Loading AI tools
আসামের লোকজন উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
আসামের জনগণ (people of Assam) একটি বহু-জাতিগত, বহু-ভাষাগত এবং বহু-ধর্মীয় সমাজে বসবাস করে। তারা যেসব ভাষায় কথা বলে সেগুলো তিনটি প্রধান ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত: তিব্বতী-বর্মী, ইন্দো-আর্য এবং তাই-কাদাই। এই রাজ্যে প্রচুর পরিমাণে জাতিগত ও ভাষাগত গোষ্ঠীর উপস্থিতি, এখানকার জনগণের বৈশিষ্ট্য এবং বিভিন্ন সময়ে জনগণের আগমনের কারণে এই রাজ্যকে "ক্ষুদ্রায়নে ভারত" বা "ইন্ডিয়া ইন মিনিয়েচার" বলা হয়।[1]
মোট জনসংখ্যা | |
---|---|
31,169,272 (2011)টেমপ্লেট:Source needed | |
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল | |
India | 31,169,272টেমপ্লেট:Source needed |
ভাষা | |
| |
ধর্ম | |
• Hinduism • Traditional, Panentheistic • Islam • Christianity | |
সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী | |
• তাই-অহোম • অসমীয় ব্রাহ্মণ (গণক সহ) • চুতীয়া • Kalita(Kayastha) • Koch Rajbongshi • Boro • Dimasa • Karbi/Mikir • Hmar• mising/Miri • Kuki • Deori • Kaibarta • Keot • Motok • Moran • Nath • Kumar • Tiwa (Lalung) • Rabha • Hajong • Nadiyal • Sonowal Kachari • Thengal-Kachari • Sarania Kachari,• Santhals • Tai Phake(and other Tai groups)
Surname Families: • Barman • Baruah (and its variations) • Bharali • Borah • Chakraborty (and its variations) • Chaudhary • Das • Deka • Dutta • Gogoi • Koch/Rajbangshi • Buragohain • Rajkuwor • Rajkumari • Kuwor • Goswami • Hazarika • Kalita • Khanikar • Phukan • Rajkhowa • Saikia • Sarma • Chutia • Nayak • Keot • Narzari • Boro • Pegu • Doley • Basumatary • Swargiary • Ramchiary • Mosahary • Brahma • Ingti • Hojai • Lalthangsa • Rabha • Borgohain • Sonowal •Borsaikia • Baglari • Pegu • Doley • Nunisa • Lahon, etc. |
আসামের জনসংখ্যাকে বোঝা হত দৈহিক বৈশিষ্ট্যের উপর দাঁড়িয়ে থাকা রিজলির জাতিগত প্রকরণ বা রেশিয়াল টাইপের ভিত্তিতে। এই জাতিগত প্রকরণ নিখুঁৎ নিয়, আর তাই এই প্রকরণগুলোতে অনেক বৈচিত্র্য দেখা যায়। এর ফলে এখন জিনগত গবেষণার সাথে সঙ্গতি রেখে জাতিভাষাগত গোষ্ঠীর উপর ভিত্তি করে আসামের জনসংখ্যাকে বোঝা হয়।[2]
ভৌগোলিকভাবে আসামে পর্বত ও পাহাড়ের চারপাশে বেষ্টিত উর্বর নদী-উপত্যকা রয়েছে। উত্তরে তিব্বত থেকে (বুম লা, তেস লা, তুঙ্গা হয়ে), দক্ষিণ-পূর্বে পাটকাই থেকে (দিফু, কুমজাওয়াং, চাউকাম, পাংসাউ, মোরে-তামু হয়ে) এবং আরাকান ইয়োমা পার করে বার্মা থেকে (আন, তাউনগুপ হয়ে) আসামে মানুষ প্রবেশ করতে পারে। পশ্চিমে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা ও বরাক উপত্যকা থেকে বিস্তৃত গাঙ্গেয় সমভূমিতে উন্মুক্ত হয়েছে। অতীতে এই সব প্রবেশ পথ থেকেই মানুষ আসামে প্রবেশ করেছে। হিসাব করে বের করা হয়েছে যে বিভিন্ন সময়ে এই সব প্রবেশ পথ দিয়ে জাতিভাষাগত অভিপ্রায়ণের মোট ১১টি প্রধান তরঙ্গে ও প্রবাহে বাইরে থেকে মানুষ আসামে প্রবেশ করেছে।[3]
আসামের জনসংখ্যার নৃবিজ্ঞান সম্পর্কিত বিবরণে বিভিন্ন জাতিগত অভিবাসনের বিভিন্ন তরঙ্গ দেখা যায়। অস্ট্রালয়েড ও মঙ্গোলয়েড মানুষের মিশ্রণের ফলে উদ্ভূত অস্ট্রো-এশীয় লোকেরা ছিল এই অঞ্চলের প্রথম অধিবাসী। অরুণাচল প্রদেশ, সাদিয়া, দিব্রুগড়, লাকিমপুর, নাগাওন, নাগা পাহাড়, কার্বি আংলং, নাগাওন, কামরূপ এবং মেঘালয়ের গারো ও খাসি পাহাড় সহ ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলের সর্বত্রই নব্য-প্রস্তরযুগীয় স্থান রয়েছে, যেগুলো এই প্রাথমিক অভিবাসীদের বিস্তৃতি সম্পর্কে ধারণা দেয়। এদের বেশিরভাগই তিব্বতী-বর্মী জনগণের দ্বারা অঙ্গীভূত হয়ে যায় যারা চার থেকে পাঁচ হাজার বছর পূর্বে এই অঞ্চলে এসেছিল, এদিকে এদের একটি অংশ মেঘালয়ের পাহাড়ী অঞ্চলে চলে যায়। ডিএনএ রিপোর্ট দ্বারা এটি বারবার প্রমাণিত হয়েছে যে কাছারি গোষ্ঠীসমূহ (বোদো, ডিমাসা, চুতীয়া, মোরান, সনোয়াল, রাভা, তিওয়াস, কোচ ইত্যাদি), কারবি, নাগার মত গোষ্ঠীগুলোতে অস্ট্রো-এশীয় জিন রয়েছে।[4] মেঘালয়ে বসবাসরত অস্ট্রো-এশীয় মানুষেরা খাসি, জৈন্তিয়া নামে পরিচিত যারা পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে বসবাস করে।[5] আসামের উত্তর ও পূর্বে থাকা হিমালয়ের বিভিন্ন প্রবেশ পথ হয়ে তিব্বতী-বর্মী ভাষাভাষীরা আসামে প্রবেশ করে। আজ এরাই আসামে সংখ্যাগুরু (প্রায় ৬০ঁ%) জনগণ। এদেরকে সমগ্র আসামে বিচ্ছিন্নভাবে বসবাসরত বোদো-কাছারি জনগোষ্ঠী, ভুটান ও অরুণাচল প্রদেশে মনপা ও শেরদুকপেন জনগোষ্ঠী এবং মধ্য আসামের মিশিং ও কারবি জনগোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
অস্ট্রো-এশীয় ও তিব্বতী-বর্মী এই দুটো তরঙ্গ আসাম অঞ্চলে প্রবেশের পর তৃতীয় তরঙ্গ হিসেবে আসামে প্রবেশ করে উত্তর ভারত থেকে ইন্দো-আর্যরা। তারা খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ অব্দের পর উত্তর ভারত থেকে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় প্রবেশ করা শুরু করে। তবে তারা আসাম অঞ্চলে প্রধাণত এসেছিল খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতকে বর্মণ শাসনের সময়। সেই খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ অব্দের সময়কালটা ছিল আদি-ঐতিহাসিক কাল, আর আসামে ইন্দো-আর্যদের এই অভিপ্রায়ণ চলতে থাকে প্রাচীন ও মধ্যযুগ পর্যন্ত। আসাম অঞ্চলে কাপরূপ শাসনের সময় (খ্রিস্টীয় ৩৫০ অব্দ - ১১৪০ অব্দ) দ্রাবিড়ীয় জনগোষ্ঠী নাদিয়ালও আসাএ প্রবেশ করে। সময়ের সাথে সাথে এই দ্রাবিড়ীয় জনগোষ্ঠী সেখানকার মঙ্গোলয়েড নৃগোষ্ঠীদের মাঝে আত্তীকৃত হয়ে যায়, আর তাই এদের মধ্যে দ্রাবিড়ীয় শারীরিক বৈশিষ্ট্যের বদলে মঙ্গোলয়েড শারীরিক বৈশিষ্ট্য বেশি দেখা যায়। প্রাচীণ যুগের অবসানের পর (প্রায় ১২০৫ খ্রিষ্টাব্দ) চতুর্থ তরঙ্গ হিসেবে আসামে প্রবেশ করে মুসলিমরা। পরাজিত বখতিয়ার খিলজির ধৃত সৈন্যরা আসামের হাজো অঞ্চলে বসবাস শুরু করে।
পরবর্তী কালে আসাম অঞ্চলে প্রধান অভিবাসী, অর্থাৎ পঞ্চম তরঙ্গ হচ্ছে তাই-অহোম গোষ্ঠী। দক্ষিণ চীন থেকে পাটকাই অঞ্চলের পাংসাউ গিরিপথ ধরে সুকাফা তাই-অহোমদেরকে আসামে নিয়ে আসেন। তাই-অহোমের পর ষষ্ঠ তরঙ্গ হিসেবে অন্যান্য তাই জনগোষ্ঠী আসামে প্রবেশ করে যারা বৌদ্ধ ছিল। এরা হচ্ছে খামতি, খামিয়াং, আইতন, তাই-ফাকে এবং তুরুং জনগোষ্ঠী যারা উত্তর আসাম ও অরুণাচল প্রদেশে বসবাস করে। ভারতবর্ষের ঔপনিবেশিক সময়কালেও এই অভিবাসন চলতে থাকে। মধ্যযুগের শেষের দিকে শিখরা একটি ক্ষুদ্র কিন্তু অন্যতম প্রধান গোষ্ঠী হিসেবে আসাম অঞ্চলে অভিবাসিত হয়।[6]
ক্রমিক নং | আসামের জনগোষ্ঠী | N (নমুনার আকার) | HbE
ফ্রিকোয়েন্সি |
সূত্র |
---|---|---|---|---|
১ | অহোম | ১২৫ | ০.৩০৪ | Balgir 1995 |
২ | বোরো | ১৩১ | ০.৫৪৯ | Das et al. 1980 |
৩ | চুতীয়া | ৬২ | ০.৩ | Deka et al. 1980 |
৪ | গাড়ো | ১৩৫ | ০.৫ | Das et al. 1980 |
৫ | কারবি | ১১০ | ০.২২৭ | Deka et al. 1988 |
৬ | কোচ | ১৬৪ | ০.৩৫ | Das & Deka 1980 |
৭ | মিচিং | ৩১৮ | ০.৪০৩ | Sharma and Mahanta 2009 |
৮ | সনোয়াল | ১০৬ | ০.৩৯৬ | Deka et al. 1988 |
৯ | তিওয়া | ২৭ | ০.৩১৫ | Balgir 1995 |
S.No | Population
from Assam |
N(Sample size) | HbE
Frequency |
Source |
---|---|---|---|---|
১ | অসমীয় ব্রাহ্মণ | ৯৮ | ০.০৫১ | Deka 1988 |
২ | অসমীয় মুসলিম | ১৫৫ | ০.১৫৮ | Ahmed Das 1994 |
৩ | অসমীয় শিখ | ১০৭ | ০.২০৯ | Sharma Mahanta 2013 |
৪ | কৈবর্ত | ১০১ | ০.১৩৩ | Deka et al. 1988 |
৫ | কালিতা | ১০৪ | ০.১১৫ | Deka 1988 |
৬ | সুত | ২২ | ০.০২৩ | Balgir 1995 |
আসামে ঔপনিবেশিক কালের শুরু দিকে প্রথম ইঙ্গ-বর্মী যুদ্ধ ও ইয়ান্দাবু সন্ধির (১৮২৬) পর উদ্ভূত রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে আসাম অঞ্চলে সপ্তম তরঙ্গ হিসেবে কাচিন ও কুকি জনগোষ্ঠী প্রবেশ করে। তারা এই অঞ্চলে পাটকাই ও আরাকান ইয়োমা হয়ে প্রবেশ করেছিল। তারাই বর্তমানে উত্তর আসামের জিংপো জনগোষ্ঠী, এবং কারবি আংলং ও দামা হাসাও এর কুকি-চিন জনগোষ্ঠী। আসামে চা-বাগানের কাজ শুরু হবার পর (১৮৩৫) ইংরেজরা আসাম অঞ্চলে চা-বাগানের কাজের অষ্টম তরঙ্গ হিসেবে জন্য মুণ্ডারি জনগোষ্ঠীকে নিয়ে আসেন যাদের মধ্যে মুণ্ডা, শবর, সাঁওতাল, ওঁরাও, গোণ্ড ইত্যাদি গোষ্ঠী ছিল। ইংরেজ শাসনের সময়ে বাংলা, রাজস্থান, নেপাল প্রভৃতি অঞ্চল থেকে প্রচুর পরিমাণে চাকুরিজীবী নবম তরঙ্গ হিসেবে আসাম অঞ্চলে প্রবেশ করে। ভূমির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য ইংরেজরা বর্তমান বাংলাদেশের ময়মনসিংহ অঞ্চল থেকে প্রচুর পরিমাণে মুসলমান কৃষককে দশম তরঙ্গ হিসেবে ১৯০১ সালের পর আসাম অঞ্চলে নিয়ে আসে। ভারত বিভাগের পর (১৯৪৭ এর পর) আসাম অঞ্চলে অভিপ্রায়ণ করা সর্বশেষ ও একাদশ তরঙ্গ হচ্ছে বাঙ্গালী হিন্দু উদ্বাস্তু যারা প্রধাণত বর্তমান বাংলাদেশ এর সিলেট অঞ্চল থেকে আসামে প্রবেশ করে।
আসামে এই প্রধান ১১টি তরঙ্গের অভিপ্রায়ণ ও অন্যান্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অভিপ্রায়ণের ফলে আসামে একটি বহু সংস্কৃতির একটি অনন্য পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
যুগ | অস্ট্রো-এশীয় ভাষাসমূহ | তিব্বতী-বর্মী ভাষাসমূহ | তাই ভাষাসমূহ | ইন্দো-আর্য ভাষাসমূহ |
---|---|---|---|---|
প্রাগৈতিহাসিক | (১) অস্ট্রো-এশীয় (অস্ট্রালো-মেলানেশীয়) - খাসিয়া জনগোষ্ঠী - জৈন্তিয়া জনগোষ্ঠী |
|||
আদি-ঐতিহাসিক | (২) তিব্বতী-বর্মী/ পূর্ব হিমালয়ী - ১৮টি দল সহ বোদো-কাছারি জনগোষ্ঠী - কারবি জনগোষ্ঠী - মিচিং জনগোষ্ঠী |
|||
প্রাচীন | (৩) হিন্দু - বারো ভুঁইয়াদের কেউ (কায়স্থ) - কলিতাদের কেউ - অসমীয় ব্রাহ্মণ | |||
মধ্যযুগীয় | (৫) অহোম জনগোষ্ঠী
(৬) পরবর্তীকালের বৌদ্ধ তাই ভাষাগোষ্ঠী |
(৪) অসমীয় মুসলিম, অসমীয় ব্রাহ্মণ, পশ্চিমী ভুঁইয়া, নাথ সম্প্রদায়, কলিতাদের কেউ, কেওট-কৈবর্ত
*"ব্রাহ্মণ ও নাথ যোগীদের বিভিন্ন গোত্র ও শাখার অভিবাসন ঘটে বৈদিক ধর্ম ও সংস্কৃতির উন্নীতকরণের জন্য"।[7] | ||
ঔপনিবেশিক | (৮) মুণ্ডা জনগোষ্ঠী | (৭) কুকি জনগোষ্ঠী, কাচিন জনগোষ্ঠী | (৬) পরবর্তীকালের বৌদ্ধ তাই ভাষাগোষ্ঠী | (৯) হিন্দু মুসলিম মিঞা জনগোষ্ঠী - অভিবাসী বাঙ্গালি - অভিবাসী মারোয়াড়ি জনগোষ্ঠী - গোর্খা জনগোষ্ঠী |
উত্তর-ঔপনিবেশিক | (১০) বাঙ্গালি হিন্দু ও মুসলিম অভিবাসী |
আসামে সামাজিক গঠনের প্রক্রিয়াটি বিভিন্ন সময়ে আসামে বসবাসকারী বিভিন্ন গোষ্ঠীগুলোর উপর একযোগে হওয়া সংস্কৃতকরণ ও উপজাতিকরণ (প্রতিসংস্কৃতকরণ) দ্বারা চিহ্নিত করা হয় , এবং সামাজিক গঠনের এই প্রক্রিয়াটি তিনটি সময়কালের বিভাজনে সবচেয়ে ভালভাবে অধ্যয়ন করা যায়। (১) প্রাক-ঔপনিবেশিক, (২) ঔপনিবেশিক এবং (৩) উত্তর-ঔপনিবেশিক সময়কাল।[8]
আসামকে অনেক সংস্কৃতির আধার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। আসামের মাটিতে অনেকগুলো উপজাতি বা নৃ-গোষ্ঠী বিভিন্ন দিক থেকে প্রবেশ করেছে, কারণ এই অঞ্চলটি অনেকগুলো রাজ্য ও অনেকগুলো ভিন্ন ভিন্ন রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কযুক্ত। অস্ট্রো-এশীয়, মঙ্গোলয়েড, এবং ইন্দো-আর্যরা হচ্ছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্যগত গোষ্ঠী যারা আসাম অঞ্চলে প্রবেশ করে এবং প্রাচীন আসামে বসবাস করে। তারা পূর্বে আসামের আদিবাসী হিসেবে সুপরিচিত ছিল, এবং বর্তমানে তারা "আসামীয় অধিবাসীদের" গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
বৃহত্তর বোদো-কাছারি গোষ্ঠী সমতল ও পাহাড়ী অঞ্চল জুড়ে আসামের ১৮টি প্রধান উপজাতি নিয়ে গঠিত, এরা হচ্ছে বোরো, ডিমাসা, চুতীয়া, সনোয়াল, মেচ, তিওয়া, গারো, রাভা, সারানিয়া, হাজং, ত্রিপুরি, থেংগাল, হোজাই, কোচ ও অন্যান্য। প্রাচীন ভূমি "কিরাত"ও কাছারি নামে পরিচিত। ঐতিহাসিকভাবে বোদো-কাছারি জনগোষ্ঠী আসামের প্রধান গোষ্ঠী ছিল। পরবর্তিতে ষোড়শ শতকে তাই অহোমরা তাদেরকে ছাড়িয়ে যায়। তাই অহোম নৃগোষ্ঠী, এবং চুতীয়া, মোরান ও বোরাহিদের মত উত্তর আসামের বোদো-কাছারি গোষ্ঠীসমূহ "অসমীয়" নামের সাথে জড়িত। তাই অহোমদের পাশাপাশি অন্যান্য প্রধান গোষ্ঠীও ছিল যেগুলো মধ্যযুগে আসাম উপত্যকায় শাসন করয়েছে। এই গোষ্ঠীগুলোগুলো চুতীয়া, কোচ, রাজবংশী ও ডিমাসা সম্প্রদায়ের অন্তর্গত। প্রথম গোষ্ঠীটি ১১৮৭ সাল থেকে ১৬৭৩ সাল পর্যন্ত রাজ্যটির পূর্বাঞ্চলে শাসন করে, দ্বিতীয় গোষ্ঠীটি নিম্ন আসামে ১৫১৫ সাল থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত শাসন করে। তৃতীয় গোষ্ঠীটি আসামের দক্ষিণাঞ্চএ ত্রয়োদশ শতক থেকে ১৮৫৪ সাল পর্যন্ত শাসন করে। বোদোরা বিটিএডি (বড়োল্যান্ড ক্ষেত্রীয় পরিষদ) এর প্রধান গোষ্ঠী। তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলার সময় বোদো ভাষা ব্যবহার করে, এবং অন্যান্য আদিবাসী গোষ্ঠীগুলোর সাথে কথা বলার সময় সাধারণ ভাষা বা লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা হিসেবে অসমীয় ভাষা ব্যবহার করে।
আজকের আদিবাসী অসমীয় সম্প্রদায়ের বেশিরভাগই ঐতিহাসিকভাবে উপজাতীয় ছিল এবং এমনকি আজকের আসামের অ-উপজাতীয় জনগোষ্ঠীও অতীতে উপজাতি ছিল, যারা ধীরে ধীরে সংস্কৃতিকরণের মাধ্যমে হিন্দু সমাজের বর্ণবিন্যাসে অঙ্গীভূত হয়। প্রকৃতপক্ষে বর্তমানে অ-উপজাতীয় অসমীয় হিসেবে বিবেচিত জনগণের ৭০-৭৫% বা তারও অধিক মানুষের মঙ্গোলয়েড উৎপত্তি রয়েছে এবং তাই তারা ঐতিহাসিকভাবে উপজাতীয়। উপজাতীয় গোষ্ঠীসমূহের কয়েকটি আবার হিন্দু উচ্চবর্ণ সমাজে প্রবেশ করেছে, আবার কিছু কিছু গোষ্ঠী উপজাতীয় বা নিম্নবর্ণের সমাজেই রয়ে গেছে। এভাবে, আসাম সবসময়ই ঐতিহাসিকভাবে উপজাতীয় রাজ্যই ছিল।[9]
অহোম, চুতীয়া, মোরান, মোতক ও কোচ-রাজবংশী নৃগোষ্ঠীকে এখনও আংশিক উপজাতীয় গোষ্ঠী বা সেমি-ট্রাইবাল গ্রুপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, কেননা তারা নামে শ্রীমন্ত শংকরদেব এর এক শরণ ধর্মে ধর্মান্তরিত হলেও তাদের নিজস্ব উপজাতীয় রীতিনীতিগুলো ধারণ করে। চুতীয়া, কোচ-রাজবংশী, মোরান, মোতক, অহোম প্রভৃতির মত বিভিন্ন অসমীয় সম্প্রদায়ের উপজাতীয় উৎপত্তি রয়েছে, এবং তারা ধীরে ধীরে সংস্কৃতকরণের মধ্য দিয়ে ধর্মান্তরিত হয়েছে।
সম্প্রতি মোরান, চুতীয়া, মোতক, চা গোষ্ঠী, তাই অহোম ও কোচ-রাজবংশী গোষ্ঠীগুলো উপরে উল্লিখিত বিষয়গুলো অনুধাবন করেছে এবং ভারতের শিডিউলড ট্রাইব মর্যাদার জন্য আবেদন করেছে।[10] এটি আসামকে বিস্তৃত ভূরাজনৈতিক শাখাপ্রশাখা সমৃদ্ধ একটি উপজাতীয় রাজ্যে পরিণত করবে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.