Loading AI tools
মার্কিন অভিনেতা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
স্পেন্সার বোনাভেঞ্চার ট্রেসি (জন্ম: ৫ এপ্রিল, ১৯০০ - ১০ জুন, ১৯৬৭) ছিলেন একজন মার্কিন অভিনেতা। তিনি তার স্টাইলের জন্য বিখ্যাত। হলিউডের স্বর্ণযুগের অন্যতম এই অভিনেতা নয় বার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জন্য একাডেমি পুরস্কার মনোনয়ন লাভ করেন, যা লরন্স অলিভিয়ের সাথে যুগ্মভাবে সর্বোচ্চ বার শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়নের রেকর্ড। তিনি ক্যাপ্টেনস কারেজিয়াস (১৯৩৭) এবং বয়েজ টাউন চলচ্চিত্রের জন্য দুই বার শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে এই পুরস্কার অর্জন করেন।
স্পেন্সার ট্রেসি | |
---|---|
Spencer Tracy | |
জন্ম | স্পেন্সার বোনাভেঞ্চার ট্রেসি ৫ এপ্রিল ১৯০০ মিলওয়াউকি, উইসকনসিন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
মৃত্যু | ১০ জুন ১৯৬৭ ৬৭) বেভারলি হিলস, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র | (বয়স
মৃত্যুর কারণ | হার্ট অ্যাটাক |
সমাধি | ফরেস্ট লন মেমোরিয়াল পার্ক, গ্লেনডেল, ক্যালিফোর্নিয়া |
জাতীয়তা | মার্কিন |
পেশা | অভিনেতা |
কর্মজীবন | ১৯২২-৬৭ |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | ক্যাপ্টেনস কারেজিয়াস বয়েজ টাউন |
দাম্পত্য সঙ্গী | লুই ট্রেসি (১৯২৩-৬৭) |
সঙ্গী | ক্যাথরিন হেপবার্ন (১৯৪১-৬৭) |
সন্তান | ২ |
পিতা-মাতা | জন এডওয়ার্ড ট্রেসি (পিতা) ক্যারোলিন (মাতা) |
পুরস্কার | পূর্ণ তালিকা |
স্বাক্ষর | |
স্পেন্সার তার অভিনয় জীবনে ৭৫টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এবং বড় পর্দার একজন অন্যতম সেরা অভিনেতা হয়ে ওঠেন। ১৯৯৯ সালে আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট এর করা ধ্রুপদী হলিউড চলচ্চিত্র অভিনেতার র্যাঙ্কিংয়ে স্পেন্সারের অবস্থান ৯ম।[1]
ট্রেসি ১৯০০ সালের ৫ এপ্রিল মিলওয়াউকি, ওয়েসকনসিনে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা জন এডওয়ার্ড ট্রেসি (১৮৭৩-১৯২৮) ছিলেন একজন ট্রাক বিক্রয়কর্মী এবং মাতা ক্যারোলিন (ব্রাউন, ১৮৭৪-১৯৪২)। তার বাবা আইরিশ ক্যাথলিক বংশোদ্ভূত এবং মা ধনাট্য মধ্য-পশ্চিম পরিবারের প্রেসবাইতেরিয়ান ছিলেন।[2] দুই ভাইয়ের মধ্যে স্পেন্সার ছোট ছিলেন। তার বড় ভাই ক্যারল তার চেয়ে চার বছরের বড়।[3]
ট্রেসি শৈশবে খুবই চটপটে ছিলেন[4] এবং বিদ্যালয়ে তার উপস্থিতি কম ছিল।[5] ক্যাথলিক হিসেবে বেড়ে ওঠা ট্রেসিকে তার নয় বছর বয়সে তার আচরণগত পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে ডোমিনিকান নানদের অধীনে প্রেরণ করা হয়।[6] পরবর্তী জীবনে তিনি বলেন, "যদি চলচ্চিত্রের উপ-শিরোনাম পড়তে শেখার অন্য কোন উপায় থাকে, তবে আমি কখনো স্কুলে ফিরে যেতাম না।"[5] চলচ্চিত্র তাকে মুগ্ধ করে, তিনি একই চলচ্চিত্র বারবার দেখতেন এবং তার বন্ধু ও প্রতিবেশীদের তা অভিনয় করে দেখাতেন।[7] ট্রেসি তার কৈশোরে কয়েকটি জেসুইট একাডেমিতে অধ্যয়ন করেন এবং তিনি দাবি করেন এর ফলে তার আচরণের খারাপ দিকগুলো চলে যায় এবং তিনি পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করেন।[8] মার্কোয়েট একাডেমিতে তার সাথে পরিচয় হয় প্যাট ওব্রায়েনের, যিনি পরবর্তীতে নামকরা অভিনেতা হন। ওব্রায়েন ট্রেসির মঞ্চনাটকের প্রতি আগ্রহের কথা জানতে পারেন এবং তারা একসাথে মঞ্চে অভিনয় শুরু করেন।[9]
স্নাতক শেষ করার পর ট্রেসি নিউ ইয়র্কের হোয়াইট প্লেইন্স ভিত্তিক একটি স্টক কোম্পানিতে যোগ দেন এবং ছোটখাট চরিত্রে অভিনয় করেন।[10] সেখানে তার কাজ মনঃপুত না হওয়ায় তিনি সিনসিনাতির একটি কোম্পানিতে চলে যান, কিন্তু সেখানে কোন প্রভাব বিস্তার করতে ব্যর্থ হন।[11] ১৯২৩ সালের নভেম্বরে তিনি ইথেল ব্যারিমোরের সাথে ব্রডওয়ের হাস্যরসাত্মক আ রয়্যাল ফ্যান্ড্যাঙ্গো মঞ্চনাটকে অভিনয় করেন। এই নাটকের বেশিরভাগ সমালোচনা ছিল নেতিবাচক এবং ২৫টি প্রদর্শনীর পর এটি বন্ধ হয়ে যায়। ট্রেসি পরবর্তীতে এই ব্যর্থতার বিষয়ে বলেন, "আমার ইগো ভয়ানক জুয়া খেলেছিল।"[12] এই নাটক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তিনি নিউ জার্সি ভিত্তিক একটি কোম্পানিতে দৈনিক ৩৫ সেন্ট পারিশ্রমিকে কাজ করেন।[13] ১৯২৪ সালের জানুয়ারিতে তিনি উইনিপেগের একটি কোম্পানির হয়ে প্রথম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন, কিন্তু শীঘ্রই কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে যায়।[14]
১৯৩০ সালের জানুয়ারিতে ট্রেসি দ্য লাস্ট মাইল নাটকে কাজ করার প্রস্তাব পান। খুনী চরিত্রে প্রধান ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য প্রযোজক হারমান শুমলিন ট্রেসির সাথে দেখা করেন এবং পরে তিনি এই প্রসঙ্গে বলেন, "তিনি ছিলেন আবেগপূর্ণ, সহিংস, অনুভূতিপ্রবণ এবং মরিয়া একজন, কোন সাধারণ মানুষ নন এবং এই চরিত্রের জন্য যোগ্য ব্যক্তি।"[15] দ্য লাস্ট মাইল ফেব্রুয়ারি মাসে ব্রডওয়েতে মঞ্চস্থ হয়, যেখানে ট্রেসির অভিনয় টানা ১৪ বার পর্দা পড়ার পর দাঁড়ানো অভ্যর্থনা লাভ করে।[16] দ্য কমনওয়েল তাকে "অন্যতম সেরা এবং সবচেয়ে বহুমুখী যুব অভিনেতা" হিসেবে অভিহিত করে।[17] নাটকটি সমালোচকদের দ্বারা সমাদৃত হয়[18] এবং ২৮৯ বার মঞ্চস্থ হয়।[19]
১৯৩৭ সালের স্পেন্সার চারটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। দে গেভ হিম আ গান চলচ্চিত্র তেমন সাড়া পায় নি। কিন্ত ক্যাপ্টেনস কারেজিয়াস সেই বছরের অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র ছিল। রুডইয়ার্ড কিপলিং রচিত উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত এই ছবিতে তিনি একজন পর্তুগিজ জেলের চরিত্রে অভিনয় করেন। ভিনদেশি ভাষায় কথা বলতে গিয়ে তার সমস্যা হলেও[20] এই চরিত্র তাকে প্রথমবারের মত শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জন্য একাডেমি পুরস্কার এনে দেয়।[21] পরে তিনি বিগ সিটি ও ম্যানিকুইন চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ম্যানিকুইন বক্স অফিসে সফলতা অর্জন করে।[22] পরের বছর ১৯৩৮ সালে তিনি বয়েজ টাউন ছবিতে ক্যাথলিক পাদ্রী ও বয়েজ টাউনের প্রতিষ্ঠাতা এডওয়ার্ড জে. ফ্ল্যানাগান চরিত্রে অভিনয় করেন।[23] এই চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি দ্বিতীয় বারের মত শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন।[24]
১৯৩৯ সালের পর ১২ বছর পরে ট্রেসি ফাদার অব দ্য ব্রাইড (১৯৫০) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য চতুর্থ অস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। হাস্যরসাত্মক এই চলচ্চিত্রে তিনি স্ট্যানলি ব্যাঙ্কস চরিত্রে অভিনয় করেন, যে তার মেয়ের (এলিজাবেথ টেলর) বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।[25] এতে বিয়ের আয়োজন নিয়ে তার কার্যক্রমে হাসির উপাদান থাকলেও মেয়ের প্রতি বাবার ভালোবাসা, বিদায়ের বেদনা এবং তার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ কাহিনীতে ভিন্ন মাত্রা নিয়ে আসে।[26] ভ্যারাইটি ম্যাগাজিনে লেখা হয়, "এটি ট্রেসি অভিনীত টানা দ্বিতীয় শক্তিশালী হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র যেখানে তিনি নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন এবং তিনি এতে দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন।" বিশ্বব্যাপী ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করা চলচ্চিত্রটি সেই সময় পর্যন্ত ট্রেসির অভিনয় জীবনের সবচেয়ে ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র ছিল।[25] এমজিএম এর একটি অনুবর্তী পর্ব নির্মাণ করতে চায়, ট্রেসি এতে অনিশ্চিত ছিলেন। কিন্তু পরে এই প্রস্তাব গ্রহণ করেন।[27] দশ মাস পর ফাদার্স লিটল ডিভিডেন্ড (১৯৫১) মুক্তি পায় এবং বক্স অফিসে সফল হয়।[28] এই দুটি চলচ্চিত্রের সফলতার পর ট্রেসি পুনরায় দেশের শীর্ষ তারকা বনে যান।[28]
১৯৫১ সালে ট্রেসি দ্য পিপল অ্যাগেনস্ট ওহারা চলচ্চিত্রে আইনজীবী চরিত্রে অভিনয় করেন। পরের বছর তিনি পুনরায় হেপবার্নের সাথে খেলাধুলা বিষয়ক হাস্যরসাত্মক প্যাট অ্যান্ড মাইক (১৯৫২) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এটি শুধুমাত্র এই জুটির জন্য ক্যানিন ও গর্ডন রচিত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র। প্যাট অ্যান্ড মাইক চলচ্চিত্রটি এই জুটির সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সমালোচকদের দ্বারা সমাদৃত চলচ্চিত্র হয়ে ওঠে।[29] এর পরে ট্রেসি প্লেমাউথ আডভেঞ্চার (১৯৫২) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। মেফ্লাওয়ারের প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই চলচ্চিত্রে তার সাথে অভিনয় করেন জিন টায়ার্নি। এটি নেতিবাচক সমালোচনা লাভ করে এবং ১.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার লোকসান হয়।[30] ১৯৫৩ সালে দি অ্যাক্ট্রেস চলচ্চিত্রে তাকে পুনরায় দ্বায়িত্ববান পিতার ভূমিকায় দেখা যায়। প্রযোজক লরেন্স ওয়েনগার্টেন বলেন, "ঐ চলচ্চিত্রটি আমার নির্মিত অন্য সকল চলচ্চিত্রের চেয়ে বেশি সমাদৃত হয়।"[31] দ্য অ্যাক্ট্রেস চলচ্চিত্রে তার অভিনয়ের জন্য ট্রেসি শ্রেষ্ঠ নাট্য অভিনেতা বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার লাভ করেন ও শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেতা বিভাগে বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।
পুরস্কার | বিজয় | মনোনয়ন |
---|---|---|
২ | ৯ | |
১ | ৫ | |
১ | ৪ | |
|
৪ | ১৮ |
পুরস্কারের বিভাগ | বছর | মনোনীত কাজ | ফলাফল |
---|---|---|---|
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা | ১৯৩৬ | সান ফ্রান্সিস্কো | মনোনীত |
১৯৩৭ | ক্যাপ্টেনস কারেজিয়াস | বিজয়ী | |
১৯৩৮ | বয়েজ টাউন | বিজয়ী | |
১৯৫০ | ফাদার অব দ্য ব্রাইড | মনোনীত | |
১৯৫৫ | ব্যাড ডে অ্যাট দ্য ব্ল্যাক রক | মনোনীত | |
১৯৫৮ | দ্য ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি | মনোনীত | |
১৯৬০ | ইনহেরিট দ্য উইন্ড | মনোনীত | |
১৯৬১ | জাজমেন্ট অ্যাট নুরেমবার্গ | মনোনীত | |
১৯৬৭ | গেজ হুজ কামিং টু ডিনার | মনোনীত |
পুরস্কারের বিভাগ | বছর | মনোনীত কাজ | ফলাফল |
---|---|---|---|
শ্রেষ্ঠ নাট্য চলচ্চিত্র অভিনেতা | ১৯৫৩ | দি অ্যাক্ট্রেস | বিজয়ী |
১৯৫৮ | দি ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি | মনোনীত | |
১৯৬০ | ইনহেরিট দ্য উইন্ড | মনোনীত | |
১৯৬৭ | গেজ হুজ কামিং টু ডিনার | মনোনীত |
পুরস্কারের বিভাগ | বছর | মনোনীত কাজ | ফলাফল |
---|---|---|---|
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেতা | ১৯৫৩ | দি অ্যাক্ট্রেস | মনোনীত |
১৯৫৬ | দ্য মাউন্টেন | মনোনীত | |
১৯৫৮ | দ্য লাস্ট হুররাহ | মনোনীত | |
১৯৬০ | ইনহেরিট দ্য উইন্ড | মনোনীত | |
১৯৬৮ | গেজ হুজ কামিং টু ডিনার | বিজয়ী |
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.