হাজারিখিল বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
হাজারিখিল বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলায় অবস্থিত একটি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। ২০১০ সালের ৬ এপ্রিল এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১১৭৭.৫৩ হেক্টর জমি নিয়ে এই বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্যটি গঠিত।[1] চট্টগ্রাম শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার উত্তরে রামগড়-সীতাকুণ্ড বনাঞ্চল। এ বনাঞ্চলের মধ্যেই রয়েছে বিচিত্র সব বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য হাজারিখিল, যেখানে আছে ১২৩ প্রজাতির পাখি। রঙ-বেরঙের এসব পাখির মধ্যে রয়েছে বিপন্ন প্রায় কাঠময়ূর ও মথুরা। আছে কাউ ধনেশ ও হুতুম পেঁচাও। বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদের সমারোহ থাকার কারণে চিরসবুজ এই বনে এমন কিছু প্রজাতির পাখি পাওয়া গেছে, যা অন্য কোনো বনে সচরাচর দেখা যায় না। এর মধ্যে রয়েছে হুদহুদ, চোখ গেল, নীলকান্ত, বেঘবৌ, আবাবিল। এসব পাখির আকার-আকৃতি, বর্ণ ও স্বভাবে বৈচিত্র্যময়। সম্প্রতি বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে এক গবেষণায় পাখির এসব প্রজাতির সন্ধান পায় গবেষক দল।
হাজারিখিল বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য | |
---|---|
অবস্থান | চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম বিভাগ, বাংলাদেশ |
নিকটবর্তী শহর | সীতাকুণ্ড |
স্থানাঙ্ক | ২২.৭৪২২২৬° উত্তর ৯১.৬৪৬৮৯৫° পূর্ব |
আয়তন | ১১৭৭.৫৩ হেক্টর |
স্থাপিত | ২০১০ |
কর্তৃপক্ষ | বাংলাদেশ বন বিভাগ |
এ অভয়ারণ্যে নানা প্রজাতির পাখির সঙ্গে শীতকালে যোগ দেয় পরিযায়ী পাখির দল। এদের বিচরণে চিরসবুজ বন পরিণত হয় পাখিরই আলাদা এক রাজ্যে।
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার রামগড়-সীতাকুণ্ড বনাঞ্চলে প্রায় ১১৮ হেক্টর পাহাড়ি বনভূমিকে ২০১০ সালের ৬ এপ্রিল বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা দেয় সরকার। এখানকার উল্লেখযোগ্য বন্যপ্রাণীর মধ্যে রয়েছে— বানর, হনুমান, মায়া হরিণ, বনছাগল, চিতা বিড়াল ও মেছোবাঘ। মিশ্র চিরসবুজ বনসমৃদ্ধ এ অভয়ারণ্যের প্রধান বৃক্ষ গর্জন, চাপালিশ, সেগুন, কড়ই, মেহগনি ও চুন্দুল। বিখ্যাত রাঙ্গাপানি চা বাগান এ অভয়ারণ্যের পাশেই অবস্থিত।
অভয়ারণ্যের আরেক বিচিত্র পাখির নাম হুদহুদ, স্থানীয়রা যাকে ‘কাঠঠোকরা’ নামে ডাকে। সম্পূর্ণ মাটিতে হেঁটে খাবার সংগ্রহ করে পাখিটি। কীটপতঙ্গ খাওয়া এ পাখি বাসা বাঁধে গাছের কোঠরে। অরণ্যের খুব গভীরে ঝোপঝাড়ে থাকতেই বেশি পছন্দ করে মথুরা। বনমোরগের স্বভাবজাত এ পাখি জোড়ায় জোড়ায় চলাচল করে। বিপন্নপ্রায় মথুরা বনের যেসব এলাকায় বাস করে, সেসব এলাকায়ই বিচরণ আছে কাঠময়ূরেরও। খুবই লাজুক প্রকৃতির এ পাখির দেখা মেলাই ভার। শস্যদানার পাশাপাশি কীটপতঙ্গই এদের প্রিয় খাবার। তারা বাসা বাঁধে মাটি সরিয়ে কাঠি দিয়ে। মস্তবড় ঠোঁট এবং তার উপরে শিরস্ত্রাণের জন্য বিখ্যাত পাখি ‘কাউ ধনেশ’। এরা ছোট ছোট দলে থাকতে পছন্দ করে। বটজাতীয় নরম বৃক্ষে বিচরণ করা বিপন্নপ্রায় এ পাখি টিকটিকি, ইঁদুর এমনকি অন্যান্য পাখির ছানাও খেয়ে থাকে। পানির কাছাকাছি কোনো বড় অন্ধকার গাছে ডালপালার মধ্যে আত্মগোপন করে থাকে হুতুম পেঁচা। এদেরও পছন্দের খাবারের তালিকায় রয়েছে মাছ, কাঁকড়া ও ব্যাঙ। তবে ইঁদুর ও সরীসৃপজাতীয় প্রাণীও ভক্ষণ করে থাকে। হুতুম হুতুম বলে ডাকে বলেই স্থানীয়রা এ পাখির নাম দিয়েছে ‘হুতুম পেঁচা’।
খুদে কাঠঠোকরা, বড় বসন্তবাউড়ি, নীলকান্ত, বেঘবৌ, ছোট বসন্তবাউড়ি, তিত মাছরাঙা, সাদা বুক মাছরাঙা, মেঘ হও মাছরাঙা, সবুজ সুইচোরা, খয়েরি মাথা সুইচোরা, নীল লেজ সুইচোরা, বড় কানাকুকা, বউ কথা কও, কোকিল, সবুজ কোকিল, সুরেলা কোকিল, তোতা, টিয়া, আবাবিল, নাক কাটি, লক্ষ্মীপেঁচা, খুরলে পেঁচা, ডোরা কালি পেঁচা, কালো পেঁচা, জালালি কবুতর, তিলা ঘুঘু, রাম ঘুঘু, ধলা ঘুঘু, ছোট হরিয়াল, কমলা বুক হরিয়াল, হলুদ পা হরিয়াল, ডাহুক, বনমোরগ, জয়াড কাঠঠোকরা, বর্মি কাঠঠোকরা, সবুজ কাঠঠোকরা, সোনালি কাঠঠোকরা, মেটে টুপি কাঠঠোকরা। আরো আছে— জলপিপি, হট্টিটি, মেটে মাথা হট্টিটি, বেশরা, তিলা ঈগল, ভুবন চিল, শঙ্খ চিল, ছোট মাছ মুরাল, ছোট বাজ, পানকৌড়ি, গো-বক, সাদা বক, মাইজলা বক, কানি বক, ওয়াক, শামুক খোল, ধূসর বুক টুনি, সাধারণ বন টুনি, পাতা বুলবুল, সবুজ বুলবুল, তাত শালিক, ঝুঁটি শালিক, গোবরে শালিক, কাঠশালিক, পাতিকাক, দাঁড়কাক, কুটুম পাখি, সবুজ হাঁড়িচাছা, ফিঙ্গে, কেশরাজ, ভীমরাজ, ছোট ফিঙে, হলদে পাখি, ফটিকজল, লাটোরা, আলতাপরী, লেজ নাচানি, বাদামি কসাই, বড় কাবাশি, চামচ কসাই, মেটে পিঠ কসাই, সিপাহী বুলবুল, কালো বুলবুল, ধূসর বুলবুল, কালো মাথা বুলবুল, শ্যামা, কালোঘর রাজন, দোয়েল, ফুটফুটি চটক, নীল শিলাদামা, শিলাদামা, লাল বুক চটক, মেটে মাথা ছোট চটক, নীলকান্তমণি চটক, এশীয় খয়েরি চটক, লেজ চেরা পাখি, টুনটুনি, সাত ভায়লা, সাদা মুকুট পাঙ্গা, পাঙ্গা, কালচে ফটক, ম্যাকারিন, বেগুনি বুক মৌটুসি, নীল টুনি, মৌচাটুনি, সিঁদুরে লাল মৌটুসি, বাধা টুনি, দাগি সাঁতারে, লাল ফুলঝুরি, তিত পাখি, চড়ুই পাখি, বাবুই, মাঠ চড়াই, তিলা মুনিয়া, বন খঞ্জন, সাদা খঞ্জন, ধূসর খঞ্জন ও হলদে মাথা খঞ্জন।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.