আলোর প্রতিসরণ
পদার্থবিজ্ঞানের একটি অংশ / From Wikipedia, the free encyclopedia
পদার্থবিজ্ঞানে প্রতিসরণ বলতে একটি তরঙ্গের পথ পরিবর্তনকে বোঝায় যখন এটি একটি মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে যায়।[1] তরঙ্গের গতির পরিবর্তন বা মাধ্যমের পরিবর্তনের কারণে পথ পরিবর্তন হতে পারে।[2] আলোর প্রতিসরণ হতে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, তবে অন্যান্য তরঙ্গ যেমন শব্দ তরঙ্গ এবং জলতরঙ্গেও প্রতিসরণ হতে দেখা যায়। একটি তরঙ্গ কতটা প্রতিসৃত হয় তা তরঙ্গের গতির পরিবর্তন এবং গতির পরিবর্তনের দিকের সাপেক্ষে তরঙ্গের বিস্তারের প্রাথমিক দিক দ্বারা নির্ধারিত হয়।
আলোর প্রতিসরণের ঘটনা স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয় যখন আলোকরশ্মি ০° ও ৯০° ব্যতীত অন্য যেকোনো কোণে মাধ্যমদ্বয়ের বিভেদতলে পড়ে। আলোর ক্ষেত্রে প্রতিসরণ স্নেলের সূত্র অনুসরণ করে, যা বিবৃত করে যে একটি জোড়া নির্দিষ্ট মাধ্যমের জন্য, আপতন θ1 ও প্রতিসরণ কোণের θ2 সাইনের অনুপাত মাধ্যমদ্বয়ের তরঙ্গ বেগের অনুপাতের (v1 / v2) সমান, সমতুল্যভাবে, মাধ্যমদ্বয়ের প্রতিসরাঙ্কের (n2 / n1) সমান।[3]
মূলত মাধ্যমগুলোর ঘনত্বের পার্থক্যের জন্যই আলোর প্রতিসরণ ঘটে থাকে। আলো যদি হালকা মাধ্যম (যেমন বায়ু) থেকে ঘন মাধ্যমে (যেমন পানি) প্রবেশ করে, তাহলে আলোকরশ্মি বিভেদ তল হতে অভিলম্বের দিকে বেঁকে যায়। আবার যদি আলো ঘন হতে হালকা মাধ্যমে আপতিত হয়, তাহলে আলো বিভেদ তল হতে অভিলম্ব থেকে দূরে সরে আসে।
আলোক প্রিজম ও লেন্স মানুষের চোখের মতো আলোর পথ পরিবর্তন করতে প্রতিসরণ ব্যবহার করে। পদার্থের প্রতিসরাঙ্ক আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সাথে পরিবর্তিত হয়,[4] এবং এইভাবে প্রতিসরণ কোণও একইভাবে পরিবর্তিত হয়। একে বিচ্ছুরণ বলা হয় এবং এর কারণে প্রিজম ও রংধনুতে সাদা আলোর উপাদান বর্ণালীয় রঙে ভাগ হয়ে যায়।[5]