যমুনা নদী (ভারত)
ভারতের নদী / From Wikipedia, the free encyclopedia
যমুনা (সংস্কৃত: यमुना) উত্তর ভারতের একটি অন্যতম প্রধান নদী। এটি ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের জাতীয় নদী গঙ্গার প্রধান উপনদী। যমুনা নদীর উৎস মধ্য হিমালয়ের বান্দারপুচ পর্বতশৃঙ্গের দক্ষিণ-পশ্চিম পাদদেশে অবস্থিত যমুনোত্রী হিমবাহের ৬,৩৮৭ মিটার উচ্চতায়।[1] এই নদীর দৈর্ঘ্য ১,৩৭৬ কিলোমিটার (৮৫৫ মাইল)।[1] এই নদীর জলনির্গম প্রণালীর আয়তন ৩৬৬,২২৩ বর্গ কিলোমিটার;[1] যা সমগ্র গাঙ্গেয় অববাহিকার ৪০.২ শতাংশ।[1] এই নদী এলাহাবাদের ত্রিবেণী সঙ্গমে গঙ্গা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। গঙ্গা ও যমুনার মিলনস্থলে প্রতি বারো বছর অন্তর কুম্ভমেলা আয়োজিত হয়।
যমুনা (यमुना) | |
নদী | |
দেশ | ভারত |
---|---|
উপনদী | |
- বাঁদিকে | চম্বল, বেতোয়া, কেন, সিন্ধ |
- ডানদিকে | টোনস, হিন্দোন, সারদা, কুন্টা, গিরি, ঋষিগঙ্গা, হনুমান গঙ্গা |
নগরসমূহ | দিল্লি, মথুরা, আগ্রা, এটাওয়া, কলপি |
উৎস | যমুনোত্রী হিমবাহ |
- অবস্থান | বান্দারপুচ শৃঙ্গ, উত্তরকাশী জেলা, উত্তরাখণ্ড, ভারত |
- উচ্চতা | ৬,৩৮৭ মিটার (২০,৯৫৫ ফিট) |
- স্থানাঙ্ক | ৩৮°৫৯′ উত্তর ৭৮°২৭′ পূর্ব |
মোহনা | ত্রিবেণী সঙ্গম |
- অবস্থান | এলাহাবাদ, ভারত |
- উচ্চতা | ০ মিটার (০ ফিট) |
- স্থানাঙ্ক | ২৫°৩০′ উত্তর ৮১°৫৩′ পূর্ব |
দৈর্ঘ্য | ১,৩৭৬ কিলোমিটার (৮৫৫ মাইল) |
অববাহিকা | ৩,৬৬,২২৩ বর্গকিলোমিটার (১,৪১,৩৯৯ বর্গমাইল) |
সিন্ধু-গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলে যমুনা নদীর প্রবাহপথ
|
যমুনা নদী উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের মধ্য দিয়ে এবং হিমাচল প্রদেশ ও দিল্লির পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। প্রবাহপথে একাধিক উপনদী যমুনা নদীতে মিলিত হয়েছে। যমুনার বৃহত্তম ও দীর্ঘতম উপনদী হল টোনস। যমুনার অপর উপনদী চম্বলের নিজস্ব একটি অববাহিকা রয়েছে। যমুনার অন্যান্য উপনদীগুলি হল সিন্ধ, বেতোয়া ও কেন। যমুনার নদী উপত্যকার সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যটি হল সিন্ধু গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলে গঙ্গা ও যমুনার মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত অতি উর্বর পললসমৃদ্ধ 'গঙ্গা-যমুনা দোয়াব' অঞ্চল। প্রায় ৫৭,০০০,০০০ মানুষ যমুনার জলের উপর নির্ভরশীল।[1] যমুনা নদীতে বার্ষিক ১০,০০০ কিউবিক মিটার জল প্রবাহিত হয়।[1] এর মধ্যে ৪,৪০০ কিউবিক মিটার জল ব্যবহার করা হয়।[1] যমুনার ব্যবহৃত জলের ৯৬ শতাংশই লাগে সেচের কাজে।[1] দিল্লির জল সরবরাহ ব্যবস্থার ৭০ শতাংশই আসে যমুনা নদী থেকে।[1]
গঙ্গার ন্যায় যমুনাও হিন্দুধর্মে একটি পবিত্র নদী বলে বিবেচিত হয়। হিন্দুরা যমুনাকে দেবী যমুনা জ্ঞানে পূজা করেন। হিন্দু পুরাণ অনুসারে, যমুনা সূর্যের কন্যা ও মৃত্যুর দেবতা যমের ভগিনী। কয়েকটি জনপ্রিয় কিংবদন্তিতে তিনি যমী নামেও পরিচিত। হিন্দুরা বিশ্বাস করেন, যমুনার পবিত্র জল মৃত্যু যন্ত্রণা থেকে মানুষকে নিস্তার দেয়।[1][2]
হিমালয়ের যমুনোত্রী থেকে দিল্লির ওয়াজিরাবাদ পর্যন্ত যমুনার জলের "মান মোটামুটি ভাল"। যমুনার এই পথটুকুর দৈর্ঘ্য ৩৭৫ কিলোমিটার। ওয়াজিরাবাদ বাঁধ থেকে ওখলা বাঁধ পর্যন্ত নদীর গতিপথে ১৫টি পয়ঃপ্রণালী মাধ্যমে বর্জ্য জল নদীতে নিক্ষেপ করা হয়। এর ফলে দিল্লির ওয়াজিরাবাদ থেকে যমুনার জল অত্যন্ত দূষিত। একজন পদাধিকারী নদীটিকে তাই ১৪ – ২৮ এমজি/১ বায়োকেমিক্যাল অক্সিজেন ডিম্যান্ড (বিওডি) এবং উচ্চহারে কোলিফর্ম উপাদানযুক্ত একটি "নিকাশী নালা" বলে উল্লেখ করেন।[3] যমুনা দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হল গার্হস্থ্য ও পৌর বর্জ্যভূমি, কৃষির জন্য বনচ্ছেদনের ফলে ভূমিক্ষয় এবং বিভিন্ন কৃষি ও শিল্পক্ষেত্রের থেকে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ।