Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
চারটি মহা উদ্ভাবন (সরলীকৃত চীনা: 四大发明; প্রথাগত চীনা: 四大發明) হচ্ছে প্রাচীন চীনের কয়েকটি উদ্ভাবন যেগুলোকে এদের ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনায় এবং প্রাচীন চীনের উন্নত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতীক হিসেবে চীনা সংস্কৃতিতে উদ্যাপন করা হয়।[1]
চারটি মহা উদ্ভাবন | |||||||||||||||
ঐতিহ্যবাহী চীনা | 四大發明 | ||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
সরলীকৃত চীনা | 四大发明 | ||||||||||||||
আক্ষরিক অর্থ | চারটি মহা উদ্ভাবন | ||||||||||||||
|
চারটি মহা উদ্ভাবন হল:
এই চারটি উদ্ভাবন বিশ্বজুড়ে সভ্যতা গঠনে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। তবে কয়েকজন আধুনিক চীনা বুদ্ধিজীবীর মতে অন্যান্য চীনা উদ্ভাবন আরও বেশি জটিল ছিল এবং চীনা সভ্যতায় বেশি অবদান রেখেছিল। – প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে প্রযুক্তি বিনিময়ে প্রভাব ফেলার জন্যই কেবল চারটি মহা আবিষ্কারকে আলাদাভাবে দেখা হয়।[6]
যদিও চীনা সংস্কৃতি উল্লেখযোগ্য কাজ এবং অর্জনে পরিপূর্ণ (যেমনঃ চার মহা সৌন্দর্য, গানের চারটি অসাধারণ বই, চারটি মহা ক্লাসিক উপন্যাস, চারটি বই এবং পাঁচটি ক্লাসিক, পঞ্চ অভিজ্ঞ, তিনশ ট্যাং কবিতা ইত্যাদি।), চার মহা উদ্ভাবনের ধারণা তৈরি হয় পাশ্চাত্যে এবং ইউরোপিয়ান বুদ্ধিজীবীদের বানানো তিন মহা উদ্ভাবনের (অথবা, আরও যথার্থভাবে, সর্বশ্রেষ্ঠ) জায়গায় এসেছে। এই ধারণা ১৬ শতকে ইউরোপে ছড়িয়ে যায় এবং সাম্প্রতিক সময়ে চীনা বুদ্ধিজীবীরা এই ধারণা যথার্থ বলেছেন। এক্ষেত্রে ঐ তিনটি মহা উদ্ভাবন- ছাপার যন্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র ও প্রাকৃতিক কম্পাস উদ্ভাবনের প্রথম দাবীদার ছিল ইউরোপ বিশেষ করে জার্মানি ছাপানো ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ভাবনের দাবীদার ছিল। এই উদ্ভাবন আধুনিক ইউরোপিয়ানদের কাছে সম্মান পদকের সমতুল্য ছিল যারা বলত যে প্রাচীন গ্রিক ও রোমান সভ্যতায় এই তিনটি উদ্ভাবনের সমকক্ষ কিছুই নেই। ১৫৩০ এর শুরুর দিকে পর্তুগীজ নাবিক ও স্প্যানিশ ধর্মযাজকদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে স্পষ্ট হতে থাকে যে এই উদ্ভাবনগুলো শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চীনে আছে। তবে এরপর ও উদ্ভাবনগুলোর ইউরোপীয় দাবী নিঃশেষ হয়ে যায় নি। ১৬২০ সালে ফ্রান্সিস বেকন যখন তার ইন্সটাওরেশিও ম্যাগনা গ্রন্থে উল্লেখ করেন যে ", গানপাউডার এবং সামুদ্রিক কম্পাস . . . পৃথিবীর চেহারা ও অবস্থা পাল্টে দিয়েছে: প্রথমটি সাহিত্যক্ষেত্রে; দ্বিতীয়টি যুদ্ধক্ষেত্রে এবং তৃতীয়টি গন্তব্য নির্ণয়ে।[7]
১৯ শতকে কার্ল মার্ক্স গানপাউডার, কম্পাস ও ছাপানোর যন্ত্রের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে বলেন "গানপাউডার,কম্পাস এবং ছাপাখানার যন্ত্র ছিল তিনটি মহা উদ্ভাবন যা বুর্জোয়া সমাজের নেতৃত্বে ছিল। গানপাওডার যোদ্ধা শ্রেণী ধ্বংস করে, কম্পাস বিশ্ব বাজার আবিষ্কার করে ও কলোনি প্রতিষ্ঠা করে এবং ছাপাখানার যন্ত্র ছিল সাধারণ অর্থে প্রতিবাদের ও বিজ্ঞানের নবজাগরনের হাতিয়ার; বুদ্ধিজীবীদের ভিত্তি তৈরির সবচেয়ে শক্তিশালী লিভার।"[8](বুর্জোয়া হচ্ছে পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় মালিকশ্রেণী, কলোনি হচ্ছে বুর্জোয়াদের বিদেশী ঘাঁটি বা উপনিবেশ এবং লিভার হচ্ছে একটি সাধারণ যন্ত্র যা দিয়ে অল্প পরিশ্রমে অনেক ভারী জিনিস নড়াচড়া করানো যায়।)
১৯ শতকের পর থেকে পশ্চিমা লেখক ও বুদ্ধিজীবীরা চীনাদেরই এসব আবিষ্কারের কৃতিত্ব দেন। ধর্ম প্রচারক এবং চীন বিশারদ জোসেফ এডকিন্স (১৮২৩–১৯০৫) চীনের সাথে জাপানের তুলনা করতে গিয়ে এই চারটি উদ্ভাবনের কথা আলোচনা করেন।[9] চীন ও জাপানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির তুলনা করতে এথেনেইয়াম ম্যগাজিনে ‘’এডকিন্স’’ এর নোটগুলোর কথা উল্লেখ করা হয়।[10] ১৮৮০ সালে জনসন্স নিউ ইউনিভার্সাল সাইক্লোপিডিয়া: এ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড পপুলার ট্রেজারি অফ ইউজফুল নলেজ,।[11] ১৮৮৭ সালে দ্য চাউতাউকুয়ান,[12] এবং বিশিষ্ট চীনবিশারদ বার্থল্ড ল্যাওফার ১৯১৫ সালে এই মহা উদ্ভাবনগুলো সম্পর্কে আলোচনা করেন।[13] কেউই, যাইহোক, চার উদ্ভাবনের দিকে ইঙ্গিত করেননি বা এগুলোকে "গ্রেট" (মহা) বলেননি।
২০ শতকে বিশিষ্ট ব্রিটিশ বায়োকেমিস্ট, ইতিহাসবিদ ও চীনবিশারদ জোসেফ নিধেম চার মহা উদ্ভাবনকে আরও জনপ্রিয় করেন ও এর গুরুত্ব বর্ধিত আকারে উপস্থাপন করেন। তিনি তার পরবর্তী জীবন প্রাচীন চীনের বিজ্ঞান ও সভ্যতা অধ্যয়নে ব্যয় করেন।[14]
"দিক নির্দেশক" হিসেবে একটি চুম্বক জাতীয় যন্ত্র ব্যবহারের প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ১০৪০-১০৪৪ সালের দিকে সং সাম্রাজ্যের একটি গ্রন্থে। সেখানে লৌহ নির্মিত একটি "দক্ষিণ-মুখী মাছের" উল্লেখ আছে যা এক বাটি পানিতে ভাসমান অবস্থায় দক্ষিণমুখী হয়। যন্ত্রটিকে “রাতের আধারে” পথ বোঝার মাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।[15] যাইহোক, প্রথম নিমজ্জিত সূচালো চুম্বক কম্পাসের উল্লেখ পাওয়া যায় শেন কুও কর্তৃক ১০৮৮ সালে রচিত একটি গ্রন্থে।
চীনদেশের ইতিহাসের বেশিরভাগ জুড়ে বাটির পানিতে নিমজ্জিত কম্পাসের উল্লেখ পাওয়া যায়।[16]নিধেমের মতে সং সাম্রাজ্য ও পরবর্তীতে ইউয়ান সাম্রাজ্যের চীনারা শুকনো কম্পাস ব্যবহার করেছিল যদিও এগুলোর ব্যবহার চীনে পানিতে রাখা কম্পাসের মত ব্যপকভাবে ছিল না।[17]
চীনে ব্যবহার হওয়া শুকনো কম্পাসগুলো ছিল মূলত শুকনো সাসপেনশন কম্পাস। একটি কাঠের ফ্রেমকে কচ্ছপের আকারে কেটে একটি তক্তার সাহায্যে উপুড় করে ঝুলিয়ে মোমের সাহায্যে সন্ধানীপাথর আটকিয়ে এর লেজের দিকে সূচ বসিয়ে যন্ত্রটি তৈরি করা হয়। যন্ত্রটিকে যতই ঘোরানো হোক না কেন সূচটি সবসময় উত্তরমুখী হয়ে স্থির হবে।[17] ইউরোপিয়ানদের দ্বারা ১৪ শতকে তৈরি বক্স ফ্রেমে কম্পাস কার্ড চীনারা গ্রহণ করে ১৬ শতকে যখন জাপানী নাবিকরা এটি চীনে নিয়ে আসে (তারা এটি ইউরোপিয়ানদের কাছ থেকেই পেয়েছিল)। তবে ১৮ শতাব্দী পর্যন্ত চীনে এর নিজের তৈরি শুকনো সাসপেনশন বেশ প্রচলিত ছিল।[14]
চীনা আলকেমিগণ অমরত্বের অমৃত খুঁজতে গিয়ে গানপাউডার উদ্ভাবন করেন।[18] সং সাম্রাজ্যের শাসনামলে জেং গংলিয়াং এবং ইয়াং ওয়েইডি কর্তৃক ১০৪৪-এ রচিত গ্রন্থ উজিং জংইয়াও-এ (武经总要) গানপাউডারের নাইট্রেট মাত্রা ২৭% থেকে ৫০% বলা হয়েছে।[19] দ্বাদশ শতাব্দীর শেষদিকে চীনারা যে মাত্রায় নাইট্রেট ব্যবহার করে গানপাউডার বানাত তার বিস্ফোরণ ঢালাই লোহা দিয়ে তৈরি ধাতব কনটেইনার ভেদ করতে পারত।[20]
১২৮০ সালে ওয়েইইয়্যাং-এ বিশাল গানপাউডার আর্সেনালে দুর্ঘটনাবশত আগুন লেগে যায়। এর ফলে একটি বৃহৎ বিস্ফোরণ হয় এবং এক সপ্তাহ পর চীনা পরিদর্শক ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন যে ১০০ জন পাহারাদার নিহত হয়েছিল, একটি কাঠের বীম ও পিলারগুলো ছিটকে গিয়ে উড়তে উড়তে বিস্ফোরণস্থল থেকে ১০ লি (~২ মাইল অথবা ~৩.২ কিলোমিটার) দূরে গিয়ে পড়েছিল।[21]
চতুর্দশ শতকে জিয়াও ইউ সামরিকক্ষেত্রে গানপাউডার ব্যবহারের উপর যখন হুওলংজিং বইটি লিখেন তখন চীনারা গানপাউডারের বিস্ফোরণ মাত্রা সংশোধন করেছিল এবং গানপাউডারে নাইট্রেটের সঠিক মাত্রাও ঠিক করতে পেরেছিল।[19] তারা ছয়টি ভিন্ন ভিন্ন ফর্মুলা বের করেছিল।[19] সেসময়ে চীনারা নাইট্রেট সমৃদ্ধ গানপাউডার দিতে রাউন্ড শট বানানো শিখেছিল।[22]
হান সাম্রাজ্যের শাসনামলে (২০২ বিসি-এডি ২২০) সাম্রাজ্যের আদালতের সাথে সম্পৃক্ত এক কর্মকর্তা চাই লুন ১০৫ এডি-এ মালবেরী ও অন্যান্য বাস্ট তন্তু, মাছ ধরার জাল, পুরনো ন্যাকড়া এবং হেম্প বর্জ্য ব্যবহার করে কাগজ তৈরি করেন।[23] যাইহোক, সাম্প্রতিক সময়ে গান্সু থেকে লেখাসহ একটি কাগজ পাওয়া যায় যার বয়স খ্রিস্টপূর্ব ৮ বছর।[24]
খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে মোড়ানো ও ফাঁকা জায়গা ভরাটের জন্য চীনে কাগজের ব্যবহার হলেও[25] লেখার মাধ্যম হিসেবে কাগজ ব্যবহার ছড়িয়ে পরে তৃতীয় শতাব্দীতে।[26] ষষ্ঠ শতাব্দীতে চীনে টয়লেট পেপার হিসেবে কাগজের ব্যবহার শুরু হয়।[27]ট্যাং সাম্রাজ্যের (৬১৮–৯০৭) আমলে কাগজ ভাঁজ ও সেলাই করে টি ব্যাগ হিসেবে ব্যবহার হত চায়ের ঘ্রাণ সংরক্ষণের জন্য।[25]সং সাম্রাজ্য (৯৬০-১২৭৯) সর্বপ্রথম কাগজের মুদ্রা চালু করে।
৮৬৮ সালে পৃথিবীর প্রথম ছাপানো বই (ডায়মন্ড সুত্রা) পৃথিবীতে ছাপানোর সংস্কৃতি তৈরির কিছু সময় পূর্বে চীনে কাঠের টুকরো দিয়ে বই ছাপানোর পদ্ধতি উদ্ভাবিত হয়। মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্টের দায়িত্বে থাকা এ. হ্যায়াট মেয়র বলেন "এরা চীনারাই ছিল যারাই প্রকৃতপক্ষে যোগাযোগের মাধ্যম আবিষ্কার করেছিল যেটির প্রাধান্য আমাদের সময় পর্যন্ত থাকার কথা ছিল। "[28] কাঠের টুকরো দিয়ে বই ছাপানোর পদ্ধতি চীনা বর্ণমালার সাথে বেশি খাপ খেয়েছিল চলনযোগ্য ছাপানোর যন্ত্রের তুলনায়, যেটিও চীনারাই আবিষ্কার করেছিল কিন্তু প্রথম পদ্ধতিটিই ধরে রেখেছিল। পশ্চিমা ছাপানোর যন্ত্র ষোড়শ শতাব্দীতে চীনে পরিচয় করানো হলেও ১৯ শতাব্দীর আগ পর্যন্ত তা জনপ্রিয় হয়নি। চীন ও কোরিয়া সর্বশেষ রাষ্ট্রগুলোর অন্যতম হিসেবে এই যন্ত্রটি গ্রহণ করেছিল।[29]
টেক্সটাইল শিল্পে ও লেখার কাজে কাঠের টুকরোদিয়ে ছাপার কাজ সম্ভবত ২২০ সালের দিকে প্রথম পাওয়া যায় যা পরবর্তীতে অন্যান্য সংস্কৃতিতেও শতাব্দীর পর শতাব্দী চলমান ছিল।[30] ইসলামিক বিশ্বের মাধ্যমে ১৪ শতক বা তার পূর্বে এটি ইউরোপে পরিচিতি পায় এবং ১৪ শতকের দিকে এটি সনাতন মাস্টার প্রিন্ট এবং তাস ছাপানোর জন্য কাগজে ব্যবহার হত।[31][32]
একাদশ শতকে উত্তর চীনে ছাপানোর প্রযুক্তি আরও উন্নত হয়। কেননা সং সাম্রাজ্যের বিজ্ঞানী ও সরকারি কর্মকর্তা শেন কুও-এর (১০৩১-১০৯৫) লেখনী থেকে বোঝা যায় যে, সেসময়ে বিখ্যাত শিল্পী বি শেং (৯৯০-১০৫১) সিরামিক দিয়ে ছাপার কাজে প্রতিস্থাপনযোগ্য যন্ত্র তৈরি করে করেন।[33] এরপর ছিলেন ওয়াং চেন (অফিসিয়াল) (এফএল. ১২৯০-১৩৩৩) যিনি কাঠে অক্ষর স্থাপন আবিষ্কার করেন যা পরবর্তীতে কোরিয়ায় প্রতিস্থাপনযোগ্য ধাতব প্রিন্টিং-এর (১৩৭২-১৩৭৭) উন্নয়ন ঘটায়। একটি বা অল্প কয়েকটি বই ছাপানোর জন্য এই পদ্ধতি অত্যন্ত ধীরগতির হলেও হাজার হাজার বই তৈরির ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিটিই কার্যকর ও দ্রুতগতির হয়ে দাড়ায়। যথার্থই, চীনে অনেক শহর ছিল যেখানে স্থানীয় ধনী পরিবার অথবা ব্যক্তিগত বিশাল প্রতিষ্ঠান ধাতব ও কাঠের প্রতিস্থাপনযোগ্য প্রিন্টিং ব্যবহার করেছিল। অষ্টাদশ শতাব্দীতে কিং সাম্রাজ্যের আদালত কাঠের প্রতিস্থাপনযোগ্য প্রিন্ট ব্যবহার করে একটি বৃহৎ প্রিন্টিং প্রকল্পের অর্থায়ন করে। পশ্চিমা ছাপানোর পদ্ধতি দ্বারা প্রতিস্থাপিত হলেও চীনের অনেক বিচ্ছিন্ন সম্প্রদায়ে কাঠের প্রতিস্থাপনযোগ্য প্রিন্টিং পদ্ধতি এখনও ব্যবহার হয়।[34]
২০০৫ সালে হংকং ডাক পরিসেবা চারটি মহা উদ্ভাবন সংবলিত একটি বিশেষ ডাকটিকিট প্রকাশ করে।[35] ২০০৫ সালের ১৮ আগস্ট একটি অনুষ্ঠানে ঐধরনের ডাকটিকিট প্রকাশের ধারা শুরু হয়।[36] এলান চিয়াং (পোস্টমাস্টার জেনারেল) এবং প্রফেসর চু চিং-ওউ (হংকং ইউনিভার্সিটি অফ সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজির প্রেসিডেন্ট ) ঐ ডাকটিকিট সিরিজে আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করেন।[36]
২০০৮ সালে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে চারটি মহা উদ্ভাবন অনুষ্ঠানের মূল আয়োজনগুলোর অন্যতম ছিল।[37] একটি বিশাল কাগজের উপর কালির অঙ্কন ও নৃত্যের মাধ্যমে কাগজ তৈরি, নৃত্যরত প্রিন্টিং ব্লকের মাধ্যমে ছাপানোর যন্ত্র, সনাতন কম্পাসের একটি রেপ্লিকা এবং দৃষ্টিনন্দন আতশবাজির মাধ্যমে গানপাউডার উপস্থাপন করা হয়। বেইজিং সোশ্যাল ফ্যাক্টস অ্যান্ড পাবলিক অপিনিয়ন সার্ভের একটি জরিপমতে বেইজিং-এর অধিবাসীদের কাছে চারটি মহা উদ্ভোদনের অংশটি ছিল উদ্ভোদনী অনুষ্ঠানের সবচেয়ে হৃদয়স্পর্শী অংশ।[38]
সাম্প্রতিক সময়ে বুদ্ধিজীবীগণ কাগজের আবিষ্কার, প্রিন্টিং, গানপাউডার এবং কম্পাসের উপর প্রদত্ত গুরুত্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। চীনা বুদ্ধিজীবীগণ আশঙ্কা করেছেন এই উদ্ভাবনগুলো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চীনা উদ্ভাবনের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হবে। তারা স্পষ্ট করেছেন যে, অন্যান্য চীনা উদ্ভাবন সম্ভবত বেশি জটিল ছিল এবং চীনের মধ্যে বেশি প্রভাব রেখেছিল।[6]
চীনা ইতিহাসবিদ তার “এন্সায়েন্ট চাইনিজ ইনভেনশনস” (অর্থঃ প্রাচীন চীনা উদ্ভাবন) গ্রন্থের "আর দ্য ফোর মেজর ইনভেনশনস দ্য মোর ইম্পরট্যান্ট?" (অর্থঃ চারটি প্রধান উদ্ভাবন কি বেশি গুরুত্বপূর্ণ) অধ্যায়ে লিখেছেনঃ[39]
চারটি উদ্ভাবন প্রাচীন চীনের বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির সারমর্ম তৈরি করবে এমনটি জরুরী নয়। চারটি উদ্ভাবনকে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিতে চীনের সরচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবে গণ্য করা হয়েছিল কেবল একারণেই যে এগুলো প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে বিনিময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল এবং ইউরোপে পুঁজিবাদ বিকাশের জন্য শক্তিশালী গতি হিসেবে ভূমিকা রেখেছিল। ব্যাপারটা হচ্ছে, প্রাচীন চীনারা চারটি মূল উদ্ভাবন থেকে বেশি কিছু অর্জন করেছিল: কৃষিতে, লোহা ও তামা ধাতববিদ্যা, কয়লা ও পেট্রোলিয়াম শোষণ, যন্ত্রপাতি, মেডিসিন, এস্ট্রোনমি, গণিত, পোর্সেলিন, সিল্ক এবং মদ প্রস্তুতি। অসংখ্য উদ্ভাবন এবং আবিষ্কার চীনের উৎপাদনশীল শক্তি এবং সামাজিক জীবনকে প্রভাবিত করেছে। অনেকগুলো চারটি উদ্ভাবনের কমপক্ষে সমান গুরুত্বপূর্ণ এবং কয়েকটি ঐ চারটি থেকেও বেশি [গুরুত্বপূর্ণ]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.