শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
মাদুরাই
দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর শহর উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
মাদুরাই বা মধুরাই[৫](তামিল: மதுரை, প্রতিবর্ণী. মদুরৈ) ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের একটি মহানগর। এটি ভারতের ২৬তম বৃহত্তম ও তামিলনাড়ুর তৃতীয় বৃহত্তম মহানগর। তামিলনাড়ুর পৌর সংস্থার মধ্যে মাদুরাই দ্বিতীয় বৃহত্তম। এই শহরটি মাদুরাই জেলায় অবস্থিত। মাদুরাইকে তামিলনাড়ুর সাংস্কৃতিক রাজধানী বলা হয়। শহরটি তামিলনাড়ু রাজ্যের দক্ষিণাংশে অবস্থিত।
মাদুরাই জেলার সদর দপ্তর এই শহরে অবস্থিত।
মাদুরাই শহরে উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাদুরাই মেডিকেল কলেজ, মাদুরাই ল' কলেজ ও হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ অন্যতম।
Remove ads
ভূগোল
পশ্চিমঘাট পর্বতের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে, ভাইগাই নদীর তীরে উর্বর সমতলভূমিতে মাদুরাই অবস্থিত। ভাইগাই নদী এই শহরের উত্তর পশ্চিম দিক থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বয়ে গেছে। এই শহরের উত্তর এবং পশ্চিম দিকে সিরুমালাই ও নাগামালাই নামে দুটি পাহাড় আছে। মাদুরাইয়ের বেশিরভাগ ভূমি কৃষিকাজে ব্যবহৃত হয়। প্রধান ফসল ধান, এছাড়া বিভিন্ন প্রকার ডাল, মিলেট, তেলবীজ, কার্পাস ও ইক্ষুর চাষ হয়।
বছরের আট মাস মাদুরাইয়ের আবহাওয়া উষ্ণ ও শুষ্ক প্রকৃতির। মার্চ থেকে জুলাই এখানে গরমের প্রভাব সবচেয়ে বেশি। আগস্ট থেকে অক্টোবর এই কয় মাস এখানের আবহাওয়া মাঝারি প্রকৃতির। এই সময় বজ্রবিদ্যুৎসহ ভারী বৃষ্টিপাত হয়। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি হালকা শীতল প্রকৃতির আবহাওয়া পরিলক্ষিত হয়। সমুদ্র ও পর্বতের সমদূরবর্তী স্থানে অবস্থিত হওয়ায় এখানে মৌসুমী জলবায়ু দেখা যায়। উত্তর-পূর্ব মৌসুমী বায়ু ও দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে এখানে বছরে দুইবার বৃষ্টিপাত হয়। মাদুরাইয়ের বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৮৫.৭৬ সেমি.।
Remove ads
জনসংখ্যা
২০১১ সালের জনগণনায় এই শহরটির মোট জনসংখ্যা ১৪,৬২,৪২০ জন। মাদুরাই পৌর সংস্থা এলাকায় মোট জনসংখ্যা ১০,১৭,৮৬৫। মোট জনসংখ্যার মধ্যে ০-৬ বছরের শিশুর সংখ্যা ১,০০,৩২৪ জন।
২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, এই শহরের গড় স্বাক্ষরতার হার ছিল ৮১.৯৫ শতাংশ।
২০১১ সালের ধর্মীয় গণনা অনুযায়ী মাদুরাই শহরের হিন্দু জনসংখ্যা ৮৫.৮%, মুসলমান জনসংখ্যা ৮.৫%, খ্রীষ্টান ৫.২% এবং ০.৫% অন্যান্য। তামিল এখানকার প্রধান মাতৃভাষা।
পরিবহন ব্যবস্থা
সারাংশ
প্রসঙ্গ
সড়ক পথ
মাদুরাই শহরটি জাতীয় সড়ক ৭, ৪৫বি, ২০৮ ও ৪৯ এর সঙ্গে যুক্ত। এছাড়া শহরটি ৩৩, ৭৩, ৭৩বি, ৭২, ৭২বি রাজ্য সড়কের সঙ্গে যুক্ত। ৭নং জাতীয় সড়ক দ্বারা শহরটি সালেম, ব্যাঙ্গালোর ও কন্যাকুমারী শহরের সঙ্গে যুক্ত। ৪৯নং জাতীয় সড়ক দ্বারা রামেশ্বরম ও কোচি শহরের সঙ্গে মাদুরাই যুক্ত রয়েছে। ২০৮ ও ৪৫বি জাতীয় সড়ক দ্বারা মাদুরাই যথাক্রমে কোল্লম ও তুতিকোরিন শহরের সঙ্গে যুক্ত।
তামিলনাড়ু রাজ্য সড়ক নিগমের সদর দপ্তর মাদুরাই শহরে অবস্থিত।
রেলপথ
মাদুরাই রেল স্টেশনটি শহরের প্রধান রেল স্টেশন। মাদুরাই শহরের মাদুরাই রেল ডিভিশনের সদর দপ্তর অবস্থিত। ডিভিশনটি দক্ষিণ রেল এর অন্তর্গত। স্টেশনটি থেকে মাদুরাইয়ের সঙ্গে কোচি, চেন্নাই, রামেশ্বরম, তুথুকুডি, ব্যাঙ্গালোর ও কোয়েম্বাটুর শহরের সঙ্গে রেল যোগাযোগ সাধিত হয়।
বিমানবন্দর
মাদুরাই বিমানবন্দর ১৯৫৭ সালে মূল শহর থেকে ১২ কি.মি. দূরে অভনিয়াপুরমে স্থাপিত হয়। চেন্নাই, কোয়েম্বাটুর, এবং তিরুচিরাপল্লীর পর, এই বিমানবন্দর তামিলনাড়ু রাজ্যের চতুর্থ ব্যস্ততম বিমানবন্দর। এখানে এয়ার ইন্ডিয়া, এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস, স্পাইসজেট, ইণ্ডিগো এবং শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্সের বিমান পরিষেবা পাওয়া যায়।
মাদুরাই বিমানবন্দর তামিলনাড়ু রাজ্যের চতুর্থ বৃহত্তম বিমানবন্দর। বিমানবন্দটি থেকে মুম্বই, কলকাতা, দিল্লি, চেন্নাই,ব্যাঙ্গালোর ও কোয়েম্বাটুর বিমানবন্দরের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ রয়েছে। বিমানবন্দরটি ২০১৫ সালে ৮,৪২,৩০০ জন যাত্রী পরিবহন করেছে।[৬][৭][৮] বিমানবন্দরটি থেকে পূর্বে আন্তর্জাতিক রুটে কলম্বো ও দুবাইয়ে যাত্রী পরিবহন হয়েছে।
অর্থনীতি
সারাংশ
প্রসঙ্গ
মাদুরাই ঐতিহ্যগতভাবে একটি কৃষিনির্ভর সমাজ ছিল, প্রধান ফসল ধান। কৃষকের আয় থেকে বাড়াতে মাদুরাই জেলার কৃষ্ণ মাটি'সহ অঞ্চলগুলিতে তুলার চাষাবাদ ষোড়শ শতাব্দীতে নায়ক শাসনকালে চালু হয়।[৯] মাদুরাই উত্তর, মেলুর, নীলকোটাই এবং উথামপালায়ম জুড়ে ভাইগাই ব-দ্বীপে যে ধানের জমিতে আবাদ করা হয় সেগুলি "দো'ফসলি ধানের অঞ্চল" নামে পরিচিত।[১০] জেলার কৃষকরা তাদের আয়ের পরিপূরক হিসাবে দুগ্ধচাষ, হাঁস-মুরগি-পালন, মৃৎশিল্প, ইট তৈরি, মাদুর-তাঁতী এবং কাঠের কাজ করে।[১০] মাদুরাইয়ের জুঁই বাগানের খ্যাতিযুক্ত জন্য শহরটি "মাদুরাই মল্লী" নামে পরিচিত, মূলত কোডাইকানাল পাহাড়ের পাদদেশে এবং মাদুরাইয়ে সকালের ফুলের বাজারে কেনাবেচা হয়।[১১] ফুলের বাজারে প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার কৃষক ফুল বিক্রি করেন।[১১]
১৯৯১-এর পরে ক্ষুদ্র শিল্পের (এসএসআই) আবির্ভাবের সাথে সাথে মাদুরাইয়ে শিল্পায়নের ফলে জেলা জুড়ে এই খাতে কর্মসংস্থান ১৯৯২-৯৩ সালে ৬৩,২৭১ জন থেকে বেড়ে ২০০১-০২ সালে ১,৬৬,১২১ জন হয়।[১২] মাদুরাই দক্ষিণ ভারতে কয়েকটি রাবার উৎপাদনশীল অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি[১৩] এবং মাদুরাইয়ে রাবার-ভিত্তিক শিল্প রয়েছে।[১৪] গ্লোভস, ক্রীড়াসামগ্রী, ম্যাটস, অন্যান্য ইউটিলিটি পণ্য এবং অটোমোবাইল রাবার উপাদানগুলি এই শিল্পগুলির দ্বারা সর্বাধিক উৎপাদিত পণ্য। অটোমোবাইল উৎপাদনকারীরা শহরে উৎপাদিত রাবার উপাদানগুলির প্রধান গ্রাহক।[১৫] মাদুরাইয়ে প্রচুর টেক্সটাইল, গ্রানাইট এবং রাসায়নিক শিল্প রয়েছে।[১৪] শহরটি বিশাল অর্থনৈতিক উন্নতি লাভ করেছে এবং লোকজন গাড়িও কিনছে। গাড়ি নির্মাতারা এটিকে সুযোগ হিসাবে পেয়েছে এবং কাপলুরে এখানে শোরুম স্থাপন করেছে।
মাদুরাই আইটি-র জন্য দ্বিতীয় স্তরের শহর হিসাবে নির্বাচিত হয়েছে এবং কিছু সফ্টওয়্যার সংস্থা মাদুরাইয়ে তাদের অফিস চালু করেছে।[১৬] এই জাতীয় বেশ কয়েকটি সংস্থাকে ভারত সরকারের সংস্থা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কস অফ ইন্ডিয়া জাতীয় জাতীয় তথ্য প্রযুক্তি বিকাশ কর্মসূচির আওতায় সুবিধা পাওয়ার অনুমতি দিয়েছে।[১৭] রাজ্য সরকার মাদুরাইয়ে দুটি আইটি-ভিত্তিক বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) প্রস্তাব করে এবং এগুলি সম্পূর্ণভাবে আইটি সংস্থার দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। এইচসিএল টেকনোলজিস এবং হানিওয়েলের নিজস্ব ক্যাম্পাস রয়েছে মাদুরাইয়ের ইলক্যাট আইটি পার্কে।[১৮][১৯]
Remove ads
সংস্কৃতি, পর্যটন এবং বিনোদন
সক্রিয় রাত্রিকালীন জীবনযাত্রার কারণে মাদুরাইকে জনপ্রিয়ভাবে থোঙ্গা নাগরাম বলা হয় যার অর্থ যে শহর কখনও ঘুমায় না।[২০] শহরটি দেশের অভ্যন্তরীণ এবং বিদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক পর্যটককে আকর্ষণ করে। ২০১০ সালে প্রায় ৯১,০০,০০০ পর্যটক মাদুরাই পরিদর্শন করেছিলেন, যার মধ্যে ৫,২৪,০০০ বিদেশী ছিলেন।[২১] মাদুরাই এখন চিকিৎসা পর্যটনকেও আকৃষ্ট করছে।[২২]
এই শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলির মধ্যে মীনাক্ষী সুন্দরেশ্বর মন্দির এবং তিরুমালাই নায়েক রাজপ্রাসাদ অন্যতম।
Remove ads
বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads