শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
মানি
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
মানি (মধ্য পার্সি বা ফার্সি ভাষায়: 𐭌𐭀𐭍𐭉 বা 𐭬𐭠𐭭𐭩, নতুন ফার্সি: মানি, গ্রীক: Μάνης বা Μανιχαῖος, সিরিয়াক ܚܝܐ ܚܝܐ ) ইরানী বংশোদ্ভূত নবী এবং মানি ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।[১][২][৩][৪] প্রাচীন পারস্যে এই ধর্মের ব্যাপক প্রচার হয়েছি, তবে এখন আর এই ধর্মের অনুসারী দেখা যায় না। মানি ব্যাবিলনের তিসফুন বা তার নিকটে জন্মগ্রহণ করেন,[৫] যখন অঞ্চলটি পার্থিয়ান সাম্রাজ্যের অংশ ছিল। তার ছয়টি প্রধান রচনা সিরিয়াক ভাষায় রচিত হয়েছিল এবং সপ্তমটি মধ্য ফার্সি ভাষায় রচিত হয়েছিল যা সাসানীয় সাম্রাজ্যের প্রথম শাপুর-কে উৎসর্গ করেন।[৬] তিনি গুন্দেশাপুরে মারা যান।
Remove ads
ব্যুৎপত্তি
প্রাচীন গ্রীক ব্যাখ্যা হলো স্কিউস এবং হোমিলিয়া, তবে এর আসল উৎসটি সম্ভবত ব্যাবিলনীয়-আরামাইক মানা থেকে এসেছে, যা মান্দায়েনদের মধ্যে উজ্জল-আত্মার জন্য একটি শব্দ ছিল, মানা রাব্বা ছিলেন "আলোর রাজা"। সুতরাং এর অর্থ "মহান" হবে।[৭]
নামের সঠিক অর্থটি কী তা এখনও অমীমাংসিত। সমান্য অবমাননাকর ‘একটি নির্দিষ্ট” (মানেস কুইডাম) হেগেমনিয়াস এক্টা আরচেলাই (চতুর্থ শতাব্দী) তেও দেখা যায়, হেগেমোনিয়াস মানির চেহারার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়।
মানির নামগুলো রপান্তরের উন্নয়সাধনকরা বস্তুতে পরিনত হয়েছে (গ্রীক, কপটিক মান্নিচাইয়োস, লাতিন মান্নিচায়েউস) অর্থাৎ, মান্নাম হলো “স্থলিত মান্না”।[৮][৯]
Remove ads
উৎস
১৯৬৯ সালে আপার মিশরে একটি হাতে লেখা গ্রীক পার্চমেন্ট আবিস্কৃত হয় যা ৪০০খ্রিষ্টাব্দের। এটি এখন কোডেক্স ম্যানিচাইকাস কোলনেনসিস হিসাবে আখ্যায়িত, কারণ এটি কোলন বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষিত আছে। মানির ধর্মীয় শিক্ষা সম্পর্কে তথ্যের মধ্যে রয়েছে মানির কর্মজীবন এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির একটি হ্যাজিওগ্রাফিক বিবরণ এবং তার লেখা সংবলিত টুকরো। এটি এখন মানি সম্পর্কে ঐতিহাসিক তথ্যের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উৎস হিসাবে বিবেচিত হয়।
