অবলম্ব ব্যাপ্তি
From Wikipedia, the free encyclopedia
স্থাপত্যবিদ্যা ও কাঠামো প্রকৌশলের আলোচনায় অবলম্ব ব্যাপ্তি বা অবলম্ব পরিসর বলতে কোনও কাঠামোকে ঠেকা দিয়ে রাখা বা ভারবাহী অবলম্বগুলির (support) যে কোনও দুইটির মধ্যবর্তী অনুভূমিক দূরত্ব, বিস্তার বা ব্যাপ্তিকে (যেমন কোনও খিলান, আড়া বা সেতু্র দুইটি থাম, স্তম্ভ বা খুঁটির মধ্যবর্তী দূরত্ব) বোঝায়।[1] অন্যভাবে দেখলে অবলম্ব ব্যাপ্তি হল কোনও আড়া, চৌকাঠ, ভারবাহী সমবায় (ট্রাস), ইত্যাদির এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত বিস্তার। এই দূরত্বকে ইংরেজি পরিভাষায় "স্প্যান" (Span) বলে।
একটি অবলম্ব ব্যাপ্তিকে একটি নিরেট আড়কাঠামো কিংবা রজ্জু দ্বারা সংযুক্ত করা হতে পারে। সাধারণত সেতুগুলিতে নিরেট আড়কাঠামো ব্যবহার করা হয়। সেতুর অবলম্ব ব্যাপ্তি গঠনকারী এই নিরেট আড়কাঠামোটিকেও ইংরেজিতে "স্প্যান" (Span) বলে। অন্যদিকে ভূ-ঊর্ধ্বস্থিত বিদ্যুত সরবরাহকারী তার বা টেলিযোগাযোগ তার টানার জন্য, কিছু বেতার শুঙ্গের (রেডিও অ্যান্টেনা) জন্য কিংবা কিছু ঝুলন্ত ট্রামগাড়ি পথের জন্য রজ্জু দ্বারা অবলম্ব ব্যাপ্তি সংযোগের পদ্ধতিটি ব্যবহার করা হয়।
কোনও আড়ার ভারবহন ক্ষমতা ও আকার নির্ণয়ে অবলম্ব ব্যাপ্তি একটি তাৎপর্যপূর্ণ নিয়ামক উপাদান, কেননা এটি আড়ার সর্বোচ্চ নমনাঙ্ক বা বক্রণ-ভ্রামক (Bending moment) ও বিচ্যুতি (deflection) নির্ধারণ করে। চিত্রিত আড়াটির সর্বোচ্চ বক্রণ-ভ্রামক ও বিচ্যুতি নিচের সূত্র ব্যবহার করে বের করা সম্ভব:[2]
যেখানে
- = সুষমভাবে বণ্টিত ভার
- = দুই অবলম্বের মধ্যে অবস্থিত আড়ার দৈর্ঘ্য (অবলম্ব ব্যাপ্তি)
- = স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক
- = জড়তার ক্ষেত্রফল ভ্রামক
লক্ষ করুন যে সর্বোচ্চ বক্রণ ভ্রামক ও বিচ্যুতি দুই অবলম্বের মধ্যবর্তী অবস্থানে ঘটে থাকে। এই ব্যাপারটি থেকে এই অনুসিদ্ধান্তে আসা যায় যে যদি অবলম্ব ব্যাপ্তি দ্বিগুণ করা হয়, তাহলে সর্বোচ্চ ভ্রামক (এবং এর সাথে সাথে পীড়ন) চারগুণ হয়ে যাবে, এবং বিচ্যুতি ষোলগুণ বেশি হয়ে যাবে।
দীর্ঘ-দূরত্বের রজ্জু-সংযুক্ত অবলম্ব ব্যাপ্তির জন্য (যেগুলিকে বিদ্যুতের তার, শুঙ্গ/অ্যান্টেনা বা ঝুলন্ত ট্রামগাড়িপথের জন্য ব্যবহার করা হয়) অবলম্ব ব্যাপ্তির তালিকা দেখুন।