শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
ফারেনহাইট
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
ফারেনহাইট হল তাপমাত্রা পরিমাপের স্কেল, যা ১৭২৪ সালে প্রস্তাব করা হয় এবং জার্মান পদার্থবিদ ড্যানিয়েল গ্যাব্রিয়েল ফারেনহাইট (১৬৮৬–১৭৩৬) এর নামানুসারে নামকরণ করা হয়। বর্তমানে বিশ্বের অধিকাংশ দেশে তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য সেলসিয়াস স্কেল ব্যবহৃত হচ্ছে।[১] যুক্তরাষ্ট্র সহ আরও অল্প কিছু দেশ যেমন- ব্রাজিলে এখনও ফারেনহাইট স্কেল ব্যবহৃত হচ্ছে।[২]


Countries that use Fahrenheit.
Remove ads
সংজ্ঞা এবং রূপান্তর
সারাংশ
প্রসঙ্গ
স্বাভাবিক বায়ুচাপে ফারেনহাইট স্কেলে পানির হিমাঙ্ক কে ধরা হয় ৩২ ডিগ্রী ফারেনহাইট (°F) এবং স্ফুটনাঙ্ক কে ধরা হয় ২১২ °F, এই দুই বিন্দুর মধ্যবর্তী অংশ কে ১৮০ ক্ষুদ্র ভাগে ভাগ করা হয়। প্রতিটি ক্ষুদ্র ভাগকে বলা হয় ১ ডিগ্রী ফারেনহাইট।[৩]
আবার সেলসিয়াস স্কেলে স্বাভাবিক বায়ুচাপে পানির গলনাঙ্ক এবং স্ফুটনাঙ্কের মধ্যবর্তী অংশ কে ১০০ ভাগে ভাগ করা হয় এবং প্রতিটি ভাগকে বলা হয় ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস।[৩] এক ডিগ্রী ফারেনহাইট তাপমাত্রা পার্থক্য হল ৫⁄৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা পার্থক্যের সমান।
আর একটি মজার বিষয় হল,−৪০ °F এবং −৪০ °C একই তাপমাত্রা নির্দেশ করে।[৩] ফারেনহাইট স্কেলে পরম শূন্য তাপমাত্রা হল -৪৫৯.৬৭ °F ।[৪] আবার রানকিন (Rankine scale) তাপমাত্রা পরিমাপক স্কেলে এক ডিগ্রী রানকিন (1 °R) হল, এক ডিগ্রী ফারেনহাইট এর সমান। রানকিন স্কেল এবং ফারেনহাইট স্কেলের মধ্যে পার্থক্য হল ০ °R পরম শূন্য তাপমাত্রা নির্দেশ করে, আর ৩২ °F পানির হিমাঙ্ক নির্দেশ করে।
Remove ads
ইতিহাস
সারাংশ
প্রসঙ্গ
ফারেনহাইট ১৭২৪ সালে তার দিনপঞ্জীতে লিখেন,[৫] তিনি তার তাপমাত্রা পরিমাপক স্কেল টি দাঁড়া করিয়েছেন ৩ টি তাপমাত্রা সাপেক্ষে। সেগুলোর প্রথম টি হল বরফ, পানি এবং অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড এর মিশ্রণের তাপমাত্রা, যাকে তিনি ০ °F বলেছেন। পরের তাপমাত্রা হল পানি এবং বরফের মিশ্রণের তাপমাত্রা, যা ৩২ °F নির্দেশ করে।[৬] শেষ তাপমাত্রা টি হল ৯৬ °F যা মানব দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা। এছাড়া তার স্কেল অনুসারে পারদের স্ফুটনাঙ্ক হল ৬০০ °F।
পরবর্তিতে বিজ্ঞানীরা আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন পানির স্ফুটনাঙ্ক, তার হিমাঙ্কের চেয়ে প্রায় ১৮০ ডিগ্রী বেশি। তাই তারা পানির স্ফুটনাঙ্ক এবং হিমাঙ্কের মধ্যবর্তী পার্থক্য পুরোপুরি ১৮০ ডিগ্রী ধরে ১ ডিগ্রী ফারেনহাইটের সংজ্ঞা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন।[৫] এর ফলে নতুন সংশোধিত স্কেলে মানব শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা দাঁড়ায় ৯৮.৬ °F।[৭]
বন্ধু হারমেন বোরহেভ (Herman Boerhaave) এর কাছে লিখা এক চিঠিতে ফারেনহাইট জানান তিনি ফারেনহাইট স্কেল তৈরি করেছেন ওল রোমার (Ole Rømer) নামে একজন গবেষকের উদ্ভাবিত ওল রোমার স্কেল এর ভিত্তিতে।[৮] ওল রোমার তার উদ্ভাবিত স্কেলে ২ টি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা সাপেক্ষে। একটি হল ব্রাইন এর হিমাঙ্ক (শূন্য ডিগ্রী) এবং অপরটি পানির স্ফুটনাঙ্ক (৬০ ডিগ্রী)। ফারেনহাইট হিসেব করে দেখেন এ স্কেল অনুসারে পানির হিমাঙ্ক হয় ৭.৫ ডিগ্রী। ফারেনহাইট এই ভগ্নাংশ দূর করার জন্য ওল রোমার স্কেলের সব কিছুকে চার দিয়ে গুণ করেন। তিনি পানির হিমাঙ্ক এবং মানব শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রার মধ্যবর্তী তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য নতুন করে একটি স্কেল তৈরি করেন। তার নতুন স্কেল উদ্ভাবনের কারণ হল এর মাধ্যমে ৩২ ডিগ্রী এবং ৯৬ ডিগ্রী তাপমাত্রার মথ্যবর্তী স্থানকে খুব সহজে ৬ বার সমদ্বিখন্ডিত করে দাগাঙ্কন করা যায় ( কারণ (৯৬-৩২) = ৬৪ = ২৬)।[৯]
Remove ads
ব্যবহার
১৯৬০ সাল পর্যন্ত বেশ কিছু ইংরেজি ভাষাভাষী দেশে ফারেনহাইট স্কেল ছিল আবহাওয়া, চিকিৎসা এবং কলকারখানায় ব্যবহৃত প্রাথমিক তাপমাত্রা পরিমাপক একক। ১৯৬০, ১৯৭০ সালের পর থেকে এসব দেশ একক আদর্শকরনের অংশ হিসেবে সেলসিয়াস স্কেল (যা ১৯৪৮ সালের পূর্ব পর্যন্ত সেন্টিগ্রেড স্কেল নামে পরিচিত ছিল), গ্রহণ করা শুরু করে, যা মেট্রিকায়ন নামে পরিচিত।
শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র এবং অল্প কিছু দেশ (ব্রাজিল[২], বার্মা, এবং লাইবেরিয়া[১০]) গবেষণা বহির্ভূত ব্যবহারের ক্ষেত্রে এখনও ফারেনহাইট স্কেল ব্যবহার করে। বাকি প্রায় সব দেশ সেলসিয়াস স্কেলকে তাপমাত্রা পরিমাপের প্রাথমিক স্কেল হিসেবে গ্রহণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে আবহাওয়া পূর্বাভাষ, রান্না করার তাপমাত্রা এবং হিমায়ন তাপমাত্রা সাধারণত ডিগ্রী ফারেনহাইটে বলা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ফারেনহাইট স্কেলে থেকে যাওয়ার পেছনে অনেক কারণ দেখানো হয়।[১১] যদিও নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার মত অনেক দেশ যারা আগে ফারেনহাইট স্কেল ব্যবহার করত, তারা একে সেকেল মনে করে সম্পূর্নরূপে সেলসিয়াস স্কেল গ্রহণ করেছে।[১২]
উপস্থাপনা
ফারেনহাইট প্রকাশের জন্য এর নিজস্ব ইউনিকোড ক্যারেক্টার রয়েছে, এটি হল "°F" (U+2109)। তাপমাত্রা বর্ণনার সময় সেলসিয়াস এবং ফারেনহাইট উভয় ক্ষেত্রেই "°" ব্যবহার করা হয়। ডিগ্রী চিহ্ণ দ্বারা দুটি স্কেলের মধ্য কোনটিকে নির্দেশ করা হয়েছে তা বোঝানোর জন্য ডিগ্রী চিহ্ণের শেষে °C (সেলসিয়াস) অথবা °F (ফারেনহাইট) অক্ষর দুটি ব্যবহার করা হয়। যেমন: "গ্যালিয়াম এর গলনাঙ্ক হল ৮৫.৫৭৬৩°F"। বাংলাদেশী পাঠ্যপুস্তকে অনেক সময় °C স্থলে সে. এবং °F এর স্থলে ফা. ব্যবহার করা হয়।
Remove ads
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads