শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
কোনবাউং রাজবংশ
১৭৫২ থেকে ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মিয়ানমার শাসনকারী রাজবংশ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
কোনবাউং রাজবংশ (বর্মী: ကုန်းဘောင်မင်းဆက်), তৃতীয় বর্মী সাম্রাজ্য (တတိယမြန်မာနိုင်ငံတော်)[৮] নামেও পরিচিত, হলো শেষ রাজবংশ যেটি ১৭৫২ থেকে ১৮৮৫ সাল পর্যন্ত বার্মা/মিয়ানমার শাসন করেছিল। এই রাজবংশটি বর্মী ইতিহাসের দ্বিতীয় বৃহত্তম সাম্রাজ্য তৈরি করেছিল[৯] এবং টাউঙ্গু সাম্রাজ্য দ্বারা চালুকৃত প্রশাসনিক সংস্কারসমূহ অব্যাহত রেখেছিল যা পরবর্তীতে আধুনিক বার্মা রাষ্ট্রের ভিত্তি রচনা করে। যাইহোক, এই সংস্কারগুলো ব্রিটিশদের অগ্রগতি প্রতিরোধ করার জন্য অপর্যাপ্ত বলে প্রমাণিত হয়েছিল, যাঁরা ছয় দশকের ব্যবধানে (১৮২৪–১৮৮৫) তিনটি ইঙ্গ-বর্মি যুদ্ধে বর্মিদের পরাজিত করেছিল এবং ১৮৮৫ সালে সহস্রাব্দ-প্রাচীন বর্মি রাজতন্ত্রের অবসান ঘটিয়েছিল। এই রাজবংশের দাবিদাররা নিজেদের থিবোর কন্যাদের একজন মিয়াত পায়া লাতের বংশধর বলে দাবি করেন।[১০]
একটি সম্প্রসারণবাদী রাজবংশ হিসেবে, কোনবাউং রাজারা মণিপুর, আরাকান, আসাম, পেগুর মোন রাজ্য, শ্যামদেশ (অয়ুধ্যা, ধনবুরি, রত্নখোসিন) এবং চীনের ছিং রাজবংশের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় – এভাবে তৃতীয় বার্মিজ সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। ব্রিটিশদের সাথে পরবর্তী যুদ্ধ ও চুক্তিগুলোর সাপেক্ষে, আধুনিক মিয়ানমার রাষ্ট্রের বর্তমান সীমানা এই ঘটনাগুলোর মাঝে খুঁজে পাওয়া যেতে পারে।
কোনবাউং রাজবংশের রাজধানী ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও কৌশলগত কারণে বেশ কয়েকবার স্থানান্তরিত হয়েছিল।
Remove ads
ইতিহাস
সারাংশ
প্রসঙ্গ
১৮শ শতকে এসে টংগু রাজবংশের অধীনে মিয়ানমার খণ্ডীভূত হয়ে পড়েছিল। আভার উত্তর ও পূর্বে অবস্থিত শান রাজ্যগুলিতে বর্মীদের পাশাপাশি চীনাদেরও আধিপত্য ছিল। অন্যদিকে দক্ষিণ-পূর্বে মন জাতির লোকেদের মধ্যে ১৭৪০ সাল নাগাদ বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রবণতা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। ১৭৫২ সালে শোয়েবো এক গ্রাম্য নেতা আলংফ্রা একটি সেনাবাহিনী সংগঠিত করেন এবং মিয়ানমারের দক্ষিণাংশে মন শাসকদের বিরুদ্ধে সফল সামরিক অভিযান সম্পন্ন করেন। আলংফ্রা আরও দক্ষিণে অগ্রসর হতে থাকেন এবং সমস্ত স্থানীয় প্রতিরোধ দমন করেন। তিনি শান রাজাদেরকে তার আনুগত্য স্বীকারে বাধ্য করেন। এরপর তিনি পূর্বদিকে অগ্রসর হন এবং অযুত্থয় রাজ্য (তৎকালীন থাইল্যান্ড) আক্রমণ করেন, কিন্তু সেখানে তিনি সফল হননি। ১৭৬০ সালে সেখান থেকে পশ্চাদপসরণের সময় তিনি আহত হয়ে মারা যান।
১৭৬৪ সালে এই রাজবংশের তৃতীয় রাজা হসিনবিয়ুশিন রাজ্যে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন এবং নতুন করে অযুত্থয় আক্রমণ করেন। ১৭৬৭ সালে তিনি সম্পূর্ণ অযুত্থয় রাজ্যকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেন। কিন্তু তিনি এলাকাটি বেশিদিন ধরে রাখতে পারেননি। হসিনবিয়ুশিনের সেনাবাহিনী শান ও লাও রাজ্য এবং মণিপুর রাজ্য (বর্তমানে ভারতের একটি প্রদেশ)-এর অনেক গভীরে চলে যেতে সক্ষম হয়। তারা চারবার মিয়ানমারের উপর চীনা আক্রমণ প্রতিহত করে। হসিনবিয়ুশিন এরপর দক্ষিণ দিকে শান্তিস্থাপনে মনোযোগ দেন, কিন্তু ১৭৭৬ সালে এসে বাধাপ্রাপ্ত হন। এই রাজবংশের ৬ষ্ঠ রাজা বোদওপয়া ১৭৮২ থেকে ১৮১৯ পর্যন্ত রাজত্ব করেন এবং অযুত্থয় পুনরায় দখলের চেষ্টা করেন। তিনি থাইদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযান চালালেও সফল হননি। রাজা বোদওপয়া মিয়ানমারের রাজধানী অমরপুর শহরে সরিয়ে নেন।
বোদওপয়ার পৌত্র বাগিদও ১৮১৯ থেকে ১৮২৬ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। তার আমলেও প্রথম ইঙ্গ-বর্মী যুদ্ধে (১৮২৪-১৮২৬) মিয়ানমার ব্রিটিশদের হাতে পরাজয় বরণ করে। এরপর থেকে মিয়ানমারের রাজত্বের পরিধি কমতে থাকে এবং এর প্রশাসনের ক্ষমতা হ্রাস পেতে থাকে। থারাওয়াদি এবং তার পুত্র পাগান দুজনেই দুর্বল রাজা ছিলেন এবং তারা স্বরাষ্ট্রীয় বা পররাষ্ট্রীয় উভয় ক্ষেত্রেই তেমন কোন অবদান রাখেননি। ফলে ১৮৫২ সালে দ্বিতীয় ইঙ্গ-বর্মী যুদ্ধতে ব্রিটিশেরা সমগ্র দক্ষিণ মিয়ানমার দখলে নিয়ে নিতে সক্ষম হয়। ১৮৫৩ থেকে ১৮৭৮ পর্যন্ত মিন্দন নামের রাজার অধীনে মিয়ানমার তার অতীত গৌরব পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালায়, কিন্তু ব্যর্থ হয়। মিন্দন এবং ব্রিটিশ বার্মার প্রশাসনের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। ১৮৭৮ সালে মিন্দনের ছোট ছেলে থিবও সিংহাসনে আরোহণ করেন। ১৮৮৫ সালে তৃতীয় ইঙ্গ-বর্মী যুদ্ধের পর ব্রিটেন সম্পূর্ণ মিয়ানমার করায়ত্ত করতে সক্ষম হয়। এরই রেশ ধরেই ১৮৮৬ সালের ১লা জানুয়ারি ব্রিটিশ সরকার কোনবং রাজবংশ বিলুপ্ত ঘোষণা করে।
Remove ads
আরো দেখুন
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads