শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
নালিতাবাড়ী উপজেলা
শেরপুর জেলার একটি উপজেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
নালিতাবাড়ী উপজেলা বাংলাদেশের শেরপুর জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা।
![]() | এই নিবন্ধটিকে উইকিপিডিয়ার জন্য মানসম্পন্ন অবস্থায় আনতে এর বিষয়বস্তু পুনর্বিন্যস্ত করা প্রয়োজন। (মার্চ ২০২৩) |
Remove ads
অবস্থান ও আয়তন
এই উপজেলার ভৌগোলিক অবস্থান ২৫.০৮৩৩° উত্তর ৯০.১৯৫৪° পূর্ব। এর উত্তরে ভারতের মেঘালয়, দক্ষিণে নকলা উপজেলা, পূর্বে ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলা, পশ্চিমে ঝিনাইগাতী উপজেলা।
প্রশাসনিক এলাকা
নালিতাবাড়ী উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম নালিতাবাড়ী থানার আওতাধীন।[২]
ইতিহাস
সারাংশ
প্রসঙ্গ
পাগলপন্থী বিদ্রোহ
জানকুপাথর ও দোবরাজপাথর ছিলেন উনিশ শতকের তৃতীয় দশকের দুইজন বিদ্রোহী এবং শেরপুরে সংঘটিত পাগলপন্থি বিদ্রোহের অন্যতম নায়ক। তারা গারো-হাজংদের নেতা টিপু শাহের অনুগামী ছিলেন এবং ১৮২৭- ১৮৩৩ সালে ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রজাবিদ্রোহের অন্যতম নেতা ছিলেন। শেরপুরের পশ্চিমদিকে করৈবাড়ি পাহাড়ের পাদদেশ জানকুপাথরের একটি প্রধান আস্তানা ছিলো।[৩] ১৮৩১ সালে ময়মনসিংহের কালেক্টর নতুন বন্দোবস্ত "অষ্টম আইন" হিসেবে ঘোষণা করা হলেও বিদ্রোহ চালিয়ে যান জানকুপাথর ও দোবরাজপাথর।[৩][৪]
তাদের নেতৃত্বে শেষ পর্যায়ে সংগ্রামের রূপ চরম আকার ধারণ করে। ১৮৩৩ সন পর্যন্ত জানকুপাথর করৈবাড়ি পাহাড়ের পাদদেশ থেকে ও দোবরাজপাথর নালিতাবাড়ি উপজেলার নিকটবর্তী কোনো একস্থান থেকে শেরপুর অভিমুখে দ্বিমুখী আক্রমণ পরিচালনা করেন। বিদ্রোহী পাগলপন্থীগণ শেরপুরের জমিদারবাড়ি, কাছারিবাড়ি, জমিদারদের আশ্রিত লাঠিয়াল বাহিনীর সর্বস্ব লুট করে ও থানায় আগুন ধরিয়ে দেয়। ফলে শেরপুর জনশূন্য হয়ে পড়ে। এগার-বারটি ক্ষেত্রে সরকার ও বিদ্রোহী বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে ইংরেজ সরকার বিদ্রোহ সংশ্লিষ্ট লোকজন ও নিরীহ লোকজনকে পাইকারিভাবে হত্যা শুরু করে এবং বিদ্রোহের নেতাদেরকে ধরিয়ে দেবার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করে। অতপর বিদ্রোহের দলপতিরা ধীরে ধীরে আত্মসমর্পণ করে। জানকুপাথর উত্তরের পাহাড়ে পালিয়ে যান এবং দোবরাজপাথর পূর্বাঞ্চলে আত্মগোপন করেন। দুর্গাপুর উপজেলার 'দোবরাজপুর' গ্রাম দোবরাজপাথরের স্মৃতি বহন করছে।[৫]
জনসংখ্যার উপাত্ত
জনসংখ্যা ; ২৫২৯৩৫; পুরুষ ১২৮৯৬৩, মহিলা ১২৩৯৭২। মুসলিম ২৩৭৮৯৭, হিন্দু ১০৩৫৫, বৌদ্ধ ৪২৫২, খ্রিস্টান ১৬ এবং অন্যান্য ৪১৫। এ উপজেলায় গারো, হাজং, হদি, মন্দাই, কোচ প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
শিক্ষা
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৪.২৭%; পুরুষ ৩৭.৭১%, মহিলা ৩০.৭২%। কলেজ ৪, কারিগরি কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৩, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯৬, মাদ্রাসা ৫২। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সরকারি নাজমুল স্মৃতি মহাবিদ্যালয় (১৯৭২), নালিতাবাড়ী শহীদ আবদুর রশিদ মহিলা কলেজ (১৯৯৬), হিরন্ময়ী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), তারাগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৭), তারাগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৯), তারাগঞ্জ ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৫০), গড়কান্দা মহিলা আলিম মাদ্রাসা (১৯৯৪)।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ক্লাব ২০, থিয়েটার গ্রুপ ২, সিনেমা হল ২, সামাজিক সংগঠন ১০, খেলার মাঠ ২০।
Remove ads
স্বাস্থ্য
কৃষি
প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, আলু, সরিষা, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি মিষ্টি আলু, কাউন, তিসি, অড়হর।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৫, গবাদিপশু ২১, হাঁস-মুরগি ১৫, হ্যাচারি ২, নার্সারি ৪।
অর্থনীতি
- কৃষি, ইট, কয়লা, পাথর, বালু
যোগাযোগ ব্যবস্থা
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ২২০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১০০ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৫৬.৬৬ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
- শহীদ নাজমুল আহসান - স্বাধীনতা পুরস্কার ব্যক্তি
- বীর মুক্তিযুদ্ধা আব্দুল হাকিম সরকার - রাজনীতিবিদ ও সাবেক এম.এল.এ এবং এম.এন.এ
- আব্দুস সালাম - রাজনীতিবিদ, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
- বিরূপাক্ষ পাল - অর্থনীতিবিদ, অধ্যাপক, লেখক এবং প্রাক্তন ব্যাঙ্কার। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ
- আব্দুস সামাদ ফারুক - সিনিয়র সচিব, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়
- বীর মুক্তিযুদ্ধা আব্দুল ওয়াহাব খান - সাবেক চেয়ারম্যান বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড
- বীর মুক্তিযুদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন - প্রধান প্রকৌশলী বাংলাদেশ রেলওয়ে
- কৃষিবিদ ড. আব্দুল আওয়াল - ডিজি বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট
Remove ads
দর্শনীয় স্থান
- মধুটিলা ইকোপার্ক
- বারোমারী খ্রিস্টান মিশন
- পানিহাটা খিষ্টান মিশন
- নাকুগাও স্থল বন্দর
- রাবার ড্যাম (নালিতাবাড়ী)
- রাবার ড্যাম (সন্ন্যাসীভিটা)
- বঙ্গবন্ধু পার্ক (নিজপাড়া)
- সার্জেন্ট আহাম্মেদ আলী পার্ক
- সুতানাল পুকুর (কাকরকান্দি ইউনিয়ন)
মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা
সারাংশ
প্রসঙ্গ
মুক্ত দিবস
৭ ডিসেম্বর শেরপুর ও নালিতাবাড়ী মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এদিনে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে মিত্রবাহিনীর সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধারা শেরপুর সদর উপজেলা ও নালিতাবাড়ী অঞ্চলকে শত্রু মুক্ত করেন। এদিন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক প্রয়াত জগজিৎ সিং অরোরা হেলিকাপ্টারযোগে নেমে শেরপুর শহীদ দারোগ আলী পৌর পার্ক মাঠে এক সংবর্ধনা সভায় শেরপুরকে মুক্ত বলে ঘোষণা দেন। এসময় মুক্ত শেরপুরে প্রথম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধের দীর্ঘ ৯ মাসে শেরপুর জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ৩০ থেকে ৪০টি খন্ডযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে। এসব যুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করে শহীদ হয়েছেন ৫৯ জন মুক্তিযোদ্ধা। এদিকে পাক হানাদারদের নির্মমতার শিকার হয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে ১৮৭ জন, শেরপুর সদর উপজেলার সূর্যদী গ্রামে ৫২ জন, ঝিনাইগাতী উপজেলার জগৎপুর গ্রামে ২০ জন মুক্তিকামী মানুষ শহীদ হয়েছেন।
তারা আরও জানান, ৪ ডিসেম্বর কামালপুরের ১১ নং সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ ও গুলি বর্ষণের মুখে স্থানীয় পাকসেনারা পিছু হটে। ৫ ডিসেম্বর থেকে পাকসেনারা কামালপুর-বক্সিগঞ্জ থেকে শেরপুর শহর হয়ে জামালপুর অভিমুখে রওনা হয়। অবশেষে পাকসেনারা ৬ ডিসেম্বর রাতের আধারে শেরপুর শহরের উপর দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে জামালপুর পিটিআই ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। এরপর ৭ ডিসেম্বর মুক্ত হয় শেরপুর। শেরপুর ও নালিতাবাড়ী মুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচী পালন করে প্রতি বছর।
শেরপুর সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আখতারুজ্জামান বলেন, আমাদের খুব ভালো লাগছে, কেননা দেরিতে হলেও দেশে যুদ্ধাপরাধিদের বিচার কাজ শুরু হয়েছে। এ বিচার আমাদের বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করছে।
মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত, শহীদ, বীরাঙ্গণা
- সর্ব মোট মুক্তিযোদ্ধা- ৩১৭ জন
- সর্ব মোট যুদ্ধাহত- ২১ জন
- সর্ব মোট শহীদ ১৯ জন
- সর্ব মোট বীরাঙ্গণা ১৪ জন
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads