শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
বুলগেরিয়া
দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র; কৃষ্ণ সাগরের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
বুলগেরিয়া (বুলগেরীয় ভাষায়: България ব্যেল্গারিয়া আ-ধ্ব-ব: [bɤlˈgarijə]), সরকারী নাম বুলগেরিয়া প্রজাতন্ত্র (বুলগেরীয় ভাষায়: Република България রেপুব্লিকা ব্যেল্গারিয়া আ-ধ্ব-ব: [rɛˈpubliˌkə bɤlˈgarijə]), দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপ মহাদেশের একটি রাষ্ট্র। দেশটি বলকান উপদ্বীপের পূর্ব পার্শ্বে ইউরোপ ও এশিয়ার ঐতিহাসিক সঙ্গমস্থলে অবস্থিত। এর পূর্বে কৃষ্ণ সাগর, দক্ষিণে গ্রিস ও তুরস্ক, পশ্চিমে সার্বিয়া ও মন্টিনেগ্রো এবং ম্যাসিডোনিয়া, এবং রোমানিয়া অবস্থিত। এখানে প্রায় ৭৭ লক্ষ লোকের বাস। সোফিয়া বুলগেরিয়ার রাজধানী ও বৃহত্তম শহর।

বুলগেরিয়া পর্বত, নদনদী ও সমভূমির দেশ। উত্তর বুলগেরিয়ার পূর্ব-পশ্চিম বরাবর বলকান পর্বতমালা প্রসারিত। বলকান পর্বতমালার নামেই অঞ্চলটির নাম হয়েছে বলকান। তবে বুলগেরীয়রা এগুলিকে Stara Planina বা প্রাচীন পর্বতমালা নামে ডাকে। ইউরোপের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী দানিউব বুলগেরিয়ার উত্তর সীমান্ত গঠন করেছে।
পশ্চিমে সোফিয়া এবং পূর্বে কৃষ্ণ সাগর পর্যন্ত নিম্নভূমিটি গোলাপের উপত্যকা নামে পরিচিত। তিন শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে এখানকার কৃষকেরা কাজালনুক গোলাপের চাষ করে আসছেন। এই গোলাপের তৈল নির্যাস অত্যন্ত দুর্লভ এবং বুলগেরিয়ার অন্যতম রপ্তানি পণ্য। বুলগেরিয়ার পূর্বে কৃষ্ণ সাগরের উপকূল উত্তরে খাড়া পার্বত্য ঢাল থেকে দক্ষিণে বালুকাময় সৈকতে নেমে এসেছে। এখানকার পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে সারা বিশ্ব থেকে লোক বেড়াতে আসে। উত্তরের পর্বতমালাতে শীতকালে ভারী বরফ পড়ে; ফলে শীতকালীন ক্রীড়ার জমজমাট আসর বসে এখানে।
ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যস্থলে অবস্থিত হওয়ায় বুলগেরিয়াকে নিয়ে বহু শক্তির প্রতিদ্বন্দ্ব্বিতা হয়েছে। বহু শতাব্দী ধরে এটি একটি স্বাধীন রাজ্য ছিল। মধ্যযুগে এসে দীর্ঘ সময় ধরে একটি প্রধান শক্তি ছিল। প্রথম বুলগেরীয় সাম্রাজ্যের সময় (৬৩২/৬৮১—১০১৮) এখানকার শাসকেরা বলকান উপদ্বীপের অধিকাংশ এলাকা শাসন করেছেন। এখানকার খ্রিস্টান অর্থডক্স ধর্ম, সংস্কৃতি দক্ষিণ ও পূর্ব ইউরোপীয় বহু স্লাভীয় জাতিকে প্রভাবিত করেছে। পূর্ব ইউরোপের ভাষাগুলির লিখন পদ্ধতিতে প্রচলিত সিরিলীয় লিপি বুলগেরিয়াতেই উদ্ভাবিত হয়। দ্বিতীয় বুলগেরীয় সাম্রাজ্যের অবক্ষয়ের শেষে ১৩৯৩ সালে দেশটি উসমানীয় সাম্রাজ্যের অধীনে আসে। প্রায় ৫০০ বছর উসমানীয় সাম্রাজ্যের অধীনে শাসিত হবার পর ১৮৭৮ সালে সান স্তেফানোর চুক্তির মাধ্যমে বুলগেরিয়া একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯১২-১৯১৩ সালের প্রথম বলকান যুদ্ধে জয়ী হলেও ২য় বলকান যুদ্ধে দেশটি হেরে যায় এবং গ্রিস, সার্বিয়া ও রোমানিয়ার কাছে অনেক এলাকা হারায়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সোভিয়েত ইউনিয়নের সেনারা দেশটির দখলে ছিল। এসময় সোভিয়েত সরকারের সমর্থনে একটি সাম্যবাদী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। সাম্যবাদী শাসনের সময় বুলগেরীয় নেতারা প্রধানত কৃষিভিত্তিক দেশটির অর্থনীতির আধুনিকায়নের লক্ষ্যে একটি শিল্পায়ন প্রকল্প শুরু করেন। ১৯৮৯ সালে গণতান্ত্রিক সংস্কারের আগ পর্যন্ত বুলগেরিয়া একটি সাম্যবাদী রাষ্ট্র ছিল। ১৯৯০ সালে বুলগেরিয়াতে যুদ্ধের পর প্রথমবারের মত বহুদলীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং এর নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বুলগেরিয়া থেকে বদলে বুলগেরিয়া প্রজাতন্ত্র রাখা হয়।
গণতন্ত্র ও মুক্ত বাণিজ্যের পথে রূপান্তর বুলগেরিয়ার জন্য সুখপ্রদ হয়নি। সাম্যবাদের পতন এবং বুলগেরীয় পণ্যের সোভিয়েত বাজারের বিলোপ ঘটায় দেশটির অর্থনীতির প্রবল সংকোচন ঘটে। মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্বের ঊর্ধগতি, অবারিত দুর্নীতি, এবং সমাজকল্যাণ ব্যবস্থার বিপর্যয় ঘটায় জীবনযাত্রার মানের চরম পতন ঘটে। অনেক বুলগেরীয় দেশ ছেড়ে চলে যান। বুলগেরীয় সরকার ১৯৯০-এর দশকের শুরুর দিকে গৃহীত সংস্কারগুলির ব্যাপারে অটল থাকলে ধীরে ধীরে বৃহত্তর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জিত হয়। দেশটি ২০০৪ সালের মার্চে নেটোর এবং ২০০৭ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হয়।

Remove ads
রাজনীতি
প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ
ভূগোল
অর্থনীতি
জনসংখ্যা
বুলগেরিয়ার ৮০%-এর বেশি লোক বুলগেরীয় অর্থোডক্স গির্জার খ্রিস্টধর্মের অনুসারী বা এর সাথে সম্পর্কিত। প্রায় ১২% লোক ইসলাম ধর্মের অনুসারী। মূলত উসমানীয় সাম্রাজ্যের শাসনামলে আগত তুর্কি বসতিস্থাপকদের মধ্যে ইসলাম প্রচলিত।
বুলগেরীয় ভাষা বুলগেরিয়ার সরকারি ভাষা এবং এই ভাষাতে দেশটির প্রায় ৮৫% লোক কথা বলে। সংখ্যালঘু ভাষাগুলির মধ্যে তুর্কি, আলবেনীয়, আর্মেনীয়, গাগাউজ, গ্রিক, ম্যাসেডোনীয় এবং রোমানীয় ভাষা উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বুলগেরিয়াতে জিপসি বা রোমানি ভাষা ব্যবহারকারী একটি উল্লেখযোগ্য জনগোষ্ঠী বাস করে। আন্তর্জাতিক কর্মকাণ্ডে রুশ, জার্মান এবং ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হয়।
Remove ads
সংস্কৃতি
সীমানা এবং অঞ্চল
সারাংশ
প্রসঙ্গ
বুলগেরিয়ার মোট সীমান্তের দৈর্ঘ্য ২,২৪৫ কিমি; এর মধ্যে ১,১৮১ কিমি স্থল সীমানা এবং ৬৮৬ কিমি নদী দ্বারা গঠিত। উপকূলরেখা ৩৭৮ কিমি। [৫] [৬]
রোমানিয়ার সাথে উত্তর সীমান্ত ৬০৯ কিমি। সীমান্তের বেশিরভাগ অংশ (৪৭০ কিমি) পশ্চিমে টিমোক নদীর মুখ থেকে পূর্বে সিলিস্ত্রা শহর পর্যন্ত দানিউব নদী দ্বারা গঠিত। সিলিস্ট্রা থেকে কৃষ্ণ সাগরের কেপ সিভ্রিবুরুন পর্যন্ত স্থল সীমানা ১৩৯ কিমি লম্বা। [৫] বুলগেরিয়ান দিকে খাড়া– ভিদিন এবং কালাফাতের মধ্যে নতুন ইউরোপ সেতু এবং রুস এবং গিউরগিউয়ের মধ্যে ডানুব সেতু। দানিউব নদীর তীরে ৪৮টি বুলগেরিয়ান এবং ৩২টি রোমানিয়ান দ্বীপ রয়েছে; সবচেয়ে বড়টি হল বেলিন (৪১ কিমি২), বুলগেরিয়ার অন্তর্গত। [৭] কৃষ্ণ সাগরের সিলিস্ত্রা, কারদাম এবং দুরানকুলাক- এ স্থল সীমান্তের তিনটি সীমান্ত ক্রসিং রয়েছে। রাশিয়া থেকে বুলগেরিয়ায় প্রাকৃতিক গ্যাস পরিবহনকারী একটি প্রধান গ্যাস পাইপলাইন দেশটিকে অতিক্রম করে। [৭]

পূর্ব সীমান্ত (৩৭৮ কিমি) সামুদ্রিক এবং উত্তরে কেপ সিভ্রিবুরুন থেকে দক্ষিণে রেজোভো নদীর মোহনা পর্যন্ত বুলগেরিয়ান কৃষ্ণ সাগর উপকূলকে ঘিরে রেখেছে। [৭] বুলগেরিয়ার উপকূলরেখা মোট কৃষ্ণ সাগরের উপকূলরেখার ১/১০ অংশ গঠন করে এবং এর মধ্যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপসাগর, ভার্না উপসাগর এবং বুর্গাস উপসাগর অন্তর্ভুক্ত, যা দেশের দুটি প্রধান বন্দরকে আশ্রয় দেয়। [৭]
দক্ষিণ সীমানা হল ৭৫২ কিমি লম্বা, এর মধ্যে ২৫৯ কিমি তুরস্কের সাথে এবং ৪৯৩ কিমি গ্রিসের সাথে। [৬] [৮] বুলগেরিয়া-তুরস্ক সীমান্ত পূর্বে রেজোভো নদীর মুখ থেকে স্ট্র্যান্ডজা পর্বতমালা এবং ডারভেন্ট হাইটসের মধ্য দিয়ে চলে গেছে, মাতোচিনা গ্রামে টুন্ডজা নদী অতিক্রম করে এবং কাপিতান আন্দ্রিভো গ্রামে মারিতসা নদীতে শেষ হয়েছে। মালকো টারনোভো, লেসোভো এবং কাপিতান আন্দ্রেভোতে তিনটি সীমান্ত ক্রসিং রয়েছে। [৮] গ্রিসের সাথে সীমান্ত কাপিতান আন্দ্রিভো থেকে রোডোপ পর্বতমালার বেশ কয়েকটি শৈলশিরার মধ্য দিয়ে বিস্তৃত, সাধারণত বুলগেরিয়ান দিকে আর্দা এবং ভাচা নদীর জলাশয় অনুসরণ করে, স্লাভিয়াঙ্কা পর্বতমালার মধ্য দিয়ে বিস্তৃত, কুলাতা গ্রামে স্ট্রুমা নদী অতিক্রম করে এবং বেলাসিৎসা পর্বতের চূড়া দিয়ে তুম্বা শৃঙ্গে পৌঁছোয়ে। [৮] Svilengrad, Ivaylovgrad, Makaza, Zlatograd, Ilinden এবং কুলাটা-এ ছয়টি সীমান্ত চেকপয়েন্ট রয়েছে। [৮]
পশ্চিম সীমানা ৫০৬ কিমি লম্বা, এর মধ্যে ১৬৫ কিমি উত্তর ম্যাসেডোনিয়ার সাথে এবং ৩৪১ কিমি সার্বিয়ার সাথে। [৬][৯] উত্তর ম্যাসেডোনিয়ার সীমান্ত দক্ষিণে তুম্বা শৃঙ্গ থেকে ওগ্রাজডেন, মালেশেভো, ভ্লাহিনা এবং ওসোগোভো পর্বতমালার মধ্য দিয়ে কিটকা পর্বত পর্যন্ত বিস্তৃত। পেট্রিচ শহরের কাছে এবং লোগোদাজ এবং গিউয়েশেভো গ্রামে তিনটি সীমান্ত ক্রসিং রয়েছে। [৯] সার্বিয়ার সাথে সীমান্ত কিটকা থেকে পার্বত্য অঞ্চল ক্রাইশতে, রুই পর্বত সহ, নিশাভা নদীর উপত্যকা অতিক্রম করে, পশ্চিম বলকান পর্বতমালার প্রধান জলাশয়ের মধ্য দিয়ে যায় এবং ১৫ কিমি ধরে টিমোক নদী অনুসরণ করে দানিউবের সাথে মিলিত হওয়া পর্যন্ত। [৯] ডলনো উয়নো, স্ট্রেজিমিরোভতসি, কালোটিনা, ভ্রাশকা চুকা এবং ব্রেগোভোতে পাঁচটি সীমান্ত চেকপয়েন্ট রয়েছে। [৯]
Remove ads
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads