শ্রীলঙ্কান তামিল
দক্ষিণ এশীয় জাতিগোষ্ঠী / From Wikipedia, the free encyclopedia
শ্রীলঙ্কান তামিল (তামিল: இலங்கை தமிழர், প্রতিবর্ণী. ইলাঙ্গাই তামিলার) বলতে শ্রীলঙ্কার নিজস্ব তামিল জাতিকে বোঝানো হয়। শ্রীলঙ্কায় খ্রিষ্টপূর্ব ২য় শতাব্দী থেকেই তামিলরা বাস করে বলে কথিত আছে, এবং তামিলরাই নাকি শ্রীলঙ্কাতে প্রথম মানব-বসতি এবং সভ্যতা গড়ে তুলেছিলো। শ্রীলঙ্কার প্রায় সব তামিলই হিন্দু ধর্মাবলম্বী যেখানে সিংহল জাতিরা বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। যুগ ধরে ধরে শ্রীলঙ্কায় তামিলরা মূলত দেশটির উত্তরাঞ্চলেই বাস করতো কিন্তু পরে পূর্বাঞ্চলে এবং মধ্যঞ্চলে বসতি বানায় কিন্তু ততোদিনে সিংহলী ভাষার মানুষরা শ্রীলঙ্কায় আধিপত্য বিস্তার করেছিলো, এটা খ্রিষ্টপরবর্তী ২০০ সালের দিকের কথা। পরবর্তী সময় ধরে সিংহলী রাজাদের সময়কাল থেকে ব্রিটিশ শাসন পর্যন্ত (যখন শ্রীলঙ্কার নাম ছিলো 'সিলন') তামিলরা সংখ্যালঘু ছিলো এবং ১৯৪৮ সাল থেকে শ্রীলঙ্কায় তামিলরা তাদের ন্যায্য অধিকার পাবার জন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে এসেছে। শ্রীলঙ্কাকে 'সিংহল' নামে ডাকতো সিংহলীরা আর তামিলরা বলতো 'ইলাঙ্গাই'।[1]
২০১২ সালের এক সরকারী হিসেব অনুযায়ী শ্রীলঙ্কার ১১ শতাংশ মানুষ তামিল ছিলো।[2] ১৯৮০-এর দশকে শ্রীলঙ্কায় তামিল জাতীয়তাবাদ দেখা দেয় যেটা উগ্র রূপ ধারণ করে এবং লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলম নামের একটি সংগঠন শ্রীলঙ্কা জুড়ে সন্ত্রাসী হামলা চালাতে থাকে, তবে ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কা সশস্ত্র বাহিনীর কাছে সংগঠনটি পরাজিত হয়, সত্তরের দশক থেকে শ্রীলঙ্কার তামিলরা সিংহলীদের হাতে অত্যাচারিত হয়েছে, খুন হয়েছে, গণহত্যার শিকার হয়েছে যেটা ২০০০-এর দশক পর্যন্ত চলে এবং শ্রীলঙ্কার ১৯৪৮ সালের জন্ম থেকে (ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের সময় থেকে) সেই ২৫ শতাংশ তামিল লোকদের সংখ্যা কমতে কমতে ১১ শতাংশ হয়ে যায় ২০১২ সালে, রাষ্ট্রপতি মহিন্দ রাজাপক্ষ শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধতে ক্ষয়-ক্ষতির হিসেব দিতে গিয়ে সিংহলীদেরই বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী করেছিলেন।[3][4] অন্যদিকে গৃহযুদ্ধ চলাকালে অনেক তামিল মানুষ উন্নত দেশসমূহ যেমন, জার্মানী, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর ইত্যাদ দেশে পাড়ি জমিয়েছিলো, আর একটি বড় অংশ ভারতে চলে যায়।[5]
শ্রীলঙ্কান তামিলদের ৯৩ শতাংশ অংশ দেশটির উত্তরাঞ্চলে বাস করে।[6]