কোড়গু জেলা
কর্ণাটকের একটি জেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কর্ণাটকের একটি জেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কোড়গু জেলা (সাবেক নাম কুর্গ রাজ্য বা কুড়গ প্রদেশ) হলো দক্ষিণ ভারতে অবস্থিত কর্ণাটক রাজ্যের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের একটি জেলা৷ এটি কর্ণাটকের চারটি প্রশাসনিক বিভাগের মহীশূর বিভাগের অন্তর্গত৷ ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের পূর্বে এটি প্রশাসনিকভাবে আলাদা কুর্গ রাজ্য ছিল। [3] ওই সনেই রাজ্যটি মহীশূর রাজ্যের সঙ্গে একীভূত করে রাজ্যের সীমানাবর্ধন করা হয়। পশ্চিমঘাট পর্বতমালা বরাবর কর্ণাটকের এই জেলাটি ৪,১০২ বর্গকিলোমিটার (১,৫৮৪ মা২) অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে।
কোড়গু জেলা কুড়্গ জেলা | |
---|---|
কর্ণাটকের জেলা | |
উপর থেকে ঘড়ির কাঁটার দিকে: সকালের কুহেলিকাময় কুড়্গ, কাবেরী নদীর বৈমানিক দৃশ্য, সোমবারপেট-এর নিকট প্রবাহিত ঝর্ণা, মাদিকেরীতে অবস্থিত ওঙ্কারেশ্বর মন্দির, সোমবারপেটের নিকট মল্লালী জলপ্রপাত | |
কর্ণাটক রাজ্যে কোড়গু জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ১২.৪২০৮° উত্তর ৭৫.৭৩৯৭° পূর্ব | |
রাষ্ট্র | ভারত |
রাজ্য | কর্ণাটক |
অঞ্চল | মালেনাড়ু |
সদর | মাদিকেরী |
তালুক | মাদিকেরী, সোমবারপেট, বিরাজপেট |
সরকার | |
• ডেপুটি কমিশনার | অনীশ কানমণি জয় |
• মহীশূর | প্রতাপ সিংহ |
• কর্ণাটক বিধানসভা |
|
আয়তন[1] | |
• মোট | ৪,১০২ বর্গকিমি (১,৫৮৪ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ৯০০ মিটার (৩,০০০ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১১)[2] | |
• মোট | ৫,৫৪,৫১৯ |
• জনঘনত্ব | ১৪০/বর্গকিমি (৩৫০/বর্গমাইল) |
বিশেষণ | কুর্গী/কোদাবা |
ভাষা | |
• দাপ্তরিক ও সহ-দাপ্তরিক | কন্নড়, ইংরাজী |
• আঞ্চলিক | কুড়গী |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+৫:৩০) |
পিন | ৫৭১২০১ (মাদিকেরী) |
টেলিফোন কোড |
|
যানবাহন নিবন্ধন | KA-12 (কেএ-১২) |
সাক্ষরতা | ৮২.৫২% |
লোকসভা কেন্দ্র | মহীশূর |
বিধানসভা কেন্দ্র | মাদিকেরী, বিরাজপেট |
আবহাওয়া | ক্রান্তীয় আর্দ্র |
বৃষ্টিপাত | ২,৭২৫.৫ মিলিমিটার (১০৭.৩০ ইঞ্চি) |
গড় গ্রীষ্মকালীন উষ্ণতা | ২৮.৬ °সে (৮৩.৫ °ফা) |
গড় শীতকালীন উষ্ণতা | ১৪.২ °সে (৫৭.৬ °ফা) |
ওয়েবসাইট | kodagu |
কোড়াগু পশ্চিমঘাট পর্বতমালার পূর্ব ঢালে অবস্থিত। জেলাটির মোট ভৌগোলিক ক্ষেত্রফল ৪,১০২ কিমি২ (১,৫৮৪ মা২)।[4] জেলাটির উত্তর পশ্চিমে রয়েছে দক্ষিণ কন্নড় জেলা, উত্তর দিকে রয়েছে হাসান জেলা, পূর্ব দিকে রয়েছে মহীশূর জেলা, পশ্চিম দিকে রয়েছে কেরালা রাজ্যের কাসারগড় জেলা, দক্ষিণ পশ্চিমে রয়েছে কেরালা রাজ্যের কণ্ণুর জেলা এবং দক্ষিণে রয়েছে কেরালা রাজ্যের বয়নাড়ু জেলা। জেলাটি মূলত পর্বতসঙ্কুল এবং জেলার সর্বনিম্ন বিন্দুটি সমুদ্রস্তর থেকে ১২০ মিটার (৩৯০ ফু) উচ্চতায় অবস্থিত৷ কোড়গু জেলার উচ্চতম শৃঙ্গ হলোতাড়িয়াণ্ডমোল, যা ১,৭৫০ মিটার (৫,৭৪০ ফু) উচ্চ এবং দ্বিতীয় উচ্চতম শৃঙ্গটি হলো পুষ্পগিরি, যা ১,৭১৫ মিটার (৫,৬২৭ ফু) উচ্চ৷ কোড়গু জেলার মূল নদী হলো কাবেরী, যা পশ্চিমঘাট পর্বতমালার পূর্ব ঢালে অবস্থিত তালকাবেরী থেকে উৎপন্ন৷ কাবেরী নদী ও তার উৎসমুখের উপনদীগুলি কোড়গু জেলার জলনিকাশ করে৷
জেলাটি তিনটি প্রশাসনিক বিভাগ তথা তালুকে বিভক্ত৷
কোড়গু জেলাতে সর্বমোট দুটি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে, সেগুলি হলো: মাদিকেরী ও বিরাজপেট৷ শ্রী আপ্পাচু রঞ্জন মাদিকেরী থেকে এবং শ্রী কে.জি. বোপাইয়া বিরাজপেট থেকে ভারতীয় জনতা পার্টির হয়ে বিজয় লাভ করেছেন৷ পূর্বে এই বিধানসভা কেন্দ্রদুটি কোড়গু-দক্ষিণ কন্নড় (মাঙ্গালুরু) লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ছিলো কিন্তু বর্তমানে এ দুটিই মহীশূর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত৷ বর্তমান সাংসদ হলেন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রতিনিধি শ্রী প্রতাপ সিংহ৷
দ্য কোদাবা ন্যাশনাল কাউন্সিল এবং কোদাবা রাষ্ট্রীয় সমিতি দুটি প্রতিনিয়ত কোড়গু জেলাকে পৃথক স্বায়ত্বশাসন দেওয়ার দাবীতে সোচ্চার৷ [5][6]
কুড়গিরা হলেন কোড়গুতে শতাব্দী প্রাচীন বসতি স্থাপনকারী কৃষিপ্রধান জাতি৷ যোদ্ধা জাতি হওয়ার কারণে যুদ্ধের সময়ে তারা প্রত্যেকেই কোনো না কোনো অস্ত্র সঙ্গে রাখতেন এবং সাথে থাকতেন তাদের দলনেতা৷ হালেরী রাজাদের রাজত্বের সময়ে কেলারী নায়কদের পরিবারচ্যুত এক সদস্য নতুন রাজবংশ পত্তন ঘটান ও ১৬০০ থেকে ১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দ অবধি কুর্গে রাজত্ব করেন৷ ১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে কুর্গ যুদ্ধের পরবর্তীকাল থেকে ব্রিটিশরা ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতের স্বাধীনতা অবধি কুর্গের ওপর নিজ আধিপত্য স্থাপন করতে সক্ষম হন৷ ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দ অবধি কুড়গ একটি আলাদা রাজ্য ছিলো, যা পরবর্তীকালে মহীশূর রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয়৷
১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে, ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির তৎপরতায় কুর্গ ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং কোড়গু রাজত্বের শেষ রাডা চিক্কা বীররাজেন্দ্রকে পদচ্যুত করেন৷ জনসাধারণ শান্তিপূর্ণভাবে ব্রিটিশ আধিপত্য মেনে নেন৷ ব্রিটিশাধিপত্য স্থাপিত হওয়ার পরে কুর্গে শিক্ষা-সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান, অধিক মজবুত প্রশাসন স্থাপিত হয় এবং স্থানীয়রা বৈজ্ঞানিকভাবে লাভজনক কফি উৎপাদন, কৃষিবিদ্যা প্রভৃতিতে পটু হয়ে ওঠেন৷ [7]
২০১১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের জনগণনা অনুসারে কোড়গু জেলার জনসংখ্যা ৫,৫৪,৫১৯ জন,[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] যা সলোমন দ্বীপরাষ্ট্র [8] আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াইয়োমিং রাজ্যের জনসংখ্যার সমতুল্য।[9] ২০১১ খ্রিস্টাব্দে ভারথের ৬৪০ টি জেলার মধ্যে জনসংখ্যার বিচারে এটি ৫৩৯তম স্থানে রয়েছে৷ জেলাটির জনঘনত্ব ১৩৫ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (৩৫০ জন/বর্গমাইল)৷ প্রতি হাজার পুরুষে এখানে ১০১৯ জন নারী রয়েছেন এবং ২০০১ থেকে ২০১১ খ্রিস্টাব্দ অবধি এই জেলার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিলো ১.১৩ শতাংশ, রাজ্যে সর্বনিম্ন৷ জেলাটির সাক্ষরতার হার ৮২.৬১ শতাংশ যেখানে পুরুষ সাক্ষরতার হার ৮৭.১৯ শতাংশ ও নারী সাক্ষরতার হার ৭৮.১৪ শতাংশ৷ [10]
জেলাটির সর্বাধিক প্রচলিত ও আঞ্চলিক ভাষাটি হলো কোড়বা তাক্ক৷ ভাষাটি লিখে প্রকাশ করার জন্য কন্নড় লিপির ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷ [12] অন্তিম জনগণনায় এটি তৃতীয় প্রচলিত বলে চিহ্নিত হলেও এই ভাষায় কথা বলা জনসংখ্যার হ্রাসের কারণ স্বরূপ বহু বিদ্বজ্জন জনসচেতনতার অভাবকে নির্দেশ করছেন৷ কর্ণাটক কোড়াবা সাহিত্য আকাদেমী অনুসারে মূল কুড়গী ছাড়াও আম্মা, পেগ্গাড়ে, মাপ্লে সহ মোট ১৮ টি অন্যান্য কুড়গীভাষী ছড়িয়ে রয়েছে আশেপাশের বিভিন্ন জেলাতে৷ ভাষাটিকে ভারতে অষ্ট তফশিলের অন্তর্ভুক্ত একটি স্বীকৃত ভাষার মর্যাদাপ্রাপ্তির লক্ষ্যে আলোচনা চলছে৷[13]
জেলাটির নিকটবর্তী বৃহত্তর ও রেলওয়ে স্টেশনটি হল মহীশূর জংশন রেলওয়ে স্টেশন, যা জেলাটি থেকে মোটামুটি ৯৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এছাড়া কেরালা রাজ্যের কণ্ণুর এবং তালসেরি রেলস্টেশন দুটি জেলাটি থেকে মোটামুটি ৮০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত। এখান থেকে সর্ব নিকটে অবস্থিত বিমানবন্দরটি কেরালা রাজ্যের কণ্ণুর শহরে অবস্থিত কণ্ণুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ৫৯ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। এছাড়া একই রাজ্যে অবস্থিত নিকটতম বিমানবন্দরটি হলো ম্যাঙ্গালোর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, যা কোড়গু থেকে ১১৬ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.