Loading AI tools
আন্তর্জালের সেবা যেখানে বিষয়বস্তু সৃষ্টি, ভাগাভাগি ও আলোচনা করার সুবন্দোবস্ত থাকে উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলতে কিছু আন্তঃক্রিয়ামূলক তথ্য প্রযুক্তিকে বোঝায়, যেগুলি তথ্য, ধারণা, আগ্রহ ও অন্যান্য ধরনের অভিব্যক্তি আন্তর্জালভিত্তিক (ইন্টারনেটভিত্তিক) অসদ সম্প্রদায় (ভার্চুয়াল কমিউনিটি) ও জালব্যবস্থাগুলিতে বিষয়বস্তু সৃষ্টি ও ভাগাভাগি করে নেওয়ার সুবিধা প্রদান করে।[1][2] বর্তমানে লভ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সেবার বৈচিত্র্যের কারণে এগুলির সংজ্ঞা প্রদান করা দুরূহ হলেও[3][4] এগুলির কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে,[2] যেমন:
সামাজিক পরিভাষাটি দিয়ে বোঝায় যে এই ভিত্তিমঞ্চগুলি ব্যবহারকারীকেন্দ্রিক ও এগুলি সম্প্রদায়ভিত্তিক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করে। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে আন্তর্জালে মানব জালব্যবস্থার (বিভিন্ন ব্যক্তি নিয়ে গঠিত জাল যা সামাজিক সংযুক্তি বৃদ্ধি করে) বন্দোবস্তকারক হিসেবে গণ্য করা যায়।[7]
ব্যবহারকারীরা সাধারণত ডেস্কটপ কম্পিউটার থেকে আন্তর্জালে সংযুক্ত হয়ে ওয়েব ব্রাউজার-ভিত্তিক অ্যাপের মাধ্যমে কিংবা ভ্রাম্যমাণ যন্ত্র যেমন বুদ্ধিমান মুঠোফোন (স্মার্টফোন) বা ট্যাবলেটে বিশেষ মোবাইল অ্যাপ নামিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন সেবায় প্রবেশাধিকার পেতে পারে। এভাবে এইসব ইলেকট্রনীয় সেবাতে যোগদান করে ব্যবহারকারীরা অত্যন্ত উচ্চমাত্রায় আন্তঃক্রিয়াশীল সব মঞ্চ সৃষ্টি করে, যেখানে ব্যক্তি, সম্প্রদায় ও সংস্থারা নিজের সৃষ্ট বা বাছাইকৃত বিষয়বস্তু আন্তর্জালে ভাগাভাগি করে নেওয়া, একসাথে সৃষ্টি করা, আলোচনা করা, অংশগ্রহণ করা, সম্পাদনা বা পরিবর্তন সাধন করার মতো কাজগুলি সম্পাদন করে থাকে।[8][9][1] অধিকন্তু, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলিতে স্মৃতি নথিবদ্ধ করে রাখা যায়, বিভিন্ন জিনিস সম্পর্কে শেখা যায় বা ঘুরে দেখা যায়, নিজের বিজ্ঞাপন দেওয়া যায়, বন্ধুত্ব তৈরি করা যায়, এবং ব্লগ, পডকাস্ট, ভিডিও ও ভিডিও খেলা সৃষ্টির মাধ্যমে নতুন নতুন ধারণার জন্ম দেওয়া যায়।[10] মানুষ ও প্রযুক্তির এই পরিবর্তনশীল সম্পর্কটি নিজ প্রযুক্তি-সত্তা বিদ্যা নামক একটি উদীয়মান গবেষণা ক্ষেত্রের মূল অধীত বিষয়।[11] সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মঞ্চ বা ওয়েবসাইটগুলিতে ১০ কোটিরও বেশি ব্যবহারকারী রয়েছে। এদের মধ্যে ফেসবুক, টিকটক, উইচ্যাট, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, লিংকডইন, ওয়েইবো, পাইতু থিয়েপা, কিউজোন, ইত্যাদি উল্লেখ্য। এছাড়া ইউটিউব, টেনসেন্ট কিউকিউ, কুওরা, টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, সিগনাল, লাইন, স্ন্যাপচ্যাট, পিন্টারেস্ট, ভাইবার, রেডিট, ডিসকর্ড, ভিকে, মাইক্রোসফট টিমস, ইত্যাদি সেবাগুলিকেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে নির্দেশ করা হতে পারে। সহযোগিতামূলক বিষয়বস্তু সৃষ্টির একটি উদাহরণ হল উইকি ওয়েবসাইটগুলি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলি ঐতিহ্যবাহী যোগাযোগ মাধ্যমগুলি থেকে (যেমন মুদ্রিত সাময়িকী ও পত্রিকা, টেলিভিশন, বেতার, ইত্যাদি) বহু দিক থেকে আলাদা, যাদের মধ্যে গুণগত মান,[12] বিস্তার, প্রকাশের হার, ব্যবহারযোগ্যতা, প্রাসঙ্গিকতা ও স্থায়িত্ব অন্যতম।[13] উপরন্তু, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলি একটি কথোপকথনভিত্তিক সম্প্রচার ব্যবস্থায় থেকে কাজ করে, অর্থাৎ বহু প্রেরক থেকে বহু গ্রাহক ধরনের ব্যবস্থা। এর বিপরীতে ঐতিহ্যবাহী যোগাযোগ মাধ্যমগুলি স্বগতোক্তিমূলক সম্প্রচার প্রতিমানের অধীনে কাজ করে, অর্থাৎ একটি প্রেরক বা উৎস থেকে বহুসংখ্যক গ্রাহক। যেমন একটি দৈনিক পত্রিকা বহুসংখ্যক গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। একটি বেতার সম্প্রচারকেন্দ্র একই অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ একটি নগরী জুড়ে সম্প্রচার করতে পারে।[14]
আন্তর্জাল তথা ইন্টারনেটের নাটকীয় বিস্তারের সাথে সাথে ডিজিটাল বিষয়বস্তু বা ডিজিটাল বাগালঙ্কার কোনও সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করতে বা সেটিকে শনাক্ত করতে ব্যবহৃত হতে পারে। ডিজিটাল পরিবেশে কীভাবে বাগালংকার কাজ করে, তা অধ্যয়ন করা অনেক বিশেষজ্ঞের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজে পরিণত হয়েছে।
পর্যবেক্ষকেরা সামাজিক গণমাধ্যমের ব্যবহার বিষয়ে বহু বিচিত্র ধরনের ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাব লক্ষ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সুবাদে একজন ব্যক্তি বাস্তব বা আন্তর্জালভিত্তিক সম্প্রদায়ের সাথে তার সংযুক্তির অনুভূতি উন্নত করতে পারে। এটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, উদ্যোক্তা, অলাভজনক সংস্থা, নির্দিষ্ট মতের সপক্ষে প্রচারকারী দল, রাজনৈতিক দল ও সরকারের জন্য একটি কার্যকর যোগাযোগ কিংবা বিজ্ঞাপন সরঞ্জাম হিসেবে কাজ করতে পারে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলিকে যোগাযোগ করা ও সংগঠিত হবার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে সামাজিক আন্দোলন গড়ে ওঠার মতো ব্যাপারও ঘটেছে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.