Loading AI tools
দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন উপত্যকার উদ্ভিদ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কোকো বা কোকোয়া দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন উপত্যকার উদ্ভিদ। যার বীজ থেকে চকলেট তৈরি হয়। মধ্য আমেরিকার আরও কয়েকটি দেশে এর চাষ সম্প্রসারিত হয়েছে ক্রমান্বয়ে। তারপর আফ্রিকার আইভরি কোস্ট, ঘানা, নাইজেরিয়া ও ক্যামেরুনে এর চাষ শুরু হয়। এরপর এশিয়ার মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও নিউগিনিতে সূচনা হয় এর চাষ। দক্ষিণ ভারত ও উড়িষ্যা রাজ্যেও এর চাষ দেখা যায়।[1]
থিওব্রোমা কোকোয়া | |
---|---|
ফলসহ কোকোয়া গাছ | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | উদ্ভিদ |
শ্রেণীবিহীন: | সপুষ্পক উদ্ভিদ |
শ্রেণীবিহীন: | Eudicots |
শ্রেণীবিহীন: | Rosids |
বর্গ: | Malvales |
পরিবার: | Malvaceae |
গণ: | Theobroma |
প্রজাতি: | টি. কোকোয়া |
দ্বিপদী নাম | |
থিওব্রোমা কোকোয়া L. | |
কোকোয়ার বৈজ্ঞানিক নাম Theobroma cacao। গ্রিক ভাষায় Theos মানে ভগবান আর broma মানে খাদ্য অর্থাৎ ভগবানের খাদ্য। এর পরিবারের নাম Sterculiaceae। গাছ বেশি বড় হয় না। বড়জোর ২৫ ফুট উঁচু হতে পারে। তবে কোকোয়ার বড় বড় বাণিজ্যিক বাগানে ছাঁটাই করে গাছকে ছোট রাখা হয়। আর বড় বড় ছায়াবীথির নিচে এদের শ্রীবৃদ্ধি। চির সবুজ বৃক্ষ। পাতা একান্তর, ঘন সবুজ ও আয়ত। গুচ্ছ গুচ্ছ ফুল ফোটে গাছের কাণ্ডে ও ডালে। ফুল ছোট, হালকা গোলাপি ও সাদা। ফলে অনেক শিরা, আকারে অনেকটা নাশপাতি ফলের মতো। পাকা ফলের ভেতরে পেঁপের মতো ফাঁকা আর পাঁচ সারির ছোট ছোট বীজ থাকে।
কোকোয়া ফল ক্রিস্টোফার কলম্বাস ১৪৯৫ সালে মধ্য আমেরিকা থেকে ইউরোপে নিয়ে এসেছিলেন। তবে স্পেনীয় জেনারেল কোরেটজ ১৫২০ সালের মাঝামাঝি এই ফল স্পেনে আমদানি করেন। পরে ফরাসিরা এই গাছের সন্ধান পায়। ১৬৫৭ সালে এক ফরাসি নাগরিক লন্ডনে ‘চকলেট হাউস’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমের চকলেট জনপ্রিয় করে তোলেন। ১৮৯০ সাল থেকে শুরু হয়ে ১৯৫০ সালের দিকে এর চাষের বেশি প্রসার ঘটে। বর্তমানে পৃথিবীর ৪৩ শতাংশ কোকোয়া উৎপাদন হয় আইভরিকোস্ট থেকে।[1]
বিশ্বজনীন ৭০,০০০ বর্গকিলোমিটারের (২৭,০০০ বর্গমাইল) ওপরে কোকোয়া চাষ করা হয়। খাদ্য এবং কৃষি সংস্থার[2] (FAO) ২০০৭ সালের পরিসংখ্যান হিসেবে অনুসারে:
শ্রেণী, দেশ | মূল্য | উৎপাদিত বস্তু |
---|---|---|
(Int $১,০০০*) | MT | |
১ কোত দিভোয়ার | ১,০৬৫,৯২৯ | ১,৩৮৪,০০০ |
২ ইন্দোনেশিয়া | ৫৬৯,৯৩৭ | ৭৪০,০০৬ |
৩ ঘানা | ৪৭৩,৬৬০ | ৬১৫,০০০ |
৪ নাইজেরিয়া | ৩৮৫,০৯০ | ৫০০,০০০ |
৫ ব্রাজিল | ১৫৫,৩০৭ | ২০১,৬৫১ |
৬ ক্যামেরুন | ১৩৮,০৪৬ | ১৭৯,২৩৯ |
৭ ইকুয়েডর | ৬৬,১৫১ | ৮৫,৮৯১ |
৮ টোগো | ৬০,০৭৪ | ৭৮,০০০ |
৯ কলম্বিয়া | ৪৮,০২৬ | ৩৯,৯০৪ |
১০ পাপুয়া নিউগিনি | ৩৬,৪২৯ | ৪৭,৩০০ |
১১ ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র | ৩২,৪৬৬ | ৪২,১৫৪ |
১২ পেরু | ২৪,১৭৩ | ৩১,৩৮৭ |
১৩ মালয়েশিয়া | ২৩,১০৫ | ৩৫,১৮০ |
১৪ মেক্সিকো | ২৩,০৩৬ | ২৯,৯১০ |
১৫ ভেনেজুয়েলা | ১৪,৫৬৪ | ১৮,৯১১ |
১৬ সিয়েরা লিওন | ১০,৭৮২ | ১৪,০০০ |
১৭ গিনি | ৯,৬১৪ | ১২,৪৮৪ |
১৮ গুয়াতেমালা | ৯,০৯৩ | ১১,৮০৭ |
১৯ | ৮,১৬৩ | ১০,৬০০ |
২০ ভারত | ৭,৮৪০ | ১০,১৮০ |
সব মিলিয়ে প্রায় ৩০টির মতো বীজ থাকে প্রতিটি ফলে। পাকলে কোনো জাতের ফলের রং হয় মোটো লাল আবার কোনোটার গাঢ় হলুদ। পাকা ফলের ভেতরের বীজ বের করে শুকিয়ে তাকে ফারমেনটেশন বা গাঁজাতে হয়। তারপর তাকে রোস্ট করে গুঁড়া করতে হয়। এর পাউডার থেকেই চকলেট তৈরি হয়। বছরে দুবার ফল সংগ্রহ করতে হয়। কোকোয়া গাছ শীতল ও গরম হাওয়া কোনোটাই সহ্য করতে পারে না। সে জন্য বড় বড় গাছের সারি দিয়ে কোকোয়ার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে হয়।
কোকোয়ার বীজে আছে থিওব্রোমাইন, ক্যাফেইন ও রঙিন বস্তু। সার্বিকভাবে বীজ উত্তেজক, মূত্র রোগে উপকারী। থিওব্রোমাইন স্নায়ুবিক রোগের টনিক হিসেবে ব্যবহূত হয়। হৃদজনিত রোগে ‘এনজাইমা পেক্টোরিস’-এর ব্যথা উপসম করতে পারে চকলেটের কাত্থ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও বুকের ব্যথায় চকলেট পানীয় খেতে দেওয়া হতো। ফলের নরম শাঁস থেকে কোকোয়া-মাখন তৈরি হয়। এর প্রলেপ ত্বক কোমল রাখতে সাহায্য করে থাকে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.