Loading AI tools
বাংলাদেশি শহিদ বুদ্ধিজীবী, লেখক ও চিকিৎসক উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মোহাম্মদ মোর্তজা (জন্ম: ১ এপ্রিল , ১৯৩১ - মৃত্যু: ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক যিনি লেখক এবং প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী হিসেবে সবিশেষ পরিচিত ছিলেন।[1][2] ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে পাকিস্তান সেনাবাহিনী, রাজাকার ও আল-বদর বাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডের অংশ হিসাবে তিনি ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের ফুলার রোডে অবস্থিত স্বগৃহ থেকে অপহৃত হন, পরে তাকে হত্যা করা হয়।[3][4]
মোহাম্মদ মোর্তজা | |
---|---|
জন্ম | ১ এপ্রিল, ১৯৩১ চণ্ডীপুর, ২৪ পরগণা, পশ্চিমবঙ্গ |
মৃত্যু | ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১ রায়েরবাজার, ঢাকা, বাংলাদেশ |
পেশা | চিকিৎসক, লেখক, বুদ্ধিজীবী, |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ |
সাহিত্য আন্দোলন | বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলন |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | পাক-ভারত যুদ্ধের তাৎপর্য |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান পুরস্কার, ১৯৬৪ |
সন্তান | মিতি, অর্ণব |
ডঃ মুর্তজা ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৫৪ সালে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভের পরে ঢাকা মেডিকেল সেন্টারে ১৯৫৫ সালে সহকারী মেডিকেল অফিসার হিসাবে যোগ দেন।[4][5]
ডঃ মুর্তজা ছিলেন একজন চিন্তাশীল লেখক। তিনি অনুবাদ করেছেন, প্রবন্ধ লিছেন এবং গল্প-উপন্যাস রচনা করেছেন [4] তার উল্লেখযোগ্য রচনাসমূহ[5]:
ডা: মোর্তজা ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে দখলদার পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী হত্যা পরিকল্পনার একজন মর্মান্তিক শিকার।[6] মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব হাসপাতালে চিকিৎসক হিসাবে কর্মরত ছিলেন।[7] বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তিলগ্নে ১২ ডিসেম্বর ভোর বেলা অসামরিক পোশাক পরিহিত কয়েকজন ব্যক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকায অবস্থিত তার বাসায় আসে এবং তাকে ধরে নিয়ে যায়। তার কন্যা মিতি'র ওড়না দিয়ে চোখ বেঁধে গাড়ীতে ক'রে তাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। দু'দিন পর, ১৪ ডিসেম্বর তারিখে, তাকে রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে হত্যা করা হয়। ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর রায়ের বাজার বধ্যভূমির খোঁজ পাওয়ার গেলে সেখানে তল্লাশী চালিয়ে অন্যান্য মৃত দেহের সঙ্গে কন্যা মিতির ওড়না দেখে তার মরদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়। তার লাশ উদ্ধার করে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে দাফন করা হয়। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক কন্যা এবং এক পুত্র রেখে গেছেন। তিনি ডাক্তার হলেও বামপন্থী চিন্তা ধারার মানুষ ছিলেন। এ কারণে তিনি ১৯৬০-এর দশকের শুরু থেকেই পাকিস্তানি শাসক চক্রের বৈরীতার শিকার ছিলেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বামপন্থী রাজনৈতিক মহলে একনামে সকলে ডাঃ মোর্তজাকে চিনতো।
তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১২ ডিসেম্বর সকাল আটটা থেকে পৌনে ১০টার মধ্যে চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খান-এর নেতৃত্বে পাঁচ-ছয়জনের একটি আলবদর দল অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক সিরাজুল হক খান, ড. মো. মুর্তজা, ড. আবুল খায়ের, ড. ফয়জুল মহিউদ্দিন, অধ্যাপক রাশিদুল হাসান, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা ও অধ্যাপক সন্তোষচন্দ্র ভট্টাচার্য কে তাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসভবন থেকে অপহরণ করে। ১৬ ডিসেম্বরের পর মিরপুর বধ্যভূমি থেকে সিরাজুল হক খান ও ফয়জুল মহিউদ্দিন ছাড়া বাকি ছয়জনের লাশ পাওয়া যায়।[8] ডাঃ মোর্তজাকে তার কন্যা মিতি’র ওড়না দিয়ে চোখ বেঁধে গাড়ীতে করে তুলে নেয়া হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে ওই ওড়না দেখে ডাঃ মোর্তুজার লাশ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছিল।
কয়েক যুগ পর ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ৩রা নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, চৌধুরী মুঈনুদ্দীন এবং আশরাফুজ্জামান খান কে ১৯৭১ সালের ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে মোহাম্মদ মুর্তজা সহ ১৮ জন বুদ্ধিজীবীকে অপহরণের পর হত্যার দায়ে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।[3][4][9]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.