শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা

পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা
Remove ads

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অন্তর্গত মেদিনীপুর বিভাগের একটি জেলা। ২০০২ সালের ১ জানুয়ারি অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলাকে দুই ভাগে বিভক্ত করে এই জেলা প্রতিস্থাপিত হয়। এই জেলাতে তিনটি মহকুমা রয়েছে: খড়গপুর, মেদিনীপুর সদর এবং ঘাটাল

দ্রুত তথ্য পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা, দেশ ...
Thumb
শ্রীধর জিউ রাসমঞ্চ, গৌরা, পশ্চিম মেদিনীপুর
Thumb
চারচালা সিংহবাহিনী মন্দির, ঘাটাল, পশ্চিম মেদিনীপুর
Remove ads

ইতিহাস

সারাংশ
প্রসঙ্গ

ঐতিহাসিক মতে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন (তৎকালীন দন্দভুক্তি) এলাকায় রাজা শশাঙ্কের রাজত্বের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।[][] ঐ সময়কালে তাম্রলিপ্ত সাম্রাজ্যের অংশ ছিল এই জেলার অনেকাংশ। ১০২১-১০২৩ খ্রিষ্টাব্দে রাজা রাজেন্দ্র ঢোলের আক্রমণের পর তাম্রলিপ্ত সাম্রাজ্যের পতন হয়। এরপর ১১৩৫ খ্রিষ্টাব্দে রাজা অনন্ত বর্মণ মেদিনীপুরের (তৎকালীন মিধুনপুর) দখল নেন।[] খ্রিষ্টীয় ১৩০০-১৫০০ শতাব্দীতে সারা বাংলায় মুসলিম সাম্রাজ্যের বিস্তার হলেও বিষ্ণুপুরের হিন্দু রাজা এবং জমিনদারেরা মেদিনীপুরের সুবিশাল অংশে হিন্দু সাম্রাজ্য ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন।[1] ১৫০০ শতাব্দীর শুরুতে মেদিনীপুর মুঘল সাম্রাজ্যের অধীনে চলে আসে। ১৬৮৭ খ্রিষ্টাব্দে জব চার্নক মেদিনীপুরের হিজলিতে আসেন।[]

ইতিহাসবিদ বিনয় ঘোষের মতে , সদগোপ (যাদব) সম্প্রদায়ের অন্তর্গত নারাজোলের শাসক বংশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন উদয় নারায়ণ ঘোষ । তাঁর প্রপৌত্র রাজা কার্তিকরামকে মুঘল সম্রাট 'রায়' উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। এরপর, তারা এই উপাধি ব্যবহার করতেন।

মেদিনীপুর জমিদারির শেষ রাজা রাজা অজিত সিং, যার সদর দপ্তর কর্ণগড় ছিল , ১৭৪৯ সালে নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যান। তারা নারাজোলের শাসকদের ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

১৭০০ শতাব্দীর মধ্যান্তরে মারাঠারা একাধিক বার মেদিনীপুরে আক্রমণ ও লুঠতরাজ করে। ১৭৫২ খ্রিষ্টাব্দে পশ্চিম মেদিনীপুরের একাংশ মারাঠা সাম্রাজের অধীনে চলে যায়। এরপর ব্রিটিশ আমলে মেদিনীপুর একাধিক কৃষক বিদ্রোহ ও স্বাধীনতা সংগ্রামী আন্দোলনের সাক্ষী থেকেছে।[][]

মেদিনীপুর জমিদারির উত্তরাধিকারী তাঁর দুই রানী চুয়ার বিদ্রোহের সময় প্রচুর সমস্যার সম্মুখীন হন এবং নারাজোলের রাজা ত্রিলোচন খাঁ-এর সমর্থন চান। রাজা ত্রিলোচন খাঁ-এর মৃত্যুর পর, মেদিনীপুর জমিদারি এবং কর্ণগড়ের রানী শিরোমণি (অন্য রানী ততক্ষণে মারা গিয়েছিলেন) দেখাশোনার দায়িত্ব পর্যায়ক্রমে রাজা মতিরাম এবং রাজা সীতারামের উপর পড়ে। রানী শিরোমণি সীতারামের জ্যেষ্ঠ পুত্র আনন্দলালকে নিজের পুত্রের মতো ভালোবাসতেন এবং ১৮০০ সালে সমগ্র মেদিনীপুর জমিদারি তাঁর হাতে তুলে দেন। দুর্ভাগ্যবশত, আনন্দলাল নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যান এবং তাঁর ইচ্ছানুযায়ী তাঁর ভাইয়েরা মালিক হন - নারাজোল জমিদারির নন্দলাল খাঁ এবং মেদিনীপুর জমিদারির মোহনলাল খাঁ।

Remove ads

ভূগোল

সারাংশ
প্রসঙ্গ
Thumb
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মহকুমা

সংক্ষিপ্ত বিবরণ

পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ২০০২ সালের ১ জানুয়ারী ভারতের তৎকালীন বৃহত্তম জেলা মেদিনীপুর জেলার বিভাজনের মাধ্যমে নির্মিত হয়। এই বিভজনের পরে জেলার ভৌগোলিক অঞ্চলের আয়তন হয় ৯,২৯৫.২৮ বর্গ কিমি এবং এটি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার পরে রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহৎ জেলা। ২০১১ সালের হিসাবে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা (৫৮ লাখ ২০ হাজার) এবং মুর্শিদাবাদ (৫১ লাখ ৩০ হাজার) এর পরে গ্রামীণ জনসংখ্যার (৪৪ লাখ ৮০ হাজার) দিক দিয়ে এটি তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। এটি ২০১১ সালের হিসাবে জেলাতে বসবাসকারী উপজাতির জনসংখ্যার শতাংশের (১৪.৮৭%) দিক থেকে জলপাইগুড়ি (১৮.৮৭), পুরুলিয়া (১৮.২৭%) এবং দক্ষিণ দিনাজপুর (১৬.১২%) পরে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।[]

বিস্তৃতভাবে বলতে গেলে, জেলার দুটি প্রাকৃতিক বিভাগ রয়েছে। বাঁকুড়া থেকে বালাসোর পর্যন্ত এনএইচ ১৪ এবং এনএইচ ১৬ (পুরাতন নম্বর এনএইচ ৬০) জেলাকে দুই ভাগে বিভক্ত করে এবং এই জাতীয় সড়ক দুটি মোটামুটি ভাবে দুটি প্রাকৃতিক বিভাগের মধ্যে বিভাজক রেখা। এই রাস্তার পূর্বদিকে মাটি উর্বর পলল এবং অঞ্চল সমতল এবং পশ্চিমে, ছোটা নাগপুর মালভূমি ধীরে ধীরে লাল হয়ে যায়, যা ল্যাটারাইট শিলা এবং মাটি দিয়ে একটি কৃষিকাজে অনউপযোগী অঞ্চল তৈরি করে। জেলাতে ভূপ্রকৃতি পশ্চিমে ঘন শুকনো পাতলা বন থেকে পূর্বের প্রাকৃতিক জলাভূমিতে পরিবর্তিত হয়।[]

Thumb
পশ্চিম মেদিনীপুরের গগনেশ্বর গ্রামে এলিয়াস কুরুম্বেরা দুর্গ

পলল অংশটি আরও দুটি বিভাগে বিভক্ত হতে পারে। প্রথমত, এটি হুগলি নদী এবং রুপনারায়ণ নদের নিকটবর্তী খাঁটি বদ্বীপদেশের একটি ভূমিভাগ, যা অধীনে অসংখ্য নদী এবং জলরাশি দ্বারা বিভক্ত করা হয়। দ্বিতীয়ত, এটি জেলার পূর্বে বাকি অংশ, এটি একঘেয়ে ধানের চাষে উপযুক্ত সমভূমি, যেখানে অসংখ্য জলপথ এবং জোয়ারের জলে পুষ্ট খাঁড়ি রয়েছে। জোয়ারের জলে পুষ্ট খাঁড়িগুলি জমিতে বন্যা রোধে বাঁধের সাথে সারিবদ্ধভাবে আবদ্ধ। বেশিরভাগ অঞ্চল জল-লগ্ন।[]

বন্যা এবং খরা

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বন্যা এবং খরা উভয়েরই জন্য পরিচিত। ঘাটাল এবং খড়গপুর মহকুমার ১৪২,৬৪৭ হেক্টর (১,৪২৬.৪২ বর্গ কিমি) জমি বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ঘাটাল এবং খড়গপুর মহকুমার দক্ষিণাঞ্চলে প্রভাব ফেলে এবং এর ফলে সবং, পিংলা এবং নারায়ণগড় সিডি ব্লক, মেদিনীপুর সদর মহকুমায় র ৩,৩৩,২৪৮ হেক্টর (৩৩৫২.৪৮ বর্গ কিমি) জমি খরার প্রবণতা বয়ে যায়। যদিও জেলাটি সমুদ্র থেকে দূরে থাকলেও অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ঘূর্ণিঝড় প্রায়শই এই স্থানে আঘাত করে।[]

Remove ads

আবহাওয়া ও জলবায়ু

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার আয়তন ৯২৯৫.২৮ বর্গ কিমি।[]

এই জেলার আবহাওয়া চরমভাবাপন্ন। সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যথাক্রমে ৪৫ ডিগ্রি ও ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৫১৪ মিমি।[]

জনসংখ্যা

২০১১ এর আদমশুমারি অনুযায়ী এই জেলার জনসংখ্যা ৫৯,৪৩,৩০০ জন। এরমধ্যে ৫১.০২ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৮.৯৭ শতাংশ মহিলা।[]

উল্লেখ্য শহরসমূহ

মেদিনীপুর এই জেলার সদর। এছাড়া বাকি গুরুত্ত্বপূর্ণ শহরগুলি হল: খড়্গপুর, ঘাটাল, বেলদা, চন্দ্রকোণা, রামজীবনপুর, গড়বেতা, বালিচক, দাঁতন, মোহনপুর, গোপীবল্লভপুর, নয়াগ্রাম, কেশিয়াড়ী, কেশপুর, নারায়ণগড়, সবং এবং দাসপুর

ভাষা

এই জেলার অধিবাসীদের প্রধান ভাষা বাংলা (৮৬.৯০%) । এছাড়াও অন্য ভাষাগুলি হলো সাঁওতালি সাঁওতালি (৬.২৩%), হিন্দি (২.৮৫%), তেলুগু(০.৯৩%), ওড়িয়া (০.৭৫%) ও উর্দু (০.৭২%)

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ভাষা (২০১১)[][]
  1. বাংলা 86.9 (৮৬.৯%)
  2. সাঁওতালি 6.23 (৬.২৩%)
  3. হিন্দী 2.85 (২.৮৫%)
  4. উর্দু 0.72 (০.৭২%)
  5. ওড়িয়া 0.75 (০.৭৫%)
  6. তেলুগু 0.93 (০.৯৩%)
  7. অন্যান্য 1.62 (১.৬২%)

শিক্ষা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

সারাংশ
প্রসঙ্গ
Thumb
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, খড়গপুর
Thumb
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়, মেদিনীপুর

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতে থাকা মহাবিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় গুলি হলঃ[]

  • বেলদা কলেজ
  • ভট্টর কলেজ, দাঁতন
  • চাইপাত এস.পি.বি. মহাবিদ্যালয়
  • চন্দ্রকোনা বিদ্যাসাগর মহাবিদ্যালয়
  • ডেবরা থানা শহীদ ক্ষুদিরাম স্মৃতি মহাবিদ্যালয়
  • গড়বেতা কলেজ
  • ঘাটাল রবীন্দ্র শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়
  • গৌরব গুইন মেমোরিয়াল কলেজ (চন্দ্রকোনা রোড কলেজ)
  • হিজলি কলেজ
  • ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, খড়গপুর
  • ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি (চন্দ্রকোনা)
  • ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজ
  • কে.ডি. কলেজ অফ কমার্স এন্ড জেনারেল স্টাডিজ
  • খড়গপুর কলেজ
  • খড়গপুর হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হসপিটাল
  • মেদিনীপুর কলেজ
  • মেদিনীপুর হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হসপিটাল
  • মেদিনীপুর ল কলেজ
  • মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হসপিটাল
  • নাড়াজোল রাজ কলেজ
  • পিংলা থানা মহাবিদ্যালয়
  • রাজা নরেন্দ্র লাল খান ওমেনস কলেজ
  • সবং সজনী কান্ত মহাবিদ্যালয়
  • সাঁকরাইল অনিল বিশ্বাস স্মৃতি মহাবিদ্যালয়
  • সাঁওতাল বিদ্রোহ সার্ধ শতবার্শিকী মহাবিদ্যালয় (গোয়ালতোড় কলেজ)
  • ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর পলিটেকনিক
  • সেবা ভারতী মহাবিদ্যালয় (কাপগাড়ি কলেজ)
  • সেবা ভারতী কৃষি বিঞান কেন্দ্র
  • শিলদা চন্দ্রশেখর কলেজ
  • সুবর্নরেখা মহাবিদ্যালয় (গোপীবল্লভপুর কলেজ)
  • সুকুমার সেনগুপ্ত মহাবিদ্যালয়
  • বিদ্যাসাগর টিচার্স ট্রেনিং কলেজ
  • বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়
  • বিবেকানন্দ শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয় (মানিকপাড়া কলেজ)
  • মোহনপুর গভ: জেনারেল ডিগ্রি কলেজ
Remove ads

দর্শনীয় স্থানসমূহ[১০]

Thumb
পঞ্চরত্ন রাধাগোবিন্দ মন্দির, চন্দ্রকোনা টাউন, পশ্চিম মেদিনীপুর
  • পটচিত্র গ্রাম (পিংলা থানার নয়া)
  • চিল্কিগড়
  • গোপগড় হেরিটেজ পার্ক (মেদিনীপুর শহরের নিকটবর্তী)
  • হাতিবাড়ি অরণ্য ও পাখিরালয়
  • গুড়্গুড়িপাল হেরিটেজ পার্ক
  • গনগনি (গড়বেতা)
  • রামেশ্বর মন্দির ও তপোবন (রোহিনীর নিকটবর্তী)
  • প্রয়াগ ফিল্ম নগরী (চন্দ্রকোনা রোড)
  • দাঁতনের কাছে মোঘলমারি।

বিখ্যাত অধিবাসী

তথ্যসূত্রের তালিকা

আরও দেখুন

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads