শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

কাগজ

লিখন, মুদ্রণ ইত্যাদির জন্য ব্যবহৃত পদার্থ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

কাগজ
Remove ads

কাগজ এক ধরনের পাতলা বস্তু বা উপাদান যা লিখন, মুদ্রণ, চিত্রকলা ইত্যাদিতে ব্যবহার করা হয়। কাঠ, ন্যাকড়া, ঘাস, তৃণভোজী মল, সবজি ইত্যাদি থেকে প্রাপ্ত সেলুলোজ তন্তুকে পানি বা জলের মধ্যে যান্ত্রিকভাবে বা রাসায়নিকভাবে সংশ্লেষিত করে কাগজ প্রস্তুত করা হয়। সূক্ষ্ম রন্ধ্র দিয়ে পানি বেরিয়ে যাওয়ার পর তন্তু পৃষ্ঠতলে সমানভাবে বণ্টিত হয়।

দ্রুত তথ্য কাগজ, উপাদানের ধরণ ...
দ্রুত তথ্য ঐতিহ্যবাহী চীনা, সরলীকৃত চীনা ...

অন্তত ১০৫ খ্রিস্টাব্দে পূর্ব এশিয়ায়, সম্ভবত চীনে কাগজ তৈরির প্রক্রিয়ার উদ্ভব হয়েছিল,[] আর চীনের হান দরবারের খোজা ছাই লুনকে কাগজ তৈরির পথিকৃৎ বলে অভিহিত করা হয়। তবে চীনে খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দী থেকে প্রাচীনতম কাগজখণ্ড পাওয়া যায়।[]

প্রথমদিকে হাতে করে একক খণ্ড করে কাগজ তৈরি করা হতো। বর্তমানে বড় যন্ত্রে করে গণহারে কাগজ প্রস্তুত করা হয়। কাগজের বহুবিধ ও বহুমুখী ব্যবহার রয়েছে, যার মধ্যে লিখন, মুদ্রণ, চিত্রকলা, অলঙ্কার, পরিষ্কার ইত্যাদি কাজে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ফিল্টার কাগজ, দেওয়াল কাগজ, ব্যাংকনোট কিংবা বিভিন্ন শিল্প ও নির্মাণ কাজে কাগজ ব্যবহার করা হয়।

Remove ads

ইতিহাস

সারাংশ
প্রসঙ্গ
Thumb
গাঁজা মোড়কের কাগজ, চীন, খ্রিস্টপূর্ব আনু.১০০

চীনে খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে আধুনিক কাগজের পূর্বসুরির প্রাচীনতম প্রত্নতাত্ত্বিক খণ্ডবিশেষ পাওয়া যায়। মণ্ডের মাধ্যমে কাগজ তৈরির প্রক্রিয়ার উদ্ভাবক হিসাবে খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দীর হান দরবারের খোজা ছাই লুনকে বিবেচনা করা হয়েছে।[]

জনশ্রুতি অনুযায়ী ৭৫১ খ্রিস্টাব্দে তালাসের যুদ্ধের পর চীনা কাগজ প্রস্তুতকারকদের কয়েদি হিসাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল আর তাদের কাছ থেকে কাগজ তৈরির "রহস্য" লাভ করেছিল, যার ফলে মুসলিম বিশ্বে কাগজ তৈরির জ্ঞান ছড়িয়ে পড়েছিল। যদিও এই কাহিনির বাস্তবতা নিশ্চিত নয়, তবে সমরকন্দে পরে কাগজ তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল।[] ত্রয়োদশ শতাব্দীতে মধ্যপ্রাচ্য থেকে ইউরোপে কাগজের জ্ঞান ও ব্যবহার বিস্তৃত হয়েছিল, আর ইউরোপে প্রথম জলচালিত কাগজের মিল চালু হয়েছিল।[] বাগদাদ হয়ে পাশ্চাত্যে প্রচলিত হওয়ার ফলে কাগজ প্রথমদিকে বাগ্দাতিকোস্ নামে প্রচলিত ছিল।[] ঊনবিংশ শতাব্দীতে শিল্পায়নের ফলে কাগজ উৎপাদনের খরচ কমে গিয়েছিল। ১৮৪৪ সালে কানাডীয় উদভাবক চার্লস ফেনার্টি ও জার্মান উদ্ভাবক ফ্রিডরিখ গটলব কেলার পৃথকভাবে কাঠের তন্তুর মণ্ড প্রস্তুতির প্রক্রিয়ার উদ্ভাবন করেছিলেন।[]

Remove ads

ব্যুৎপত্তি

বাংলা "কাগজ" শব্দটি ফার্সি کاغذ (কাগ়জ়্) বা کاغد (কাগ়দ্) থেকে উদ্ভূত।

কাগজ প্রস্তুত পদ্ধতি

কাগজ উৎপাদনের মূল তত্ত্ব হল, আঁশ জাতীয় পদার্থের লঘু জলীয় মিশ্রণকে একটি স্বচ্ছিদ্র পর্দার উপর ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে মিশ্রণের জলীয় অংশ পর্দা ভেদ করে ঝরে যায় আর পর্দার উপরে আঁশের পাতলা একটা আস্তরণ পড়ে থাকে। এই আস্তরণ কে ধীরে ধীরে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় শুকিয়ে কাগজে পরিণত করা হয়। অধিকাংশ কাগজ কাঠ থেকে উৎপাদিত মন্ড হতে প্রস্তুত করা হয়। এছাড়া তুলা এবং কাপড় থেকেও কাগজ প্রস্তুত হয়ে থাকে। কাগজ তৈরির বিভিন্ন পদ্ধতি যেমন:

  • রাসায়নিক পদ্ধতি
  • যান্ত্রিক পদ্ধতি
  • কালি অপসারিত মণ্ড

প্রয়োগ

Thumb
বিভিন্ন দেশের কাগুজে মুদ্রা বা ব্যাংকনোট।

প্রকাশনা, লিখিত বা তথ্য-সম্পর্কিত ব্যবহার

প্যাকেজিং ও শিল্প ব্যবহার

  • প্যাকেজিঙের জন্য: কার্ডবোর্ডের বাক্স, খাম, ঠোঙা, মোড়ক কাগজ
  • পরিষ্কারের জন্য: টয়লেট পেপার, কাগুজে তোয়ালে, কাগুজে রুমাল
  • বাসনপত্র ও খাদ্য আধারের জন্য: মোম কাগজ, কাগুজে থালা ও কাগুজে কাপ, পানীয় কার্টন, চায়ের থলি, কাপকেকের কাপ
  • নির্মাণের জন্য: পাপিয়ে-মাশে, ওরিগামি কাগজ, কাগজের বিমান, স্যান্ডপেপার, সংযুত উপাদানের মূল উপাদান, কাগজ প্রকৌশল, কাগুজে পোশাক
Remove ads

কাগজের ধরণ, স্তর ও ভর

কাগজের পরত বা স্তর পরিমাপ করা হয় ক্যালিপার দিয়ে যা এক ইঞ্চির এক সহস্রাংশ সমান বৈশিষ্ট্যের পরিমাপ দেয়। কাগজ ০.০৭ মিলিমিটার (০.০০২৮ ইঞ্চি) থেকে ০.১৮ মিলিমিটার (০.০০৭১ ইঞ্চি) পর্যন্ত পুরু হতে পারে। কাগজকে তার ভর এর উপর ভিত্তি করেও আলাদা করা যায়। এক রিম কাগজের ওজনকে কাগজের ভর ধরা হয়।

কাগজের হিসাব

দিস্তা/রিম

১ দিস্তা = ২৪ তা / ২৪

১ রিম = ২০ দিস্তা = ৫০০ তা /৫০০

সাম্প্রতিক উদ্ভাবন

সারাংশ
প্রসঙ্গ

২০১১ সালে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) বাংলাদেশের সহজলভ্য ও পরিবেশ বান্ধব ধইঞ্চা গাছের আঁশ দিয়ে কাগজ তৈরির পদ্ধতি আবিষ্কার করেছে। এটি খুব সাশ্রয়ী পদ্ধতি। ধইঞ্চা জমির উর্বরতা বাড়ায়। এই গাছ সাধারণ বায়ুচাপে ৬০ থেকে ৮০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় সম্পূর্ণ সালফার ও ক্লোরিনমুক্ত পদ্ধতিতে এই কাগজ তৈরি করা যায়। পরিবেশবান্ধব ক্লোরিন ডাই অক্সাইড ব্যবহার করে একই সাথে ডাইজেসন ও ব্লিচিংয়ের কাজ সম্পন্ন হয় তাই এতে জ্বালানি খরচও খুব কম।[] এছাড়াও কলকারখানা থেকে নির্গত ধোয়া থেকে কাগজ তৈরির কাঁচামাল প্রিসিপিটেটেড ক্যালসিয়াম কার্বোনেট (পিসিসি) তৈরি করা যায়। []

সুইডেনে প্রাকৃতিক সেলুলোজ ন্যানোফাইবার থেকে তৈরি ন্যানোপেপার নামের একটি কাগজ উদ্ভাবন করা হয়েছে, যা স্টিলের মতোই মজবুত। স্টকহোমের সুইডিশ রয়াল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বিজ্ঞানী লারস বার্জল্যান্ড এর থেকে জানা যায় যে, কাগজ তৈরির জন্য কাঠ থেকে মন্ড তৈরির সময় এর ভেতরের প্রাকৃতিক আঁশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং দুর্বল হয়ে পড়ে। এই আঁশগুলো অক্ষত অবস্থায় সংগ্রহ করার একটি প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করা হয়েছে। ন্যানোপেপারের সেলুলোজ ফাইবারগুলোর অক্ষত এবং নেটওয়ার্কের মতো সজ্জিত অবস্থায় থাকে তাই এটি এত শক্ত। ফাইবারগুলো একটির সঙ্গে অন্যটির কঠিন বন্ধন তৈরি করে রাখে কিন্তু যেকোনো চাপ বা টানের মতো বাইরের চাপে এগুলো একটি আরেকটির ভেতর দিয়ে পিছলে গিয়ে চাপ সহ্য করতে পারে। প্রচলিত কাগজের আঁশের চেয়ে এই সেলুলোজ ফাইবার অনেক ছোট। পরীক্ষায় দেখা গেছে, এর চাপ সইবার ক্ষমতা ২১৪ মেগাপ্যাসকেল, যা ঢালাই লোহার (১৩০ মেগাপ্যাসকেল) চেয়ে বেশি এবং ভবন ও সেতুতে ব্যবহূত ইস্পাতের (২৫০ মেগাপ্যাসকেল) কাছাকাছি। প্রচলিত কাগজের চাপ সইবার ক্ষমতা এক মেগাপ্যাসকেলেরও কম। [][১০]

Remove ads

গ্যালারি

কাগজ উৎপাদন পদ্ধতি ও অন্যান্য

মেশিন

কাগজের মাপ

Remove ads

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

তথ্যসূত্র

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads