ক্রমিক নং | নাম | অবস্থান | বর্ণনা |
০১ | আদাবর গণকবর | মোহাম্মদপুর, ঢাকা। | ঢাকা জেলার মোহাম্মদপুর জয়েন্ট কলোনি ও কল্যাণপুর বাস ডিপোর মাঝামাঝি স্থানে আদাবর গ্রামটি (বর্তমান আদাবর থানা) অবস্থিত। ১৯৭২ সালে এখানে বেশ কিছু গণকবরের সন্ধান পাওয়া যায়। এসব গণকবর থেকে শত শত মানুষের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী, রাজাকার ও আলবদর বাহিনী এখানে ব্যাপক হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল বলে এলাকাবাসী উল্লেখ করেন। এছাড়া এখানে একটি মসজিদের পাশে পাওয়া গেছে সর্ববৃহৎ গণকবরটি। বিভিন্ন স্থান থেকে নিরপরাধ, নির্দোষ মানুষদের ধরে এনে এখানে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে মাটিচাপা দেওয়া হতো। স্বাধীনতার পর পর স্থানীয় অধিবাসীরা এখান থেকে অসংখ্য লাশ ও কঙ্কাল উদ্ধার করে। [৬][৭][৮][৯] |
০২ | মোহাম্মদপুর থানা উত্তর সীমান্ত বধ্যভূমি | মোহাম্মদপুর, ঢাকা | ঢাকা জেলার মোহ্ম্মাদপুর থানার উত্তর সীমান্তে পাঁচটি গণকবরের সন্ধান পাওয়া যায়। এই গণকবরগুলোতে শত শত মানুষের কঙ্কাল রয়েছে বলে গ্রামবাসীরা জানান। পাকহানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় সহযোগী রাজাকার-আলবদররা নারী-পুরুষ-শিশু নির্বিশেষে নিরীহ বাঙালিদের হত্যার পর এখানে মাটিচাপা দিতো। প্রাপ্ত বেশ কয়েকটি কঙ্কালের খুলিতে লম্বা চুল ও চুড়ি দেখে বোঝা যায় এগুলো নারীদের দেহাবশেষ। উল্লেখ্য, স্থানীয় অধিবাসীদের বক্তব্য অনুযায়ী এ এলাকায় আরো অনেক গণকবর রয়েছে। [১০][১১][১২] |
০৩ | রোকেয়া হল গণকবর | রোকেয়া হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা | একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে পাক হানাদার বাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীনিবাস রোকেয়া হলে আক্রমণ চালায়। তারা হলে অবস্থানরত চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যসহ মোট ৪৬ জনকে হত্যা করে। পরে তারা এই লাশগুলো মাটিতে পুঁতে ফেলে তার ওপর দিয়ে ট্যাঙ্ক চালিয়ে দেয়। স্বাধীনতার পর রোকেয়া হলের এই গণসমাধি খনন করে প্রায় ১৫টি মাথার খুলি ও হাড়গোড় উদ্ধার শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ সংলগ্ন কবররস্থানে সমাহিত করা হয়।[১৩][১৪][১৫][১৬][১৭][১৮][১৯] |
০৪ | বসিলা ইটখোলা বধ্যভূমি | রায়েরবাজার, ঢাকা | ঢাকার মিরপুরের বসিলার ইটখোলা বধ্যভূমিতে পাকবাহিনী বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকদের ধরে এনে হত্যা করতো। স্বাধীনতার পর এখানে বহু মানুষের
মাথার খুলি ও হাড়গোড় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়।[২০][২১] |
০৫ | রায়েরবাজার বধ্যভূমি | রায়েরবাজার, ঢাকা | একাত্তরের ২৫ শে মার্চ থেকেই মিরপুরের রায়েরবাজার এলাকা পাকহানাদারদের অন্যতম বধ্যভূমিতে পরিণত হয়। এখানকার প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছিল এই বধ্যভূমি। যুদ্ধের ৯ টি মাস পাকহানাদার, আলবদর ও রাজাকাররা এখানে বাঙালি নিধনযজ্ঞ চালিয়েছে। একাত্তরের ১৮ ডিসেম্বর রায়েরবাজারের এই বধ্যভূমিটি আবিষ্কৃত হয়। ঐদিন রায়েরবাজারের বিভিন্ন জায়গা থেকে অসংখ্য লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া এখানকার বিস্তীর্ণ মাঠ ও মাটির ঢিবির মধ্যে পড়ে ছিল অসংখ্য নরকঙ্কাল। এই বধ্যভূমিতেই বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের ধরে এনে হত্যা করা হয়েছিল।[৭][২২][২৩] |
০৬ | শিয়ালবাড়ি বধ্যভূমি | ঢাকার কেন্দ্র থেকে ১৩ মাইল উত্তরে মিরপুরের উপকন্ঠে শিয়ালবাড়ি ছিল একটি গ্রাম। বর্তমানে এটি মিরপুর ২ নম্বর স্টেডিয়ামের অদূরে প্রশিকা ভবনের পিছন দিকে অবস্থিত। | যুদ্ধকালে শিয়ালবাড়ি এলাকাটিকে পাকহানাদার বাহিনী বধ্যভূমি ও গণকবর হিসেবে ব্যবহার করেছিল। যুদ্ধের পুরো নয় মাস জুড়ে তারা এখানে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। স্বাধীনতার পর শিয়ালবাড়ি গ্রামের প্রায় সর্বত্র ঝোপে, জঙ্গলে, গর্তে, কুয়োয় পাওয়া গেছে অসংখ্য মানুষের মাথার খুলি ও হাড়। আনুমানিক ৩০/৪০ হাত গভীর দুটি কুয়োর প্রতিটিতে পাওয়া যায় প্রায় একশত নরকঙ্কাল।[২৪][২৫][২৬][২৭][২৮] |
০৭ | বাঙলা কলেজ বধ্যভূমি | সরকারি বাঙলা কলেজ বাংলাদেশের ঢাকা শহরে অবস্থিত একটি কলেজ যা ১৯৬২ সালের ১লা অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষায় কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষাকে মাধ্যম হিসেবে পরিচয় করার চাহিদা থেকে প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম এই কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। | ১৯৭১ -এ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় সহযোগীরা বাঙলা কলেজে ক্যাম্প স্থাপন করে অজস্র মুক্তিকামী মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। বর্তমান বিন্যাস অনুযায়ী, কলেজের অভ্যন্তরে বড় গেট ও শহীদ মিনারের মাঝামাঝি প্রাচীর সংলগ্ন স্থানে ১৯৭১-এ পুকুর ছিল এবং হানাদার বাহিনী তার পাশে মুক্তিকামী মানুষ-কে লাইন ধরে দাড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করত। মূল প্রশাসনিক ভবনের অনেক কক্ষই ছিল নির্যাতন কক্ষ। হোস্টেলের পাশের নিচু জমিতে আটকদের লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করা হতো। অধ্যক্ষের বাসভবন সংলগ্ন বাগানে আম গাছের মোটা শিকড়ের গোঁড়ায় মাথা চেপে ধরে জবাই করা হতো, ফলে হত্যার পর এক পাশে গড়িয়ে পড়তো মাথাগুলো, অন্যপাশে পড়ে থাকত দেহগুলো। মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় জুড়েই বাঙলা কলেজ ও আশেপাশে নৃশংস হত্যাকাণ্ড চলেছে, হয়েছে নারী নির্যাতন। কলেজের বর্তমান বিশালায়তন মাঠটি তখন ছিল ঝোপ-জঙ্গলে ভর্তি। বিজয়ের মূহুর্তে তখন এই মাঠসহ পুরো এলাকা ও কলেজ জুড়ে পড়ে ছিল অজস্র জবাই করা দেহ, নরকংকাল, পঁচা গলা লাশ। বিভীষিকাময় গণহত্যার চিহ্ন ফুটে ছিল সর্বত্র।[২৫][২৯][৩০][৩১] |
০৮ | [[জল্লাদখানা বধ্যভূমি]] | মিরপুর, ঢাকা | ঢাকার মিরপুর ১০নং সেকশনের ডি ব−কে অবস্থিত বধ্যভূমিটি ‘জল্লাদখানা বধ্যভূমি’ হিসাবে পরিচিত। একাত্তরে পাকহানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগী রাজাকার, আলবদর এবং বিহারি কর্তৃক বাঙালি নিধনযজ্ঞের নৃশংস নিদর্শন এ বধ্যভূমি। মিরপুর খালের ধারের এ নির্জন এলাকায় দুটি পয়নিষ্কাশন ট্যাঙ্কের উপর ছিল একটি পরিত্যক্ত পাম্প হাউজ। জায়গাটি নির্জন বিধায় ঘাতকেরা একে বধ্যভূমি হিসেবে বেছে নেয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এখানে নিষ্ঠুরভাবে অত্যাচার করে হত্যা করা হয় অনেক স্বাধীনতাকামী নিরীহ বাঙালিকে। স্বাধীনতার পরপরই এ বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া যায়। সেসময় এর আশেপাশে অসংখ্য বাঙালির কঙ্কাল পড়েছিল। স্থানীয় জনগণ জল্লাদখানার পাশে এসব দেহাবশেষ দাফন করে। প্রাথমিকভাবে সেসময় এখানকার পাম্প হাউজের নিচে অবস্থিত প্রায় ৩০ ফিট গভীর ট্যাঙ্ক দুটির ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয় মানুষের কঙ্কাল। এ পাম্প হাউজের ভেতরে একটি উঁচু বেদীতে উর্দুতে লেখা ছিল ‘জল্লাদখানা’। এখানে অনেক বাঙালিকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে বলে এটি জল্লাদখানা নামে পরিচিত ছিল।
১৯৯৯ সালের ১৫ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় জল্লাদখানা বধ্যভূমিতে পুনরায় খনন কাজ শুরু করে। খননের পর এ বধ্যভূমি থেকে ৭০টি মাথার খুলি ও ছোট বড় ৫,৩৯২টি হাড়গোড় পাওয়া যায়।[৭][৩০][৩২][৩৩][৩৪][৩৫] |
০৯ | হরিরামপুর গোরস্থান বধ্যভূমি | মিরপুর, ঢাকা | মিরপুরের হরিরামপুরেও বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া গেছে। হরিরামপুর গোরস্থান সংলগড়ব একটি গর্ত থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষক ও একজন চিকিৎসকের লাশ উদ্ধার করা হয়। তার মধ্যে যে চারজন বুদ্ধিজীবীর লাশ শনাক্ত করা হয়, তারা হলেনÑ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সন্তোষ ভট্টাচার্য, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ড. সিরাজুল হক খান ও আ.ন.ম. ফয়জুল মহী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা। অপর এক গর্তে আরো তিনজনের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়, তারা হলেনÑ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ড. এম এ খায়ের, ইংরেজি বিভাগের রাশীদুল হাসান এবং বাংলা বিভাগের মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী। শহীদদের আত্মীয়-স্বজন এসব লাশ শনাক্ত করেন। গর্ত খুঁড়ে যখন তাদের লাশ তোলা হয়, তখনও তাদের প্রত্যেকের চোখ বাঁধা ছিল।[২৮][৩৬][৩৭][৩৮][৩৯] |
১০ | মুসলিম বাজার বধ্যভূমি | মিরপুর ১২নং সেকশন (নূরী মসজিদ) সংলগড়ব, মিরপুর, ঢাকা | ১৯৯৯ সালের ২৭ জুলাই মিরপুর ১২ নং সেকশনের ডি ব্লকে নূরী মসজিদের পাশে মুসলিম বাজার বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া যায়। মসজিদের নির্মাণ কাজে মাটি খননের সময় এখানে একটি কুয়ো থেকে বেরিয়ে আসে অসংখ্য মানুষের মাথার খুলি ও হাড়গোড়। অতঃপর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় এই বধ্যভূমির খনন কাজ শুরু করে। বধ্যভূমি থেকে অসংখ্য হাড়, চুলের বেণী, মেয়েদের স্যান্ডেল, গলার চেইন, কাপড়, তাজা গুলি, মাইন প্রভৃতি উদ্ধার করা হয়। এখানে অসংখ্য নিরীহ বাঙালিকে হত্যার পর পুঁতে রাখা হয়েছিল।[৪০][৪১][৪২][৪৩] |
১১ | রাইনখোলা বধ্যভূমি | চিড়িয়াখানা সংলগড়ব, মিরপুর, ঢাকা | স্বাধীনতার পরপরই মিরপুরের রাইনখোলা এলাকার বধ্যভূমিকে চিহ্নিত করা হয়। একটি উনড়বয়ন প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে রাইনখোলা এলাকার ‘ডুইপ’ প্রকল্পে বধ্যভূমিটির সন্ধান পাওয়া যায়। সেখানে একটি স্যুয়রেজ রিজার্ভারে মানুষের দেহাবশেষ পাওয়া যায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় বহু নিরীহ বাঙালিকে এখানে ধরে এনে হত্যা করা হতো।[২৯][৪৪] |
১২ | জগন্নাথ হল বধ্যভূমি | জগন্নাথ হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা | : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগনড়বাথ হল একটি বধ্যভূমির নাম। পাকহানাদার বাহিনী একাত্তরের ২৫-২৬ মার্চ এই হলে অবস্থানরত নিরস্ত্র-নিরপরাধ ছাত্রশিক্ষক-কর্মচারীদের ওপর নৃশংস নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালায়। তারা হলের তিনজন শিক্ষক, ৩৪ জন ছাত্র ও চারজন কর্মচারীকে গুলি করে হত্যা করে এবং হলের মাঠে বিরাট গর্ত করে লাশগুলো পুঁতে ফেলে। পরে বুলডোজারের সাহায্যে তাদের লাশ মাটিচাপা দেওয়া হয়।[৪৫][৪৬][৪৭][৪৮] |
১৩ | হরিহরপাড়া বধ্যভূমি | হরিহরপাড়া, নারায়ণগঞ্জ | হরিহরপাড়া ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীর সংলগ্ন একটি গ্রাম। পাকবাহিনী এই গ্রামের বিশ হাজার নিরপরাধ নির্দোষ মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে বলে জানা যায়। এই গ্রামের পাশাপাশি ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও অন্যান্য স্থান থেকে ধরে আনা বাঙালিদের পিছনে হাত বাঁধা অবস্থায় বুড়িগঙ্গা নদীর ধারে দাঁড় করিয়ে গুলি করে মারা হতো। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আত্ম সমর্পণের আগের দিনে অর্থাৎ একাত্তরের ১৫ ডিসেম্বর এই হরিহরপাড়ায় অসংখ্য মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল। মার্কিন পত্রিকা ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর প্রতিনিধি লুই এম. সাইমনসের রিপোর্ট থেকে এই ঘটনাটি জানা যায়। [৩৯][৪৯][৫০] |
১৪ | রমনা কালীবাড়ি বধ্যভূমি | রমনা, ঢাকা | একাত্তরের ২৭ মার্চ পাকহানাদার বাহিনী ঢাকার রমনা কালীবাড়িতে ৫০ থেকে ৬০ জন নিরীহ বাঙালিকে গুলি করে হত্যা করে। এছাড়া ২৯ মার্চ বাঙালী ইপিআর অফিসার ক্যাপ্টেন আজাদসহ ২০ জন ইপিআর সদস্যকেও এখানে গুলি করে হত্যা করা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধকালে এই জায়গাকে তারা বধ্যভূমি হিসাবে ব্যবহার করেছিল। [৫১][৫২][৫৩][৫৪] |
১৫ | জগন্নাথ কলেজ গণকবর | ছাত্র সংসদ অফিস সংলগ্ন, জগন্নাথ কলেজ, ঢাকা | মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পুরো নয় মাস জগন্নাথ কলেজ ছিল পাকহানাদার বাহিনীর একটি সুদৃঢ় ক্যাম্প। পাকসেনারা ঢাকার বিভিনড়ব স্থানে হামলা চালিয়ে অসংখ্য নিরপরাধ বাঙালিকে ধরে এনে এখানে হত্যা করেছিল। বাহাত্তরের ৮ জানুয়ারি কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাত্র সংসদ কার্যালয়ের সামনে এই গণকবর খনন করে সাতটি কঙ্কালসহ ছেঁড়া কাপড়, জুতো ইত্যাদি উদ্ধার করে। [৫৪][৫৫][৫৬][৫৭] |
১৬ | এম. এন. এ. হোস্টেল বধ্যভূমি | এম. এন. এ. হোস্টেল, ঢাকা | ঢাকা শহরের এম.এন.এ. হোস্টেল ১৯৭১ সালে পাকবাহিনীর অন্যতম নির্যাতনকেন্দ্র ও বধ্যভূমিতে পরিণত হয়। এখানে অসংখ্য
বাঙালিকে হত্যা করা হয়। পাকসেনারা গাজীপুর অস্ত্র কারখানা থেকে বেশ কয়েকজন বাঙালি অফিসারকে এখানে ধরে এনে হত্যা করে। [৫২][৫৮][৫৯][৬০] |
১৭ | ধলপুর ডিপো গণকবর | ধলপুর, সায়েদাবাদ, ঢাকা | ঢাকার ধলপুর ডিপো এলাকায় ছিল গণকবর। যুদ্ধকালে ধলপুর ময়লা ডিপো নামে পরিচিত স্থানটির বিভিনড়ব বিশাল গর্তে অসংখ্য মানুষকে মাটিচাপা
দেয়া হয়। ঢাকা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী ঢাকা শহরের নানা জায়গা থেকে আনা লাশগুলো ধলপুর ডিপো এলাকার গর্তে মাটিচাপা দেয়া হয়। [৬১][৬২][৬৩] |
১৮ | ঠাটারী বাজার মৎসপট্টি বধ্যভূমি | ঠাটারী বাজার, ঢাকা | ঠাটারী বাজার মৎসপট্টির পেছনে একটি বধ্যভূমি ছিল। নবাবপুর বিসিসি রোডের রাজাকার ক্যাম্প থেকে ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে গ্রেফতারকৃত দু’জন রাজাকারের কাছ থেকে এই তথ্য পাওয়া যায়। রাজাকাররা জানায়, যুদ্ধের সময় তারা এখানে অসংখ্য বাঙালিকে জবাই করে হত্যা করেছে।[৫৪][৬৪][৬৫] |
১৯ | তেজগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট বধ্যভূমি | তেজগাঁও, ঢাকা | তেজগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের ২৭, ২৩ ও ৩৭ নং স্টাফ কোয়ার্টার প্রাঙ্গণের মাটি খুঁড়ে হাত-চোখ বাঁধা বেশ কয়েকজনের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশগুলো শনাক্ত করা না গেলেও পুলিশের অনুমান, সম্ভবত এঁরা ছিলেন বুদ্ধিজীবী এবং ১০-১৬ ডিসেম্বরে এঁদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।[৬১][৬৬][৬৭][৬৮] |
২০ | সূত্রাপুর লোহারপুল বধ্যভূমি | সূত্রাপুর, ঢাকা | স্বাধীনতা যুদ্ধকালে পাকসেনা ও তাদের দোসর রাজাকাররা বহু মানুষকে সূত্রাপুর লোহার পুলের উপর এনে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এই পুলের ওপর দাঁড় করেই তারা প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ড. হরিনাথ দে’কে গুলি করে হত্যা করে। [৫৪][৬৯][৭০] |
২১ | ধামরাই বধ্যভূমি | আতাউর রহমান স্কুল সংলগ্ন, কালামপুর বাজার, ধামরাই, ঢাকা। | ঢাকা জেলার ধামরাই থেকে মাইল কয়েক দূরে কালামপুর বাজার। এই বাজারের পাশেই আতাউর রহমান হাই স্কুলের মাঠ সংলগ্ন একটি খাল রয়েছে। এই খালের উপর যে কালভার্ট, সেখানে দাঁড় করিয়ে প্রায় ১৪ জনকে গুলি করে হত্যা করে পাকবাহিনী। যুদ্ধের সময় এই স্থানটিকে পাকিস্তানি সেনারা বধ্যভূমি হিসাবে বেছে নিয়েছিল।[৭১][৭২][৭৩] |
| | | |
| | | |
| | | |
| | | |
| | | |
| | | |