অন্যান্য মধ্যযুগীয় এবং প্রাক-মধ্যযুগীয় বিবরণগুলি হয় কিংবদন্তি না হয় হ্যাজিওগ্রাফিক্যাল, যেমন ইবনে আল-নাদিমের ফিরিস্তি, আল-বিরুনির উদ্দিষ্ট, বা চতুর্থ শতাব্দীর অ্যাক্টা আরচেলাইয়ের মতো ম্যানিচিয়ান বিরোধী তর্কশাস্ত্র। মধ্যযুগীয় বিবরণগুলোর মধ্যে ইবনে আল নাদিমের মানির জীবন ও শিক্ষাদান বিবরণটি সাধারণত সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং সম্পূর্ণ বলা হয়। উল্লেখযোগ্যভাবে, "তৃতীয় রাষ্ট্রদূত" এর (অন্যান্য বিবরণী বিশিষ্ট) চিত্রটি কেবলমাত্র বসির নামটির সংক্ষিপ্তভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, "সুসংবাদদাতা" হিসেবে এবং "ম্যানি দ্য পেইন্টার" এর শীর্ষগুলি (যা অন্যান্য ইসলামী বিবরণীতে প্রায় পুরোপুরি "ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা" দ্বারা প্রতিস্থাপন) সম্পূর্ণ অনুপস্থিত।[১০]
Remove ads
জীবন
সারাংশ
প্রসঙ্গ
বিংশ শতাব্দীতে আবিষ্কৃত এই কাজ এবং অন্যান্য প্রমাণগুলি মানিকে ঐতিহাসিক চরিত্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করে।[১১]
মানি জন্মগ্রহণ করেন সিলিউসিয়া-টেসফোনের কাছে, সম্ভবত ব্যাবিলনের জেলা নাহর কুঠা-এর মারদিনু শহরে; অন্যান্য বিবরণ মতে আবরুইয়া শহরে।
মানির বাবা পতিক (মধ্য পারসিয়ান পট্টুগ;[১২] কোনি গ্রীক: Παττικιος, আরবি: ফুত্তুক), একবাতানার[১৩] (বর্তমানে হামাদান, ইরান) অধিবাসী ছিলেন, তিনি এলসেসাইটসদের ইহুদি খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের (জিওনস্টিক এবিওনাইটসদের উপ-গোষ্ঠী) সদস্য ছিলেন। তার মা পার্থিয়ান বংশোদ্ভূত ছিলেন[১৪][১৫] ("কামসারাকানের আর্মেনিয়ান আর্সাসিড পরিবার" থেকে এসেছে);[১৬]) তার বিভিন্ন নাম পাওয়া যায় তার মধে একটি মরিয়ম।
মানি ব্যাবিলনে বা দক্ষিণ ইরাকের এক হেটারোডক্স (প্রচলিত ধর্মমতের বিরোধী) ব্যাপটিস্ট সম্প্রদায়ে আভির্ভূত হন। এই সম্প্রদায়টি বাহ্যত কিছু জিওনস্টিক বৈশিষ্ট্য সহকারে ইহুদি / খ্রিস্টান ছিল, যেমন স্বর্গীয় দূতের আবৃত অবতারের প্রতি বিশ্বাস, তাদের মধ্যে একজন হলেন ডসেটিক খ্রিস্ট। বারো বছর বয়সে মানি তার ঐশ্বরিক ‘যমজ’ থেকে দৈববাণী লাভ করেন, এবং চব্বিশ বছর বয়সে তিনি আরও একটি দৈববাণী লাভ করেন যা তাকে তার যৌবনের ব্যাপটিস্ট সম্প্রদায় ছেড়ে চলে যেতে এবং একটি নতুন দৈববাণী প্রচার করতে পরিচালিত করে।[১৭][১৮]
১২ এবং ২৪ বছর বয়সে মানির "স্বর্গীয় যমজ"-এর স্বপ্নদর্শন অভিজ্ঞতা হয় এবং তাকে তার পিতার সম্প্রদায় ছেড়ে যীশুর সত্য বাণী প্রচার করার আহ্বান জানায়। ২৪০-৪১ সালে মানি ভারতে ভ্রমণ করেন (বর্তমানে আফগানিস্তানের সাখাস), সেখানে তিনি হিন্দু ধর্ম এবং এর বিদ্যমান বিভিন্ন দর্শনের অধ্যয়ন করেন। আল-বিরুনি বলেন, মানি পারস্য থেকে নির্বাসিত হওয়ার পর ভারত সফর করেন।[১৯] ২৪২ সালে ফিরে এসে তিনি প্রথম শাপুর দরবারে যোগদান করেন, যাকে তিনি তার ফার্সিতে লিখিত একমাত্র রচনা যা শবুরাগান নামে পরিচিত সেটি উৎসর্গ করেছিলেন। শাপুর মানিচিয়েজমে পরিবর্তিত হননি এবং জরুথ্রুস্ট থেকে যান।[২০]
শাপুরের উত্তরসূরি প্রথম হরমিজ্ড কেবল এক বছরের জন্য রাজত্ব করেছিলেন, মনে করা হয় তিনি মানির পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত রেখেছিলেন, তবে তার উত্তরসূরি প্রথম বাহরাম জরুথ্রুস্টিয়ান সংস্কারক কার্তিরের অনুসারী ছিলেন, তিনি মানিচিয়ানদের উপর অত্যাচার শুরু করেন। তিনি মানিকে কারারুদ্ধ করেন, ২৭৪ সালে একমাসের মধ্যে কারাগারে মারা যান।[২১]
মানির অনুসারীরা মানির মৃত্যুকে যীশুর ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার উপমাতে ক্রুশবিদ্ধ হিসাবে চিত্রিত করে; আল-বিরুনি বলেন যে, বাহরাম মানির ফাঁসি কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছিল। তাকে জীবিত অবস্থায় চামড়া ছাড়ানো হয় এবং তার চামড়া খড় দিয়ে ভরাট করা হয়, একটি ক্রশে পেরেক দিয়ে ঝুলিয়ে যারা তার উপদেশ অনুসরণ করেছিল তাদের জন্য আতঙ্কজনক প্রদর্শণী হিসাবে গুন্ডেশপুর মহানগরের প্রধান ফটকের উপরে স্থাপন করা হয়। তার মৃতদেহ কেটে ফেলা হয় এবং মাথাটি একটি গজালের উপরে স্থাপন করা হয়। বাহরাম বহু মানিচিয়ানকে হত্যার আদেশও দিয়েছিলেন।[২২]
Remove ads
কাজ
মানির ধর্মশাস্ত্রে মূলত সিরিয়াক ভাষায় লিখিত লেখা ছয়টি রচনা এবং ফারসি ভাষায় একটি রচনা শাপুরাগান অন্তর্ভুক্ত ছিল। যদিও তার কোনও বই পুরো আকারে টিকে থাকতে পারেনি, সেগুলির মধ্যে অনেকগুলি টুকরো যার মধ্যে তার একটি রচনা থেকে একটি দীর্ঘ সিরিয়িক উদ্ধৃতি, পাশাপাশি মধ্য পারস্য, কপটিক এবং অন্যান্য অসংখ্য ভাষায় প্রচুর পরিমাণে উদ্ধৃতি রয়েছে। তার রচনার অংশগুলি টিকে থাকার উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে: শবুরাগান (মধ্য ফারসি), দৈত্যর বই (বহু ভাষায় অসংখ্য টুকরো), গুরুত্বপূর্ণ পত্র (সেন্ট অগাস্টিন এর দীর্ঘ উদ্ধৃতি), তার জীবন্ত ধর্মীয় বাণীর (বা মহান ধর্মীয় বাণী) এর কয়েকটি টুকরা, থিওডোর বার কোনাই কর্তৃক সিরিয়াক উদ্ধৃত অংশ এবং এডেসাকে লেখা তার চিঠিটি যেটি কোলনে মানি-কোডেক্স হিসেবে রয়েছে। মানি আরও লিখেছেন মানিচেয়েজমের একটি পবিত্র এবং অদ্বিতীয় বই যেটি মানিচিয়েজমের সৃষ্টি প্রকাশ এবং ব্যাখ্যা করার জন্য অনেকগুলি অঙ্কন ও চিত্রকর্ম এবং বিশ্বের ইতিহাস ধারণ করেছিল।
Remove ads
শিক্ষাদান

মানির শিক্ষার উদ্দেশ্য ছিল সিদ্ধি লাভ করা এবং খ্রিস্টান, জরাথ্রুস্টবাদ এবং বৌদ্ধ ধর্মের শিক্ষাগুলিকে অতিক্রম করা। এটি চিরকালের লড়াইয়ে আবদ্ধ ভাল এবং মন্দের কঠোর দ্বৈতবাদের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে।
তার বয়েস যখন ২৪-২৫, তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে শিক্ষা, আত্ম-ত্যাগ, উপবাস এবং সুদ্ধতার মাধ্যমে মুক্তি অর্জন করা সম্ভব। মানি নিউ টেস্টামেন্টে এবং শেষ নবী দ্বারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ পবিত্র আত্মা বলে দাবি করেন।[২৩]
যদিও তার ধর্ম পূর্বের পদ্ধতিতে খ্রিস্টান জ্ঞানবাদীদের আন্দোলন কঠোরভাবে অনুসরণ করত না, মানি নিজেকে "যিশুখ্রিষ্টের দূত" হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন, এবং প্রচলিত মানিচিয়েজম কবিতাগুলোতে ঘন ঘন যীশু এবং তার মা মেরিকে সর্বাধিক শ্রদ্ধার সহিত উচ্চপ্রশংসা করা হয়। মানিচিয়েজম ঐতিহ্যে আরো দাবী করা হয় যে, মানি জরোথ্রস্ট, ঐতিহাসিক বুদ্ধ এবং যীশু সহ বিভিন্ন ধর্মীয় ব্যক্তিরূপে পুনর্জন্ম লাভ করেন।
মানির অনুসারীরা একটি গির্জার কাঠামোয় সংগঠিত ছিল এবং তারা "নির্বাচিত" (electi) এবং "নিরীক্ষক" (auditores) শ্রেণিতে বিভক্ত ছিল। কেবলমাত্র "নির্বাচিত" (electi) শ্রেণীরা নিয়মগুলো কঠোরভাবে অনুসরণ করত, অডিটররা তাদের যত্ন নেওয়ার সময় আশা করতো পুনর্জন্মের পরে তারা ইলেক্টি হবে।
Remove ads
খ্রিস্টান এবং ইসলামী ঐতিহ্য
সারাংশ
প্রসঙ্গ
পশ্চিমে মৃত প্রাচীন খ্রিস্টানদের বিবরণ
মানির পাশ্চাত্য খ্রিস্টান ঐতিহ্য হলো কনস্ট্যান্টিনোপলের সক্রেটিস ভিত্তিক, যিনি পঞ্চম শতাব্দীর একজন ইতিহাস লেখক ছিলেন। এই বিবরণ অনুসারে, একজন সিথিয়ানোস, একজন সারেসেন, একজন মিশরীয় মহিলার স্বামী, "এম্পেডোক্লেস এবং পিথাগোরাসের মতবাদকে খ্রিস্টধর্মে প্রবর্তন করেছিলেন"; যে তার একজন শিষ্য ছিলেন, "বুদ্ধাস, আগে যার নাম তেরেবিন্থাস ছিল," তিনি পারস্য ভ্রমণ করেছিলেন, সেখানে তিনি বলেন যে তিনি কুমারী থেকে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং তার পরে চারটি বই লিখেছিলেন, একটি রহস্য , দ্বিতীয়টি দৈববাণী, তৃতীয়টি সম্পদ এবং একটি চতুর্থটি নেতা সিম্পর্কে। কিছু মরমী অনুষ্ঠান করার সময়, তাকে একটি ডায়ামন দ্বারা একটি উচু জায়গা থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছিল এবং হত্যা করা হয়েছিল। একজন স্ত্রীলোক যার বাড়ীতে তিনি তাকে দাফন করেছিল, তার সম্পত্তি দখল করেছিল এবং কিউব্রিকাস নামে সাতের একটি ছেলে কিনেছিল। এই ছেলেটিকে সে মুক্ত করে এবং শিক্ষিত করে, সম্পত্তি ও বুদ্ধাস-তেরেবিন্থাসের বই ত্যাগ করে। এরপর কিউব্রিকাস পার্সিয়ায় ভ্রমণ করেন, সেখানে তিনি মেনেসের নাম নেন এবং বুদ্ধাস তেরেবিন্থেসের মতবাদকে তার নিজের মতবাদ বলে প্রচার করেন। পারস্যের রাজা যখন শুনলেন যে সে অলৌকিক কাজ করে তখন তার অসুস্থ পুত্রকে সুস্থ করার জন্য তাকে পাঠালেন, কিন্তু শিশুটির মৃত্যু হলে মানেসকে কারাগারে বন্দী করেন। সেখান থেকে পালিয়ে তিনি মেসোপটেমিয়ায় চলে যান, কিন্তু পার্সিয়ার রাজার হুকুমে তাকে খুজে বের করে বন্দি করা হয় এবং জীবন্ত অস্থায় চামড়া ছিলানো হয়, তার চামড়া ভূষি দিয়ে ভরাট করা হয় এবং শহরের ফটকের সামনে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
জেরোমের মতে, আর্কিলাস সিরিয়াক ভাষার "ম্যানিকাস" নিয়ে তার বিতর্কের বিবরণ লিখেছিলেন, সেখান থেকে এটি গ্রীক ভাষায় অনুদিত হয়েছিল। গ্রীকটি হারিয়ে গেছে, এবং কাজটি মূল পাঠ থেকে দূরে সরে গিয়ে কেবলমাত্র গ্রীক থেকে লাতিন অনুবাদটি সন্দেহজনক বয়সের এবং বিশ্বস্ততার সাথে টিকে আছে, সম্ভবত এটি ৫ম শতাব্দীর পরে তৈরি হয়েছিল। ফোটিয়াস বলেন, মানিচিয়েনদের বিরুদ্ধে তার লেখা বইটিতে চ্যালসেডনের বিশপ হেরাক্লিয়ান বলেছেন, আর্কেলেয়াসের বিতর্কটি একজন হেজমনিয়াস লিখেছেন, তিনি একজন লেখক, অন্যথায় সন্ধানযোগ্য নয় এবং অজানা তারিখের লেখক ছিলেন।
লাতিন আখ্যানটিতে "মানেস" কোথা থেকে এসেছেন সে সম্পর্কে বলা হচ্ছে, দরবার থেকে পালায়নের পর এরাবিয়ন সীমান্ত দুর্গ থেকে রোমান মেসোপটেমিয়ার একটি শহর কেসচার বা কারচারের মার্সেলুস নামে এক বিশিষ্ট খ্রিস্টানকে ধর্মান্তরিত করার আশায় সেখানে যান, যার কাছে তিনি পূর্বেই একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন: “মানিচিউস যীশু খ্রীষ্টের দূত এবং আমার সাথে আছে সকল সাধুসন্তরা ও কুমারীরা, মার্সেলুসকে শান্তির দাওয়াত দিচেছ।” তার দলে তিনি বাইশজন (বা বারো) যুবক এবং কুমারী নিয়ে এসেছিলেন। মার্সেলুসের অনুরোধে তিনি বিশপ আর্কিলাসের সাথে ধর্ম নিয়ে বিতর্ক করেন, বিতর্কে তিনি পরাজিত হন এবং পার্সিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। যাওয়ার পথে তিনি ডায়োডোরাইড শহরে একজন যাজকের সাথে বিতর্কের প্রস্তাব করেন; কিন্তু আর্কিলাস যাজকের পরিবর্তে বিতর্কে অংশ নিয়ে আবারও তাকে পরাজিত করেন; যারফলে, খ্রিস্টানদের দ্বারা পার্সিয়ানদের হাতে তুলে দেওয়ার ভয়ে তিনি এরাবিয়ন ফিরে যান।
এই পর্যায়ে আর্কিলাস জনগণের সাথে বক্তৃতায় তার সঙ্গে “এই মানেস”-এর ঘটনাটি অন্তর্ভুক্ত করেন, সক্রেটিসে পুনরক্তির প্রভাব খুব ভালভাবে কাজ করে। সাথে আরো বিস্তারিত হলো: সিথিয়ানোস দূতদের যুগে বাস করতেন; তেরেবিন্থাস বলেন যে, বুদ্ধাস নামটি তার উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে; পর্বতমালায় তাকে একজন দেবদূত নিয়ে এসেছিলেন; পার্কুস নামে একজন পার্সিয়ান নবী এবং মিথ্রার পুত্র ল্যাবডাকুস তাকে জোচ্চুরি করে দোষী সাব্যস্ত করেছিল; এই বিতর্কের মধ্যে তিনি পারিপার্শিক সম্পর্কে শিখেছেন যে, দুটির আলোক উৎস, একটি আত্মার পনর্জন্ম আরেকটি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে নীতির যুদ্ধ; ষাট বছর বয়সে "করবিসিয়াস" বা কর্বিকাস তেরেবিন্থাসের বই অনুবাদ করেন; তিনি থমাস, আদ্দাস এবং হার্মাস নামে তিনজন প্রধান শিষ্য বানিয়েছিলেন, তিনি প্রথমজনকে মিশরে এবং দ্বিতীয়জনকে সিথিয়ায় পাঠিয়েছিলেন, তৃতীয়জনকে তার নিজের কাছে রেখেছিলেন; তিনি কারাগারে থাকাকালীন সময়ে দুজন প্রাক্তন শিষ্য ফিরে এসেছিলেন এবং তিনি তাদেরকে তার জন্য খ্রিস্টানদের বই সংগ্রহ করার জন্য পাঠিয়েছিলেন, যা তিনি পরে অধ্যয়ন করেছেন। লাতিন বর্ণনানুসারে, অবশেষে, এরাবিয়নে ফিরে আসলে তাকে পারস্যের রাজার কাছে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়, রাজার নির্দেশে তার চামড়া ছিলানো হয়, তার দেহ পাখিদের খাওয়ার জন্য ফেলে রাখা হয় এবং তার চামড়ায় বাতাস ভরে শহরের ফটকে ঝুলানো হয়।[২৪]
মধ্যযুগীয় ইসলামিক বিবরণ

মানিকে এমন একজন চিত্রশিল্পী হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে যিনি জরাথ্রুস্টবাদের বিরোধিতা করে একটি সাম্প্রদায়িক আন্দোলন গড়ে তুলেন। তিনি প্রথম শাপুর দ্বারা নির্যাতিত হয়ে মধ্য এশিয়ায় পালিয়ে যান, সেখানে তিনি শিষ্য তৈরি করেন এবং একটি টিচিঘিল চিত্রশোভিত করেন (বা পিকচারাম ডোমাস চিনেসিস) এবং ঘলবিতা নামে আরও একটি মন্দির তৈরি করেন। ঝরণাযুক্ত একটি গুহা আগে থেকে ব্যবস্থা করা ছিল, তিনি তার শিষ্যদের বলেছিলেন যে তিনি বেহেশতে যাচ্ছেন এবং এক বছরের আগে আর ফিরে আসবেন না, এর পরে তারা তাকে গুহায় খুজতে লাগল। তারা এক বছর পরে সেখানে ফিরে এসে তাকে খুঁজে পেল, এরপরে তিনি তাদেরকে ইরজেনক বা এসটেনক আরজাং নামে একটি সচিত্র বই দেখালেন, তিনি বলেন যে তিনি স্বর্গ থেকে এটি নিয়ে এসেছেন: এরপর তার অনেক অনুসারী ছিল, শাপুরের মৃত্যুতে তাদেরকে সাথে নিয়ে তিনি পার্সিয়ায় ফিরে এলেন। নতুন রাজা হরমিসদাস এই সম্প্রদায়ের সাথে যোগদান করেন এবং তাদের রক্ষা করেন; এবং মানি একটি দুর্গ নির্মান করেন। পরবর্তী রাজা বাহরাম বা বারানেস প্রথমে মানির পক্ষে ছিলেন; কিন্তু, তাকে কিছু জরোথ্রস্ট শিক্ষকের সাথে বিতর্ক করার পরে, তাকে জীবিত অবস্থায় চামড়া ছিলানো হয় এবং চামড়াটি স্টাফ[২৫] করা হয় এবং ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
Remove ads
আরও দেখুন
- মার আমো
- কোলন মানি-কোডেক্স
- মানডিয়েজম
- মানির সুসমাচার
- দি গার্ডেন অব লাইট
- আরজাং
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads