শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

সাঁওতালি ভাষা

অস্ট্রো-এশিয়াটিক পরিবারের ভাষা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

Remove ads

সাঁওতালি ভাষা (সাঁওতালি: ᱥᱟᱱᱛᱟᱲᱤ) অস্ট্রো-এশীয় ভাষা পরিবারের অন্তর্গত মুন্ডা উপপরিবারের একটি ভাষা, এবং হো এবং মুন্ডারি ভাষার সঙ্গে সম্পর্কিত। সাঁওতালিভাষী মানুষের সংখ্যা ভারতে প্রায় ৬৫ লক্ষ, বাংলাদেশে ২ লক্ষ ২৫ হাজার এবং নেপালে ৫০ হাজার।[] বেশির ভাগ সান্তালী ভাষাভাষী মানুষ ভারতের ঝাড়খণ্ড, আসাম, বিহার, ওড়িশা, ত্রিপুরা এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বাস করে।

দ্রুত তথ্য সাঁওতালি, দেশোদ্ভব ...

সাঁওতালি ভাষার নিজস্ব লিপি আছে, যার নাম অলচিকি লিপি (ᱚᱞ ᱪᱤᱠᱤ)।[] তবে বাংলা লিপি, ওড়িয়া লিপি, রোমান লিপিদেবনাগরীতেও এই ভাষার লিখন বহুল প্রচলিত।

ভারতে সাঁওতালি ভাষাভাষীদের সাক্ষরতার হার সামগ্রিকভাবে ১০–৩০% এবং বাংলাদেশে প্রায় ৫০%।[]

Remove ads

ইতিহাস এবং ব্যবহার

ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত সান্তালী একটি মৌখিক ভাষা ছিল এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম জ্ঞান সঞ্চারিত হত মুখে মুখে । ভারতীয় ভাষাগুলির অধ্যয়নে ইউরোপীয়দের আগ্রহের কারণে সান্তালী ভাষা লিপিবদ্ধ করার প্রথম প্রচেষ্টার সৃষ্টি হয়। ১৮৬০-এর দশকের আগে ক্যাম্পবেল, স্ক্রেফসরুড এবং বোডিঙের মত ইউরোপীয় নৃতত্ববিদ, লোককাহিনীকার এবং ধর্মপ্রচারকরা সান্তালী ভাষা লেখার জন্য বাংলা ‌এবং লাতিন লিপি ব্যবহার করতেন। তাদের প্রচেষ্টার ফল হল সান্তালী অভিধান এবং লোককাহিনীর বই এবং ভাষাটির রূপতত্ত্ব, বাক্যতত্ত্ব, ‌ধ্বনিতাত্ত্বিক গঠন সম্পর্কে গবেষণা।

অলচিকি লিপিটি ময়ুরভঞ্জ জেলার কবি পন্ডিত রঘুনাথ মুর্মু ১৯২৫ সালে সৃষ্টি করেন এবং প্রথমবার ১৯৩৯ সালে প্রচারিত করেন।[][]

পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িষা এবং ঝাড়খণ্ডের সান্তালী সম্প্রদায়ে অলচিকি লিপিটি সার্বজনীনভাবে গৃহীত হয়েছে[], কিন্তু বাংলাদেশে সাত্নালি এখনও বাংলা লিপিতে লেখা হয়।

সান্তালী ভাষা ভারতের ২২টি অনুসূচীভুক্ত ভাষার মধ্যে একটি।[১০]

সান্তালীয় উপভাষাগুলি হল কামারি, খোলে, লোহারি, মাহালি, মাঞ্ঝি, পাহাড়িয়া।[১১][১২]

Remove ads

ধ্বনিতত্ত্ব

স্বরধ্বনি

সান্তালী ভাষায় ৮টি স্বরধ্বনি এবং ৬টি অনুনাসিক স্বরধ্বনি আছে।

আরও তথ্য সম্মুখ, কেন্দ্রিক ...

এছাড়াও সান্তালী ভাষায় বেশ কিছু দ্বিস্বরধ্বনি আছে।

ব্যঞ্জনধ্বনি

সান্তালীতে নিজস্ব শব্দে ব্যবহৃত ২১টি ব্যঞ্জনধ্বনি ছাড়াও ইন্দো আর্য শব্দঋণে ব্যবহৃত ১০টি মহাপ্রাণ স্পৃষ্টধ্বনি আছে।

আরও তথ্য ওষ্ঠ্য, দন্তমূলীয় ...

দেশীয় শব্দে শব্দান্তে ঘোষ এবং অঘোষ স্পর্শধ্বনিগুলি অন্যান্য মুন্ডা ভাষাগুলির মত প্রশমিত হয়ে গিয়ে কণ্ঠনালীয় ধ্বনিতে পরিবর্তিত হয়ে যায়।

Remove ads

ব্যাকরণ

সারাংশ
প্রসঙ্গ

বিশেষ্য

বচন

সান্তালীতে তিনটি বচন আছে: একবচন, দ্বিবচন এবং বহুবচন।

আরও তথ্য একবচন, দ্বিবচন ...

কারক

কারকের বিভক্তি বচনের পরসর্গের পরে বসে।

আরও তথ্য কারক, বিভক্তি-চিহ্ন ...

সম্বন্ধবাচক পরসর্গ

সান্তালী ভাষায় তিনটি সম্বন্ধবাচক পরসর্গ আছে যেগুলি আত্মীয়তাবোধক শব্দের সাথে ব্যবহার হয়: উত্তম পুরুষ (-), মধ্যম পুরুষ -m (-), প্রথম পুরুষ -t (-)।

সর্বনাম

সান্তালী ব্যক্তিবাচক সর্বনামে উত্তম পুরুষে অন্তর্ভুক্তিবাচকতা এবং বহির্ভুক্তিবাচকতার পার্থক্য করা হয়, এবং প্রথম পুরুষে পূর্বনির্দেশকতা এবং সাধারণ নির্দেশকতার পার্থক্য করা হয়।

আরও তথ্য একবচন, দ্বিবচন ...

প্রশ্নবোধক সর্বনামে প্রাণীবাচকতা (কে?)/অপ্রাণীবাচকতা (কী?), এবং উল্লিখিতবাচকতা (কোন?)/অনুল্লিখিতবাচকতার পার্থক্য করা হয়:

আরও তথ্য প্রাণীবাচক, অপ্রাণীবাচকতা ...

অনির্দেশক সর্বনামগুলি হল:

আরও তথ্য প্রাণীবাচক, অপ্রাণীবাচকতা ...

নির্দেশক পদের স্থান-কাল-পাত্র ভেদে তিনটি ভাগ আছে: নিকট, অদূর এবং দূর। এছাড়াও গঠনের ভিত্তিতে দুটি ভাগ আছে: সাধারণ (এটা, ওটা, সেটা) এবং নির্দিষ্ট (এইটা, ওইটা, সেইটা)।

আরও তথ্য সাধারণ, নির্দিষ্ট ...

ক্রিয়া

সাত্নালি ভাষার ক্রিয়াগুলি কাল, প্রকার, ভাব এবং বাচ্য এবং কর্তার পুরুষ এবং বচনভেদে পরিবর্তিত হয়।

কর্তৃবাচক চিহ্ন

আরও তথ্য একবচন, দ্বিবচন ...

কর্মবাচক চিহ্ন

সর্বনামীয় কর্মপদ বিশিষ্ট সকর্মক ক্রিয়াপদে কর্মবাচক চিহ্নকে অন্তঃপ্রত্যয় হিসাবে লেখা হয়।

আরও তথ্য একবচন, দ্বিবচন ...
Remove ads

সান্তালী ভাষার প্রভাব এবং প্রসার

সারাংশ
প্রসঙ্গ

অস্ট্রো-এশীয় ভাষাপরিবারের অন্তর্গত এবং প্রাক-আর্য যুগের ঐতিহ্যবাহী সাঁওতালি ভাষা আজও বাংলা, উড়িষ্যা, ঝাড়খণ্ড এবং অন্যান্য রাজ্যের ইন্দো-আর্য ভাষাগুলির মধ্যে তার স্বতন্ত্র পরিচয় অক্ষুণ্ন রেখেছে এবং তাদের সাথে একইসঙ্গে বিদ্যমান। এই অন্তর্ভুক্তিটি সাধারণভাবে গৃহীত হলেও এর মধ্যে অনেক সমস্যা আছে।

সান্তালী এবং অন্যান্য ভারতীয় ভাষার মধ্যে শব্দঋণ সম্বন্ধে এখনো সম্পূর্ণরূপে গবেষণা করা হয়নি। পশ্চিমবঙ্গের স্থাননামের ক্ষেত্রে সাঁওতালি ভাষার প্রভাব স্পষ্ট। এ অঞ্চলে স্থানের নামসমূহে এ ভাষার যথেষ্ট প্রভাব লক্ষণীয়। ১৯৬০-এর দশকে ভাষাবিদ ব্যোমকেশ চক্রবর্তী এই ক্ষেত্রের একটি উল্লেখযোগ্য কাজ আরম্ভ করেন। তিনি বাংলা ভাষায় অনার্য ভাষাগুলির, বিশেষত সান্তালী ভাষার, উপাদানগুলির অভিযোজনের জটিল প্রক্রিয়াটি নিয়ে অন্বেষণ করেন। তিনি বাংলা ভাষায় সান্তালী ভাষার প্রবল প্রভাবটি তুলে ধরেন। বাংলা ভাষায় সান্তালী শব্দগুলোকে প্রায়শই উৎপত্তি অনুসারে পঞ্চবিধ শব্দের "দেশি শব্দ" এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়।যেমন:চাল[১৩] তিনি উভয় ভাষার একে অপরের উপর যে প্রভাব ফেলেছে তা নিয়ে বিস্তারিত অধ্যয়নের উপর ভিত্তি করে তিনি এই সিদ্ধান্তে আসেন। এছাড়াও প্রসিদ্ধ ভাষাবিদ ক্ষুদিরাম দাস তার সান্তখলী বাংলা সমশব্দ অভিধান এবং বাংলা সান্তালী ভাষা-সম্পর্ক ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ মার্চ ২০১৭ তারিখে বইগুলিতে বাংলা ভাষার উপর সান্তালী ভাষার প্রভাবের বিষয় লিখেছেন।

২০১৩ সালে ভারতের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় ব্যবহারের জন্য জাতীয় যোগ্যতা পরিক্ষায় সান্তালী ভাষাকে চালু করেন।[১৪]

Remove ads

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

গ্রন্থপঞ্জি

বহিঃসংযোগ

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads