Loading AI tools
পাখির পরিবার উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
চড়াই বা চড়ুই (ইংরেজি: Sparrow) যেকোন লোকালয়ের আশেপাশে একটি সুপরিচিত পাখি। এরা জনবসতির মধ্যে থাকতে ভালোবাসে তাই এদের ইংরাজি নাম হাউস স্প্যারো অর্থাৎ "গৃহস্থালির চড়াই" এই পাখি বাড়ই,পিয়াইজ্জা ইত্যাদি নামে পরিচিত।[1] খড়কুটো, শুকনো ঘাস পাতা দিয়ে এরা কড়িকাঠে, কার্নিশে বাসা বাঁধে। সমস্ত দিন এরা লাফিয়ে বেড়িয়ে মাটি থেকে পোকামাকড় শস্য খুঁটে খায়।
চড়ুই | |
---|---|
পাতি চড়ুই | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | প্রাণী জগৎ |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | পাখি |
বর্গ: | প্যাসারিফর্মিস |
পরিবার: | Passeridae Illiger, 1811 |
গণ | |
পাসের |
পৃথিবীতে মোট ৪৮ প্রজাতির চড়ুই দেখতে পাওয়া যায়। জীববিজ্ঞান অনুযায়ী এদের পরিবার ১১টি গণে বিভক্ত। "গৃহস্থালির চড়ুই" এদের মধ্যে সবচেয়ে সুপরিচিত। এদের আদি নিবাস ছিল মূলত ইউরেশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশ। তবে বর্তমানে ইউরোপ থেকে গিয়ে জনবসতি স্থাপনের মধ্য দিয়ে এরা উত্তর আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ডেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। চট্টগ্রামের ভাষায় এই পাখির নাম ’পিয়াইজ্জা কিংবা বাড়ই’।
বাংলাদেশ ছাড়া ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, জাপান, কোরিয়া, ইরান, ভুটান, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, চীন, ইন্দোনেশিয়া ও মিয়ানমারেও চড়ুই আছে। ঘাসের মধ্যেও পোকামাকড় খুঁজে বেড়ায় জোড়া পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে। গ্রামের মাঠের কাছে, ঝোপ-জঙ্গলে, নদীর ধারে, শহরের চালের গুদামের কাছে দল বেঁধে থাকে। ঝোপালো গাছে, পুরনো বিল্ডিংয়ের ভেন্টিলেটরে বাসা করে মার্চ থেকে আগস্ট মাসে।
এদের দেহের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫ সেন্টিমিটার, ওজন প্রায় ২০ গ্রাম। আলাদা করার সবচেয়ে সহজ উপায়টি হল এর মাথা ও মুকুটের দিকে লক্ষ্য করা। ছেলে ও মেয়ে পাখি উভয়ের রকম এবং মাথা, ঘাড় ও পুরো মুকুটের পালকের রঙ মরচে বাদামি বা চকলেট বাদামি। পুরুষ-স্ত্রী চড়ুই দেখতে আলাদা। পুরুষের মাথা ধূসর ও নীল মেশানো, ঘাড় পিঠ ও পাখনা খয়েরি লাল বা পিঙ্গল। চোখের পেছন থেকে ঘাড় অবধি মোটা গাঢ় লালচে বাদামি বর্ণের। লেজ ও লেজের গোড়া ধূসর। স্ত্রী পাখির রঙ ওপরের দিকে ধূসর বাদামি, তার ওপরে কালচে বা পিঙ্গল দাগ, পেট সাদাটে। পুরুষ পাখিটি দেখতে বেশি সুন্দর এবং সে বেশি গান গায়। মাঝে মধ্যে পুরুষ বা স্ত্রী পাতি চড়ুইদের দুঃখভরা ভাব নিয়ে নিঃসঙ্গ বসে থাকতে দেখা যায়।
এরা ৪ থেকে ৬টি ডিম পাড়ে। ছানা ফুটতে সময় লাগে প্রায় ১৩ দিন। ছানারা উড়তে শিখলে বড়দের সঙ্গে মাঠে খাবার খেতে যায়। প্রজনন মৌসুমে পাতি চড়ুই খড়কুটো, কাঠি, শুকনো ঘাস, পালক দিয়ে মানুষের ঘরে বাসা বানায়। গ্রামের ঘরের টিনের চালের কোণে বাসা বাঁধে। শহরের ভেন্টিলেটর, মিটার, সিলিং, পাইপের ফাঁকফোকরে চড়ুইদের বাসা দেখা যায়। পাতি চড়ুইদের কবুতরের খোপে, বিচি কলার কাঁদির ভেতর ও খড়ের পালায় বাসা বাঁধতে দেখা যায়। বাসা তৈরি হলে পুরুষটি সুরেলা কণ্ঠে গান গায়। স্ত্রী চড়ুই পাখি ৩ থেকে ৪টি ডিম পাড়ে। বাচ্চা ফুটলে দু’জনেই তাদের লালন-পালন করে। গ্রামে তো ঝাঁকে ঝাঁকে ধান ক্ষেতে, ধান শুকানোর উঠানে ধান খেতে নামে। শহরের ইমরাতগুলোতে ওদের সেই আরামদায়ক ফাঁকফোকর থাকছে না। বাড়িওয়ালারা নতুন নতুন নকশায় ইমারত নির্মাণ করছে। চড়ুই থাকলে ডিসটেম্পার নষ্ট হয়ে যাবে, তাই এই নতুন ব্যবস্থা। বিশ্বের কোথাও চড়ুইদের অবস্থা আশংকাজনক নয়। পরিবর্তিত পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গে তারা সহজেই মানিয়ে নিতে পারে। তারপরও প্রকৃতিতে এদের টিকিয়ে রাখতে প্রতিবছর ২০ মার্চ ২০১৪ পৃথিবীব্যাপী পালিত হয় বিশ্ব চড়ুই পাখি দিবস।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.