শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
প্রতিফলন (পদার্থবিজ্ঞান)
আলো উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
যে সকল বস্তু নিজে থেকেই আলো বিকিরণ করে তাদেরকে আলোক উৎস (source of light) বলা হয়। এই আলোক উৎস দুই ধরনের হতে পারে- ১) স্বপ্রভ বা স্বয়ংপ্রভ বা দীপ্তিমান উৎস (luminous or self-luminous source) ও ২) নিষ্প্রভ বা অপ্রভ বা দীপ্তিহীন উৎস (non-luminous source)।

স্বপ্রভ বা স্বয়ংপ্রভ বা দীপ্তিমান উৎস বা বস্তু: সেইসব আলোক উৎস বা বস্তু যেগুলি নিজের আলো নিজেই বিকিরণ করে (অর্থাৎ নিজের আলো নিজেই উৎপন্ন করে) সেইসকল উৎস বা বস্তু কে স্বপ্রভ বা স্বয়ংপ্রভ বা দীপ্তিমান উৎস বা বস্তু বলে । যেমন: সূর্য, নক্ষত্র, বৈদ্যুতিক বাল্ব, জ্বলন্ত মোমবাতি ইত্যাদি।
নিষ্প্রভ বা অপ্রভ দীপ্তিহীন উৎস বা বস্তু: যেইসকল বস্তুর নিজস্ব কোনো আলো নেই, স্বপ্রভ বা দীপ্তিমান বস্তু থেকে পাওয়া আলো প্রতিফলিত করে আলোকিত হয়, সেইসব বস্তুকে নিষ্প্রভ বা অপ্রভ বা দীপ্তিহীন উৎস বা বস্তু বলে।
আমাদের চারপাশের বস্তুগুলির অধিকাংশই হল নিষ্প্রভ বা বস্তু। চাঁদ ও গ্রহগুলিও হল নিষ্প্রভ বা দীপ্তিহীন। এই বস্তুগুলি সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে বলেই আমরা এদেরকে আলোকিত দেখি। সুতরাং আলোর প্রতিফলন না ঘটলে আমরা কোনো নিষ্প্রভ বা দীপ্তিহীন বস্তুকে দেখতেই পেতাম না। যেমন দিনের বেলায় আকাশে সূর্য দেখতে পেতাম ঠিকই, কিন্তু রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ইত্যাদি সবকিছুই দৃষ্টির অগোচরে থাকত। স্পষ্টতই আলোর প্রতিফলন আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা।
Remove ads
আলোর প্রতিফলন
আলো এক প্রকার শক্তি। আলো কোনো স্বচ্ছ মাধ্যমের ভিতর দিয়ে যাওয়ার সময় অন্য কোন মাধ্যমে বাধা পেলে দুই মাধ্যমের বিভেদতল থেকে কিছু পরিমাণ আলোক রশ্মি আগের মাধ্যমে ফিরে আসে, এ ঘটনাকে আলোর প্রতিফলন বলে।[১] অথবা আলোক উৎস থেকে আপতিত রশ্মি কোন তলে বা পৃষ্ঠে বাধা পেলে কিছু আলো পুনরায় আগের মাধ্যমে ফিরে আসে, এ ঘটনাকে আলোর প্রতিফলন বলে।

আলোর প্রতিফলনের একটি অন্যতম উদাহরণ হল- সমতল দর্পণ বা আয়নার সামনে আমরা যখন দাঁড়াই তখন আমরা আমাদের প্রতিবিম্ব দেখতে পাই। দর্পণে আলোর প্রতিফলনের জন্যেই বিম্বের সৃষ্টি হয়।
আলোর প্রতিফলন সাধারণত দুটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে: আলোর আপতন কোণ ও মাধ্যমগুলোর প্রকৃতি। আপতিত রশ্মি যত বেশি কোণে আপতিত হবে এবং প্রতিফলক যত বেশি মসৃণ হবে আলোর প্রতিফলন তত বেশি হবে। পক্ষান্তরে, অমসৃণ কিংবা স্বচ্ছ প্রতিফলক থেকে আলোর প্রতিফলন কম হয়।
Remove ads
প্রতিফলনের শ্রেণিবিভাগ


প্রতিফলক পৃষ্ঠের প্রকৃতি আনুযায়ী আলোর প্রতিফলন দু ধরনের হতে পারে, যথাঃ নিয়মিত প্রতিফলন ও ব্যাপ্ত প্রতিফলন।
নিয়মিত বা সুষম প্রতিফলন
যখন একগুচ্ছ সমান্তরাল আলোকরশ্মি কোন মসৃণ পৃষ্ঠে আপতিত হয়ে প্রতিফলনের পর সমান্তরাল থাকে বা অভিসারী কিংবা অপসারীগুচ্ছে পরিণত হয়, তবে আলোর সেই প্রতিফলনকে নিয়মিত বা সুষম প্রতিফলন বলে। প্রতিফলক পৃষ্ঠ মসৃণ হলে যেমন- সমতল দর্পণে আলোর নিয়মিত প্রতিফলন হয়। এক্ষেত্রে প্রতিটি আলোক রশ্মির আপতন কোণ সমান হয় ও প্রতিফলন কোণগুলোও সমান হয়। গ্রিসের প্রখ্যাত গণিতবিদ এবং ইঞ্জিনিয়ার- হীরন[২][৩] সর্বপ্রথম আলোর নিয়মিত প্রতিফলনের ধর্ম লক্ষ্য করেন।
অনিয়মিত বা ব্যাপ্ত প্রতিফলন
যদি একগুচ্ছ সমান্তরাল আলোক রশ্মি কোন পৃষ্ঠে আপতিত হয়ে প্রতিফলনের পর অসমান্তরাল হয় বা অভিসারী বা অপসারীগুচ্ছে পরিণত না হয় তবে আলোর সেই প্রতিফলনকে ব্যাপ্ত বা বিক্ষিপ্ত বা অনিয়মিত প্রতিফলন বলে। প্রতিফলক পৃষ্ঠ সমান্তরাল না হলে এরূপ হয়। এক্ষেত্রে সমান্তরাল রশ্মিগুলো প্রতিফলকপৃষ্ঠের বিভিন্ন বিন্দুতে বিভিন্ন কোণে আপতিত হয় বলে তাদের প্রতিফলন কোণও আলাদা হয়।প্রতিফলন এর উদাহরণ হিসেবে আয়না বলা যায়। এক্ষেত্রে আপতন কোন প্রতিফলন কোনের সমান হয়।
Remove ads
গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংজ্ঞা
নিম্নে আপতিত রশ্মি, আপতন বিন্দু, অভিলম্ব, প্রতিফলিত রশ্মি, আপতন কোণ, প্রতিফলন কোণ এর সংজ্ঞা দেওয়া হল:
আপতিত রশ্মি
যে রশ্মি প্রতিফলকের উপর এসে পড়ে তাকে আপতিত রশ্মি বলে।
আপতন বিন্দু
আপতিত রশ্মি প্রতিফলকের উপর যে বিন্দুতে এসে পড়ে তাকে আপতন বিন্দু বলে।
অভিলম্ব
আপতন বিন্দুতে প্রতিফলকের উপর অঙ্কিত লম্বকে অভিলম্ব বলে।
প্রতিফলিত রশ্মি
প্রতিফলকে বাধা পেয়ে যে রশ্মি আগের মাধ্যমে ফিরে আসে তাকে প্রতিফলিত রশ্মি বলে।
আপতন কোণ
প্রতিফলকের ওপর আপতিত রশ্মি ও অভিলম্বের মধ্যবর্তী কোণকে আপতন কোণ বলে। একে “i” দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

প্রতিফলন কোণ
প্রতিফলিত রশ্মি অভিলম্বের সাথে মিলিত হয়ে যে কোণ উৎপন্ন করে তাকে প্রতিফলন কোণ বলে। একে “r” দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
আলোর প্রতিফলনের সূত্র
প্রতিফলক পৃষ্ঠ মসৃণ হলে আলোর প্রতিফলন প্রধানত দুটি সূত্র মেনে চলে, যথা-
আরও দেখুন :
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads