শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
সিকিম
ভারতের একটি রাজ্য উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
সিকিম (নেপালি: सिक्किम; /ˈsɪkɪm/ SIK-im; নেপালি উচ্চারণ: [ˈsikːim]) উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি স্থলবেষ্টিত রাজ্য এবং উল্লেখযোগ্য পর্যটন কেন্দ্র। সিকিমের রাজধানী শহর গ্যাংটক। আয়তনে ভারতের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম প্রদেশ। এর উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তিব্বত, পূর্বে ভুটান, পশ্চিমে নেপাল এবং দক্ষিণে ভারতের অপর একটি রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ। সিকিম বাংলাদেশের নিকটবর্তী ভারতের শিলিগুড়ি করিডোরের কাছাকাছি অবস্থিত। সিকিম ভারতীয় রাজ্যগুলির মধ্যে সর্বাপেক্ষা কম জনবহুল। পূর্ব হিমালয় অঞ্চলের একটি অংশ সিকিম, আল্পাইন এবং উপক্রান্তীয় জলবায়ু সহ এর জীব বৈচিত্র্যের জন্য উল্লেখযোগ্য এবং সেইসাথে সিকিমে অবস্থিত কাঞ্চনজঙ্ঘা ভারতের সর্বোচ্চ এবং পৃথিবীর তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বত শিখর। সিকিমের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর গ্যাংটক। রাজ্যের প্রায় ৩৫% এলাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা জাতীয় উদ্যান দ্বারা আচ্ছাদিত।
আধুনিক সিকিম একটি বহুজাতিক এবং বহুভাষী ভারতীয় রাজ্য। সিকিমের ১১ টি সরকারি ভাষা রয়েছে: নেপালি, সিকিমিজ, লেপচা, তামাং, লিম্বু, নেওয়ারি, রায়, গুরুং, মগার, সুনওয়ার এবং ইংরেজি। [৭][৮] ইংরেজি ভাষা স্কুলে পড়ানো হয় এবং সরকারী নথিতে ব্যবহৃত হয়। হিন্দুধর্ম এবং বজ্রায়ণ বৌদ্ধ ধর্ম হল সিকিমের প্রধান ধর্ম। সিকিমের অর্থনীতি মূলত কৃষি ও পর্যটনের উপর নির্ভরশীল এবং ২০১৪ সালের হিসাবে ভারতীয় রাজ্যগুলির মধ্যে এই রাজ্যটির তৃতীয়-ক্ষুদ্রতম জিডিপি ছিল,[৯] যদিও এটি বর্তমানে দ্রুত বর্ধমান অবস্থার মধ্যে রয়েছে। [৯][১০]
সিকিম ভারতের বৃহত্তম এলাচ উৎপাদক রাজ্য এবং গুয়াতেমালার পর এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এলাচ উৎপাদক। ২০০৩ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে সিকিম, তার কৃষিকে সম্পূর্ণভাবে জৈব পদ্ধতিতে রূপান্তরিত করে প্রথম ভারতীয় রাজ্য হিসাবে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছে। [১১] এটি ভারতের সবচেয়ে পরিবেশগতভাবে সচেতন রাজ্য, যার ফলে প্লাস্টিকের জলের বোতল এবং স্টাইরোফোম ইত্যাদি পণ্য এখানে নিষিদ্ধ। [১২][১৩]
Remove ads
ইতিহাস
সারাংশ
প্রসঙ্গ
লেপচারা সিকিমের প্রাচীনতম জাতি বলে মনে করা হয়।[১৪] অবশ্য লিম্বু এবং মগর জনজাতিও তখন বাস করত পশ্চিম ও দক্ষিণের জেলাগুলির অগম্য অংশে, অপর দিকে লেপচারা সম্ভবত পূর্ব ও উত্তরের জেলাগুলির মধ্যে বসবাস করত। [১৫] বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পদ্মসম্ভব, যিনি গুরু রেনপোচে নামেও পরিচিত, বলা হয় যে তিনি ৮ম শতাব্দীতে এখানে পর্যটন করেছেন। [১৬]
নেপালি আধিপত্য
আঠারো শতকের মাঝামাঝি সময়ে সিকিম নেপালি (তৎকালীন গোর্খা রাজ্য) আগ্রাসনের শিকার হয়। এর ফলে ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সিকিম রাজ্য গোর্খা শাসনে ছিল। ১৭৭৫ সাল থেকে ১৮১৫ সালের মধ্যে পূর্ব ও মধ্য নেপাল থেকে প্রায় ১,৮০,০০০ জাতিগত নেপালি সিকিমে চলে এসেছিল। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক কালে নেপালি গোর্খারা ব্রিটিশ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলেও আক্রমণ করত। এর ফলে ব্রিটিশ ও সিকিম রাজ্যের সাধারণ শত্রু ছিল নেপালি গোর্খারা। তাই ভারতে ব্রিটিশ উপনিবেশের পর সিকিম তাদের ব্রিটিশদের সাথে মৈত্রী করেছিল। ফলে ক্ষুব্ধ নেপালিরা প্রতিশোধ নিতে সিকিম আক্রমণ করে সিকিমের তরাই সহ বেশিরভাগ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। নেপালি গোর্খাদের এই আগ্রাসী আচরণ ১৮১৪ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে নেপাল আক্রমণ করতে প্ররোচিত করে, যার ফলে ইঙ্গ-নেপালি যুদ্ধ হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] যুদ্ধের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং নেপালের মধ্যে সুগৌলি চুক্তি হয়। চুক্তির ফলে নেপাল পৃথিবীর উপর তাদের আধিপত্য বিস্তার বন্ধ করে সিকিমের অধিকৃত এলাকাগুলো ফিরিয়ে দেয়। এভাবে সিকিমেত উপর নেপালি আধিপত্যের অবসান ঘটে।
ব্রিটিশ আশ্রিত রাজ্য
কিন্তু এর ফলে সিকিমে ব্রিটিশদের আধিপত্য বাড়তে থাকে। একসময় ব্রিটিশরা চাপে ফেলে সিকিমের কাছ থেকে দার্জিলিং হাতিয়ে নেয়। যদিও ব্রিটিশরা দার্জিলিংয়ের জন্য সিকিমকে নামেমাত্র কর দিত, তবুও এর ফলে সিকিমের সাথে ব্রিটিশদের সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। আবার সিকিমের অনেক মানুষ উন্নত জীবন যাপনের উদ্দেশ্যে সিকিম পার হয়ে ব্রিটিশ ভারতের অংশের জীবন যাপন করতে শুরু করে। কিন্তু সিকিমের রাজা এতে অসন্তুষ্ট হয়ে তাদের ফেরত আনার চেষ্টা করলে ব্রিটিশদের সাথে তাদের সম্পর্কের আরও অবনতি হয়। ১৮৪৯ সালে দুজন উচ্চপদস্থ ব্রিটিশ কর্মকর্তা সিকিমে গেলে সিকিম প্রশাসন তাদের বন্দি করে রাখে। এই ঘটনা সহ আরো ঘটনার জের ধরে ব্রিটিশরা আবার দার্জিলিং শহর সিকিমের অনেকাংশ দখল করে নেয়। বিপর্যয় সামাল দিতে সিকিম রাজপরিবার ব্রিটিশদের সাথে তিতালিয়া চুক্তি করে। চুক্তির পর ব্রিটিশরা সিকিমকে তাদের এলাকার ফিরিয়ে দেয়। তবে সিকিম এক্ষেত্রে অনেকটা স্বাধীন থাকলেও সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিয়ন্ত্রণ ব্রিটিশদের হাতেই ছিল। অর্থাৎ এই চুক্তির ফলে সিকিম ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের একটি আশ্রিত রাজ্যে পরিণত হয়। [১৭] ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত সিকিম ব্রিটিশদের আশ্রিত রাজ্য হিসেবে রয়ে যায়।
স্বাধীন রাষ্ট্র
ব্রিটিশরা ভারত ছেড়ে যাওয়ার সময় তথা ভারত ভাগের সময় দেশীয় রাজ্যগুলোকে নিজস্ব সিদ্ধান্তে ভারত অথবা পাকিস্তানে যোগদান কিংবা স্বাধীন থাকার সুযোগ দিয়েছিল। ফলে বেশিরভাগ রাজ্য ভারতে এবং কিছু পাকিস্তানে যোগ দিলেও হায়দ্রাবাদ, জম্মু ও কাশ্মীর এবং সিকিম স্বাধীন থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। ফলশ্রুতিতে ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে সিকিম একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়।
কিন্তু সেসময় ‘সিকিম স্টেট কংগ্রেস’ নামক একটি রাজনৈতিক দল তখন সিকিমে রাজতন্ত্র বিরোধী আন্দোলন শুরু করে। সিকিমের নেপালি বংশোদ্ভূতরা এই আন্দোলনে ব্যপকভাবে জড়িয়ে যায়। তাদের প্রবল চাপের মুখে ১৯৫০ সালে সিকিমের ১১তম চোগিয়াল (সিকিম ও লাদাখের রাজাদের উপাধি ছিল চোগিয়াল) থাসি নামগিয়াল ভারতের সাথে একটি চুক্তি করেন। এই চুক্তির ফলে স্বাধীন সিকিম রাষ্ট্র ভারতের একটি আশ্রিত রাজ্য হয়। [১৮]
ভারতের আশ্রিত রাজ্য
১৯৫০ সালে সিকিম ভারতের আশ্রিত রাজ্য হওয়ার ফলে ফলে ভারতের হাতে সিকিমের পররাষ্ট্র, নিরাপত্তা ও যোগাযোগ সম্পর্কিত বিষয়গুলোর উপর নিয়ন্ত্রণ এসে যায়। [১৯] কিন্তু সিকিমের সবধরনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সিকিম ছিল সম্পূর্ণ স্বাধীন দেশ। তবে সিকিমের রাজধানী গ্যাংটকে ভারতের একজন রাজনৈতিক প্রতিনিধি নিয়োগপ্রাপ্ত হয়।
চোগিয়ালের অধীনে সাংবিধানিক সরকার গঠনের জন্য ১৯৫৩ সালে একটি রাজ্য কাউন্সিল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পরিবর্তীতে চোগিয়াল থাসি নামগিয়ালের পুত্র পালডেন থন্ডুপ নামগিয়ালের আমলে তিনি সিকিমের স্বায়ত্তশাসন রক্ষা করতে এবং একটি "মডেল এশীয় রাষ্ট্র" গঠনে সক্ষম হন। যেখানে শিক্ষার হার এবং মাথাপিছু আয় প্রতিবেশী দেশ নেপাল, ভুটান এবং ভারতের চেয়ে দ্বিগুণ ছিল।[২০]
ভারতীয় দখলের পূর্বকথা
সিকিমের একজন প্রভাবশালী নেতা ছিল কাজী লেন্দুপ দর্জি। লেন্দুপ ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে 'সিকিম প্রজামন্ডল' নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করে। এছাড়াও ১৯৫০-এর দশকে সে 'সিকিম স্টেট কংগ্রেস'-এর সভাপতি ছিল। ১৯৬২ সালে লেন্দুপ এই দল সহ সিকিমের কয়েকটি সমমনা দলকে একই ছত্রছায়ায় এনে রাজতন্ত্র-বিরোধী ‘সিকিম ন্যাশনাল কংগ্রেস’ গঠন করে।[২১]
এরকম পরিস্থিতিতে ১৯৬৩ সালে সিকিমের তৎকালীন চোগিয়াল থাশি নামগিয়াল মৃত্যু। হয়। পরের বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু মারা গেলে সিকিমের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলে যায়।
লেন্দুপ দর্জির দল 'সিকিম ন্যাশনাল কংগ্রেস'-এর মাধ্যমে তারা সেখানে রাজতন্ত্র বিরোধী আন্দোলন শুরু করে।
অন্যদিকে ভারত সিকিমের রাজা পালডেন নামগিয়ালকে পরিস্থিতি সামাল দিতে নানাভাবে সাহায্য করার কথা বলে।
কয়েকবছর পর ১৯৭০ সালে লেন্দুপ দর্জির দল সিকিম ন্যাশনাল কংগ্রেস দেশে একটি সধারণ নির্বাচন দাবি করে। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৭৩ সালে দেশে নির্বাচিন অনুষ্ঠিত হলে রাজপরিবার বিপুল ভোটে জয় পায়। কিন্তু সিকিম ন্যাশনাল কংগ্রেস নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে আরো কয়েকটি দলের সাথে মিলে তীব্র আন্দোলন শুরু করে। ক্রমেই তা পরিণত হয় রাজতন্ত্র বিরোধী আন্দোলন।
এসময় পালডেন নামগিয়াল ভারতের কাছে সাহায্য কামনা করেন। ভারত সিকিমের নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে। ঐ সংবিধানে চোগিয়ালের (রাজার) ক্ষমতা চূড়ান্তভাবে খর্ব করা হয়। সংবিধান অনুযায়ী সিকিমের মূল ক্ষমতা চলে যায় নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে।
এর মাঝে ১৯৭৪ সালে সিকিমে পুনরায় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এই নির্বাচনে কাজী লেন্দুপ দর্জির দল অস্বাভাবিক ব্যবধানে জয় লাভ করে। লেন্দুপের দল সিকিমের মোট ৩২ আসনের মধ্যে ৩১টি আসন লাভ করে। নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী লেন্দুপ দর্জি সিকিমের প্রধানমন্ত্রী হয়। কিন্তু ভারতের প্রণিত নতুন সংবিধান অনুযায়ী রাজা ছিলেন সিকিমের সাংবিধানিক প্রধান।
ভারতের অংশে পরিণত হওয়া
প্রধানমন্ত্রী হয়ে ১৯৭৫ সালে লেন্দুপ দর্জি সিকিমকে ভারতের একটি রাজ্যে পরিণত করার জন্য ভারতীয় সংসদে আবেদন করে। এরই মধ্যে রাজপরিবারের বিরুদ্ধে সিকিমের নেপালিদের প্রতি বৈষম্যের অভিযোগের কারণে চোগিয়ালের বিরুদ্ধে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।[২২][২৩]
ওই বছরের এপ্রিলে ভারতীয় সেনাবাহিনী সিকিমের রাজধানী গ্যাংটক শহর দখল করে এবং ৬ এপ্রিল সকালে সেনাবাহিনীর পাঁচ হাজার সৈন্য চোগিয়ালের ২৪৩ জন প্রাসাদরক্ষীদের নিরস্ত্র করে ফেলে। [১৮] ফলে অত্যাচারী অভিযুক্ত চোগিয়াল (রাজা) পালডেন থন্দুপ নামগিয়াল ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে বন্দী হন।
এরপরে ভারতীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে সিকিমে একটি 'গণভোট' অনুষ্ঠিত হয়। সেই গণভোটে ৯৫.৫ শতাংশ ভোটার রাজতন্ত্র বিলোপের পক্ষে রায় দেয়। তারপর লেন্দুপ দর্জির নেতৃত্বে সিকিমের নতুন সংসদ সিকিমকে একটি ভারতীয় প্রদেশ (রাজ্য) হওয়ার জন্য একটি বিল প্রস্তাব করে যা তাৎক্ষণিকভাবে ভারত সরকার কর্তৃক গৃহীত হয়।[১৮][২৪]
এর ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালের ১ মে সিকিম ভারত প্রজাতন্ত্রের ২২তম রাজ্যে পরিণত হয় এবং সিকিমের রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয় ও প্রজাতন্ত্রের শুরু হয়।[২৫]
সাংবিধানিক ভাবে নতুন রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্তি সক্ষম করতে, ভারতীয় সংসদ সংবিধান সংশোধন করে। প্রথমত ভারত সংবিধানে ৩৫ তম সংশোধনীতে এমন কিছু শর্তাবলীর ব্যবস্থা করা হয়েছিল যার ফলে সিকিম ভারত প্রজাতন্ত্রের "সহযোগী রাজ্য"-এ পরিণত হয়। এটা একটি বিশেষ মর্যাদা যা অন্য কোনও রাজ্যের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হতো না। কিন্তু এক মাস পরেই ভারত সংবিধানের ৩৫ তম সংশোধনী বাতিল করে সিকিমকে একটি পূর্ণ রাজ্যে পরিণত করে এর নাম সংবিধানের প্রথম তফসিলে যুক্ত করে।[২৬]
Remove ads
অর্থনীতি
২০১৮-১৯ অর্থবছরে সিকিমের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন হয়েছে ২৬,৭৮৬ কোটি টাকা বা ৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা গায়ানা-এর সমতুল্য ।[২৭]
সিকিমের হস্তশিল্প অত্যন্ত বিখ্যাত। শাল, গর্জন এবং টিক সহ কিছু উৎকৃষ্ট মানের কাঠ বনাঞ্চলে পাওয়া যায়। শিল্পক্ষেত্রে এখনও অনগ্রসর।
সিকিম ভারতের অন্যতম জনশক্তি সরবরাহকারী রাজ্য। এখানে সুলভ শ্রমিক ভারতের অন্যান্য রাজ্যে কাজের খোঁজে পাড়ি জমায়।
যোগাযোগ
সারাংশ
প্রসঙ্গ

সড়ক পথ
বর্তমানে সিকিমের সঙ্গে সারা দেশের একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। রংপো অটল সেতু সিকিমের প্রবেশদ্বার। পাহাড়ি পথে সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় লাগে গ্যাংটক পৌঁছতে। সেই রাস্তাও বছরের অনেক সময় ধসের কারণে বন্ধ থাকে।
রেলপথ
দুর্গম পার্বত্যাঞ্চল হওয়ায় এই রাজ্যে কোনো রেলওয়ে সংযোগ নেই। সিকিমের নিকটতম রেলস্টেশন শিলিগুড়ি । শিলিগুড়ি জংশন থেকে শিবক পর্যন্ত লোকাল ট্রেন পরিসেবা রয়েছে। পাহাড়ি পথে বছরের অনেক সময় ধসের কারণে বন্ধ থাকে। রেলপথ চালু হলে সীমান্তে সামরিক সরঞ্জাম , জনমানব , পর্যটক পৌঁছনো অনেক সহজ হবে।
সেবক স্টেশনের কাছে পাহাড় কেটে টানেল তৈরির কাজ চলছে। সেবক থেকে রাংপো পর্যন্ত এরকম ১৪টি টানেল তৈরি হবে । এছাড়াও থাকবে ১৩টি সেতু। জোরকদমে চলছে সবকিছুর কাজ।সেবক থেকে রংপো, সব মিলিয়ে ৪৫ কিমি পথের মাঝে থাকছে তিনটি স্টেশন – মেলি, তিস্তাবাজার ও রিয়াং। সেবক–রংপোর পথে পড়বে মহানন্দা অভয়ারণ্য এবং চারটি ফরেস্ট ডিভিশন– কার্শিয়ং, কালিম্পং, দার্জিলিং এবং পূর্ব সিকিম।
সেবক–রংপো রেলপথের জন্য ২০২০ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত প্রায় ৩৩৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছে প্রকল্পটিতে। ৪৫ কিমি লম্বা এই রেলপথের নির্মাণের জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে আপাতত ৮৯০০কোটি টাকা।বর্তমানে রেলের তরফে আবার নতুন করে ৬০৭ কোটি টাকা বরাদ্দ হওয়ায় কাজের গতি আগামীতে বাড়তে চলেছে ।
মূল রেলপথের ৪৫ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ৪১ কিলোমিটারই মাটির তলায় সুরঙ্গের ভিতর দিয়ে যাবে। সমস্ত রেলপথ জুড়ে ১৪ টি সুরঙ্গ, ১৩ টি ব্রিজ, ৫টি স্টেশন থাকবে রেলমন্ত্রকসূত্রে বলে জানা গেছে। একবার রংপো অবদি কাজ সম্পূর্ণ হলে, আগামীতে একেবারে সিকিমের রাজধানী গ্যাংটক অবদি সম্প্রসারিত হতে পারে রেলপথটি। যেহেতু ৯২ শতাংশ রেলপথই মাটির তলা দিয়ে যাবে, ফলে অরণ্য, বন্যপ্রাণী বা পরিবেশের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।”[২৮] প্রকল্পটি বর্তমানে ২০২৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অন্যান্য পথ
কয়েক বছর আগে পাকিয়ং বিমানবন্দর দিয়ে আকাশপথে উড়ান চালু হলেও আবহাওয়া এবং পরিবেশ সংক্রান্ত কারণে সেটিও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে রয়েছে। তাছাড়া উড়ানের সুবিধে অনেক সাধারণ মানুষেরই নাগালের বাইরে। বিমানবন্দরটি গ্যাংটক থেকে রানিপুল হয়ে জাতীয় সড়ক ৭১৭এ মাধ্যমে পাহাড়ি আঁকাবাঁকা রাস্তা হয়ে সংযুক্ত।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
রাজ্যের রাবাংলা-এ ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি রাষ্ট্রীয় প্রাযুক্তিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
ধর্ম

সিকিমের অধিবাসীরা অর্থাৎ লেপচা এবং ভুটিয়ারা বৌদ্ধধর্মাবলম্বী। এখানে মূলতঃ মহাযান মতে তিব্বতী বৌদ্ধধর্ম চর্চিত হয়ে থাকে।
সিকিমে ধর্মবিশ্বাস-২০১১
- হিন্দু 57.76 (৫৭.৮%)
- বৌদ্ধ 27.39 (২৭.৪%)
- খ্রীষ্ট 9.91 (৯.৯১%)
- ইসলাম 1.62 (১.৬২%)
- শিখ 0.31 (০.৩১%)
- অন্যান্য 3.01 (৩.০১%)
ভাষা
সিকিম রাজ্যের প্রথম তিনটি প্রধান ভাষা হ'ল নেপালি, ভোটিয়া এবং লেপচা। সিকিমি জনগণের অপর একটি অংশ দ্বারা কথিত ভাষা হল সিকিমি ভাষা, যাকে সিকিমি তিব্বতি বা ডেনজংকে বলা হয়। ডেনজংপেক এবং ডেনজংকে হল একটি দক্ষিণ তিব্বতী ভাষা যেটি ভারতের সিকিমের ভুটিয়া এবং নেপালের মেচি জোনের কিছু অংশে কথিত।
Remove ads
পর্যটন
হিলে-বারসে ট্রেল - সিকিমের পশ্চিম দিকে রয়েছে এই অঞ্চল। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে গাড়ি করে দুপুরের মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া যায় গন্তব্যে। খুবই সহজ একটি ট্রেক ট্রেল । এপ্রিল-মে মাসে বারসের রডোডেনড্রন স্যাঙ্কচুয়ারিতে রঙের মেলা দেখা যায়। সাদা, গোলাপি, লাল, হলুদ রঙের রডোডেনড্রনে ভরে থাকে সমগ্র উপত্যকা।[৩০]
গ্যালারি
- এনচে মঠ
- রুমটেক মঠ, গ্যাংটক
- তিব্বত গবেষণা কেন্দ্র এবং সংগ্রহশালা
- রাজধানী গ্যাংটক
- হিমালয়
- প্রকৃতির কোলে কালো ভাল্লুক
- রডোডেনড্রন
- গুরুডোংমার হ্রদ
তথ্যসূত্র
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads