মৈতৈ/ˈməɪtəɪ/[4] (মৈতৈ ভাষায়: মেইতেই লোন্‌, মণিপুরী ভাষা নামেও পরিচিত[5][6]) উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুর রাজ্যের প্রধান ভাষা। সরকারি দপ্তরে এই ভাষা ব্যবহার করা হয়। মণিপুর ছাড়াও আসাম, ত্রিপুরা, বাংলাদেশমায়ানমারে ভাষাটি প্রচলিত।[7]

দ্রুত তথ্য মৈতৈ, অঞ্চল ...
মৈতৈ
মণিপুরী, মেইতেই লোন্‌
ꯃꯤꯇꯩꯂꯣꯟ
Thumb
অঞ্চলউত্তর-পূর্ব ভারত, বাংলাদেশ, মায়ানমার
জাতিমৈতৈ
মাতৃভাষী
১২ লক্ষ ৫০ হাজার (২০১০)[1] থেকে ১৪ লক্ষ ৮৫ হাজার (২০০১ জনগণনা)[2]
মৈতৈ লিপি,
পূর্ব নাগরী লিপি
লাতিন বর্ণমালা
সরকারি অবস্থা
সরকারি ভাষা
(মণিপুর)
ভাষা কোডসমূহ
আইএসও ৬৩৯-২mni
আইএসও ৬৩৯-৩দুইয়ের মধ্যে এক:
mni  Meitei
omp  Old Manipuri
ভাষাবিদ তালিকা
omp Old Manipuri
গ্লোটোলগmani1292[3]
বন্ধ

মৈতৈ একটি চীনা-তিব্বতি ভাষা যার সঠিক শ্রেণিবিভাগটি এখনও স্পষ্ট নয়। এই ভাষার সঙ্গে কুকি ভাষা এবং তাংখুল ভাষার অভিধানিক মিল আছে।[8]

মৈতৈ ভাষা মণিপুরের সমস্ত জাতিগুলো নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য এটি ব্যবহার করে, এবং এই ভাষাটি এই জাতিগুলোকে সমন্বিত উপাদান হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এটি ভারতীয় সরকার কর্তৃক স্বীকৃত এবং ১৯৯২ সালের সংবিধানের ৭১তম সংশোধনী দ্বারা ৮ম তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্নাতোকত্তর (পিএইচডি) স্তর অবধি মৈতৈ ভাষা একটি বিষয় হিসাবে পড়ানো হয়, এবং স্নাতক স্তর অবধি মৈতৈ মাধ্যমে শিক্ষাদান করা হয়। সরকারী বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণী অবধি মৈতৈ ভাষায় শিক্ষাদান করা হয়।[9]

ব্যুৎপত্তি

মৈতৈয়ের অনেক স্থানীয় ভাষাভাষীরা "মণিপুরী" নামটি থেকে "মৈতৈ" (বা "মৈতৈলোন্") নামটি বেশি পছন্দ করেন। "মৈতৈলোন" শব্দটি মৈতৈ জাতির নাম এবং মৈতৈ শব্দ "লোন্‌" ভাষা থেকে এসেছে। মৈতৈ শব্দটি হয়ত "মি" মানুষ + "থৈ" আলাদা; স্বতন্ত্র শব্দ দুটি থেকে এসেছে। পশ্চিমি ভাষাবিদরাও "মৈতৈ" নামটি ব্যবহার করেন।[10]

আবার রাজ্যের নাম "মণিপুর" থেকেও এর নাম "মণিপুরী" বলা হয়।[10] "মণিপুর" শব্দটির একটি পৌরাণিক লোক-ব্যুৎপত্তি আছে, যেখানে বলা হয় নাগদেবতা বাসুকির মাথা থেকে একটি উজ্জ্বল হীরক "মণি" নিক্ষিপ্ত করা হয় এবং যার ফলে সারা পৃথিবীতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ছড়িয়ে দেয়।[10] ভারতের সরকারী ক্ষেত্রে এবং সরকারী প্রতিষ্ঠানে ভাষার নামটি "মণিপুরী" হিসাবে ব্যবহার করা হয়। কখনও "মণিপুরী" শব্দটি বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষা এবং বিষ্ণুপ্রিয়া জাতির ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়।এছাড়াও "মণিপুরী" শব্দটি মণিপুর রাজ্য সম্বন্ধীয় যে কোন বিষয় ব্যবহার করা হয়।

উপভাষা

মৈতৈ ভাষার বহু উপভাষা আছে, কিন্তু ইদানিংকালে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি এবং অসবর্ণ বিবাহের ফলে উপভাষাগুলোর মধ্যে যে পার্থক্য আছে তা প্রায় নগণ্য হয়ে গেছে। এর ব্যতিক্রম হচ্ছে ত্রিপুরা, বাংলাদেশ ও মায়ানমারে পাওয়া উপভাষার বাক্-পার্থক্য।[11] মৈতৈয়ের উপভাষার সঠিক সংখ্যা অজানা।[12]

এই ভাষার প্রধান উপভাষাগুলো হল প্রমিত মৈতৈ, লোই এবং পাঙ্গাল। মৈতৈয়ের উপভাষাগুলোর মূল পার্থক্যগুলো হল নতুন ধ্বনির বিস্তার এবং সুরাঘাতীয় অপসরণ। প্রমিত মৈতৈকে অন্য দুটি উপভাষার চেয়ে বেশি পরিবর্তনশীল বলে মনে করা হয়। উপভাষাগুলোর সামান্য পার্থক্যগুলো নিম্নলিখিত সারণিতে দেওয়া হল:[13]

আরও তথ্য প্রমিত মৈতৈ !! লোই !! পাঙ্গাল !! বাংলা ...
প্রমিত মৈতৈ[14] !! লোই !! পাঙ্গাল !! বাংলা
চাঃবাচাঃপাচাঃবাখাওয়া
কপ্পাকপ্মাকব্বাকাঁদা
সাঃবিবাসাঃপিপাসাঃবিবাবানানো
থাম্বাথাম্পাথাম্বারাখা
চুপ্পিবাচুপ্পিপাচুবিবাচুম্বন দেওয়া
বন্ধ

দেবী (২০০২) মৈতৈয়ের ইম্ফল, আন্দ্রো, কৌত্রুক এবং কাকচিং উপভাষাগুলোর তুলনা করেছেন।

ধ্বনিতত্ত্ব

মৈতৈ নিম্নলিখিত ধ্বনিগুলো ব্যবহার করে:[15]

স্বরধ্বনি

আরও তথ্য সম্মুখ, কেন্দ্রিক ...
সম্মুখ কেন্দ্রিক পশ্চাৎ
সংবৃত iu
মধ্য eɐo
বিবৃত a
বন্ধ

টিকা: মৈতৈ সংক্রান্ত সাম্প্রতিক লেখায় মধ্য স্বরধ্বনি /ɐ/-কে <ə> হিসাবে লেখা হচ্ছে। কিন্তু ধ্বনিগতভাবে এটা কখনই [ə] নয়, [ɐ]। এটি সমীভবন হয়ে নৈকট্যধ্বনি হয়ে যায়: /ɐw/ = /ow/, /ɐj/ = [ej]।

ব্যঞ্জনধ্বনি

আরও তথ্য ওষ্ঠ্য, দন্ত্য/ দন্তমূলীয় ...
ওষ্ঠ্য দন্ত্য/
দন্তমূলীয়
তালব্য পশ্চাত্তালব্য কণ্ঠনালীয়
নাসিক্য mnŋ
স্পর্শ ঘোষ অল্পপ্রাণ bdɡ
শ্বসিত dʒʱ
অঘোষ অল্পপ্রাণ ptkʔ
মহাপ্রাণ
উষ্ম sh
তাড়নজাত ɾ
পার্শ্বিক l
নৈকট্য wj
বন্ধ

শব্দ-সুরাঘাত

মৈতৈ ভাষা একটি সুরাঘাতীয় ভাষা। তবে এই ভাষাতে দুটি না তিনটি সুর আছে তা নিয়ে বিতর্ক আছে।[16]

ধ্বনিতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া

পশ্চাত্তালব্য ধ্বনির লোপ

-lək প্রত্যয় যখন/k/-অন্ত শব্দাক্ষরের পরে বসে তখন তার পশ্চাত্তালব্য ধ্বনিটি লোপ পায়।[16]

গ্রাসমানের সূত্র

সংস্কৃত এবং প্রাচীন গ্রীক ভাষায় পাওয়া গ্রাসমানের সূত্রে ব্যক্ত বিষমীভবনের মত একটি প্রক্রিয়া মৈতৈ ভাষায়।[17] এই ক্ষেত্রে একটি মহাপ্রাণিত ব্যঞ্জনধ্বনি যদি এমন কোন শব্দাক্ষরের পরে বসে যার শেষ ব্যঞ্জনধ্বনিটি মহাপ্রাণ (যেমন /h/, /s/) তবে প্রথমোক্ত ব্যঞ্জনধ্বনিটি মহাপ্রাণহীন হয়ে যায়। এই মহাপ্রাণহীন ধ্বনিটিই রণনশীল ধ্বনির মধ্যবর্তি অবস্থায় ঘোষ ধ্বনি হয়ে যায়।

  • /tʰin-/ ('ভেদ করা') + /-khət/ ('ঊর্ধ্বাভিমুখী') → /tʰinɡət/ ('উপরের দিকে ভেদ করা')
  • /səŋ/ ('গরু') + /kʰom/ ('বাঁট') → /səŋɡom/ ('দুধ')
  • /hi-/ ('ছাঁটা') + /-tʰok/ ('বহির্মুখী') → /hidok/ ('বাইরের দিকে ছাঁটাই করা')

লিখন পদ্ধতি

মৈতৈ লিপি

১৮শ শতক অবধি মৈতৈয়ে লেখার জন্য নিজস্ব লিপি ব্যবহার করা হত, কিন্তু এর প্রথম ব্যবহার সম্বন্ধে কোন তথ্য পাওয়া যায় না। মনিপুর রাজ মেইদিঙ্গু পামহেইবা, মণিপুরে হিন্দুধর্মের প্রবর্তন করেছিলেন, মৈতৈ লিপির ব্যবহার নিষিদ্ধ করে দেন এবং বাংলা লিপি গ্রহণ করেন। বর্তমানে বিদ্যালয় এবং মহাবিদ্যালয়গুলোতে বংলা লিপির পরিবর্তে ক্রমশ মৈতৈ লিপির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো মৈতৈয়ের নিজস্ব লিপি সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে।

১৮শ শতাব্দীর শুরুতে মণিপুরের হিন্দু ধর্মে রূপান্তরিত রাজা পামহেইবা, বাঙালি হিন্দু ধর্মপ্রচারক শান্তিদাশ গোঁসাইয়ের প্ররোচনায় অনেক মৈতৈ নথি নষ্ট করে ফেলেন।

১৭০৯ সাল এবং ২০শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় অবধি মৈতৈ ভাষা লেখার জন্য বাংলা লিপি ব্যবহার করা হত। ১৯৪০ এবং ১৯৫০-এর দশকে মৈতৈ পন্ডিতরা প্রাচীন মৈতৈ (মণিপুরি) বর্ণমালাকে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রচার শুরু করেন।

১৯৭৬ সালে একটি লেখক সম্মেলনে, সব পণ্ডিতরা অবশেষে বর্ণমালার একটি নতুন সংস্করণ তৈরিতে সম্মত হন। এই বর্ণমালায় বেশকিছু অতিরিক্ত বর্ণ ছিল যেগুলোর দ্বারা প্রাচীন মৈতৈয়ে অনুপস্থিত কিন্তু আধুনিক মৈতৈয়ে উপস্থিত ধ্বনিগুলোকে চিহ্নিত করার জন্য ব্যবহার করা হয়। বর্তমান মৈতৈ বর্ণমালা প্রাচীন মৈতৈ লিপির পুনর্গঠিত রূপ। ১৯৮০-র দশকের শুরু থেকে মণিপুরের বিদ্যালয়গুলোতে মৈতৈ বর্ণমালা শেখানো হয়ে আসছে।

মৈতৈ বর্ণমালা বাংলা বর্ণমালার মতই একটি আবুগিদা যেটিতে ব্যঞ্জনবর্ণগুলোতে একটি অন্তর্নিহিত স্বরধ্বনি আছে, মৈতৈয়ের ক্ষেত্রে যা হল/ə/(বাংলা "অ"-এর সমতুল্য ধ্বনি)। প্রত্যেকটি বর্ণ কে মানব দেহের কোন একটি অঙ্গের উপর রাখা হয়।

মণিপুরের মারিঙ নাগা জাতি এবং লিম্বু জাতির কিছু নথি আছে যা মৈতৈ লিপিতে লেখা হয়েছিল।

লাতিন বর্ণমালা

মৈতৈ লিপি ছাড়াও এখন মৈতৈ ভাষা লেখার জন্য লাতিন বর্ণমালা ব্যবহার হয়ে থাকে, বিশেষ করে ইন্টারনেটে। এছাড়াও শিক্ষা ক্ষেত্রেও বিভিন্ন গ্রন্থ লাতিন বর্ণমালায় মূদ্রিত হয়। যদিও এই বর্ণমালাতে সুরাঘাতগুলো চিহ্নিত করা হয় না, তবুও এই দ্ব্যর্থহীনভাবে মৈতৈ ভাষার ধ্বনিগুলোকে চিহ্নিত করা যায়। কেবল /ə/এবং/a/ধ্বনি দুটিই a দিয়ে লেখা হয়ে থাকে। আবার দ্ব্যর্থতা নিরসণের জন্য কখনও/ə/-কে aa দিয়েও চিহ্নিত করা হয়।

আরও তথ্য আধ্বব, লাতিন বর্ণমালা ...
আধ্ববলাতিন বর্ণমালা
/m/m
/n/n
/ŋ/ng
/b/b
/d/d
/dʒ/j
/ɡ/g
/bʱ/bh
/dʱ/dh
/dʒʱ/jh
/ɡʱ/gh
/p/p
/t/t
/tʃ/ch
/k/k
/ʔ/
/pʰ/ph (কদাচিৎ f)
/tʰ/th
/kʰ/kh
/s/s বা sh
/h/h
/ɾ/r
/l/l
/w/w
/j/y
/ɐ/a
/ɐj/ei
/ɐw/ou
/a/a বা aa
/aj/ai
/aw/ao
/e/e
/i/i (কদাচিৎ ee)
/o/o
/oj/oi
/u/u (কদাচিৎ oo)
/uj/ui
বন্ধ

ব্যাকরণ

বচন

বহুবচনের ক্ষেত্রে বিশেষ্য এবং সর্বনামের শেষে -খোই (পুরুষবাচক সর্বনাম এবং মনুষ্য নামবিশেষ্য) অথবা -সিং (বাকি ক্ষেত্রে) যোগ করা হয়। বাংলার মতই মৈতৈ ভাষায় বচন ক্রিয়ার উপর কোন প্রভাব ফেলে না। নিচে উদাহরণ দেওয়া হল:[18]

আরও তথ্য বিশেষ্য (মৈতৈ), বিশেষ্য (বাংলা) ...
বিশেষ্য (মৈতৈ)বিশেষ্য (বাংলা)উদাহরণ (মৈতৈ)উদাহরণ (বাংলা)
আংআংবাচ্চাআংআং কপ্পিবাচ্চা কাঁদে।
আংআংসিংবাচ্চারাআংআংসিং কপ্পিবাচ্চারা কাঁদে।
বন্ধ

বিশেষণকে স্পষ্টরূপে চিহ্নিত করার জন্য প্রত্যয়ের পরিবর্তে পৃথক শব্দ ব্যবহার করা হয়।[18]

আরও তথ্য বিশেষণ (মৈতৈ), বিশেষণ (বাংলা) ...
বিশেষণ (মৈতৈ)বিশেষণ (বাংলা)উদাহরণ (মৈতৈ)উদাহরণ (বাংলা)
অমাএকমি অমা লাক্ইএকটি লোক আসে।
খরকিছুমি খর লাক্ইকিছু লোক আসে।
ময়ামঅনেক, বহুমি ময়াম লাক্ইবহু লোক আসে।
বন্ধ

যৌগিক ক্রিয়া

ধাতুর সঙ্গে ভাবপ্রকারকে পরপ্রত্যয় হিসাবে যোগ হয়ে যৌগিক ক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এই পরপ্রত্যয়ের সংখ্যা বেশি হলেও নিচে দেওয়া দুটিই অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়:[19]

আরও তথ্য পরপ্রত্যয়, বাংলা ...
পরপ্রত্যয়বাংলা
-থোক-বার করা/বেরানো
-নিঙ-চাওয়া/ইচ্ছা করা/আশা করা
বন্ধ

সার্বিকভাবে যৌগিক ক্রিয়ার রূপটি হল [ধাতু] + [প্রত্যয়] + [ভাবপ্রকার]:[19]

আরও তথ্য ভাষা, ধাতু ...
ভাষাধাতুপ্রত্যয়ভাবপ্রকারযৌগিক রূপ
মৈতৈতুম--থোক--লেতুমথোকলে
বাংলাঘুমবার করা/বেরানোপুরাঘটিত ভাবঘুমাতে শুরু করেছিল
মৈতৈতুম--নিঙ--লেতুমনিঙলে
বাংলাঘুমচাওয়াপুরাঘটিত ভাবঘুম পেয়েছিল
বন্ধ

..

মনিপুরী সাহিত্য

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

গ্রন্থপঞ্জি

বহিঃসংযোগ

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.