শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
অনাথ
দুনিয়াতে এতিম ছেলে/মেয়ে দের অবস্থান। উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
একজন অনাথ (উতসঃ গ্রীক ορφανός orfanós[১]) হল এমন একজন যার পিতা মাতা মারা গেছেন অথবা চিরতরে তাদের ত্যাগ করেছেন[২][৩]। সাধারনভাবে, যার বাবা মা দুজনেই মারা গেছে তাকে অনাথ বলে থাকে। যখন পশুপাখির কথা চিন্তা করা হয় তখন কেবল মায়ের কথাটাই বিবেচনা করা হয়। যদি মা, চলে যায় তাহলে বাবার অবস্থা যাই হোক না কেন, বাচ্চাটি অনাথ হিসেবে বিবেচিত হয়[৪]।
- For orphaned articles in Wikipedia, see উইকিপিডিয়া:Orphan.

প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় যার পিতা মাতা মারা গেছেন সাধারণত তাদেরকে অনাথ বলা হয় না। এই শব্দটি মূলত তাদের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয় যাদের মা-বাবা নিজেদের ভরণ পোষণে সক্ষম নয় এমন অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানকে রেখে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন।
Remove ads
সংজ্ঞা
বিভিন্ন গোষ্ঠী অনাথ বুঝাতে ভিন্ন ভিন্ন সংজ্ঞা প্রকাশ করে। যুক্তরাষ্টের অাইন অনুসারে অনাথ বলতে বুঝায় অপ্রাপ্তবয়স্ক এমন কাউকে "যার বাবা মা দুজনই মারা গেছেন বা নিখোজ রয়েছেন বা পরিত্যক্ত করেছেন"[৫]।
সাধারণত একজন অনাথের দেখাশুনা করার মত কেউ থাকে না। যদিও ইউনিসেফ এবং ইউএনএইড কোন শিশুর মা-বাবা দুজনের মধ্যে একজন আছে এমন শিশুকেও অনাথ বলে বিবেচনা করে থাকে। এভাবে বললে, মাতৃহারা শিশুকে মাতৃহারা অনাথ, পিতৃহারা শিশুকে পিতৃহারা অনাথ এবং দুজনই মারা গেলে শিশুকে দ্বৈত অনাথ বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে[৬]। এই মতানুসারে পিতা বা মাতার যে কোন একজন মারা গেলে তাকে অর্ধ-অনাথ হিসেবে বিবেচনা করা হয়[৭]।
Remove ads
জনসংখ্যা
সারাংশ
প্রসঙ্গ
উন্নত দেশগুলোতে অনাথের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম, কারণ শিশুর বাবা-মা দু'জনই শিশুর বেড়ে ওঠা পর্যন্ত বেঁচে থাকেন। যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশগুলোতে (যেমন আফগানিস্তান) অনাথের সংখ্যা বেশি।

- ২০০১ সালের পরিসংখ্যান গুলি ২০০২ সালের ইউনিসেফ/ইউএসএইড রিপোর্ট থেকে[৯]
- চায়না: ২০০৫ সালের মিনিস্ট্রি অফ সিভিল এ্যাফেয়ারের জরিপ অনুযায়ী চীনে অনূর্ধ্ব ১৮ বয়স্ক ৫৭৩,০০০ অনাথ রয়েছে [১০]
- Russia: ২০০২ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী ৬৫০,০০০ জন অনাথ রয়েছে। তারা ১৬ বছর বয়সে অনাথ হয় এবং ৪০% বাড়িছাড়া হয়, যাদের ৩০% সন্ত্রাসীতে পরিণত হয় বা আত্মহত্যা করে।[১১]
- ল্যাটিন আমেরিকা: ল্যাটিন আমেরিকায় পথশিশুদের উপস্থিতি অনেক বেশি; কোনো কোনো সূত্রে বলা হয় ল্যাটিন আমেরিকায় পথশিশুদের সংখ্যা প্রায় ৪০ মিলিয়নেরও বেশি।[১২] যদিও সকল পথশিশু অনাথ নয়, সকল পথশিশুই কাজ করে এবং সেভাবে পারিবারিক সাহায্য পায় না।[১৩]
Remove ads
উল্লেখযোগ্য অনাথ
বিখ্যাত অনাথদের মাঝে রয়েছে নেলসন ম্যান্ডেলা এবং অ্যাান্ড্রু জ্যাকসনের মত বিশ্ব নেতারা; হিব্রু নবী মুসা এবং মুসলমান নবী মুহাম্মাদ; এডগার অ্যালান পো এবং ল্যেভ তল্স্তোয় মত লেখকরা। আমেরিকান অনাথ হেনরি ডারগার তার শিল্পকর্মে তার অনাথআশ্রমের ভয়াবহ ছবি অঙ্কন করেছিলেন। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য অনাথের মাঝে আছে লুইস আর্মস্ট্রং, মেরিলিন মনরো, বেব রুথ, রে চার্লিস, ফ্রান্সিস ম্যাকডোরমেন্ডের মত বিনোদন জগতের কিংবদন্তীরা এবং আরও অনেক সাহিত্য এবং কমিকসের কল্পিত চরিত্র।
ইতিহাস
যুদ্ধ এবং এইডসের মত মহামারীর কারণে অনেক অনাথের সৃষ্টি হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যাপক মৃত্যু এবং জনগণের স্থানান্তরের কারণে ইউরোপে প্রায় ১,০০০,০০০ – ১৩,০০০,০০০ সহ বিভিন্ন দেশে প্রচুর পরিমাণ অনাথ সৃষ্টি হয়। জাড (২০০৬) ধারণা করে চেকস্লোভাকিয়াতে ৯,০০০, নেদারল্যান্ডে ৬০,০০০, পোল্যান্ডে ৩০০,০০০, যুগোস্লাভিয়ায় ২০০,০০০ সহ সোভিয়েত ইউনিয়ন, জার্মানি, ইটালি এবং অন্যান্য জায়গায় আরও অনেক অনাথ শিশু ছিল।[১৪]
Remove ads
সাহিত্যে
সারাংশ
প্রসঙ্গ

সাহিত্যে প্রধান চরিত্র হিসেবে অনাথ খুবই প্রচলিত, বিশেষ করে শিশুতোষ এবং কল্প সাহিত্যে।[১৫] বাবা মা না থাকার কারণে চরিত্রগুলোর জীবন আরও মজার এবং দুঃসাহসিক হয়ে থাকে। কনো রকম পারিবারিক বাধ্যবাধকতা এবং নিয়ন্ত্রণ বঞ্চিত হয়ে তারা নিরানন্দ জীবন অতিবাহিত করে। এটি চরিত্রগুলোকে আত্মনির্ভরশীল এবং অন্তর্মুখী করে তোলে এবং তারা স্নেহের জন্য ক্ষুধার্ত থাকে। অনাথেরা সবসময় আত্মপোলব্ধির চেষ্টা করে যেন তারা তাদের শেকড় খুঁজে পেতে পারে। পিতামাতা হলো শিশুদের সঙ্গী এবং সাহায্যের উৎস এবং বাবা মার অনুপস্থিতি শিশুদের সমস্যাগুলো আরও প্রকট করে তোলে। একজন লেখক পিতামাতার যেই চিত্র ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করে সেটি তুচ্ছ মনে হতে পারে এবং একটি অনাথ চরিত্র লেখককে এইসকল অপ্রাসঙ্গিক সম্পর্ক থেকে মুক্তি দেয়। যদি পিতামাতার সাথে সন্তানের সম্পর্ক ফুটিয়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে তাহলে সম্পর্কের জটিল বিষয়গুলো সরিয়ে দেওয়াই ভালো। এইসব গুণাবলীই অনাথকে লেখকদের কাছে আকর্ষণীয় চরিত্র করে তোলে।
সবচেয়ে জনপ্রিয় সিন্ড্যারেলার মত অনাথ চরিত্র রূপকথার গল্পে খুবই প্রচলিত।
সুপরিচিত অনেক লেখক অনাথদের নিয়ে বই লিখেছেন। প্রথম শ্রেণীর সাহিত্যে উদাহরণ হিসেবে বলা যায় শার্লট ব্রন্টির ‘জেন এয়র’, চার্লস ডিকেন্সের ‘অলিভার টুইস্ট (উপন্যাস)’, মার্ক টোয়েনের ‘টম সয়্যার’, এ. জে. মন্টোগোমারির ‘এ্যান অফ গ্রীন গেবলস’, টমাস হার্ডির ‘জুড দ্যা অব্সকিউর’ এবং জে. আর. আর. টলকিনের ‘দ্য লর্ড অব দ্য রিংস’। বর্তমান সময়ের লেখকদের মধ্যে এ. জে. ক্রনিন, লেমনে স্নিচকেট, এ. এফ. কনিগলিও, রুয়াল দাল এবং জে কে রাউলিং সহ আরও কিছু কম সুপরিচিত লেখকরা লিটল অরফান এ্যানির মত বিখ্যাত অনাথ চরিত্র প্রধান চরিত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন। লায়াল কেসলারের নাটক ‘অরফানের’ একটি কাহিনীসূত্রে দেখানো হয়েছে যে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তিও অনাথ হতে পারে।
বিশেষত কমিক বইয়ের চরিত্রে অনাথ খুবই প্রচলিত। প্রায় সব জনপ্রিয় নায়কেরা অনাথঃ সুপারম্যান, স্পাইডার-ম্যান, রবিন, দ্যা ফ্ল্যাশ, ক্যাপ্টেন মারভেল, ক্যাপ্টেন আমেরিকা এবং গ্রিন এ্যারো সবাই অনাথ ছিল। ভিলেন হিসেবেও অনাথ খুব প্রচলিত। উদাহরণস্বরূপ বেন, ক্যাটওম্যান এবং ম্যাগনেটোর কথা বলা যায়। লেক্স লুথোর, ডেডপুল এবং কারণাগের কথাও এখানে বলা যায়। যদিও তারা তাদের মা বাবার যে কনো একজন বা উভয়কেই খুন করেছিলো। মাঝে মাঝে নিউবয় লেগিয়ন এবং রিক জোন্সের মত নায়কের বন্ধুর মত সহকারী চরিত্রও অনাথ হয়ে থাকে।
Remove ads
কার্টুন
১৯৩৬ সালে রেইনবো প্যারাডে কার্টুন ‘অ্যা ওইয়েইফস ওয়েলকামে’ আমরা একটি অনাথ বালককে দেখতে পাই যার গলার স্বর ‘আওয়ার গ্যাং’ এর বাচ্চা কার্ল “আলফালফা” সুইটজারের গলার স্বরের মত। কিন্তু এতে সে কণ্ঠ দেয় নি। এটি জানা ছিল যে সুইটজার আমেরিকান কণ্ঠশিল্পী ছিল না কারণ সে ছিল একজন আমেরিকান অভিনেতা এবং গায়ক।
১৯৩৬ সালের ‘কালার ক্লাসিক’, ‘ক্রিসমাস কামস বাট ওয়ান্স এ ইয়ার’ এর সব অনাথ শিশুদের তৈরি করেছিলো ফ্লেইসচার স্টুডিও যাতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন মেই কুইস্টেল।
Remove ads
ধর্মীয় গ্রন্থে
সারাংশ
প্রসঙ্গ
বাইবেল এবং কুরআন সহ আরও অনেক ধর্ম গ্রন্থে অনাথদের সাহায্য করা এবং তাদের রক্ষা করার কথা বলা হয়েছে। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং ঈশ্বরের সন্তুষ্টিজনক কাজ। ধর্মীয় নেতা মুসা এবং মুহাম্মাদ ছোটবেলা থেকেই অনাথ ছিলেন। অনাথদের সাথে কিরূপ আচরণ করতে হবে সেই সম্পর্কে ধর্মগ্রন্থে বিভিন্ন উদ্ধৃতি রয়েছেঃ
বাইবেল
- “কোনো বিধবা বা অনাথের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে সুবিধা আদায় করো না।“ (হিব্রু বাইবেল, ইক্সোডাস ২২:২২)
- “তোমাদের অনাথদের জন্য চিন্তা করো না; আমি তাদের জীবন রক্ষা করবো। তোমাদের বিধবারাও আমার উপর বিশ্বাস রাখতে পারে।“ (হিব্রু বাইবেল, যিরমিয় ৪৯:১১)
- “পিতৃহীন এবং অনাথদের বিচার করার সময়, পৃথিবীতে তাদের উপর কোনো জুলুম করো না।“ (হিব্রু বাইবেল, সাম ১০:১৮)
- “ধর্মে আমাদের পিতা ঈশ্বর তাদের সম্পূর্ণ নিষ্পাপ হিসেবে গ্রহণ করবেন যারাঃ সমস্যার সময় অনাথ এবং বিধবাদের দেখাশুনা করবে এবং জগতের সকল পঙ্কিলতা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখবে।“ (নূতন নিয়ম, জেমস ১:২৭)
কুরআন
- “এরা শুধু আল্লাহ্র ভালোবাসায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ফকির, মিসকিন, অনাথ এবং কয়েদীদের খাবার দেয়।” (কুরআন, সূরা আল ইনসানঃ 8)
- “অতএব, অনাথদের সাথে রূঢ় ব্যবহার কোরো না।” (কুরআন)
- “দুর্ভোগ রয়েছে সেসব নামাজীর জন্য, যারা নিজের নামায থেকে উদাসীন থাকে, তারা কাজকর্মের বেলায় কেবল প্রদর্শনী করে এবং ছোটোখাটো জিনিস পর্যন্ত অন্যদের দিতে অস্বীকার করে।” (কুরআন, সূরা আল মাউনঃ ৪ – ৭)
- “… এতীম – মিসকিনদের সাথে ভালো ব্যবহার করবে, মানুষের সাথে সুন্দর কথা বলবে …।” (কুরআন, সূরা আল বাকারাঃ ৮৩)
- “… তোমাকে তারা এতীমদের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করবে; তুমি বলো তাদের জন্য গৃহীত সকল পন্থাই উত্তম; যদি তোমরা তাদের সাথে তোমাদের ধন সম্পদ মিশিয়ে ফেল তাতে কোনো দোষ নেই কারণ; তারা তো তোমাদেরই ভাই। …” (কুরআন, সূরা আল বাকারাঃ ২২০)
- “… এতীমদের সম্পদ তাদের কাছে দিয়ে দাও, তাদের ভালো জিনিসের সাথে খারাপ জিনিসের বদল করো না, তাদের সম্পদসমূহ কখনো নিজের মালের সাথে মিশিয়ে হজম করে নিও না, এটা একটি জঘন্য পাপ। …” (কুরআন, সূরা আন নিসাঃ ২)
- “এতীমদের প্রতি লক্ষ্য রাখবে যতক্ষণ না তারা বিয়ের বয়স পর্যন্ত পৌঁছে, তারপর যদি তোমরা তাদের মধ্যে যোগ্যতা অনুভব করতে পার, তাহলে তাদের ধনসম্পদ তাদের হাতে তুলে দেবে। …” (কুরআন, সূরা আন নিসাঃ ৬)
Remove ads
আরও দেখুন
- Adoption
- AIDS orphan
- Child abandonment
- Legitimacy (law)
- Orphan Train
- Orphanage
- Street children
- Empower Orphans
- Euro-orphan
- Transition Home for Orphan Boys
- Student Initiative Rahel, an educational project working for disadvantaged young people like AIDS orphans together with the OVC project for Adigrat and the Tigray region, Ethiopia
তথ্যসূত্র
গ্রন্থপঞ্জি
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads