Loading AI tools
পাকিস্তানি ক্রিকেটার উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
আলিম-উদ-দীন[1] (উর্দু: علیم الدین; ১৫ ডিসেম্বর ১৯৩০ – ১২ জুলাই ২০১২) একজন পাকিস্তানি ক্রিকেটার যিনি পাকিস্তানের হয়ে ১৯৫৪ ও ১৯৬২ সালের মধ্যে ২৫ টি টেস্ট খেলেছেন। তিনি একজন দ্রুত রানস্কোরার, উদ্বোধনী ডানহাতি ব্যাটসম্যান এবং অনিয়মিত ডানহাতি লেগ-ব্রেক বোলার ছিলেন। তিনি ছিলেন সবচেয়ে কমবয়সি খেলোয়াড় যিনি মাত্র ১২ বছর ৭৩ দিন বয়সে প্রথম-শ্রেণীর ম্যাচ খেলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি ২৫.৩৭ গড়ে ১০৯১ রান করেন যার মধ্যে দুইটি শতক এবং সাতটি অর্ধ-শতক ছিলো। ১৯৫৪ সালে তিনি পাকিস্তান ক্রিকেট দলের হয়ে ইংল্যান্ড সফর করেন এবং পাকিস্তানের প্রথম টেস্ট ম্যাচ জয়ী হবার গৌরব অর্জনের ভাগীদার হন।পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক মুশতাক মোহাম্মদ তার সম্পর্কে বলেন যে “তিনি পাকিস্তানের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ক্রিকেটার হবার পাশাপাশি একজন ভালো মানুষও ছিলেন।”[2]
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
জন্ম | আজমির, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে ভারত) | ১৫ ডিসেম্বর ১৯৩০|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১২ জুলাই ২০১২ ৮১) নর্থউইক পার্ক হাসপাতাল, হ্যারো, লন্ডন, ইংল্যান্ড | (বয়স|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি লেগ-ব্রেক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১৫) | ১০ জুন ১৯৫৪ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৬ জুলাই ১৯৬২ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৪৩ | রাজপুতানা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৪৪-৪৭ | গুজরাত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৪৬ | মুসলিমস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৪৮ | সিন্ধ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৫৩-৫৪ | বাহাওয়ালপুর | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৫৪-৫৫ | করাচি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৫৬-৫৭ | করাচি হোয়াইটস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
1957 | করাচি "এ" | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৬১-৬৬ | করাচি ব্লুজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৬৭-৬৮ | পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো, ১৭ এপ্রিল ২০১৭ |
নিজ ক্যারিয়ার ব্যাপী আলিমুদ্দিন ১৪০টি ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচ খেলেছেন এবং ৭২৭৫ রান স্কোর গড়েছেন, যাতে ১৪টি সেঞ্চুরি ও ৩৮টি অর্ধসেঞ্চুরি এবং গড় রান ৩২.৭৭, পাশাপাশি তিনি ৪০টি উইকেটও নিয়েছেন।[3] সমালোচকগণ তাকে একজন চমৎকার ফিল্ডার বলে মনে করেন।[4] মাত্র ১২ বছর ৭৩ দিন বয়সে তিনি রাজাস্থানে তার প্রথম অভিষেক ম্যাচটি খেলে ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে সর্বকনিষ্ঠ প্লেয়ারের রেকর্ড গড়েন।[5] ১৯৪২–৪৩-এ, তিনি রাঞ্জি ট্রফির প্রথম ম্যাচ খেলেন এবং দুই ইনিংসে যথাক্রমে ১৩ ও ২৭ রান করেন।[6] প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তার সর্বোচ্চ স্কোর হল ১৪২ রান, যা তিনি ১৯৫৪ সালে ওরচেস্টারশায়ারের বিরুদ্ধে করেন।[7] জাতীয়ভাবে, আলিমুদ্দিন সিন্ধ, রাজস্থান, করাচী, বাহাওয়ালপুর এবং গুজরাত ক্রিকেট টিমের প্রতিনিধিত্ব করেছেন,[3][8] এবং ১৯৪৮ সালে সিন্ধ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার ম্যাচে পাকিস্তানের মাটিতে কোন আন্তর্জাতিক বোলারের বলের মুখোমুখি হওয়া প্রথম পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন।[4][9][10] ১৯৫৪ সালে পাকিস্তানের ইংল্যান্ড সফরকালে, আলিমুদ্দিন ৭০০ রানেরও অধিক স্কোর গড়েন, যার মধ্যে প্রথম দুই ম্যাচে দুটি সেঞ্চুরিও ছিল।[11] ১৯৬১-৬২ মৌসুমে তিনি সবচেয়ে বেশি সফলতা লাভ করেন, সে সময়ে তার অর্জন ছিল ১২ ম্যাচে ১০২০ রান এবং ম্যাচপ্রতি গড় ৫১.০০।[12] একই মৌসুমে, তিনি করাচী দলের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে কায়েদে আজম ট্রফি ও আইয়ুব জোনাল ট্রফিতে দলটির বিজয় এনে দেন।[5][13][14][15] প্রথম-শ্রেণির ক্রিকেটে তার সর্বশেষ মৌসুম ছিল ১৯৬৭-৬৮।[12]
আলিমুদ্দিনতার ক্যারিয়ারে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের জন্য ২৫টি টেস্ট ম্যাচ খেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২৫.৩৭ গড় রেটিং সহ ১০৯১ রান অর্জন করেছেন। উক্ত ম্যাচগুলোতে তিনি দুটি সেঞ্চুরি ও সাতটি অর্ধ সেঞ্চুরি করেন।[3] ক্রিকেট সমালোচকগণ বিশ্বাস করেন যে, তিনি একটি ভালো টেকনিকের অধিকারী ছিলেন।[18] টেস্ট ম্যাচে, তিনি হানিফ মোহাম্মদের সাথে সক্রিয় পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন।[5]
আলিমুদ্দিন ১৯৬৪ সালে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বিরুদ্ধে লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু করেন এবং উক্ত ম্যাচে ১৯ রান সংগ্রহ করেন।।[19] একই সিরিজের চতুর্থ টেস্টে পাকিস্তান ইংল্যান্ডকে ২৪ রানে পরাজিত করে তাদের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট জয় করে ইংল্যান্ডকে হারানো প্রথম স্বাগতিক দল হিসেবে রেকর্ড গড়ে।[11] আলিমুদ্দিন উক্ত ম্যাচে মাত্র ১০ রান করেন।[20] ১৯৫৪-৫৫ সালে, তিনি পাকিস্তানের প্রথম ঘরোয়া টেস্টে ভারতের বিরুদ্ধে খেলেন এবং সর্বোচ্চ রান অর্জন করে (৩৩২) নিজ হাতে সিরিজের সমাপ্তি টানেন; তিনি তিনটি হাফ সেঞ্চুরি করেন এবং পঞ্চম ম্যাচে তিনি ১০৩ রানে নটআউট থেকে করাচী জাতীয় স্টেডিয়ামে তার প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি করেন।[16][21][22] উক্ত গ্রাউন্ডে আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি করা প্রথম ব্যাটসম্যান ছিলেন তিনি।[23]
এছাড়াও আলিমুদ্দিন ১৯৫৭-৫৮ সালের পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অংশ হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর করেন। উক্ত সিরিজে তিনি সফল হননি এবং তার সর্বোচ্চ স্কোর ৪১ থেকে যায়, যা তিনি ঘানার জর্জটাউনে বুরদায় করেন।[24][25] ১৯৬২ সালে, জাভেদ বার্কির নেতৃত্বে, পাকিস্তান ইংল্যান্ডে সফর করে যেখানে তারা এর আগে পাঁচটি টেস্ট ম্যাচ খেলেছিল।[26] হেডিংলিতে পাকিস্তানের নিম্ন স্কোরবিশিষ্ট পঞ্চম টেস্টে, আলিমুদ্দিন যথাক্রমে ৫০ ও ৬০ রান করে দলের সর্বোচ্চ রান অর্জনকারী হন।[27] ১৯৬২ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরোয়া সিরিজের পঞ্চম টেস্টে, তিনি জাতীয় স্টেডিয়ামে তার ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ১০৯ রান করেন।[17] ১৯৬২ সালে নটিংহ্যামের ট্রেন্ট ব্রিজে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনি তার শেষ ম্যাচ খেলেন।[28]
প্রাক্তন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান অল-রাউন্ডার কলি স্মিথ ছিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার একমাত্র উইকেট।[29]
তিনি বিভিন্নভাবে "আলিম-উদ-দিন" এবং "আলিমুদ্দিন" নামে পরিচিত,উইজডেন সহ অর অনেক তথ্যসূত্রে, তাকে "Alim-ud-Din" নামে নির্দেশ করা হয়েছে।[11][30]
আলিমুদ্দিন ব্রিটিশ ভারতের অজমের শহরে ১৯৩০ সালের ১৫ই ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন।[3] ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর, তিনি তার পরিবারের সাথে করাচীতে চলে যান। এরপর তিনি লন্ডনে বসবাস শুরু করেন এবং বাকি জীবন অবিবাহিত থেকে তার পরিবারে দেখাশোনা করতে থাকেন। পাকিস্তান আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স (পিআইএ) তাকে লন্ডন হিথ্রো বিমানবন্দরে কাজ করার একটি সুযোগ দেয়।[23] তার দুই ভাই, সালিমুদ্দিন ও আজিমউদ্দিন, উভয়েই ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটের খেলোয়াড় ছিলেন।[31][32] তার ভাতিজা, জেমস উদ্দিন, সালিমুদ্দিনের ছেলে, তিনিও একজন ক্রিকেটার এবং বর্তমানে তিনি ইংল্যান্ডে সেমি-প্রফেশনাল হিসেবে খেলছেন।[33]
পরবর্তী জীবনে, তার প্রকৃত জন্ম তারিখ নিয়ে সন্দেহের পরে তার পেনশন স্থগিত করা হয়েছিল। পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপের পরে পেনশনটি পুনরুদ্ধার করা হয়েছিল।[30]
২০১২ সালের ১২ই জুলাই, আলিমুদ্দিন লন্ডনের হ্যারোতে অবস্থিত নর্থউইক পার্ক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।[2][23] তিনি হৃদরোগ ও শ্বাসনালীর রোগে ভুগছিলেন। উপরন্তু তার কিডনিও বিকল হয়ে তিনি তখন যাওয়ায় ডায়ালাইসিস প্রক্রিয়ার মধ্যেও ছিলেন।[23] পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) তার মৃত্যুতে শোক ও তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে একটি লিখিত স্বীকারোক্তি প্রকাশ করে।[34][35]
|
|
|
বিপক্ষ | ম্যাচ | ইনিংস | নট আউট | রান | HS | গড় | ১০০ | ৫০ | ক্যাচ | স্ট্যাম্প |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
অস্ট্রেলিয়া | ২ | ৪ | ১ | ৫৯ | 34* | ১৯.৬৬ | ০ | ০ | ১ | – |
ইংল্যান্ড | ৮ | ১৬ | ০ | ৪১০ | ১০৯ | ২৫.৬২ | ১ | ৪ | ২ | – |
ভারত | ৬ | ১০ | ১ | ৩৫৬ | 103* | ৩৯.৫৫ | ১ | ৩ | ০ | – |
নিউজিল্যান্ড | ৩ | ৪ | ৩ | ৭৪ | ৩৭ | ১৮.৫০ | ০ | ০ | ৪ | – |
ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ৬ | ১১ | ০ | ১৯২ | ৪১ | ১৭.৪৫ | ০ | ০ | ১ | – |
মোট | ২৫ | ৪৫ | ২ | ১০৯১ | ১০৯ | ২৫.৩৭ | ২ | ৭ | ৮ | – |
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.