শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

মূলসর্বাস্তিবাদ

ভারতের প্রাথমিক বৌদ্ধ সম্প্রদায় উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

মূলসর্বাস্তিবাদ
Remove ads

মূলসর্বাস্তিবাদ (সংস্কৃত: मूलसर्वास्तिवाद; ঐতিহ্যগত চীনা: 根本說一切有部; পিনয়িন: Gēnběn Shuō Yīqièyǒu Bù) ছিল ভারতের একটি আদি বৌদ্ধ সম্প্রদায়। মূলসর্বাস্তিবাদের উৎপত্তি এবং সর্বাস্তিবাদ সম্প্রদায়ের সঙ্গে এর সম্পর্কে আজও সঠিক কিছু জানা যায় না। যদিও এ বিষয়ে অনেক কিছু অনুমান করা হয়। মূলসর্বাস্তিবাদ বিনয় শাখাটি তিব্বতি ও মোঙ্গোলিয়ানরা আজ পর্যন্ত রক্ষা করে চলেছেন।

Thumb
মূলসর্বাস্তিবাদ শাখার তিব্বতি বৌদ্ধ ভিক্ষুগণ
Remove ads

ইতিহাস

সারাংশ
প্রসঙ্গ

ভারতে

মূলসর্বাস্তিবাদ ও সর্বাস্তিবাদ শাখার মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে বিতর্ক আছে। আধুনিক গবেষকরা মনে করেন, দুটি সম্পূর্ণ পৃথক সম্প্রদায়।[] ইজিংয়ের মতে, মূলসর্বাস্তিবাদ সর্বাস্তিবাদ শাখা থেকে উৎপন্ন। কিন্তু বুটন রিনচেন ড্রাব বলেছেন, নামটি সকল বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ‘মূল’ বা শিকড় সর্বাস্তিবাদের প্রতি একটি শ্রদ্ধার্ঘ।[] এই দুই সম্প্রদায় কীভাবে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত তা নিয়ে গবেষক মহলে বিভিন্ন তত্ত্ব রয়েছে। ভিক্ষু সুজাতো সেগুলির সারসংক্ষেপ করে বলেছেন:

এই সম্প্রদায় সম্পর্কে দ্বন্দ্ব থেকে একাধিক তত্ত্বের জন্ম হয়েছে। ফ্রউয়ালনেরের মতে, মূলসর্বাস্তিবাদ বিনয় হল মথুরা-ভিত্তিক একটি আদি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের শৃঙ্খলাবিধি। এটি কাশ্মীরের সর্বাস্তিবাদ সন্ন্যাসী সম্প্রদায়ের থেকে অনেকটাই আলাদা (যদিও এর মানে এই নয় যে দুই সম্প্রদায়ের মতবাদ আলাদা)। এই মতের বিরুদ্ধে ল্যামোট বলেছেন, মূলসর্বাস্তিবাদ বিনয় পরবর্তী যুগে সংকলিত কাশ্মীরী বিনয়। এটি সংকলিত হয়েছিল সর্বাস্তিবাদ বিনয়কে পরিপূর্ণতা দেওয়ার জন্য। ওয়ার্ডার মনে করেন, মূলসর্বাস্তিবাদ সর্বাস্তিবাদ সম্প্রদায় থেকেই পরবর্তীকালে উৎসারিত। এই মতবাদের মূল কীর্তি সাহিত্য-সংক্রান্ত। একটি বৃহৎ বিনয় ও সদ্ধর্মস্মৃতিউপস্থান সূত্র এই মতের কীর্তি। এই গ্রন্থগুলি প্রাচীন মতবাদকে বজায় রেখেও সমসাময়িক সাহিত্যের সঙ্গে একে মিলিয়ে নিয়েছিল। এনোমোটো এই সব যুক্তি অস্বীকার করে বলেছেন, উভয় মতবাদ কার্যত একই। অন্যদিকে মিলমেন, ডেসেন ও কক্স বলেছেন সর্বাস্তিবাদের সৌতান্তিক শাখা খ্রিস্টপূর্ব ২০০ অব্দ নাগাদ গান্ধার অঞ্চলে উৎসারিত হয়। এগুলি আদি সম্প্রদায় হলেও সাময়িকভাবে কণিষ্কের রাজনৈতিক প্রভাবে কাশ্মীরে বৈভাষিক শাখার কাছে জমি হারায়। পরবর্তীকালে সৌতান্তিকরা মূলসর্বাস্তিবাদী নামে পরিচিত হয় ও জনপ্রিয়তা লাভ করে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এনোমোটো ও মিলমেন প্রমুখের যুক্তিকে অস্বীকার করি। ওয়ার্দার বা ল্যামোট কেউই উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে নিজেদের যুক্তিকে স্থাপন করতে পারেননি। ফ্রউয়ালনের যুক্তিটিই রয়ে গেল। অন্যান্য যুক্তির বিরুদ্ধে এটিকেই মেনে নিতে হয়।[]

গ্রেগরি কোপেনের মতে, মূলসর্বাস্তিবাদের উৎপত্তি খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দীতে এবং ভারতে এই মতবাদের পতন হয় সপ্তম শতাব্দীতে।[]

মধ্য এশিয়াতে

মধ্য এশিয়া অঞ্চলে ধর্মপ্রচারকদের কার্যকলাপের ফলে ওই অঞ্চলে মূলসর্বাস্তিবাদ মতবাদ প্রসারিত হয়েছিল। গবেষকরা মধ্য এশিয়ায় বৌদ্ধধর্ম প্রসারে তিনটি পৃথক প্রচারক কর্মপর্যায়ের উল্লেখ করে থাকেন। এগুলি কালানুক্রমিকভাবে নিম্নোক্ত তিন সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত:[]

  1. ধর্মগুপ্তক
  2. সর্বাস্তিবাদ
  3. মূলসর্বাস্তিবাদ

শ্রীবিজয়ে

সপ্তম শতাব্দীতে, ইজিং লিখেছিলেন, মূলসর্বাস্তিবাদ শ্রীবিজয় রাজ্যের (অধুনা ইন্দোনেশিয়া) সর্বত্র প্রধান মতবাদ ছিল। ইজিং শ্রীবিজয়ে ছয় বা সাত বছর ছিলেন। এই সময় তিনি সংস্কৃত শিখে সংস্কৃত থেকে চীনা ভাষায় ধর্মগ্রন্থগুলি অনুবাদ করেছিলেন। ইজিং বলেছেন, মূলসর্বাস্তিবাদ বিনয় এই অঞ্চলে সর্বত্র গৃহীত হয়েছিল।[] তিনি লিখেছেন, তিনি যা পড়েছেন এবং সেখানকার নিয়মকানুন ও উৎসব-অনুষ্ঠান সবই ছিল ভারতের মতো।[] ইজিং বর্ণনা করেছেন, দ্বীপগুলি প্রধানত ছিল ‘হীনযানী’। কিন্তু মেলায়ু রাজ্যে অসঙ্গেরযোগাচারভূমি-শাস্ত্র প্রভৃতি মহাযান মত প্রচলিত ছিল।

Remove ads

বিনয় পরম্পরা

মূলসর্বাস্তিবাদ বিনয় হল তিনটি বিদ্যমান বিনয় পরম্পরার একটি (অন্যগুলি হল ধর্মগুপ্তক ও থেরবাদ)। তিব্বতের সম্প্রাট রালপাচেন শুধুমার মূলসর্বাস্তিবাদ বিনয় অনুমোদন করেছিলেন। যেহেতু মোঙ্গোলিয়ান বৌদ্ধধর্ম তিব্বত থেকে গিয়েছিল, তাই মোঙ্গোলিয়ানরাও এই নিয়ম অনুসরণ করে।

মূলসর্বাস্তিবাদ বিনয় পাওয়া যায় তিব্বতি (নবম শতাব্দীর অনুবাদ) ও চীনা (অষ্টম শতাব্দীর অনুবাদ) সংস্করণে। এর কিছু কিছু অংশ সংস্কৃতেও পাওয়া যায়।

Remove ads

পাদটীকা

আরও পড়ুন

বহিঃসংযোগ

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads