শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
হাথিগুম্ফা শিলালিপি
ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের একটি প্রাচীন শিলালিপি উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
হাথিগুম্ফা শিলালিপি ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের ভুবনেশ্বর শহরের নিকটবর্তী উদয়গিরি পাহাড়ের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত হাথিগুম্ফা নামক চৌদ্দ নম্বর গুহার দেওয়ালে উত্কীর্ণ একটি প্রাচীন শিলালিপি। এই শিলালিপি মধ্য-পশ্চিম প্রাকৃত ভাষায় ব্রাহ্মী লিপিতে খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে কলিঙ্গ সম্রাট খারবেল কর্তৃক উত্কীর্ণ হয়।

Remove ads
পাঠোদ্ধারের ইতিহাস
সারাংশ
প্রসঙ্গ

১৮২০ খ্রিষ্টাব্দে এ. স্টার্লিং এশিয়াটিক রিসার্চেস নামক পত্রিকায় ও অ্যান অ্যাকাউন্ট, জিওগ্রাফিক্যাল, স্ট্যাটিস্টিক্যাল অ্যান্ড হিস্টরিক্যাল অব ওড়িশা অর কটক (ইংরেজি: An Account, Geographical, Statistical and Historical of Orissa or Cuttack) নামক তার গ্রন্থে এই শিলালিপি সম্বন্ধে তথ্য প্রকাশ করেন। জেমস প্রিন্সেপ এই লিপির পাঠোদ্ধার করেন যা ১৮৩৭ খ্রিষ্টাব্দে জার্নাল অব দ্য এশিয়াটিক সোসাইটি অব বেঙ্গলে প্রকাশিত হয়, কিন্তু লিপিতে উল্লিখিত শাসকের নাম ঐর বলায় প্রিন্সেপের পাঠোদ্ধার ত্রুটিযুক্ত হয়। ১৮৭১ খ্রিষ্টাব্দে এইচ. লক এই লিপির একটি ছাঁচ প্রস্তুত করেন যা বর্তমানে কলকাতা শহরের ভারতীয় সংগ্রহালয়ে সংরক্ষিত রয়েছে। ১৮৭৭ খ্রিষ্টাব্দে আলেকজান্ডার কানিংহাম কর্পাস ইন্সক্রিপ্টিওনাম ইন্ডিক্যারাম নামক পত্রিকায় এই লিপি প্রকাশ করেন। ১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দে রাজেন্দ্রলাল মিত্র অ্যান্টিকুইটিজ অব ওড়িশা নামক পত্রিকায় লিপিটির সামান্য পরিবর্তিত পাঠোদ্ধার প্রকাশিত করেন।
গুজরাটি পণ্ডিত ভগবানলাল ইন্দ্রজী এই শিলালিপির প্রথম সঠিক পাঠোদ্ধার করেন, যা তিনি ষষ্ঠ আন্তর্জাতিক প্রাচ্যবিদদের কংগ্রেসে উপস্থাপন করেন। ভগবানলাল ইন্দ্রজী প্রথম ব্যক্তি ছিলেন যিনি, লিপিতে উৎকীর্ণ শাসকের নাম খারবেল ঘোষণা করেন।[১] ভগবানলাল ইন্দ্রজীর পাঠোদ্ধারে বেশ কিছু সন্দেহের অবকাশ থাকায় ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ এই শিলালিপির পাঠোদ্ধারের জন্য কাশীপ্রসাদ জয়সওয়ালকে অনুরোধ করলে তিনি দুই বছর ধরে এই লিপি পাঠোদ্ধার ও সংস্কার করেন।[২]
Remove ads
লিপির বক্তব্য
সারাংশ
প্রসঙ্গ

হাথিগুম্ফা শিলালিপি থেকে জানা যায় যে, চেত রাজবংশের কলিঙ্গাধিপতি মহারাজ মহামেঘবাহন খারবেল পনেরো বছর বয়সে যুবরাজ হিসেবে অভিষিক্ত হন এবং চব্বিশ বছর বয়সে সিংহাসনলাভ করেন। এই লিপি জৈন নমোকার মন্ত্রের মত একটি শ্লোক (নমো অরহন্তানং।। নমো সবসিধানং।। ; সংস্কৃত: नमो अरहंतानं [॥] णमो सवसिधानं [॥]) দিয়ে শুরু হয়েছে। লিপির ভাষ্য নিম্নরূপ[২]:-
- তার রাজত্বের প্রথম বছরে তিনি ঝড়ে বিনষ্ট নগর ও প্রাসাদ সংস্কার করেন এবং পঁয়ত্রিশ লক্ষ স্বর্ণ মুদ্রা ব্যয় করে প্রজাদের মঙ্গল সাধন করেছিলেন।
- দ্বিতীয় বছরে তিনি রাজা সাতকর্ণীকে অগ্রাহ্য করে অশ্ব, হস্তী, পদাতিক ও রথ বিশিষ্ঠ চতুরঙ্গ সেনা পাঠিয়ে কন্থবেণা নদী পেরিয়ে মুসিকনগর অবরোধ করেন।
- তৃতীয় বছরে তিনি নৃত্যগীত ও নাট্যাভিনয় প্রভৃতি উপায়ে প্রজাদের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করেন।
- চতুর্থ বছরে তিনি পূর্ব কলিঙ্গ রাজাদের নির্মিত বিদ্যাধরা পয়ঃপ্রণালী অতিক্রম করেন। এর ফলে রথিক ও ভোজকদের প্রধানদের মুকুট ও রাজছত্র ভূলুন্ঠিত হয়, তাদের ধনসম্পদ বাজেয়াপ্ত হয় এবং তার পদানত হতে বাধ্য হন
- পঞ্চম বছরে তিনি তিনশ বছর পূর্বে নন্দরাজ কর্তৃক উদ্ঘাটিত পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থাকে তনসুলিয়ের পথে কলিঙ্গ নগরী পর্যন্ত খনন করান।
- সপ্তম বছরের লিপি অস্পষ্ট হলেও উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে যে, এই বছর তার রাণী গর্ভবতী হন।
- অষ্টম বছরে তিনি গোরথগিরি নামক পাহাড় সহ রাজগৃহ আক্রমণ করেছিলেন, যার ফলে যবন রাজ দিমিত অবরুদ্ধ সেনা পরিত্যাগ করে মথুরায় পশ্চাৎ অপসারণ করেন।
- দশম বছরে তিনি ভারতবর্ষ জয় করতে যাত্রা করেন।
- একাদশ বছরে তিনি রথযাত্রায় কাঠের তৈরী কেতুভদ্রের মূর্তি বের করেছিলেন।
- দ্বাদশ বছরে তিনি উত্তরাপথের রাজাদের মনে ত্রাস সঞ্চার করে বহসিতমিত বা বৃহস্পতিমিত্র (? পুষ্যমিত্র শুঙ্গ) নামক মগধরাজকে তার পাদবন্দনা করতে বাধ্য করেন।
রাজত্বের চতুর্থ বছরের কিছু অংশ, সপ্তম, নবম এবং ত্রয়োদশ হতে সপ্তদশ বছরের বর্ণনা অস্পষ্ট বলে পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবুও কাশীপ্রসাদ জয়সওয়াল কিছু অংশের পাঠোদ্ধারে সক্ষম হয়েছিলেন। তার মতে চতুর্দশ বছরে পান্ড্য রাজা, ষোড়শ বছরে মৌর্যকাল বা মৌর্যাব্দ এবং ১৬৪ বছরের উল্লেখ রয়েছে[২], যদিও অধ্যাপক রমাপ্রসাদ চন্দ সহ অনেক ঐতিহাসিক মৌর্যাব্দ এবং ১৬৪ বছরের উল্লেখ সম্বন্ধে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।[৩][৪][৫]
Remove ads
তথ্যসূত্র
আরো পড়ুন
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads