ইতিহাসের দর্শন
From Wikipedia, the free encyclopedia
ইতিহাসের দর্শন হল ইতিহাসের ও এর তত্ত্বের দার্শনিক অধ্যয়ন।[1] এই শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন ফরাসি দার্শনিক ভলতেয়ার।[2]
সমসাময়িক দর্শনে ইতিহাসের অনুমানমূলক দর্শন এবং ইতিহাসের সমালোচনামূলক দর্শনের মধ্যে পার্থক্য তৈরি হয়েছে, যাকে এখন বিশ্লেষণমূলক দর্শন বলা হয়। এই দুই দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে পার্থক্যকে মোটামুটিভাবে বিশ্লেষণমূলক ও মহাদেশীয় দর্শনের মধ্যেকার মতপার্থক্যের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। খুব মোটামুটিভাবে তুলনা করলে এদের পার্থক্যকে যথাক্রমে অভিজ্ঞতাবাদ এবং অস্তিত্ববাদের সাথেও তুলনা করা যায়, যেখানে বিশ্লেষণী দৃষ্টিভঙ্গি ব্যবহারিকতার দিকে মন দেয় আর অনুমানমূলক দৃষ্টিভঙ্গি ভাষার মতো নির্ধারক শক্তির অধিবিদ্যা (বা অধিবিদ্যার বিরোধিতা) অথবা পটভূমিক অনুমানের পর্যায়ে উপলব্ধির ঘটনাবিজ্ঞানের উপর জোর দেয়।[3]
বাস্তবিক প্রয়োগের ক্ষেত্রে, বিশ্লেষণমূলক দৃষ্টিভঙ্গি ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ার অর্থ এবং উদ্দেশ্যকে প্রশ্ন করে, আর অনুমানমূলক দৃষ্টিভঙ্গি ইতিহাস এবং ঐতিহাসিক পদ্ধতির ভিত্তি ও তাৎপর্য নিয়ে অধ্যয়ন করে। এদের নামগুলো সি. ডি. ব্রডের সমালোচনামূলক দর্শন এবং অনুমানমূলক দর্শনের মধ্যে পার্থক্য থেকে এসেছে।[4]
এই দৃষ্টিভঙ্গিগুলোর মধ্যে পার্থক্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে কার্যকারণ নিয়ে হিউম ও কান্টের মতপার্থক্যের প্রশ্নে। হিউম এবং কান্টকে যথাক্রমে বিশ্লেষণী ও অনুমানমূলক দৃষ্টিভঙ্গির পথিকৃৎ হিসেবে দেখা যেতে পারে। ফুকো বা হানাহ আরেন্ডটের মতো ইতিহাসবিদ, যাদের সাধারণত ইতিহাসবিদ হিসেবে পরিচিতি দেয়ার আগে তাত্ত্বিক বা দার্শনিক হিসেবে বলা হয়, তাদের মূলত অনুমানমূলক দৃষ্টিভঙ্গির সাথে তুলনা করা যেতে পারে, যদিও সাধারণ একাডেমিক ইতিহাসবিদরা বিশ্লেষণমূলক এবং বর্ণনামূলক দৃষ্টিভঙ্গির অনুসারী হয়ে থাকেন।[5]