হৃৎশূল
From Wikipedia, the free encyclopedia
হৃৎশূল বলতে হৃৎপিণ্ডের পেশীতে রক্তপ্রবাহের অভাবের কারণে বুকে চাপবোধ বা ব্যাথাবোধ করার ঘটনাকে বোঝায়। একে ইংরেজিতে চিকিৎসাবৈজ্ঞানিক পরিভাষায় "অ্যাঞ্জাইনা পেকটোরিস" এবং সংক্ষেপে "অ্যাঞ্জাইনা" বলে। সাধারণত হৃৎবেষ্টক ধমনী (করোনারি ধমনী) অর্থাৎ যে ধমনীগুলি হৃৎপেশীতে রক্ত সরবরাহ করে, সেগুলিতে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে কিংবা ধমনীতে খিঁচুনি হলে হৃৎশূল হয়।[1] করোনারি ধমনী অর্থাৎ হৃৎবেষ্টক ধমনীগুলিতে মূলত যে পদ্ধতিতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়, তা হল হৃৎবেষ্টক ধমনীর ব্যাধির অংশ হিসেবে ধমনিকাঠিন্য সৃষ্টি হওয়া। অন্য যেসব কারণে হৃৎশূল হতে পারে, সেগুলি হল রক্তাল্পতা, হৃৎ-ছন্দবৈষম্য (হৃৎপিণ্ডের অস্বাভাবিক ছন্দ বা লয়হীনতা) এবং হৃৎ-নিষ্ক্রিয়া বা হৃৎপাত (ইংরেজিতে "হার্ট ফেল" করা)।
হৃৎশূলের ব্যথার মাত্রার সাথে হৃৎপেশীতে অক্সিজেনের অভাবের কোনও সরাসরি সম্পর্ক নেই। অর্থাৎ হৃৎশূলজনিত বুকে ব্যথা অনেক বেশি হলেও হৃৎপেশীর রক্তাভাবজনিত মৃত্যু (অর্থাৎ হৃদাঘাত বা হার্ট অ্যাটাক) না-ও হতে পারে। অন্যপক্ষে কোনও বুকে ব্যথা ছাড়াই হৃদাঘাত বা হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
গুরুতর বা তীব্র বক্ষশূল হলে অতীতে, বিশেষ করে ২০শ শতকের শুরুতে একে মৃত্যুর আগমনী বার্তা হিসেবে গণ্য করা হত।[2] তবে আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থায় বক্ষশূল রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেক বেশি।[3]
হৃৎশূলজনিত বুকে ব্যথা সময়ের সাথে সাথে খারাপ আকার ধারণ করলে, বিশ্রামের সময় হঠাৎ আক্রমণ করলে, কিংবা ১৫ মিনিটের বেশি স্থায়ী হলে তাকে "অস্থিতিশীল হৃৎশূল" বলে এবং এটি তীব্র হৃৎবেষ্টক ব্যাধির উপসর্গসমষ্টির সাথে একই দলে ফেলা হয়। এই উপসর্গগুলি সাধারণত হৃদাঘাতের আগে দেখা দিতে পারে। তাই অস্থিতিশীল হৃৎশূল হওয়ার সাথে সাথে জরুরী চিকিৎসার আশ্রয় নিতে হবে এবং হৃৎপেশীর রক্তাভাবজনিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে যেমনটি করা হয়, তেমন করে এর চিকিৎসা করাতে হবে।