থেকে দক্ষিণে আরব সাগর পর্যন্ত আফগানদের কর্তৃত্ব বৃদ্ধি করেন। আহমাদ শাহ আব্দালীর সমাধিস্তম্ভ আফগানিস্তানের কান্দাহারে অবস্থিত, শহরের কেন্দ্রস্থলের শ্রাইন অফ দ্য ক্লুয়াক নামে একটি মসজিদের পাশে। মনে করা হয় মুসলমানদের শেষ নবী মুহাম্মদ এর একটি আলখাল্লা এখানে রাখা আছে। আফগানিস্তানের লোকেরা দুররানিকে প্রায়ই আহমাদ শাহ বাবা বলে উল্লেখ করে থাকেন।[৭][১৮][১৯][২০]
Remove ads
সামরিক অভিযান
সারাংশ
প্রসঙ্গ
সিংহাসনে আরোহণের পর আহ্মাদ শাহ্'র প্রথম কাজই ছিলো তাইমূরী সাম্রাজ্যভুক্ত ক্ববুলীস্তান(আফগানিস্তান) অধিকার করা! অথচ এটা ছিলো এমন সময় যখন মারাঠারা শক্তিধর হয়ে উঠেছিলো ক্রমান্বয়ে তাইমূরী সাম্রাজ্য গ্রাস করছিলো! পাঞ্জাবে শিখরা তাদের শক্তির জানান দিচ্ছিলো! এমতাবস্থায় বরং প্রয়োজন মারাঠা ও শিখদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা। কিন্তু আহ্মাদ শাহ্ আবদালী সেটা না করে- তৈমুরী সাম্রাজ্যই আক্রমণ করেন! কারণ? মহামোগল (Great Mughal)দের অঢেল ধন-সম্পদ! নাদির শাহ্'র আক্রমণ, অপরিমিত ধন-সম্পদ অধিকার, ক্বোহ্-ই-নূর ও ময়ূর সিংহাসন নিয়ে যাওয়ার পরও তাইমূরীদের ধন-সম্পদ ছিলো চোখ ধাঁধানো! আহ্মাদ শাহ্'র মূল উদ্দেশ্য ছিলো সেই ধন-সম্পত্তি অধিকার করা!
১৭৪৭ ঈসায়ীতে তাইমূরী সাম্রাজ্য আক্রমণ করে গোটা ক্ববুলীস্তান(আফগানিস্তান) অধিকারের পর- ১৭৪৮ সালে লাহোর আক্রমণ করেন। কাপুরুষ সুবাহ্দার হায়াতুল্লাহ্ খান পলায়ন করলে বিনা যুদ্ধে পাঞ্জাব অধিকার করেন আবদালী। উৎসাহী ও আত্নবিশ্বাসী আবদালী আরও এগিয়ে যান, সিরহিন্দে পৌছে যান আবদালী। তাইমূরী বাহিনী মানুপুরে আফগান বাহিনীর গতিরোধ করে দাঁড়ায়, এই সাহসের কারণ ছিলো বহুদিন পর স্বয়ং কোন বাদশাহ্যাদা সাম্রাজ্য রক্ষায় স্বয়ং রণক্ষেত্রে হাজির হয়েছেন। তাইমূরী বাদশাহ্যাদা আহ্মাদ খান সম্রাট আহ্মাদ শাহ্ আবদালীর মুখোমুখী হলেন! প্রচন্ড যুদ্ধে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হলেন আহ্মাদ শাহ্ আবদালী! কোনক্রমে প্রাণ হাতে করে পালিয়ে এলেন রাজধানী আহ্মাদ শাহী(কান্দাহার)তে।
আহ্মাদ শাহ্ আবদালীর ২য় ভারত অভিযানের পরাজয়-ই আহ্মাদ শাহ্ আবদালীর মনে প্রতিশোধের আগুন জ্বালিয়ে তুলে যাদ্দরুণ মুসলিম ভূমি হিন্দুস্তানের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযান পরিচালনা করেন! আহ্মাদ খান বাহাদূর ১৭৪৮ সালেই হিন্দুস্তানের সিংহাসনে আরোহণ করেন। পরলোকগত সম্রাট মুহাম্মাদ শাহ্ তাইমূরী সাম্রাজ্যের সোনালী সময় যেমন দেখেছেন- তেমনি দেখেছেন পতন! নাদির শাহ্’র কাছে তিনিই পরাজিত হয়ে সব হারিয়েছিলেন। আবার তিনিই মৃত্যুশয্যায় যুবরাজের বীরত্ব সুসংবাদ শুনে যান। (আফগানিস্তান) হারানোর সংবাদ পাওয়া মাত্রই যুবরাজ আহ্মাদ খান তার সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত করছিলেন, যাদ্দরুণ তিনি মানুপুরের প্রান্তরে আহ্মাদ শাহ্কে পরাজিত করতে সক্ষম হন। কিন্তু এটাই ছিলো তার ১মাত্র বিজয়! কেননা পরবর্তী বছরেই আবদালী প্রায় তার সমস্থ শক্তি নিয়ে হিন্দুস্তান আক্রমণ করেন। এটা ছিলো এমন ১টা সময়- যখন মারাঠাদের মাঝে বালাজী বাজী রাওয়ের মতো উচ্চাভিলাষী যোগ্য পেশ্ওয়ার আবির্ভাব হয়েছিলো! শিখরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিলো এবং বাংলা, অযোধ্যা ও দাক্ষিণাত্যের মতো অঞ্চলের সুবাহ্দারেরা প্রায় স্বাধীনভাবে প্রদেশগুলো শাসন করছিলো। আর তাইমূরী সাম্রাজ্যের মন্ত্রীরা একে অপরের বিরুদ্ধে ছিলো যে- কে প্রধানমন্ত্রী হবে!
বীর সম্রাট আহ্মাদ শাহ্ এমন এক সময় রাজত্ব করেন যখন দক্ষিণ থেকে মারাঠারা ও পশ্চিম থেকে আফগানেরা হিন্দুস্তানে অভিযানের পর অভিযান পরিচালনা করছিলো! ১৭৫৪ সালে সম্রাট আহ্মাদ শাহ্’র মৃত্যুর আগেই কাশ্মীরও কোহ্রাম আবদালী সাম্রাজ্যভুক্ত হয়।
নওয়াব সিরাজ-উদ-দাওলাহ্’র সম্রাট আলামগীর (২য়) যখন সিংহাসনে আরোহণ করেন তখন সম্রাটের প্রত্যক্ষ শাসনাধীনে আছে কেবল রোহিলাখন্ড, দিল্লী ও আগরা প্রদেশ! ১৭৫৭ ঈঃ ‘ইসলামের ত্রাণকর্তা’ আহ্মাদ শাহ্ আবদালী এবং বালাজী বাজী রাও দু’জনই তাইমূরী সাম্রাজ্যকে নিজেদের করদ রাজ্য বানানোর জন্য উঠে পরে লাগলেন!
উৎসঃ সিয়ার-উল-মুতাখ্খিরীন(৩য় খন্ড)
Remove ads
প্রাথমিক জীবন
গুপ্তঘাতকের হাতে নাদির শাহ্ নিহত হলে তার সেনাপতিরা বাহুবলে তার বিরাট সাম্রাজ্যের একেক অংশ অধিকার করে বসে। তারই ধারাবাহিকতায় আহ্মাদ খান আবদালীও ১৭৪৭ সালে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন আফগানিস্তানের প্রতিষ্ঠা করেন। আফগানিস্তানের বাহিরেও তিনি সিস্তান, বাদাখসান ও বাল্খ অধিকার করেন ও খোরাসানকে করদ রাজ্যে পরিণত করেন। আহ্মাদ খান সিংহাসনে আরোহণের পর আহ্মাদ শাহ্ উপাধীধারণ করেন এবং এই নামেই তিনি বিখ্যাত। আহ্মাদ শাহ্'র সিংহাসনে আরোহণের মাত্র ৮ বছর আগেই তার মুনীব নাদির শাহ্ ভারত আক্রমণ করেন, তিনিও ছিলেন তখন তার মুনীবের সঙ্গে। আহ্মাদ শাহ্'র সিংহাসনে আরোহণের সময়ও ভারতীয়দের মনে নাদিরের আক্রমণের ভয় দূরীভুত হয়নি! সে কারণেই আহ্মাদ শাহ্কে নিয়ে ভারতে এক আতঙ্ক কাজ করছিলো।
Remove ads
পরিচয়
পারস্যের সিংহ দিগ্বিজয়ী নাদির শাহ্, তার অন্যতম প্রিয় সেনাপতিই ছিলেন আবদালী গোত্রের আহ্মাদ খান আবদালী। নাদির শাহ্-ই তাকে দূর-ই-দূর্রান(সকল মুক্তার সেরা মুক্তা) উপাধীতে ভূষিত করেছিলেন। সেই থেকে আহ্মাদ খানের অপর নাম দূর-ই-দূররান আহ্মাদ খান আবদালী উরফে ‘আহ্মাদ খান দূররানী’।
মৃত্যু
আহমদ শাহ দররানি ১৬ আক্টোবর, ১৭৭২ সালে কান্দাহার প্রদেশে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে কান্দাহার শহরের কেন্দ্রস্থলে শ্রাইন অফ দ্য ক্লোয়াকে দাফন করা হয়, যেখানে পরবর্তীতে একটি বড় সমাধিস্তম্ভ প্রতিষ্ঠা করা হয়।
দুররানির কবিত্ব
আহমদ শাহ কয়েকটি কবিতার চরণ তার স্বজাতীয় ভাষা পশতুতে রচনা করেছিলেন। এছাড়াও তিনি ফরাসি ভাষায় কিছু কবিতা রচনা করেছিলেন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হল একটি জাতির প্রতি ভালবাসা:
Remove ads
তথ্যসূত্র
গ্রন্থপঞ্জি
আরো পড়ুন
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads