শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
মাছ
কর্ডাটা পর্বের অন্তর্গত উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
মাছ একটি শীতল রক্তবিশিষ্ট মেরুদণ্ডী প্রাণী। এদের শ্বাস অঙ্গ হলো ফুলকা। জলে সাঁতার কাটার জন্য এদের যুগ্ম অথবা অযুগ্ম পাখনা রয়েছে । এদের দেহে সচরাচর আঁশ থাকে। সাধারণত এরা জলকেই বসবাসের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। সাধারণত এদের দেহের বহির্ভাগ আঁশ দ্বারা আচ্ছাদিত; তবে আঁশ নেই এমন মাছের সংখ্যাও একেবারে কম নয়। এরা সমুদ্রের লোনা জল এবং স্বাদু জলের খাল, বিল, হাওর, বাওর, নদী, হ্রদ, পুকুর, ডোবায় বাস করে। পাহাড়ি ঝর্ণা থেকে শুরু করে মহাসাগরের গহীন অতল স্থানে, অর্থাৎ যেখানেই জল রয়েছে সেখানেই মাছের অস্তিত্ব দেখতে পাওয়া যায়। পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র মাছ মানুষের খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়। মাছ মানবদেহে অন্যতম আমিষ যোগানদাতা। অনেক স্থানেই মাছ চাষ করা হয়ে থাকে। এ ছাড়াও বিনোদন হিসাবে ছিপ/বড়শি দিয়ে মাছ ধরা আবার মাছকে অ্যাকুয়ারিয়ামে প্রদর্শন করা হয়ে থাকে। কয়েকটি প্রাণী মাছ না হলেও এগুলো মাছ হিসাবে প্রচলিত।
Remove ads
মাছের বৈচিত্র্য
আমেরিকার ন্যাশনাল ওসেনিক অ্যান্ড অ্যাটমসফিয়ার অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের বিজ্ঞানীরা ‘ওপা’ নামের উষ্ণ রক্তের মাছের সন্ধান পান। মাছটির কানসার টিস্যু এমনভাবে সাজানো যে, শিরা থেকে ঠাণ্ডা রক্ত প্রবাহিত হয়ে বিপরীতমুখী উষ্ণ রক্তের সঙ্গে মিলিত হয়। যে রক্ত কানসার দিকে আসছে তা গরম হয়।
পৃথিবীতে প্রায় ৩০-৪০ হাজার মাছের প্রজাতি পাওয়া যায়। বাংলাদেশে ৪৭৫ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ এবং ২৬০ প্রজাতির স্বাদু জলের মাছ পাওয়া যায়।[১]

Remove ads
মাছের অভিযোজন
সারাংশ
প্রসঙ্গ
কোনো বিশেষ পরিবেশে জীবনধারণের জন্য জীবের দেহে গঠনগত ও কার্যগত বৈশিষ্ট্য লাভ হয়, ফলে জীব পরিবেশ মানিয়ে নিয়ে সুষ্ঠুভাবে জীবনধারণ করতে পারে একেই অভিযোজন বলা হয়। অভিযোজন সংক্ষিপ্ত পথে ঘটে না। এর জন্য দীর্ঘ কালক্ষেপের প্রয়োজন। পৃথিবীর জীব জলাশয়, সমুদ্র, নদী, হ্রদ, পাহাড় পর্বত, মরুভূমি, বনভূমি, মাটি, বায়ুমণ্ডল ইত্যাদি বিভিন্ন পরিবেশের মধ্যে বসবাস করে। এইসব পরিবেশ মানিয়ে নিয়ে জীবনধারণ করাই অভিযোজনের মূল লক্ষা।
মাছ জলে বাস করে। তাই এদের দেহ এমনভাবে অভিযোজিত হয়েছে যার ফলে এরা জলের মধ্যেই জীবনধারণ করতে সক্ষম হয়। মাছের অভিযোজনের বৈশিষ্ট্যগুলি নীচে বর্ণনা করা হল:
(১) পুষ্টি: মাছ জল থেকেই খাদ্য সংগ্রহ করে পুষ্টি চালায়। অধিকাংশ মাছ ক্ষুদ্র জলজ উদ্ভিদ এবং জলজ প্রাণী খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। গৃহীত খাদ্য সুগঠিত পৌষ্টিক তন্ত্রের মাধ্যমে পাচিত হয়। পাচিত খাদ্যরস দেহের কোষগুলি গ্রহণ করে জৈবনিক কাজ চালায়।
(২) শ্বসন: মাছ জলের মধ্যেই শ্বসন চালায়। এদের দেহে এমন শ্বাস-অঙ্গের উদ্ভব হয়েছে যার ফলে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন সহজেই শ্বাস-অঙ্গে গৃহীত হয়। মাছের শ্বাস-অঙ্গ হল ফুলকা। কানকোর মধ্যে ফুলকা থাকে। রুই, কাতলা, মৃগেল ইত্যাদি মাছ মুখ দিয়ে জল নিয়ে কানকোর পথে তা প্রবাহিত করে। জল ফুলকার উপর সবসময় প্রবাহিত হয়। ফুলকায় অবস্থিত রক্ত-জালক ব্যাপন পদ্ধতিতে জল থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে। রক্ত সংবহনের মাধ্যমে দেহের প্রতিটি কোষ অক্সিজেনের সরবরাহ পায়। শ্বসনে উৎপন্ন কার্বন ডাই অক্সাইড মাছ ফুলকা দিয়েই বিপরীত পদ্ধতিতেই ত্যাগ করে।
(৩) অতিরিক্ত শ্বাসযন্ত্র : কই , শিঙি , মাগুর ইত্যাদি কয়েক রকম মাছে ফুলকা ছাড়াও দেহে অতিরিক্ত শ্বাসযন্ত্র থাকে। এদের ক্ষেত্রে ফুলকা দিয়ে গৃহীত অক্সিজেন দেহের প্রয়োজন সম্পূর্ণ মেটাতে পারে না। তাই এরা মাঝে মধ্যে জলের উপরে এসে বায়ুমন্ডল থেকে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন গ্রহণ করে। এই কারণে অতিরিক্ত শ্বাসযন্ত্র-যুক্ত মাছকে জিওল মাছ বলা হয়। এইরকম মাছ ডাঙায় অনেকক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে।
(৪) দেহের আকার: অধিকাংশ মাছ আকারে মাঝখানে মোটা এবং দুপ্রান্তে সরু। এইরকম আকারের জন্য মাছ সহজেই জলের বাধা অতিক্রম করতে পারে। মাছের দেহের কোনো অংশ এমনভাবে প্রসারিত থাকে না যাতে মাছের গতি ব্যাহত হয়। ছোট্ট পুঁটি মাছ থেকে শুরু করে রুই, কাতলা, মৃগেল, বোয়াল এমন কি সামুদ্রিক হাঙ্গরও একই রকম দেহাকৃতি যুক্ত। দেহ মাকুর মতো বলে মাছ সহজেই জলে দ্রুতবেগে সাঁতার কাটতে পারে। হাঙ্গর ঘন্টায় কুড়ি থেকে তিরিশ কিলোমিটার পর্যন্ত বেগে জলের মধ্যে গমনে সক্ষম।
(৫) দেহের আবরণ: অনেক মাছের দেহের বাইরে আঁশ থাকে। অধিকাংশ মাছের চামড়ায় শ্লেষ্মা গ্রন্থি অবস্থান করে। এই গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত পিচ্ছিল রস বা শ্লেষ্মা আঁশের উপর বা চামড়ার উপর ছাড়িয়ে যায়। ফলে শ্লেষ্মা দিয়েই দেহের একেবারে বাইরে একটি আবরণ গঠিত। শ্লেষ্মা থাকার জন্য এদের দেহ খুব পিচ্ছিল হয়। পিচ্ছিল দেহ আত্মরক্ষার সহায়ক, হাত দিয়ে ধরতে গেলে খুব সহজেই পিছলে হাত ফসকে বেরিয়ে যেতে পারে। এছাড়া পিচ্ছিল দেহ জলের বাধা অতিক্রম করতেও সাহায্য করে।
(৬) গমন: মাছ যাতে জলে সাঁতার কাটতে পারে সেজন্য উপযুক্ত গমন অঙ্গের সৃষ্টি হয়েছে। এদের দেহের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত পাখনা গুলিই মুখ্য গমন-অঙ্গ হিসেবে কাজ করে। রুই, কাতলা, মৃগেল ইত্যাদি মাছের দেহে মোট সাতটি করে পাখনা থাকে। লেজের পিছন অংশ আন্দোলিত করেও মাছ গমন করতে পারে। মাছের দেহে অবস্থিত পেশী সংকোচন-প্রসারণের ফলেই লেজের আন্দোলন সম্ভব হয়। প্রতিটি পাখনা মাছের দেহের পেশীর সঙ্গে যুক্ত থাকে। প্রকৃতপক্ষে পেশী সংকোচন-প্রসারণের ফলেই পাখনা আন্দোলিত হয়। পাখনাগুলি মাছের চলন, গমন, দিক্ পরিবর্তন এবং জলের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার ব্যাপারে রীতিমতো সাহায্য করে।
(৭) পটকা: অধিকাংশ মাছের দেহগহ্বরে সাদা রঙের বেলুনের মতো একটি গ্যাসপূর্ণ থলি দেখা যায়। একে পটকা বলে। মাছ পটকার মধ্যে ইচ্ছে অনুযায়ী গ্যাস ভর্তি বা গ্যাসশূন্য করতে পারে। মাছের দেহকে জলের নির্দিষ্ট গভীরতায় ভাসিয়ে রাখতে পটকা সাহায্য করে। পটকা থেকে গ্যাস বার করে দিলে মাছের দেহ ভারি হয়ে যায় বলে জলের নীচে তলিয়ে যায়, আর পটকায় গ্যাস ভর্তি হলে দেহ হালকা হয়ে যায় বলে উপরে ভেসে ওঠে।
(৮) জ্ঞানেন্দ্রিয় : মাছের জ্ঞানেন্দ্রিয়গুলি জলে বসবাসের ক্ষেত্রে উপযোগী। চোখ দিয়েই এরা জলের মধ্যে দেখতে পায়। এদের কানের একমাত্র কাজ দেহের ভারসাম্য বজায় রাখা। অধিকাংশ মাছের মাথা থেকে লেজ অবধি পাশ বরাবর দুপাশে দুটি রেখার মতো লম্বা গঠন দেখা যায়। এগুলিকে পার্শ্বরেখা বলা হয়। পার্শ্বরেখার মধ্যে অসংখ্য সংবেদ অঙ্গ থাকে। এর সঙ্গে স্নায়ুর যোগ থাকে। মাছ পার্শ্বরেখার সাহায্যে জলের চাপ, তাপ ইত্যাদি অনুভব করতে পারে। (৯) জনন: মাছ যৌন জননের মাধ্যমে জলে বংশবিস্তার করে। প্রজনন-কালে পুরুষ মাছের দেহ থেকে শুক্রাণু এবং স্ত্রী মাছের দেহ থেকে ডিম্বাণু বেরিয়ে আসে। ডিম্বাণুর ও শুক্রাণুর মিলন দেহের বাইরে অর্থাৎ জলের মধ্যে ঘটে। দেহের বাইরে এইরকম জনন কোষের মিলনকে বহিঃনিষেক বলা হয়। জলের স্রোতে বা অন্যান্য জলচর প্রাণীর খাদ্য হিসেবে বহু ডিম্বাণু নষ্ট হয়ে যায়। সেইজন্য মাছ তুলনামূলকভাবে বেশী সংখ্যায় ডিম্বাণু প্রসব করে যাতে বংশবিস্তারে অসুবিধে না হয়।[২]
Remove ads
অঙ্গসংস্থান

মাছের আঁশ ৫ প্রকার
১. কসময়েড (Cosmoid) আঁশ (লাঙ্গফিশ ও কিছু ফসিল মাছ)
২. প্লাকয়েড (Placoid) আঁশ (হাঙ্গর ও শঙ্খমাছ)
৩. গ্যানয়েড (Ganoid) আঁশ (বিচির, বোফিন, গারস, ষ্টারজন, প্যাডেলফিশ ইত্যাদি)
৪. টেনয়েড (Ctenoid) আঁশ (কই, মেনি, কোরাল ইত্যাদি)
৫. সাইক্লয়েড (Cycloid) আঁশ (রুই, কাতলা, মৃগেল ইত্যাদি)
মাছের রোগ
ছত্রাক রোগ, মাছের ক্ষতরোগ, পাখনা ও লেজ পচা রোগ, পেট ফোলা রোগ, সাদা দাগ রোগ, মিক্সোবোলিয়াসিস, উকুন রোগ (আরগুলোসিস), ফুলকা পচা রোগ (ট্রাইকোডিনিয়াসিস), কালো দাগ রোগ, গিলফ্লক (ডেক্টাইলোগাইরোসিস), গাইরোডিক্টাইলোসিস, ভিটামিনের অভাব ও অপুষ্টি রোগ।
সংরক্ষণ
মাছ সংরক্ষণ করা উচিত। পৃথিবীতে অনেক মাছ বিলুপ্তির পথে এর জন্য সবার উচিত বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা
সংস্কৃতি
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads