মসলিন
সরল বুননের সুতি কাপড় / From Wikipedia, the free encyclopedia
মসলিন বিশেষ এক ধরনের তুলার আঁশ থেকে প্রস্তুতকৃত সূতা দিয়ে বয়ন করা এক প্রকারের অতি সূক্ষ্ম কাপড়বিশেষ। ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মসলিন উৎপাদন করা হত; তবে বাংলার প্রধান উৎপাদন ক্ষেত্র ছিল ঢাকা ও মুর্শিদাবাদ। এছাড়াও শান্তিপুর, মালদা ও হুগলিতে মসলিন উৎপাদিত হত। ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে উপাদিত মসলিন ছিল উৎকৃষ্ট মানের, যা ঢাকাই মসলিন নামে সুবিদিত। শান্তিপুরে উৎপাদিত মসলিন শান্তিপুরী মসলিন হিসাবে পরিচিতি লাভ করে, যা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক স্বীকৃত ছিল। ঢাকাই মসলিন ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসাবে এবং বাংলার মসলিন ভারতীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে।[1][2] ঢাকায় ফুটি কার্পাস নামক তুলা থেকে প্রস্তুত অতি চিকন সুতা দিয়ে মসলিন তৈরি করা হত, অপরদিকে মালদা, রাধনগর ও বর্ধমানে নুরমা বা কৌর নামক তুলা প্রস্তুত সূক্ষ্ম সুতা দিয়ে মসলিন তৈরি করা। চড়কা দিয়ে কাটা, হাতে বোনা মসলিনের জন্য সর্বনিম্ন ৩০০ কাউন্টের সুতা ব্যবহার করা হত যার ফলে মসলিন হত কাচের মত স্বচ্ছ। এই মসলিন রাজকীয় পোশাক নির্মাণে ব্যবহার করা হত। মসলিন প্রায় ২৮ রকম হত যার মধ্যে জামদানী এখনও ব্যাপক আকারে প্রচলিত। নানা কারণে আঠারো শতকের শেষার্ধে বাংলায় মসলিন বয়ন বন্ধ হয়ে গেলেও বর্তমানে সরকার কর্তৃক গৃহীত উদ্যোগে পুনরায় বুননের কাজে হাত দেওয়া হয় এবং এই শিল্পকে আবার ফিরিয়ে আনা গেছে।