Loading AI tools
ক্রিকেটের আইন উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
তৃতীয় আম্পায়ার বা থার্ড আম্পায়ার (ইংরেজি: Third umpire) (অথবা টিভি আম্পায়ার[1]) হল একটি অফ- ফিল্ড আম্পায়ার যা কিছু ক্রিকেট ম্যাচে, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক ম্যাচে ব্যবহৃত হয়। তাদের ভূমিকা হল মাঠের দুই আম্পায়ার বা খেলোয়াড়দের দ্বারা তাদের উল্লেখ করা প্রশ্নের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া।
প্রয়োজনে মাঠের আম্পায়ার হিসেবে জরুরি কাজ করার জন্য তৃতীয় আম্পায়ারও আছেন।[2] তবে, তিনি সরাসরি মাঠে খেলা পরিচালনা না করে স্টেডিয়ামের নির্দিষ্ট কক্ষে অবস্থান করেন। টেলিভিশনের পর্দায় মাঠের বিভিন্ন প্রান্তে স্থাপিত ক্যামেরার পুণঃপুণঃ দৃশ্যমালার সাহায্য নিয়ে থাকেন। আম্পায়ারদ্বয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণে অক্ষমতাজনিত কারণে কিংবা বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিরসনে প্রধান ভূমিকা রাখেন। তিনি চূড়ান্ত ও সঠিক সিদ্ধান্ত প্রদান করে খেলাকে গতিশীল রাখেন। সেজন্যে তিনি টিভি আম্পায়ার নামেও পরিচিত। তিনি মাঠে অবস্থানকারী আম্পায়ারদ্বয়কে সর্বাত্মকভাবে সহায়তা করেন। রেডিও লিঙ্কের সাহায্যে তিনি তার দৃষ্টিভঙ্গী আম্পায়ারের কাছে প্রকাশ করেন, মাঠে স্থাপিত আম্পায়ার লাইটের মাধ্যমে লাল অথবা সবুজ রঙের বাতিতে প্রয়োজনীয় সঙ্কেত প্রদান করে থাকেন। আউট, ক্যাচ, রান আউট, স্ট্যাম্পিং কিংবা বাউন্ডারীর ন্যায় সিদ্ধান্তগুলোর প্রাসঙ্গিকতা ও সত্যাসত্য যাচাই করেন।
শ্রীলঙ্কার সাবেক টেস্ট ক্রিকেটার মহিন্দ বিজেসিংহে তৃতীয় আম্পায়ারের ধারণার প্রবর্তক হিসেবে পরিচিত হয়ে আছেন। ১৯৯২ সালে ডারবানের কিংসমিডে দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম ভারতের মধ্যকার খেলার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো তৃতীয় আম্পায়ার ব্যবস্থা প্রচলিত হয়।[3] কার্ল লিবেনবার্গ এবং সিরিল মিচলে ঐ টেস্টে টিভি আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। টেস্টের দ্বিতীয় দিনে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে শচীন তেন্ডুলকর টেলিভিশনে পুণঃপ্রদর্শনের মাধ্যমে রান আউট হয়েছিলেন।[4]
তৃতীয় আম্পায়ারকে আইসিসি আম্পায়ারদের এলিট প্যানেল বা টেস্ট ম্যাচ,[2] ওডিআই,[5] এবং টি-টোয়েন্টি ম্যাচের জন্য আইসিসি আম্পায়ারদের আন্তর্জাতিক প্যানেল থেকে নিযুক্ত করা হয়।[6]
সমস্ত টেস্ট ম্যাচের জন্য এবং ওডিআইয়ের জন্য যেখানে ডিআরএস ব্যবহার করা হয়, তৃতীয় আম্পায়ার আইসিসি দ্বারা নিযুক্ত হয়, এবং উভয় পক্ষের জন্য আলাদা জাতীয়তা। ওডিআইয়ের জন্য যেখানে ডিআরএস ব্যবহার করা হয় না, এবং সমস্ত টি-টোয়েন্টির জন্য, তৃতীয় আম্পায়ার হোম সাইডের গভর্নিং বডি দ্বারা নিযুক্ত করা হয়।
রান আউট কিংবা স্ট্যাম্পিংয়ের ক্ষেত্রে ব্যাটসম্যানকে আউট করার নিয়ম প্রচলিত আছে। কিন্তু ব্যাটসম্যানের পা অথবা ব্যাট যদি পপিং ক্রিজে লেগে থাকে সেক্ষেত্রে সন্দেহ দূর করার স্বার্থে তৃতীয় আম্পায়ারের শরণাপন্ন হতে হয়। অথবা বলের সাহায্য নিয়ে বেল ফেলে দেয়া কিংবা ক্যাচ নেয়ার ক্ষেত্রে বল মাটি স্পর্শ করেছে কি-না সেক্ষেত্রে তৃতীয় আম্পায়ার সহায়তা করেন। যদি ব্যাটসম্যান আউট হন তাহলে তিনি ট্রাফিক বাতির ন্যায় লাল বাতি জ্বালান। আর অপরাজিত থাকলে তিনি সবুজ বাতি প্রজ্জ্বলন করেন। যদি মাঠে ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড থাকে, তাহলে নট আউট, আউট, ডিসিশন পেন্ডিং ইত্যাদি শব্দ দৃশ্যমান হয়। সচরাচর তৃতীয় আম্পায়ারও সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হলে ব্যাটসম্যানের অনুকূলে ‘বেনিফিট অব ডাউট’ প্রয়োগ করে খেলা চলমান রাখা হয়।
রান আউটের ক্ষেত্রে একই সময়ে প্রান্ত সীমায় পৌঁছানোর প্রাক্কালে কোন ব্যাটসম্যানকে আউট ঘোষণা করা হবে, তা নিয়েও সন্দেহের দোলাবর্তে তৃতীয় আম্পায়ার সহযোগিতা করেন। এ ধরনের ঘটনা ঘটেছিল ২০০৬ সালে নিউজিল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার ৩য় টেস্টে।[7]
একজন মাঠের আম্পায়ার তার নিজের বিবেচনার ভিত্তিতে, একটি রেডিও লিঙ্ক ব্যবহার করে নির্দিষ্ট ধরণের ঘনিষ্ঠ সিদ্ধান্ত তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে উল্লেখ করতে পারেন, একে আম্পায়ার রিভিউ বলা হয়। যখন সম্পূর্ণ আম্পায়ার ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম ব্যবহার করা হয় না, তখন তৃতীয় আম্পায়ার তাকে সিদ্ধান্তে আসতে সহায়তা করার জন্য টেলিভিশন রিপ্লে ব্যবহার করেন (কেবল)।[8]
যখন সম্পূর্ণ ডিআরএস ব্যবহার করা হয়, তখন খেলোয়াড়রা মাঠের আম্পায়ারদের দ্বারা নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তের পর্যালোচনাও শুরু করতে পারে, একে প্লেয়ার রিভিউ বলা হয়। এগুলি তৃতীয় আম্পায়ার দ্বারা বিচার করা হয়, এবং তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে আম্পায়ার রিভিউ এবং প্লেয়ার রিভিউ উভয়ের জন্যই সাধারণ রিপ্লে ছাড়াও প্রযুক্তির সম্পূর্ণ পরিসর রয়েছে।
মাঠের আম্পায়ারদের একজনের আঘাত বা অসুস্থতার ক্ষেত্রে, তৃতীয় আম্পায়ার তার জায়গা নেবেন। তৃতীয় আম্পায়ারের দায়িত্ব চতুর্থ আম্পায়ারের দ্বারা নেওয়া হবে।[9]
উদাহরণস্বরূপ, ২০১৫-১৬ সালে ক্যানবেরায় অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের মধ্যে ৪র্থ ওডিআই চলাকালীন, অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস চলাকালীন আম্পায়ার রিচার্ড কেটলবরো আহত হন এবং তৃতীয় আম্পায়ার পল উইলসনের স্থলাভিষিক্ত হন।[10]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.