শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
মিষ্টি আলু
উদ্ভিদের প্রজাতি উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
মিষ্টি আলু (বৈজ্ঞানিক নাম: Ipomoea batatas) Convolvulaceae পরিবারের Ipomoea গণের একটি লতানো বীরুৎ।


Remove ads
চাষাবাদ

এই লতানো উদ্ভিদ অতিরিক্ত ঠাণ্ডা সহ্য করতে পারে না। এটির জন্য গড় তাপমাত্রায় ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৭৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট), প্রচুর পরিমাণে রোদ এবং উষ্ণ রাত ভাল। এই আলু চাষের জন্য ৭৫০-১০০০ মিমি (৩০-৩৯ ইঞ্চি ) বার্ষিক বৃষ্টিপাত দরকার। ফসল লাগানোর ৫০-৬০ দিন পরে শাখা-প্রশাখা, শেকড় পুষ্ট হয়।[১]
Remove ads
বিস্তৃতি
মিষ্টি আলু বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, আমেরিকা, আফ্রিকাসহ নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে জন্মে থাকে।
উৎপাদন
২০১৭ সালে সারা বিশ্বে ১১৩০ লক্ষ টন মিষ্টি আলুর উৎপাদন হয়েছিল। এই উৎপাদনের শতকরা ৬৪ ভাগ উৎপাদন করেছিল চীন দেশ।[২]
উপকারিতা
মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণ বিটা ক্যারটিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, ফাইবার রয়েছে। U.S. Food and Drug Administration এর মতে “একটি মিষ্টি আলুতে ১০০ এর বেশি ভিটামিন এ রয়েছে যা প্রতিদিনের ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে থাকে”। হাত-পায়ের আঙুল ফলা কমানো, প্রসাবের সমস্যা দূর করা সহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার জন্য এর পাতা ও মূল ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
পুষ্টিগুণ
সারাংশ
প্রসঙ্গ
মিষ্টি আলুর যেগুলির রাঙা আবরণ- তাদের মধ্যে যে পুষ্টি উপকরণ তা সাদা মিষ্টি আলুর তুলনায় বেশি। একটি আলুতে আছে ১০০ ক্যালোরি, ২ গ্রাম প্রোটিন, ২২ গ্রাম শ্বেতসার, ৩ গ্রাম আঁশ, ০ গ্রাম চর্বি। এছাড়া ১টি মিষ্টি আলু থেকে প্রতিদিনের চাহিদা ২৬০ভাগ ভিটামিন এ পাওয়া যায়। ১২.৬ভাগ ভিটামিন বি৬, ২৮ভাগ ভিটামিন সি।
Remove ads
পুষ্টির উৎস হিসেবে মিষ্টি আলু
- ভিটামিন সি ও ডি এর উৎস
মিষ্টি আলু ভিটামিন সি ও ডি-এরও সমৃদ্ধ উৎস। ভিটামিন সি ঠাণ্ডা প্রতিরোধে ও ভিটামিন ডি স্বাস্থ্যকর হাড়, হৃৎপিণ্ড, স্নায়ু, ত্বক ও দাঁতের জন্য জরুরি।ভিটামিন সি দাঁত, হাড় এবং কোষ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্ষত সারাতে, শরীরে কোলাজন উৎপাদন করে ত্বকের নমনীয়তা ধরে রাখতে ভিটামিন সি এর প্রয়োজন হয়। ;আয়রনের উৎস মিষ্টি আলু আয়রনেরও ভালো উৎস। এটি আমাদের শরীরে শ্বেতকণিকা তৈরি, চাপ প্রতিরোধ, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা কার্যকর রাখাসহ নানা কাজে আসে।
- অন্যান্য খনিজ উপাদান
মিষ্টি আলুতে ম্যাঙ্গানিজ ও পটাশিয়ামও রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। ধমনী, রক্ত, হাড় ও মাংসপেশির সুস্থতায় ও স্নায়ুর সুষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য ম্যাগনেসিয়াম প্রয়োজন।
Remove ads
রোগ প্রতিরোধ
সারাংশ
প্রসঙ্গ
মিষ্টি আলু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- ডায়াবেটিস প্রতিরোধে
মিষ্টি আলু প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি হয়, যা রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। প্রাকৃতিক চিনি কাজের শক্তি প্রদান করে অবসাদ, ক্লান্তি দূর করে থাকে। মিষ্টি আলুতে প্রাকৃতিকভাবে চিনি থাকলেও তা খুব ধীরে ধীরে রক্তের সঙ্গে মিশে যায়। এতে শরীর শুধু শক্তির নিয়মিত জোগানই পায় না, শরীরে শক্তির ভারসাম্যও বজায় থাকে। এটি শর্করা হলেও বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে মিষ্টি আলু রক্তের সুগার মান সুস্থিতিতে এবং ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হ্রাস করতে বেশ উপযোগী। মিষ্টি আলুতে বেশ আঁশ আছে, এর গ্লাইসিমিক ইনডেক্স বেশ নিচুতে (৫০)। তবে এতে আরো কিছু উপাদান আছে যে জন্য রক্তের সুগার কমাতে এটি উপযোগী। আমাদের চর্বি কোষ থেকে উৎপন্ন হয় প্রোটিন হরমোন ‘এডিপোনেকটিন’। যাদের ডায়েবেটিস তাদের শরীরে এডিপোনেক্টিন হরমোন নিচু এবং মিষ্টি আলুর নির্যাস টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে এডিপোনেকটিন মান তাৎপর্যপূর্ণভাবে বাড়ায়।
- পেটের রোগে
ইরিটিবেল বাউয়েল সিনড্রোম (আইবিএস) এবং আলসারেটিভ কোলাইটিসের মত পেটের রোগেও উপকারী। মিষ্টি আলুর আরও রয়েছে প্রদাহরোধী গুণ। দেখা গেছে মিষ্টি আলুতে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট যা আছে, সেগুলো প্রদাহসূচকগুলো হ্রাসে সহযোগী
- হৃদরোগে এবং হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে
এ সবজি ভিটামিন বি৬-এর একটি ভালো উৎস। এটি আমাদের শরীরে হোমোসাইস্টিন নামের কেমিক্যাল কমাতে সহায়তা করে। এই কেমিক্যাল হৃদরোগসহ নানা ধরনের অসুখের অন্যতম কারণ। পটাশিয়াম হৃৎস্পন্দন স্বাভাবিক রাখতে, কিডনি সুরক্ষায় ও একে কর্মক্ষমতা স্বাভাবিক পর্যায়ে রাখে। Harvard University School of Public Health এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি৬ রয়েছে, যা রক্তের হমোসাইটিনিন ভেঙ্গে দিয়ে রক্তের ধমনী এবং শিরায় রক্ত চলাচল সচল রাখে। এর পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রেখে হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া ইলেক্ট্রোলাইট হার্টবিট নিয়মিত রাখে।
- রাতকানা রোগে
রাতকানা রোগের ক্ষেত্রেও এর উপকারিতা লক্ষ্য করা যায়। সে ক্ষেত্রে রোগীকে প্রাণীর, বিশেষ করে খাসীর কলিজা সাথে মিষ্টি আলু খাওয়াতে হবে ।এ ছাড়াও বৃক্কের কার্যক্ষমতায় ঘাটতি বা কাঙ্ক্ষিত সময়ের আগেই বীর্যস্খলন-এর সমস্যায় এই উদ্ভিদ কাজে লাগে। গবেষণায় আরো দেখা গেছে, মিষ্টি আলুতে যে সব ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট রয়েছে এগুলো ভারি ধাতু ও মুক্ত মূলকের সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি হ্রাস করার ব্যাপারে বেশ সহায়ক।
- ক্যান্সার প্রতিরোধক
দেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হল বিটা-ক্যারটিন। একটি মাঝারি আকৃতির মিষ্টি আলুতে ভিটামিন এ এবং বিটা-ক্যারটিন রয়েছে। ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা, দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে সাহায্য করে। School of Public Health’s Department of Nutrition গবেষণায় দেখেছেন যে, বিটা ক্যারটিন প্রোসটেট ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে থাকে।
- দুশ্চিন্তা নিরাময়ক
ম্যাগনেসিয়াম স্বাস্থ্যকর রক্ত, হাড়, হার্ট, পেশী এবং নার্ভ গঠন করতে সাহায্য করে। এছাড়া ম্যাগনেসিয়াম স্ট্রেস, দুশ্চিন্তা দূর করে মন চিন্তা মুক্ত রাখতে সাহায্য করে।National Health and Nutrition Examination Survey এক জরিপে প্রকাশ করেছে যে, ২ভাগ আমেরিকান প্রতিদিন ৪৭০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম সাপ্লিমেনটরি গ্রহণ করে থাকে। অথচ একটি মাঝারি আকৃতির মিষ্টি আলুতে রয়েছে ৫০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম। Medical News Daily এর মতে প্রতিদিন পটাশিয়াম গ্রহণ প্রায় ২০ভাগ বিভিন্ন রোগে মৃত্যু ঝুঁকি হ্রাস করে থাকে।
Remove ads
খাওয়ার পদ্ধতি
তাজা মিষ্টি আলু খুব ভালো। ঝলসানো বা সেঁকা আলু সঙ্গে দধি (টক দধি) খুব ভালো খাবার। সুপ ও স্টু বানাতেও এ সবজিটি ব্যবহার করা যেতে পারে। মিষ্টি আলুর থেকে খুব ভাল সুস্বাদু মিষ্টি তৈরি হয়। মিষ্টি আলুর গোলাপ জাম মিষ্টি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বেশ জনপ্রিয়।

তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads