শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
পাকিস্তানের জাতীয় প্রতীকসমূহ
উইকিমিডিয়ার তালিকা নিবন্ধ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
পাকিস্তানের একটি ঐতিহাসিক দলিল, পতাকা, রাষ্ট্রীয় প্রতীক, জাতীয় সঙ্গীত ও স্মৃতি সৌধসহ বিভিন্ন সরকারি জাতীয় প্রতীক রয়েছে, যা পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট ও সময়ে গৃহীত হয়। প্রতীকসমূহের সংজ্ঞা ও ব্যবহারের নিয়মকানুন সরকার কর্তৃক নির্ধারিত রয়েছে। লাহোর প্রস্তাব পাকিস্তানের জাতীয় দলিল, যা ১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ মুসলিম লীগ কর্তৃক গৃহীত হয় এবং এটিই ছিল ভারতে মুসলমানদের জন্য একটি আলাদা রাষ্ট্র গঠনের প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপিত দাবী। মিনার-ই-পাকিস্তান পাকিস্তানের জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এটি ১৯৬৮ সালে লাহোরের লাহোর প্রস্তাব পাশ হওয়ার স্থানের নির্মিত হয়। জাতীয় পতাকা স্বাধীনতার পূর্বে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট গৃহীত হয়েছিল। জাতীয় সঙ্গীত ও জাতীয় প্রতীক ১৯৫৪ সালে গৃহীত হয়। এগুলো ছাড়া আরও কিছু জাতীয় প্রতীক রয়েছে। যেমন: জাতীয় পাখি, জাতীয় পশু, জাতীয় ফুল ও জাতীয় গাছ প্রভৃতি।
Remove ads
লাহোর প্রস্তাব ও মিনার-ই-পাকিস্তান
সারাংশ
প্রসঙ্গ

লাহোর প্রস্তাব (উর্দু: قرارداد لاھور) যা পাকিস্তান প্রস্তাব নামেও পরিচিত[১], ১৯৪০ সালের ২২-২৪ মার্চ লাহোরের মিন্টু পার্কে (বর্তমানে ইকবাল পার্ক) সর্বভারতীয় মুসলিম লীগের তিনদিন ব্যাপী সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া একটি আনুষ্ঠানিক রাজনৈতিক বিবৃতি। এ প্রস্তাবটিকে বলা হয়ে থাকে ব্রিটিশ ভারতে বৃহত্তর মুসলিম স্বাযত্তশাসনের প্রথম দাবি এবং পৃথক মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের প্রথম ধাপ।[২] ১৯৩০ সালে ভারতীয় মুসলমানদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র গঠনে ধারণা প্রথম মুহাম্মদ ইকবাল উপস্থাপন করেছিলেন[৩] এবং ১৯৩৩ সালে পাকিস্তান ঘোষণায় চৌধুরী রহমত আলী পাকিস্তান নামের প্রস্তাব করেন।[৪] প্রথমদিকে, মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ও অন্যান্য নেতৃবৃন্ধ হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের পক্ষে ছিল, কিন্তু ১৯৩০-এর দশকের ধর্মীয় বৈরিতা ও অস্থির রানৈতিক পরিবেশ এ ধারণাকে আরও মর্মস্পশী করে তুলে।[৫][৬] জিন্নাহ তার বক্তৃতায় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও ভারতীয় জাতীয়তাবাদী মুসলমানদের সমালোচনা করেন এবং দ্বিজাতীয় তত্ত্ব ও পৃথক মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের দাবি উপস্থাপন করেন।[৭] পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী সিকান্দার হায়াত খান লাহোর প্রস্তাবের প্রারম্ভিক খসড়া তৈরি করেন[৮], যা আলোচনা ও সংশোধনের জন্য নিখিল ভারত মুসলিম লীগের সাবজেক্ট কমিটি সমীপে পেশ করা হয়। সাবজেক্ট কমিটি এ প্রস্তাবটিতে আমূল করেন।[৯] মুসলিম লীগের সাধারণ অধিবেশনে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এ.কে. ফজলুল হক সেটি উত্থাপন করেন এবং অন্যান্য মুসলিম নেতৃবৃন্দ তা সমর্থন করেন। লাহোর প্রস্তাবের মূলনীতি ১৯৪০ সালের ২৪ মার্চ পাশ হয়। ১৯৪১ সালে এটি মুসলিম লীগের সংবিধানের একটি অংশে পরিণত হয়। ১৯৪৬ সাল নাগাদ একটি পূথক মুসলিম রাষ্ট্র গঠনকে ভিত্তি করে সংগ্রামের ডাক দেয়।[১০] ঘোষণাটি ছিল:
No constitutional plan would be workable or acceptable to the Muslims unless geographical contiguous units are demarcated into regions which should be so constituted with such territorial readjustments as may be necessary. That the areas in which the Muslims are numerically in majority as in the North-Western and Eastern zones of India should be grouped to constitute independent states in which the constituent units shall be autonomous and sovereign … That adequate, effective and mandatory safeguards shall be specifically provided in the constitution for minorities in the units and in the regions for the protection of their religious, cultural, economic, political, administrative and other rights of the minorities, with their consultation. Arrangements thus should be made for the security of Muslims where they were in a minority.[১১]

মিনার-ই-পাকিস্তান হচ্ছে লাহোরের ইকবাল পার্কে অবস্থিত একটি ৬০ মিটার উচু কংক্রিটের মিনার।[১২] মিনারটি যেখানে নির্মাণ করা হয় সেখানে লাহোর প্রস্তাব পাশ হয়েছিল, যা পাকিস্তান সৃষ্টির দাবি ছিল। এই দিনটি পাকিস্তানে সরকারি ছুটির দিন এবং তখন থেকে তারা দিনটিকে পাকিস্তান দিবস হিসাবে পালন করে আসছে, যখন ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান বিশ্বে প্রথম ইসলামী প্রজাতন্ত্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।[১৩] মুহাম্মদ ওয়ালি উল্লাহ খান এর নকশা করেন এবং মিলান আব্দুল খালিদ কোম্পানি এটি নির্মাণ করে। মিনারের ভিত্তি ভূমি থেকে ৪ মিটার উচু। পরের ১৩ মিটার ফুলের মত একটি স্কাল্পট গঠন করেছে এবং এখান থেকে মিনারটি ক্রমর্শ সরু হয়ে উপরের দিকে উঠেছে। মিনারের ভিত্তি প্লাটর্ফোরটি হচ্ছে একটি পাচঁ কোণা বিশিষ্ট তারকার মত করে তৈরি যা একটি ক্রিসেন্ট দ্বারা আবদ্ধ। এটির মেঝে মজবুত কংক্রিট এবং দেয়াল মার্বেল পাথর দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে।[১২]
Remove ads
জাতীয় পতাকা

পাকিস্তানের জাতীয় পতাকার নকশা করেন সৈয়দ আমিরুদ্দিন কেদোয়াই।[১৪] এটি মুসলিগের লীগের পতাকার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। পাকিস্তান স্বাধীনতা লাভের পূর্বে[১৫][১৬][১৭] ১৯৪৭ সালের ১১ আগস্ট সাংবিধানিক পরিষদ কর্তৃক এই নকশা গৃহীত হয়।[১৮] পতাকাটিকে পাকিস্তানের জাতীয় সঙ্গীতে উর্দুতে পারচাম-ই-সিতারা-ও-হিলাল (ক্রিসেন্ট ও তারকা খচিত পতাকা) বলা হয়। পতাকার গাঢ় সবুজ অংশটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রতীক এবং খাড়া সাদা অংশটি পাকিস্তানের ধর্মীয় সংখ্যলঘুদের প্রতীক।[১৪] মধ্যভাগে উদীয়মান চাঁদ বা ক্রিসেন্ট পাকিস্তানের অগ্রগতির প্রতীক এবং পাঁচ কোনবিশিষ্ট সাদা তারকাটি জ্ঞান ও জ্ঞানেরআলোর প্রতীক।[১৪] পতাকাটি ইসলাম, ইসলামী বিশ্ব ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকারের প্রতি পাকিস্তানের অঙ্গীকারের প্রতীক।[১৯] পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস সহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিনে পতাকা উড্ডয়ন করা হয়।[২০] এছাড়া রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ উধ্বত্বন অনেকের সরকারি বাসস্থান ও গাড়িতে পতাকা উড়ানো হয়।
Remove ads
জাতীয় সঙ্গীত
সারাংশ
প্রসঙ্গ
কওমী তারানা বা পাক সারজামিন সঙ্গীতটি হল পাকিস্তানের জাতীয় সঙ্গীত। এটি স্বাধীনতা দিবস (১৪ আগস্ট) ও প্রজাতন্ত্র দিবস (২৩ মার্চ) সহ প্রত্যেক অনুষ্ঠানে (যেখানে পতাকা উত্তোলন করা হয়) পরিবেশন হয়। পাকিস্তানের স্বাধীনতা লাভের সময় পর্যন্ত কোন জাতীয় সঙ্গীত গৃহীত হয়নি, তখন স্বাধীনতা দিবসে “পাকিস্তান জিন্দাবাদ” গানটি গাওয়া হত। মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ লাহোরের হিন্দু কবি জগন্নাথ আজাদকে পাকিস্তানের জাতীয় সঙ্গীত লেখার জন্য বলেন।[২১] জিন্নাহ পাকিস্তানের জন্য একটি ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শ চেয়েছিলেন।[২২] অবশেষে জগন্নাথ আজাদ জাতীয় সঙ্গীত লেখেন এবং জিন্নাহ তা গ্রহণ করেন ও রেডিও পাকিস্তানে প্রচার করান।[২৩] আজাদের লেখা এ সঙ্গীত আঠারো মাস পাকিস্তানের জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে ছিল।
১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের জাতীয় সঙ্গীত কমিটি গঠিত হয়। তাদের উপর দায়িত্ব ছিল একটি উপযুক্ত সঙ্গীত বা গান খোঁজা। ১৯৫০ সালে ইরানের শাহের আসন্ন রাষ্ট্রীয় সফর উপলক্ষে গোলামালী চাগলা বিভিন্ন সুর একত্রিত করে তিনটি অনুচ্ছেদ গ্রহণ করেন। ১৯৫০ সালের ১০ আগস্ট এটি প্রাথমিকভাবে প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের সামনে পরিবেশন হয় এবং শাহের সফরকালে পরিবেশনের জন্য গৃহীত গ্রহণ করা হয়।[২৪] যাহোক, ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত এটি জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে সরকারিভাবে গৃহীত হয়নি।[২৪] অবশেষে জাতীয় সঙ্গীত কমিটি আবু আল আসর হাফিজ জুলা্নধুরিকে গানের কথা লেখার দায়িত্ব দেয় এবং তিনি গানের কথা লিখলে তা কমিটি কর্তৃক গৃহীত হয়। ১৯৫৪ সালের ১৩ আগস্ট রেডিও পাকিস্তানে নতুন জাতীয় সঙ্গীত প্রথম পরিবেশিত হয়।[২৫] ১৯৫৪ সালের ১৬ আগস্ট তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, সরকারিভাবে জাতীয় সঙ্গীত অনুমোদন এবং ১৯৫৫ সালে আহমদ রুশদিসহ পাকিস্তানের ১১জন গায়কের একসঙ্গে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের ঘোষণা দেয়।[২৬]
রাষ্ট্রীয় প্রতীক

পাকিস্তানের জাতীয় প্রতীক দ্বারা পাকিস্তানের আদর্শিক ও অর্থনৈতিক ভিত্তি, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং তার পথনির্দেশক নীতি প্রদর্শন করে যা ১৯৫৪ সালে গৃহীত হয়।[২৭] প্রতীকটিতে চারটি অংশ রয়েছে। তার মধ্যে ক্রেস্ট ও প্রতীকের সবুজ রঙ ইসলামের ঐতিহ্যগত চিহ্ন।[২৭] কেন্দ্রে চারভাগে বিভক্ত ঢালে দেখানো হয়েছে তুলা, গম, চা এবং পাট, যা স্বাধীনতার সময় পাকিস্তানের প্রধান ফসল ছিলো যা কৃষি অর্থনীতিকে ফুটিয়ে তুলেছে। ঢালের পার্শ্ববর্তী পুস্পশোভিত জয়মাল্য প্রথাগত মুঘল স্থাপত্যে ব্যবহৃত পুষ্পশোভিত নকশার প্রতিনিধিত্ব করে এবং পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য উপর জোর দেয়।[২৭]
Remove ads
জাতীয় মূলমন্ত্র
পাকিস্তানের জাতীয় প্রতীকের নিচের স্ক্রলে লিখা রয়েছে পাকিস্তানের জনক মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর একটি উর্দু নীতিবাক্য। এটি ডান দিক থেকে পড়তে হয় (ایمان ، اتحاد ، نظم) যার ইংরেজি উচ্চারণ "ঈমান, ইত্তেহাদ, নজম" এবং এর বাংলা অর্থ হল "ঈমান, একতা, শৃঙ্খলা"। বাক্যটিকে পাকিস্তানের পথনির্দেশক নীতি হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।[১৯]
অন্যান্য প্রতীকসমূহ
Remove ads
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads