নির্মূল শিবির
From Wikipedia, the free encyclopedia
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ইহুদি গণহত্যার সময় লক্ষ লক্ষ ইহুদিগণকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করার উদ্দেশ্যে জার্মান নাৎসি বাহিনী কতিপয় নির্মূল শিবির ("মৃত্যু শিবির", "হত্যা কেন্দ্র" ইত্যাদি নামেও পরিচিত) নির্মাণ করে। এসব নির্মূল শিবিরে ইহুদি ছাড়াও অন্যেরা পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়, যেমন- পোলীয়, সোভিয়েত যুদ্ধবন্দী এবং রোমানিগণ। এসকল শিবিরের বন্দীদের হত্যার জন্য ব্যবহৃত হত বিষাক্ত গ্যাস, গ্যাস প্রয়োগের জন্যে শিবিরের স্থায়ী ব্যবস্থা থাকত নতুবা গ্যাস প্রয়োগ করা যায় এরূপ গাড়ির ব্যবস্থা থাকত।[1] কোন কোন নাৎসি শিবির যেমন অশউইৎজ এবং মাজদানেক শিবিরসমূহ দ্বৈত উদ্দেশ্য ব্যবহৃত হত: প্রথমত এর বন্দীদের গ্যাস প্রয়োগে হত্যার উদ্দেশ্যে এবং দ্বিতীয়ত অভুক্ত অবস্থায় কঠিন কায়িক শ্রমে বাধ্য করেও বন্দীদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হত।[1][2]
বন্দীদেরকে রেলগাড়িতে করে নির্মূলের উদ্দেশ্যে এই স্থায়ী স্থাপনাসমূহে নিয়ে যাওয়া হত। এই প্রক্রিয়ার প্রথম সূচনা হয় যখন নাৎসিরা অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় প্রস্তুত বিষাক্ত গ্যাস প্রয়োগ করে হাসপাতালের শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধীদের নির্মূল করার উদ্যোগ নেয়, তাদের এই গোপন মানবহত্যা কর্মসূচির নাম ছিল "অ্যাকশন টি-৪"।[3][lower-alpha 1] মানবহত্যার এই প্রযুক্তিকে পরবর্তীতে আরো সমুন্নত ও সম্প্রসারিত করে যুদ্ধকালীন অপ্রস্তুত বন্দীদের ওপর প্রয়োগ করা হয়, যাদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল ইহুদি, যারা ছিল এসকল হত্যা শিবিরে নিহত বন্দীদের শতকরা ৯০ ভাগ।[9] "৩য় রাইখ"-এর মতে ইহুদিদের গণহত্যা ছিল ইহুদি প্রশ্নের "চূড়ান্ত সমাধান"।[10] এ ঘটনাসমূহ একত্রে ইহুদি গণহত্যা বা হলোকাস্ট (Holocaust) নামে পরিচিত, যার কারণে ইহুদি ব্যতীত অন্যান্য আরো ১ কোটি ১০ লক্ষ মানুষ নিহত হয়।[1][11]
এছাড়াও ক্রোয়েশিয়ার ক্ষমতাসীন ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী উস্তাসে কর্তৃকও নির্মূল শিবির স্থাপিত হয়, এই সরকারটি ছিল নাৎসিদের পুতুল সরকার বিশেষ, এবং এই শিবিরেও ১৯৪১ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত সার্ব, ইহুদি ও রোমানিদের হত্যা করা হয় এবং সরকারবিরোধী ক্রোয়াট ও মুসলিম বসনীয়দেরকেও এস্থানে হত্যা করা হত।[12]