শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
মুহাম্মদ বিন তুগলক
দিল্লির সুলতান উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
মুহাম্মদ বিন তুগলক (আরবিঃمحمد بن تغلق), (অপর নাম: শাহজাদা ফখর মালিক, জুনা খান) ১৩২৫ থেকে ১৩৫১ সাল পর্যন্ত মুহাম্মদ রাজবংশের শাসক ও দিল্লির সুলতান ছিলেন। মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন তুগলকের জ্যেষ্ঠ পুত্র ছিলেন। ১৩২৫ সালে তার বাবা গিয়াসউদ্দিন তুগলকের মৃত্যু হলে তিনি সিংহাসনে আরোহণ করেন। মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ যুক্তি, দর্শন, গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞানে একজন পণ্ডিত ছিলেন এবং শারিরীক বিজ্ঞান এবং ঔষধবিজ্ঞানে তার ভাল ধারণা ছিল । এছাড়াও তুর্কিশ, আরবি, ফার্সি এবং উর্দু ভাষা তার আয়ত্তে ছিল।[২] দিল্লি জন্মগ্রহণকারী তুগলক বংশের এই শাসক সম্ভবত মধ্যযুগের সবচেয়ে শিক্ষিত, যোগ্য ও দক্ষ সুলতান ছিলেন তবে তার কিছূ হেঁয়ালী আচরণের কারণেও তার আলাদা পরিচিতি রয়েছে। তার শাসন আমলেই মরোক্কোর বিশ্ববিখ্যাত ভ্রমণকারী ইবন বতুতা তার সাম্রাজ্য ভ্রমণ করেন।[৩]
Remove ads
সাম্রাজ্যের ভেঙে পড়া
মুহাম্মদ বিন তুগলক ১৩৫১ সালে সিন্ধু রাজ্যের ঠাট্টা অঞ্চলে সুমরু গোষ্ঠির সাথে যুদ্ধে মৃত্যুবরণ করেন। জীবিত থাকা অবস্থাতেই তার রাজ্যে ভাঙনের সূত্রপাত হয়। তার রাজত্বকালেই দাক্ষিনাত্যের মালভূমি অঞ্চল তার রাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তৎকালীন দক্ষিণ ভারতের কিছু অংশের শাসক প্রলয়ভেমা রেড্ডি ও মুসুনুরি কাপানিডু তাদের নিজ নিজ শাসিত অঞ্চল দিল্লির অধীন থেকে মুক্ত করাতে সক্ষন হন। এতে করে দিল্লির অধীনস্থ অন্যান্য অঞ্চলসমূহের শাসক এবং তাদের গভর্নরদের কাছে দিল্লির মর্যাদা কমে যায় এবং ভাঙ্গন অবশ্যম্ভাবি হয়ে পড়ে।
Remove ads
মুদ্রা ব্যবস্থা
মুহাম্মদ বিন তুগলক তৎকালীন সমসাময়িক অন্যান্য সম্রাজ্যের মত মুদ্রা ব্যবস্থা চালু করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি তার পূর্বসূরীদের চেয়েও অনেক বেশি মুদ্রা বাজারে ছাড়েন। তার চালুকৃত স্বর্নমূদ্রাগুলি ওজনে অন্যান্য মুদ্রার চেয়ে অনেক ভারী ছিল এবং আরবি হরফের ক্যালিগ্রাফি সংযুক্ত ছিল। এই মুদ্রাকে বলা হত “টংকা”। তিনি রূপার মুদ্রাও চালু করেছিলেন যা “আধুলি” নামে পরিচীত ছিল কিন্তু চালুর সাত বছরের মধ্যে জনগনের কাছে এর অগ্রহণযোগ্যতার জন্য তুলে নিতে বাধ্য হন। মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ কাগজে ছাপা মুদ্রা চালু করার পরিকল্পনা করেছিলেন কিন্তু কিছু প্রভাবশালী প্রজা এবং কয়েকজন সভাসদের বিরোধিতার মুখে তিনি এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে বাধ্য হন।
Remove ads
ধর্মনীতি
মুহাম্মদ বিন তুগলকের ধর্মনীতি অনেক উদারপন্থি ছিল। তার রাজত্বে হিন্দু, মুসলিম এবং অন্যান্য ধর্মের লোকেরা নির্বিঘ্নে বসবাস করতেন। হিন্দু এবং অন্যান্য ধর্মের প্রসারে তিনি যথেষ্ট পৃষ্ঠপোষকতা করতেন।
তুগলকি কাণ্ড
বাংলায় "তুগলকি কাণ্ড" নামে যে বাগধারাটি রয়েছে তার উৎপত্তি মূলত মুহাম্মদ বিন তুগলকের আজব কাণ্ড কারখানা থেকেই। তিনি অধিকাংশ সময়ই লঘু পাপে গুরু দন্ড দিতেন এবং এর থেকে ধনী, গরীব, মুক্ত কিংবা কৃতদাস কেউই রেহাই পেতেন না। এছাড়াও তার আচরণ ছিল রহস্যময়। কথিত আছে একবার কিছু প্রজা তার নামে বিদ্রুপপূর্ণ আজেবাজে কথা লিখে খামে ভরে শহরে প্রচার করেছিল এবং তার দরবার হলের দিকে ছুড়ে মেরেছিল। এতে করে তিনি ক্ষিপ্ত হন এবং সিদ্ধান্ত নেন দিল্লি থেকে সব প্রজাদের বের করে দিবেন। শহরে ঢোল পিটিয়ে ঘোষণা দেওয়া হল আগামী তিন দিনের মধ্যে প্রজাদেরকে শহর খালি করে দিতে হবে। এর ফলে বেশিরভাগ মানুষ ভয়ে শহর ছেড়ে চলে গেলেও অনেকে আত্নগোপন করে থাকল। সময়সীমা পার হলে তিনি শহর তল্লাশি করার হুকুম দেন এবং যাদের পাওয়া যায় তাদের হয় হত্যা করা হয়, নাহয় টেনে হিঁচড়ে পার্শবর্তী শহর দৌলতাবাদে রেখে আসা হয়। পুরো শহর ফাঁকা হয়ে যাওয়ার পর একদিন তিনি তার প্রাসাদের ছাদে উঠে যখন দেখলেন যে শহরের কোথাও আগুন জ্বলছে না তখন তিনি বলে ওঠেন "এখন আমার মন শান্ত হয়েছে, রাগ কমেছে।"[৪] তবে নির্ভরযোগ্য বর্ণনা থেকে জানা যায়, রাজধানী স্থানান্তর এর যে ঘটনার জন্যে মূহম্মদ বিন তুঘলক এর দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ করা হয় সেটা হলো, তিনি লাগাতার মোঙ্গল অভিযানের ফলে মোঙ্গল আক্রমণের হাত থেকে দেশের রাজধানী কে রক্ষা করার জন্য রাজধানী স্থানান্তর করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন এবং তার নাম দৌলতাবাদ রাখেন। মানুষের কষ্ট উপলব্ধি করে তিনি রাজধানী আবার দিল্লিতে স্থানান্তর করেন। তবে ঐতিহাসিকরা ঐকমত্য পোষণ করেন যে, আলাউদ্দিন খিলজি দক্ষ হাতে ও সফলভাবে মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিহত করতে না পারলে ভারতের ইতিহাস স্থায়ীভাবে অন্যরকম লেখা হতো।
Remove ads
গ্যালারি
- মুহাম্মদ বিন তুগলকের সময়কার একটি রৌপ্য মূদ্রা
তথ্যসূত্র
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads