শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় উচ্চভূমি

শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় উচ্চভূমি হলো শ্রীলঙ্কার একটি স্বীকৃত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান। স্থানটি আদম চূড়া বন্যতা অভয়ারণ্য, হর্টন সমভূমি জাতীয় উদ্যান এবং নাকলস পর্বতশ্রেণী নিয়ে গঠিত। এগুলো হলো বৃষ্টিবহুল অরণ্য যেখানকার উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে ২,৫০০ মিটার (৮,২০০ ফু) পর্যন্ত বিস্তৃত। এই অঞ্চলটি ভাল্লুক বানর, ট্র্যাকিপিথেকাস ভেটুলাস মন্টিকোলা (বেগুনি-মুখের ল্যাঙ্গুর-এর একটি উপ-প্রজাতি) এবং হর্টন সমভূমির সরু লরিস লরিস টার্ডিগ্রাডাস নিক্টিসবোয়েডস (লাল পাতলা লরিস-এর একটি উপ-প্রজাতি) সহ বিভিন্ন ধরনের স্তন্যপায়ী প্রাণীর আশ্রয়স্থল।^[1]

শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় উচ্চভূমি

ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান
আদম চূড়া এবং সংলগ্ন এলাকা নিয়ে গঠিত আদম চূড়া বন্যতা অভয়ারণ্য
অবস্থান	শ্রীলঙ্কা
অন্তর্ভুক্ত করে	আদম চূড়া বন্যতা অভয়ারণ্য (PWPA) হর্টন সমভূমি জাতীয় উদ্যান (HPNP) নাকলস সংরক্ষিত বনাঞ্চল (KCF)
মানদণ্ড	প্রাকৃতিক:  (ix), (x)
সূত্র	১২০৩
তালিকাভুক্তকরণ	২০১০ (৩৪তম সভা)
আয়তন	৫৬,৮৪৪ হেক্টর (১,৪০,৪৬০ একর)
নিরাপদ অঞ্চল	৭২,৬৪৫ হেক্টর (১,৭৯,৫১০ একর)
স্থানাঙ্ক	৭°২৭′ উত্তর ৮০°৪৮′ পূর্ব
শ্রীলঙ্কায় শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় উচ্চভূমির অবস্থান শ্রীলঙ্কার মানচিত্রে দেখুন শ্রীলঙ্কায় শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় উচ্চভূমির অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ার মানচিত্রে দেখুন

সিংহারাজ সংরক্ষিত বনভূমির বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর এটি শ্রীলঙ্কার প্রথম স্থান যেটি তালিকায় স্থান পায়; ১৯৮৮ সালে সিংহরাজের স্বীকৃতির ২২ বছর পর।^[2] প্রকৃতপক্ষে, এটিকে সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক স্থানের মিশ্রণ হিসেবে তালিকাভুক্তির আবেদন করা হয়েছিলো, কিন্তু কমিটি কেবলমাত্র এর প্রাকৃতিক মূল্য মূল্যায়ন করে একে স্বীকৃতি দেয়।^[3] ২০১০ সালের ৩১ জুলাই তারিখে বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ব্রাসিলিয়ায় অনুষ্ঠিত ৩৪তম সম্মেলনে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় উচ্চভূমি এবং হাওয়াই দ্বীপের পাপাহানাউমোকুয়াকে সামুদ্রিক জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভকে নতুন বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।^[4]

স্থানসমূহ

শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় উচ্চভূমিতে এবং নাকলস পর্বতশ্রেণীতে অবস্থিত শ্রীলঙ্কার পার্বত্য বৃষ্টিবহুল অরণ্য ১,০০০ মিটার (৩,৩০০ ফু) -এর উর্ধ্বে অবস্থিত পার্বত্য এবং উপপার্বত্য আর্দ্র বনভূমির প্রতিনিধিত্ব করে।^[5] শ্রীলঙ্কার অর্ধেক স্থানীয় প্রজাতির সপুষ্পক উদ্ভিদ ৫১ শতাংশ স্থানীয় প্রজাতির উদ্ভিদ এই বাস্তুঅঞ্চলে সীমাবদ্ধ। এই বাস্তুঅঞ্চলটি পাঁচটি সম্পূর্ণভাবে স্থানীয় প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণীর এবং আটটি নিকটবর্তী স্থানীয় পর্যায়েই স্তন্যপায়ী প্রাণীর আবাসস্থল। আবার, এই বাস্তুঅঞ্চলটি পাঁচটি সম্পূর্ণভাবে স্থানীয় প্রজাতির পাখির এবং দশটি নিকটবর্তী স্থানীয় পর্যায়েই পাখির আবাসভূমি।^[5]

স্থানটি তিনটি সংরক্ষিত এলাকার সমন্বয়ে গঠিত, যেখানে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:

1. আদম চূড়া বন্যতা অভয়ারণ্য,
2. হর্টন সমভূমি জাতীয় উদ্যান এবং
3. নাকলস পর্বতশ্রেণী

আদম চূড়া বন্যতা অভয়ারণ্য একটি [[শ্রীলঙ্কার সংরক্ষিত এলাক#অভয়ারণ্য|অভয়ারণ্য, যাটির ভূমির মোট আয়তন ২২,৩৮০ হেক্টর (৮৬.৪ মা^২) এবং তা ১৯৪০ সালের ২৫ অক্টোবর তারিখ হতে সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে শ্রীলঙ্কার সরকার কর্তৃক স্বীকৃত।^[6] হর্টন সমভূমি জাতীয় উদ্যান পূর্বাংশের সীমানা ঘেষে অবস্থিত। হর্টন সমভূমি জাতীয় উদ্যান মূলত ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর তারিখে প্রকৃতি সংরক্ষণ স্থান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে এবং পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে তা জাতীয় উদ্যান হিসেবে পরিগণিত হয়। নাকলস পর্বতশ্রেণী উত্তর পূর্বাংশে অবস্থিত এবং এটি কেন্দ্রীয় স্তুপপ্রাচীর এলাকায় দৃষ্ট স্থানীয় প্রজাতির উদ্ভিদকুল ও প্রাণীকুল হতে ভিন্ন ও ক্রমহ্রাসমান স্থানীয় প্রজাতির আশ্রয়স্থল।^[5]

আরও দেখুন

• তালিকাভুক্তির বছর অনুসারে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকা (২০১০ সাল)

তথ্যসূত্র

1. Rodrigo, Malaka (৮ আগস্ট ২০১০)। "Lanka's central highlands win heritage battle"। The Sunday Times। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১০।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
2. Sirimane, Shirajiv (১ আগস্ট ২০১০)। "Central Highlands, a Natural World Heritage"। Sunday Observer। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০১০।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
3. "Hawai'i and Sri Lanka added to the World Heritage List"। IUCN। ৩১ জুলাই ২০১০। ৭ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০১০।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
4. "World Heritage Committee inscribes two new sites on World Heritage List"। unesco.org। UNESCO। জুলাই ৩০, ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০১০।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
5. "Sri Lanka montane rain forests"। Terrestrial Ecoregions। World Wildlife Fund। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০১০।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
6. Green, Michael J. B. (১৯৯০)। IUCN directory of South Asian protected areas। IUCN। পৃষ্ঠা 234। আইএসবিএন 2-8317-0030-2। IUCN directory of South Asian protected areas.উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)

বহিঃসংযোগ