শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
টেটা
দীর্ঘ বর্শার মতো মাছ শিকার করায় যন্ত্র উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
টেটা একটি দীর্ঘ বর্শার মত যন্ত্র যা মাছ শিকার করায় ব্যবহৃত হয় এবং অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণী শিকার করায় যেমন তিমি শিকার কিংবা অন্যান্য বৃহৎ সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী শিকারে টেটা ব্যবহৃত হয়। লক্ষ প্রাণীর উপর টেটা নিক্ষেপ করে শিকার করা হয়। দুরের লক্ষ প্রাণী শিকারের সময় এর সাথে যুক্ত দড়ি মাছ ধরতে সাহায্য করে। টেটা অস্ত্র হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। ভারতীয় উপমহাদেশে বিশেষ করে বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকার টেটা দেখায়া যায়। এক নলা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১৯ নলযুক্ত টেটা রয়েছে। লোহার তৈরি বিশেষ ফলার সাথে বাশ বা সরু গাছে দীর্ঘ হাতল লাগানো হয়।


Remove ads
ইতিহাস
সারাংশ
প্রসঙ্গ
টেটা ১৯৯০ এর দশকে জায়ার (বর্তমানে গণপ্রজাতান্ত্রিক কঙ্গো),সেম্লিকি টেটা হিসেবে পরিচিত ছিল যা কাটান্ডা এলাকায় দেখা যেত।সবথেকে প্রাচিন যে টেটা সন্ধান পাওয়া গেছে তা প্রায় ৯০,০০০ বছর পূর্বের যা দেখতে বর্শার মত ছিল এবং যা দিয়ে মাগুর জাতীয় মাছ শিকার করা হত। [১]
পুরাতন প্রস্তরযুগের টেটার প্রচলন জাপানে অনেক বেড়ে যায়, বিশেষকরে সলিউট্রিয়ান ও মাগদালেনিয়ান সময়ে টেটার ব্যবহার ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। দক্ষিণ ফ্রান্সের কস্কার গুহা যা ১৬,০০০ বছরের পুরাতন গুহা শিল্পের সাথে অঙ্কন শিল্পেরও চিহ্ন বহন করে সেখানে টেটার অঙ্কন শিল্প লক্ষ করা যায়।[২]
প্রাচীন সাহিত্যে টেটার উল্লেখ আছে। যদিও অনেক ক্ষেত্রে এর সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।যেমন বাইবেলের একটা উক্তি "তুমি কি চাও তোমার চামড়া কাঁটাতার দিয়ে ক্ষতবিক্ষত হোক নাকি তুমি টেটা দিয়ে তার মাথা বিদ্ধ করতে চাও?"
গ্রিক ইতিহাসবিদ পলিবায়াস(খ্রিষ্টপূর্বঃ২০৩-১২০) ব্যাখ্যা করেন যে সোর্ড ফিস শিকারের জন্য কাঁটাতারের তৈরি টেটা ব্যবহার করা হত।[৩] প্রাচীনকালে কপারের টেটা সামুদ্রিক হারাপ্পা নামে পরিচিত।[৪][৫] ভারত ও ভারতের আশেপাশের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের আদিম অধিবাসীরা মাছ শিকারের জন্য লম্বা সুতা যুক্ত টেটা ব্যবহার করত।[৬]
তিমিশিকার
পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে দুই চিমনীর টেটা তিমিশিকারের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই ধরনের টেটা অধিক চাপে তিমির চর্বি ভেদ করে চলে যায়। পরে এই সমস্যা এক চিমনীর টেটা দ্বারা দূর করা হয়েছে। দুই চিমনীর এক চিমনী সরিয়ে দেওয়ার ফলে এর মাথা আরও সরু হয় যা একে আগের থেকে আরও গভীরে প্রবেশ করতে ও আঁকরে রাখতে সাহায্য করে। উত্তর মেরুর আশেপাশের আদিবাসী মানুষজন টোগল করা টেটা ব্যবহার করত। উনিশ শতকের দিকে এক চিমনীর টেটা পরিচিতি লাভ করে। উনিশ শতকের মাঝামাঝি দিকে লুইস টেম্পেল কর্তৃক লোহার তৈরি টোগল করা টেটা নিরূপণ করা হয়েছিল।

হারমান মেলভিলর বিখ্যাত উপন্যাস "মোবি ডিকে" টেটার কার্যকারিতা ব্যাখ্যা করেন।
বিস্ফোরক টেটা

কয়েক বছর তিমি শিকারে ব্যার্থতার পরে, ১৭৩৭ সালে ব্রিটিশ সাউথ সি কোম্পানি তিমি শিকারে ব্যবহৃত প্রথম বিস্ফোরক টেটা তৈরি করে। তিমি শিকারের জন্য টেটার কামানসহ একটি বড় নৌবহর পাঠান হয়েছিল যারা তিমি হত্যা করতে সফল হয়েছিল। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই তিমি শিকারের পূর্বে তা ডুবে যেত। এখনও এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় যা ১৭৭০ এর দশকে আব্রাহাম স্টাঘল্ট ও উনিশ শতকের প্রথম দিকে জর্জ মানবি সহ আরও অনেক আবিষ্কর্তাদের সাহায্যের ফলে উন্নত রূপ ধারণ করেছে।[৭]
১৮২০ সালে উইলিয়াম কনগ্রেভ তিমি শিকারের জন্য রকেট চালিত টেটার নকশা তৈরি করেন। এই টেটার কার্তুজের নকশা এমনভাবে করা হয়েছিল যেন তিমির স্পর্শে আশার সাথে সাথেই কার্তুজ বিস্ফোরিত হয়। এই নতুন প্রযুক্তি পরীক্ষার জন্য তিমি শিকারের অভিজান করা হয়েচিল। অনেক তিমি হত্যা করা হয়েছিল যা উদ্ধারের পূর্বেই ডুবে যায়।[৮] ১৮৭০ সালে ফইন তিমি শিকারের নতুন পদ্ধতি হিসেবে বোমা-বর্শার নকশা করেন যা তিমি শিকার শিল্পে ব্যাপক পরিবর্তন আনে। [৭] থমাস ওয়েলকাম রায় বিস্ফোরক টেটার একজন বিশেষ ব্যবহারকারী।[৯]
১৮৬৭ সালে ডেনিশ বাজি প্রস্তুতকারক গাইটোনো অ্যামিচি টেটা-কামানের উপর প্যাটেন্ট লাভ করেন। একই বছর জর্জ ওয়েলচ গ্রেনেড টেটার উপর প্যাটেন্ট করেন।জ্যাকব নিকোলাই বিস্ফোরক টেটার প্রাথমিক সংস্করণের নকশা করেন।১৮৫১ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার সাহায্যের আবেদন বাতিল করে দেওয়ার পর তিনি পাবলিক তহবিলের টাকায় তার গবেষণা সম্পূর্ণ করেন। আধুনিক তিমি শিকারের বিস্ফোরক টেটা ও বন্দুকের প্রবর্তক নরওয়েবাসী সেভেন্ড ফোইন ১৮৭০ সালে বিস্ফোরক টেটার প্যাটেন্ট লাভ করেন। তার মৌলিক নকশা এখনও ব্যবহার করা হয়। তিনি অন্য সব মডেলের সমস্যা উপলব্ধি করেন এবং এই সব সমস্যার সমাধান করে নিজের মডেল প্রকাশ করেন। তিনি এইচ. এম. টি. এস্মার্কেরও সাহায্য অবলম্বন করেন। টেটার এই নকশায় গ্রেনেড বিশিষ্ট মাথা, একটি খাদ যা মাথার সাথে পরিবর্তনশীল সংযোগের সাহায্যে লাগানো এবং বিশেষ ধরনের বারূদ ব্যবহার করেন। [৯] [১০]
বাণিজ্যিক তিমি শিকারের সূচনা কারণ হিসেবে এই অগ্রগতি ও বাষ্প চালিত তিমি ক্যাচার কে চিহ্নিত করা হয়। ইউরো-আমেরিকান তিমিব্যবসায়ীরা এখন খুব দ্রুত এবং শক্তিশালী তিমির প্রজাতি, যেমনঃ রোকভেলতিমি শিকার করতে সক্ষম। রোকভেলতিমি মৃত্যুর পর ডুবে যায় কিন্তু আধুনিক এই টেটা মৃত তিমির দেহে বায়ু ইঞ্জেক্ট করে তিমিকে ভাসিয়ে রাখতে সাহায্য করে যার ফলে তিমি শিকার আগের তুলনায় অনেক সহজ।

আধুনিক তিমি শিকারের টেটা ডেক-মাউন্ট লঞ্চার ও প্রজেক্টাইল দ্বারা গঠিত যার সাথে সুতা যুক্ত থাকে। টেটার মাথা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে তা তিমির শরীরের ভেতর ডুকে মাংশের সাথে এঁটে যায়। এই টেটার ধারাল কাটা থাকে যা একে ফোঁসকে যাওয়া থেকে বিরত রাখে। মোটরের সাহায্যে সুতা টেনে শিকারীরা তিমি জাহাজে আনতে পাড়ে। টেটা প্রযুক্তিতে সাম্প্রতিক উন্নয়নের মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হল হস্ত চালিত স্পেয়ার গান। মাছ শিকারের পাশাপাশি বিপজ্জনক সামুদ্রিক প্রাণীর হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করা স্পেয়ার গানের একটি উল্লেখযোগ্য ব্যবহার। হয়ত গ্যাসের চাপের কিংবা যান্ত্রিক সাহায্যে যেমন স্প্রিং বা স্থিতিস্থাপক ধর্মকে কাজে লাগিয়ে স্পেয়ার গান চালানো হয়।
Remove ads
মহাকাশ
প্রোব নোঙ্গরের সাহায্য করার জন্য ফিলাই(মহাকাশযান)-এ টেটা সংযুক্ত করা হয়। তবে টেটাটি নিক্ষেপে ব্যর্থ হয়।[১১][১২]
আরও দেখুন
- ত্রিশূল
- হাওয়াইয়ান গুলতি
- স্পেয়ার গান
তথ্যসূত্র
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads