Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
খালিস্তান (গুরুমুখী: ਖ਼ਾਲਿਸਤਾਨ , "বিশুদ্ধ ভূমি", হিন্দি: ख़ालिस्तान, উর্দু: خالصتان, ইংরেজি: Khalistan) দক্ষিণ এশিয়ার পাঞ্জাব অঞ্চলে জাতীয়তাবাদের[1] ভিত্তিতে প্রস্তাবিত একটি স্বতন্ত্র ও সার্বভৌম দেশ। প্রস্তাবিত রাষ্ট্রকে ভূখণ্ডগতভাবে ভারতীয় পাঞ্জাব রাজ্য থেকে শুরু করে বৃহত্তর পাঞ্জাব অঞ্চল পর্যন্ত অথবা অনেক সময় এর প্রতিবেশী ভারতীয় রাজ্যসমূহকেও অন্তর্ভুক্ত করে সংজ্ঞায়িত করা হয়।[2][3][4] পাঞ্জাব অঞ্চল শিখদের ঐতিহ্যগত মাতৃভূমি। ইংরেজ দ্বারা অধিকৃত হবার আগে পাঞ্জাব শিখদের দ্বারা ৮২ বছর শাসিত হয়; ১৭৬৭ থেকে ১৭৯৯ সাল পর্যন্ত সমগ্র পাঞ্জাব শিখ মিসল (সার্বভৌম শিখ রাষ্ট্র) সমূহের অধীন ছিল,[5] তারপর মহারাজা রণজিৎ সিং শিখ মৈত্রী সঙ্ঘকে শিখ সাম্রাজ্যের মাঝে একীভূত করেন। তবে সেখানে শিখদের পাশাপাশি অনেক হিন্দু ও মুসলিমও বসবাস করত, এবং ১৯৪৭ সালের আগে শিখরা ব্রিটিশ অখণ্ড পাঞ্জাব রাজ্যের শুধুমাত্র লুধিয়ানা জেলায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল। ১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাবের মাধ্যমে মুসলিম লীগ যখন মুসলিমদের জন্য একটি পৃথক রাষ্ট্রের দাবী জানায়, তখন কিছু শিখ নেতা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন যে হিন্দু ও মুসলিমের ভিত্তিতে ভারত বিভাজিত করলে শিখ সম্প্রদায়ের কোন স্বাধীন মাতৃভূমি থাকবে না। তারা তখন বৃহত্তর পাঞ্জাব অঞ্চলে বিস্তৃত খালিস্তান নামক একটি ধর্মরাষ্ট্র সৃষ্টির ধারণা পেশ করেন।
এই নিবন্ধটি মেয়াদোত্তীর্ণ। (সেপ্টেম্বর ২০২৩) |
শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা দাবী করেন যে শিখরা বরাবরই একটি পৃথক ও সার্বভৌম জাতি ছিল, এবং দক্ষিণ এশিয়ার শিখ অধ্যুষিত এলাকাগুলো দ্বিতীয় ইঙ্গ-শিখ যুদ্ধে ব্রিটিশদের কাছে পরাজিত হবার পূর্ব পর্যন্ত বহু শতাব্দী ধরে স্বাধীন ছিল। ১৮৪৮-১৮৪৯ খ্রিষ্টাব্দে সংঘটিত এ যুদ্ধের ফলে শিখ সাম্রাজ্য ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনস্থ হয়, পাঞ্জাব অঞ্চল কোম্পানি শাসনের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং তা পরবর্তীতে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে পরিণত হয়। অনেক শিখ বিশ্বাস করেন যে ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের সময়, হিন্দু-মুসলিমদের পাশাপাশি শিখদেরকেও একটি পূর্ণ সার্বভৌম অথবা পাকিস্তানের অধীনে একটি অর্ধ সার্বভৌম রাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল, পরবর্তীতে রাজনৈতিক অদূরদর্শিতার কারণে যা থেকে শিখরা বঞ্চিত হয় এবং পাঞ্জাব রাজ্য ভারত-পাকিস্তানের মাঝে বিভাজিত হয়।[6][7]
লালা ভগত রাও
যুক্তরাষ্ট্রে এই ধারণার রাজনৈতিক সমর্থনকারীদের মধ্যে রয়েছেন রাজনীতিবিদ ড্যান বার্টন[8], জেসি হেল্মস[9] এবং এডলফাস টাউনস[10]। অন্যান্য সহানুভূতিশীলদের মাঝে রয়েছেন যুক্তরাজ্যের রাজনীতিবিদ এরিক লাবক, এভবরীর ৪র্থ ব্যারন[11], নাজির আহমেদ, ব্যারন আহমেদ[12], এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান ও পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত মুহাম্মাদ জিয়া-উল-হক, যিনি জন্মসূত্রে একজন ভারতীয় পাঞ্জাবী এবং তার বিরুদ্ধে ভারত সরকার থেকে ব্লু স্টার অভিযানের সময় শিখ জঙ্গীদের কাছে অস্ত্র চোরাচালানের অভিযোগ আনা হয় কিন্তু তিনি জঙ্গীদের সাথে সম্পৃক্ততার দায় অস্বীকার করেন[13]।
স্বর্ণমন্দির অবরোধের ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৬ জুন ২০১৪ সালে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে প্রবাসী শিখদের একটি বড় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। সমাবেশের উদ্যোক্তারা প্রবাসী শিখদের জন্য ২০২০ সালের মাঝে একটি গণভোট আয়োজনের ঘোষণা দেন, যার উদ্দেশ্য "শিখরা পাঞ্জাবের আদিবাসী জনগোষ্ঠী, তাদের একটি ঐতিহাসিক স্বদেশ, পৃথক ধর্ম এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার আছে, এর ভিত্তিতে আমি ভারত অধিকৃত পাঞ্জাবে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অভিলাষী" (ইংরেজি: “I aspire for the formation of a sovereign and independent country in Indian occupied Punjab, on the basis that Sikhs are the indigenous people of Punjab, have a historical homeland, a separate religion and have the right to self-determination”) এই বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রবাসী শিখদের মতামত গ্রহণ করা।[14][15] ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সালে নিউ ইয়র্কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণকালে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের বাইরে শিখ ও পতিদার (প্যাটেল) সম্প্রদায়ের সদস্যরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। শিখস ফর জাস্টিস (এসএফজে) ব্যানারতলে বিক্ষোভকারীরা ভারতবিরোধী ও মোদীবিরোধী স্লোগান দেয় এবং পাঞ্জাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে একটি পৃথক খালিস্তান রাষ্ট্রের জন্য ২০২০ সালে গণভোট দাবি করে।[16]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.