শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক
বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক বলতে এমন যৌন কর্মকাণ্ডকে বোঝানো হয় যেখানে কোনো বিবাহিত ব্যক্তি তার জীবনসঙ্গী ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে। এই শব্দটি তখনও প্রযোজ্য হয়, যখন কোনো অবিবাহিত ব্যক্তি কোনো বিবাহিত ব্যক্তির সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হয়। এটি বিবাহ-পূর্ব যৌন সম্পর্ক থেকে পৃথক, যেখানে উভয় অংশীজনই অবিবাহিত।
যেসব ক্ষেত্রে বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক কোনো যৌন রীতি লঙ্ঘন করে না, সেগুলোকে সম্মতিমূলক অ-একগামিতা বলা হয় (দেখুন: পলিআমরি)। তবে যেসব ক্ষেত্রে এই সম্পর্ক কোনো যৌন রীতি ভঙ্গ করে, সেগুলোকে পরকীয়া, অ-একগামিতা (যেখানে বিবাহিত ব্যক্তি তার আইনগত সঙ্গী ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হয়), ব্যভিচার, দ্বিবিবাহ, নারীঘটিত কর্মকাণ্ড অথবা বিশ্বাসভঙ্গ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এই ভিন্ন শব্দগুলো সাধারণত নৈতিক বা ধর্মীয় পরিপ্রেক্ষিতে নেতিবাচক অর্থ বহন করে এবং সেগুলোর বিরুদ্ধে দেওয়ানি আইন বা ধর্মীয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
Remove ads
প্রসারতা
সারাংশ
প্রসঙ্গ
আমেরিকান গবেষক আলফ্রেড কিন্সি ১৯৫০-এর দশকে পরিচালিত গবেষণায় দেখতে পান যে, ৫০% আমেরিকান পুরুষ এবং ২৬% নারী বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন। এটি আনুমানিকভাবে ১০ কোটিরও বেশি আমেরিকানের প্রতিনিধিত্ব করে।[১][২]
বিভিন্ন গবেষণার ভিত্তিতে অনুমান করা হয়, ২৬% থেকে ৫০% পুরুষ এবং ২১% থেকে ৩৮% নারী বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কে জড়িত ছিলেন।[৩] আবার একটি জরিপে দেখা যায়, ২২.৭% পুরুষ এবং ১১.৬% নারী এই ধরনের সম্পর্কে ছিলেন।[৪]
অন্য একদল গবেষক উল্লেখ করেন যে, প্রায় ২০% থেকে ২৫% আমেরিকান তাদের সঙ্গীর বাইরে কারও সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হয়েছেন।[৫]
ডিউরেক্সের গ্লোবাল সেক্স সার্ভে ২০০৫-এ দেখা যায়, বিশ্বব্যাপী ৪৪% প্রাপ্তবয়স্ক একরাতের বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কে জড়িয়েছেন এবং ২২% কারও সঙ্গে প্রেমঘটিত সম্পর্ক স্থাপন করেছেন।[৬]
২০০৪ সালের এক মার্কিন জরিপ অনুযায়ী, ১৬% বিবাহিত ব্যক্তি বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কে জড়িয়েছেন, যেখানে পুরুষের সংখ্যা নারীর তুলনায় দ্বিগুণ। আরও ৩০% ব্যক্তি এমন সম্পর্ক নিয়ে কল্পনা করেছেন।[৭]
২০১৫ সালে ডিউরেক্স এবং Match.com পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায়, থাইল্যান্ড এবং ডেনমার্ক ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পরকীয়া প্রবণ দেশ, যেখানে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি প্রেমঘটিত সম্পর্কে জড়িয়েছেন।[৮][৯]
যুক্তরাষ্ট্রের ইন্সটিটিউট ফর ফ্যামিলি স্টাডিজ ২০১৬ সালের এক গবেষণায় দেখায়, কালো বর্ণের প্রোটেস্ট্যান্টদের মধ্যে ক্যাথলিকদের তুলনায় বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কের হার বেশি।[১০] ২০২২ সালের জেনারেল সোশ্যাল সার্ভের তথ্যানুযায়ী, যারা বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৫০% ছিলেন প্রোটেস্ট্যান্ট এবং ১৬% ছিলেন ক্যাথলিক।[১১]
২০১৮ সালের একটি মার্কিন গবেষণায় দেখা যায়, যারা বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন, তাদের ৫৩.৫% ঘনিষ্ঠ বন্ধু বা পরিচিত কারও সঙ্গে এমন সম্পর্ক গড়েছেন। প্রায় ২৯.৪% প্রতিবেশী, সহকর্মী বা দীর্ঘমেয়াদি পরিচিতদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেন। বাকিরা ছিলেন সাধারণ পরিচিত বা সাময়িক যোগাযোগের মানুষ।[১২] একই গবেষণায় দেখা যায়, পুরুষরা নারীদের তুলনায় বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ককে তুলনামূলকভাবে বেশি ইতিবাচকভাবে দেখে। যারা বিগত এক বছরে এমন সম্পর্কে জড়িয়েছেন, তাদের মধ্যে প্রায় ১২% পুরুষ যৌন সম্পর্কের জন্য অর্থ লেনদেন করেছেন, যেখানে নারীদের ক্ষেত্রে এই হার মাত্র ১%।[১২]
কিছু গবেষণায় বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কের হার মাত্র ২.৫% বলে উল্লেখ করা হয়েছে।[৩]
এই ধরনের সম্পর্কে জড়ানোর পেছনে অন্যতম কারণ হতে পারে একজন সঙ্গীর তুলনায় অন্যজনের লিবিডো বা যৌন আগ্রহ বেশি থাকা।[১৩]
সাব-সাহারান আফ্রিকার কিছু অঞ্চলের গবেষণায় দেখা গেছে, ৫% থেকে ৩৫% পুরুষ বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন।[১৪]
Remove ads
ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি
সারাংশ
প্রসঙ্গ
ইহুদি ধর্ম
তোরাহ অনুযায়ী, পরকীয়া বা বিবাহিত নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কের জন্য গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিধান ছিল।[১৫] এখানে দোষারোপের ক্ষেত্রে পুরুষের উপর কঠোর দায়িত্ব আরোপ করা হয়েছে, এবং নারীর ক্ষেত্রেও দায়িত্ব আর শাস্তি প্রযোজ্য, যদি প্রমাণিত হয় যে তিনি ধর্ষণের শিকার হননি (লেবীয় পুস্তক Leviticus 20:10)। যেহেতু এটি মৃত্যুদণ্ডযোগ্য অপরাধ, তাই মামলা বিচারাধীন হওয়ার জন্য ন্যূনতম দুইজন সৎ সাক্ষীর প্রমাণ আবশ্যক ছিল (দ্বিতীয় বিবরণী Deuteronomy 19:15, ও মিশনাহ সানহেদ্রিন অধ্যায় ৪)।
এই ধরনের শারীরিক শাস্তিগুলি বিচারকদের যুগ এবং পবিত্র মন্দিরের সময় কার্যকর ছিল। রব্বিনিক ইহুদিতে, শারীরিক শাস্তি নিষিদ্ধ, কারণ মন্দির পুনর্নির্মিত না হওয়া পর্যন্ত উপযুক্ত বিচারব্যবস্থা সম্ভব নয়।[১৬]
খ্রিষ্টধর্ম
ঐতিহ্যবাহী খ্রিষ্টধর্ম বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ককে নৈতিকতাবিরোধী এবং পাপ হিসেবে গণ্য করে। এই মতের ভিত্তি বাইবেলের বিভিন্ন স্থানে পাওয়া যায়:
তোমরা কি জানো না যে, অধার্মিকরা ঈশ্বরের রাজ্য লাভ করবে না? ধোঁকায় পড়ো না—ব্যভিচারীরা, মূর্তিপূজক, পরকীয়াকারী, স্ত্রীসুলভ পুরুষ (যেমন নপুংসক ও সমকামী), পুরুষসঙ্গমকারী, চোর, লোভী, মদ্যপ, নিন্দাকারী, অথবা প্রতারণাকারীরা ঈশ্বরের রাজ্য লাভ করবে না। — 1 করিন্থীয়
ক্যাথলিক বিয়ে অনুযায়ী, স্বামী ও স্ত্রী পরস্পরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকার অঙ্গীকার করে থাকেন, যা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বহাল থাকে। ফলে, পরকীয়া এবং বিবাহবিচ্ছেদ উভয়ই এই প্রতিশ্রুতি এবং পবিত্র মাতৃ চার্চের চুক্তির বিরোধিতা করে।
ওয়ালডেনসিয়ানদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তারা কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে পরকীয়াকে সমর্থন করতেন।[১৭]
অন্যদিকে, কিছু আধুনিক প্রটেস্ট্যান্ট মতবাদ, যেমন এপিসকোপালিয়ানরা, আজকের দিনে বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক সম্পর্কে তুলনামূলকভাবে উদার ও প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে থাকে এবং তারা বাইবেলের আধুনিক জীবনে প্রয়োগের বিষয়ে নিজস্ব ব্যাখ্যা অনুসরণ করে।
ইসলাম
ইসলামী আইন (বা শরিয়াহ)-এর প্রচলিত ব্যাখ্যা অনুযায়ী, জিনা অর্থাৎ বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কের জন্য পুরুষ ও নারী উভয়েরই জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। বিবাহপূর্ব যৌন সম্পর্কের শাস্তি ১০০ বেত্রাঘাত পর্যন্ত হতে পারে এবং পরকীয়ার শাস্তি পাথর নিক্ষেপে মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। তবে শাস্তি কার্যকর করার আগে অন্তত চারজন সৎ মুসলিম পুরুষ সাক্ষীকে ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করতে হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তি আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার রাখেন এবং তার বক্তব্য বিচারকের কাছে বিশেষ গুরুত্ব পায়। কেবল আইনগত কর্তৃপক্ষই শাস্তি প্রদান করতে পারে এবং মিথ্যা অভিযোগ প্রমাণিত হলে, তার জন্যও কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।[১৮]
কিছু মুসলমান মনে করেন, এই কঠিন সাক্ষ্যপ্রমাণের শর্ত আসলে সেই সময়কার সমাজে প্রচলিত শারীরিক শাস্তিগুলোর বিলুপ্তি সাধনের উদ্দেশ্যেই প্রণীত হয়েছিল। এই দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, প্রমাণের মান এত কঠোর যে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে রায় দেওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে।[১৯]
হিন্দুধর্ম
হিন্দুধর্ম বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ককে পাপ হিসেবে গণ্য করে।[২০] হিন্দু ধর্মশাস্ত্রে বলা হয়েছে, বৈধ বিবাহের বাইরে যেকোনো ধরনের যৌন কার্যকলাপ—যেমন শারীরিক, মানসিক বা আবেগঘন পরকীয়া—নিন্দনীয়। গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, এই ধরনের ধারণা মানবসৃষ্ট, অর্থাৎ হিন্দু বিশ্বাস অনুসরণকারী ব্যক্তিদের উচিত এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকা।[২১]
Remove ads
আইন
বেশিরভাগ দেশে বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক আইনত বৈধ, তবে পরকীয়ার বিরুদ্ধে আইন তুলনামূলকভাবে বেশি প্রচলিত। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের ভর্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে ২০০৪ সালে জন বুশিকে পরকীয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল।[২২] কিছু অঙ্গরাজ্যে পরিত্যক্ত জীবনসঙ্গী তার প্রাক্তন সঙ্গীর প্রেমিক বা প্রেমিকার বিরুদ্ধে ভালোবাসা হরণের জন্য মামলা দায়ের করতে পারেন।[২২]
কিছু মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক অবৈধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব, পাকিস্তান,[২৩] আফগানিস্তান,[২৪][২৫][২৬] মিশর,[২৭] ইরান,[২৬] কুয়েত,[২৮] মালদ্বীপ,[২৯] মরক্কো,[৩০] ওমান,[৩১] মরিতানিয়া,[৩২] সংযুক্ত আরব আমিরাত,[৩৩][৩৪] কাতার,[৩৫] সুদান,[৩৬] এবং ইয়েমেন।[৩৭]
বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি
সারাংশ
প্রসঙ্গ
কোনো ব্যক্তির বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি সাধারণত এই ধরনের সম্পর্কে জড়ানোর প্রবণতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।[৩৮] কিছু বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গোপনে হয়, আবার কিছু ক্ষেত্রে তা খোলাখুলিভাবে হয় এবং দম্পতিরা এই বিষয়ে পরস্পরের সঙ্গে বোঝাপড়া করে নেন। এই ধরনের সম্পর্ক তখনই বৈবাহিক জীবনে সমস্যা তৈরি করে, যখন এটি বিশ্বস্ততার প্রত্যাশা ভঙ্গ করে।[৩৯] বিশ্বস্ততার ধারণাটি মূলত নৈতিক মানদণ্ড এবং সামাজিক বিনিময় প্রক্রিয়ার সমন্বয়ে গঠিত। পরবর্তীটি আবেগ বিনিয়োগ মডেল ও পারস্পরিক নির্ভরতা তত্ত্ব-এর উপর ভিত্তি করে ব্যাখ্যা করা হয়।[৪০]
প্রেরণা
বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কের পেছনে বিভিন্ন রকমের প্রেরণা থাকতে পারে। মানুষের অনুভূতি অনেক সময় আচরণের তুলনায় বেশি অনিয়ন্ত্রিত হয়। অনেকে এই ধরনের সম্পর্কে জড়ান বৈবাহিক জীবনে মানসিক বা শারীরিক অসন্তুষ্টি কিংবা সম্পর্কের মধ্যে সম্পদের ভারসাম্যহীনতার কারণে। আত্মীয়তা বনাম আবেগের তত্ত্ব অনুযায়ী, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া আবেগ পুনরুজ্জীবিত হতে পারে। বিবাহিত সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্ক অনেক সময় গভীর হলেও আবেগহীন হতে পারে। তবে এমন সম্পর্কে জড়াতে সুযোগও থাকতে হয়, এবং সে সময় ঝুঁকি ও সম্ভাব্য লাভ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।[৩৯]
প্রভাবক
যেসব বিষয় বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত থাকতে সহায়তা করে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে: (১) শক্তিশালী নৈতিক মূল্যবোধ, (২) সন্তানের উপর সম্ভাব্য প্রভাব বিবেচনা, (৩) মৌলিক উদ্বেগ, বিশেষ করে একাকিত্বের ভয়, এবং (৪) অন্যকে, বিশেষ করে বিবাহবহির্ভূত সঙ্গীকে কষ্ট না দেওয়ার মানসিকতা। এর মধ্যে নৈতিক মানদণ্ড ও মৌলিক উদ্বেগ সবচেয়ে কার্যকরভাবে সম্পর্ক থেকে বিরত রাখে।[৪০]
লিঙ্গভিত্তিক পার্থক্য
গবেষণায় দেখা যায়, পুরুষরা যৌন সম্পর্কজনিত বিশ্বাসঘাতকতাকে নারীদের তুলনায় বেশি কষ্টদায়ক মনে করেন, যেখানে নারীরা আবেগঘন বিশ্বাসঘাতকতাকে বেশি গুরুত্ব দেন। আচরণের দিক থেকেও পুরুষেরা বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কের কথা বেশি স্বীকার করেন। এই প্রবণতা ব্যাখ্যার জন্য উদ্ভবমূলক ব্যাখ্যা রয়েছে, যেখানে বলা হয় বহু সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন পুরুষদের জেনেটিক সুবিধা প্রদান করে।[৩৮]
যদিও নারী ও পুরুষ উভয়েই ঘনিষ্ঠ বন্ধু, দীর্ঘদিনের পরিচিত কিংবা অপরিচিত কারো সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক স্থাপন করেন, তবে দেখা গেছে, পুরুষেরা সাধারণভাবে আকস্মিক ডেট বা ক্ষণস্থায়ী সম্পর্কে বেশি জড়িয়ে পড়েন। তারা অর্থের বিনিময়ে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার ঘটনাও বেশি উল্লেখ করেছেন।[৪০]
প্রভাব
বিবাহবহির্ভূত যৌন সঙ্গীর পরিচয় অনেক সময় বৈবাহিক সম্পর্কের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে এবং বৈবাহিক বন্ধন দুর্বল হয়ে পড়ে। এই ধরনের সম্পর্ক কার সঙ্গে হচ্ছে, তা বিবেচনা না করেও বৈবাহিক জীবনের উপর এর নেতিবাচক প্রভাব প্রায় সমান থাকে।[৩৯] ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সঙ্গে গড়ে ওঠা সম্পর্ক ও এই আচরণ সাধারণভাবে বৈবাহিক বিচ্ছেদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।[৪১]
বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কের কারণে দাম্পত্য জীবনে যে ক্ষতি হয়, তা বৈবাহিক জীবনের মান, বিয়ের স্থায়িত্ব, স্ত্রী বা স্বামীর বিচ্ছেদের প্রতি মনোভাব, তৃতীয় পক্ষের পরামর্শ কিংবা পরিবারের সন্তানের উপস্থিতি—এই কোনোটির দ্বারাই প্রভাবিত হয় না। এমনকি ধর্মীয় দম্পতিদের ক্ষেত্রে এর প্রভাব আরও গভীর হতে পারে। তবে যদি স্ত্রী কর্মজীবী হন, তাহলে এই প্রভাব তুলনামূলকভাবে দুর্বল হতে পারে।[৩৯]
Remove ads
তথ্যসূত্র
আরও পড়ুন
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads