Loading AI tools
কম্পিউটার এবং নেটওয়ার্ক সম্পর্কিত যে কোনো অপরাধ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
সাইবার অপরাধ বা কম্পিউটার অপরাধ (Cyber Crime) এমন একটি অপরাধ যা কম্পিউটার এবং কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সাথে সম্পর্কিত।[1] কম্পিউটার একটি অপরাধ সংঘটনে ব্যবহৃত হয়ে থাকতে পারে বা এটা নিজেই লক্ষ্য হতে পারে। দেবারতি হালদার ও কে জয়শংকর সাইবার অপরাধকে সংজ্ঞায়িত করেছেন "আধুনিক টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক, যেমন ইন্টারনেট (চ্যাট রুম, ইমেল, নোটিশ বোর্ড ও গ্রুপ) এবং মোবাইল ফোন (এসএমএস / এমএমএস) ব্যবহার করে, অপরাধমূলক অভিপ্রায়ে কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে সম্মানহানি, কিংবা সরাসরি বা পরোক্ষভাবে শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি, বা ক্ষতির কারণ হওয়া"।[2] এ ধরনের অপরাধ একটি জাতির নিরাপত্তা ও আর্থিক স্বাস্থ্য হুমকি হতে পারে। আইনগত বা আইনবহির্ভূতভেবে বিশেষ তথ্যসমূহ বাধাপ্রাপ্ত বা প্রকাশিত হলে গোপনীয়তার লঙ্ঘন ঘটে। হ্যাকিং, কপিরাইট লঙ্ঘন, শিশু পর্নোগ্রাফির মতো অপরাধগুলো বর্তমানে উচ্চমাত্রা ধারণ করেছে। লিঙ্গের ভিত্তিতে দেবারতি হালদার ও কে জয়শংকর নারীর প্রতি সাইবার অপরাধকে সংজ্ঞায়িত করেছেন, "ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনের আধুনিক টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে, ইচ্ছাকৃতভাবে মানসিক এবং শারীরিক ক্ষতির উদ্দেশ্যে নারীর প্রতি অপরাধ"। আন্তর্জাতিকভাবে, রাষ্ট্রীয় বা ও-রাষ্ট্রীয় সত্তা কর্তৃক গুপ্তচরবৃত্তি, আর্থিক প্রতারণা, আন্তঃসীমান্ত অপরাধ, কিংবা অন্তত একটি রাষ্ট্রের স্বার্থ জড়িত এরূপ বিষয়ে হস্তক্ষেপজনিত সাইবার অপরাধকে সাইবার যুদ্ধ হিসেবে অভিহিত করা হয়।[2]
একটি রিপোর্ট (ম্যাকাফি কর্তৃক স্পন্সরকৃত) অনুমান করে যে, বিশ্ব অর্থনীতিতে বার্ষিক ক্ষতি ৪৪৫ বিলিয়ন ডলার।[3] তবে একটি মাইক্রোসফটের রিপোর্ট দেখায় যে জরিপ ভিত্তিক অনুমান "একেবারে ভ্রান্ত" হয় এবং সত্যিকারের লোকসানকে অতিরঞ্জিত করে। অনলাইন ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড জালিয়াতির ফলে ২০১২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় $ ১.৫ বিলিয়ন ডলার হারিয়ে গেছে।[4] ২০১৬ সালে একটি গবেষণায় অনুমান করা হয়, সাইবার অপরাধের খরচ ২০১৯ সালে ২.১ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হতে পারে।[5]
কম্পিউটার অপরাধ কার্যক্রম বিস্তৃত পরিসরে পরিব্যাপ্ত।
অনুগ্রহ করে এই নিবন্ধ বা অনুচ্ছেদটি সম্প্রসারণ করে এর উন্নতিতে সহায়তা করুন। অতিরিক্ত তথ্যের জন্য আলাপ পাতা দেখতে পারেন।
|
সাইবার অপরাধের প্রকারভেদ --- ১.জালিয়াতি এবং আর্থিক অপরাধ। ২.সাইবার সন্ত্রাস। ৩.সাইবার চাঁদাবাজি। ৪.সাইবার যুদ্ধ। ৫.মাদক পাচার। ৬.অর্থ লোপাট। ৭.হ্যাকিং। ৮.ফিশিং। ৯.ম্যালওয়্যার। ১০.সাইবার বুলিং
কম্পিউটার জালিয়াতি হলো কম্পিউটার ব্যবহার করে নির্দিষ্ট অভিপ্রায়ে কিছু করা বা করা থেকে বিরত থাকার জন্য কোন বিষয়ের মিথ্যা বর্ণন। এই প্রেক্ষাপটে, প্রতারক নিম্নলিখিত সুবিধাদি পাবেঃ
জালিয়াতির অন্যান্য ধরন হতে পারে কম্পিউটার সিস্টেম, ব্যবহার করে ব্যাংক জালিয়াতি, কার্ড জালিয়াতি, পরিচয় প্রতারণা, চাঁদাবাজি, এবং শ্রেণীবদ্ধ তথ্য চুরি ইত্যাদি।
ফিশিং ও সামাজিক প্রকৌশল প্রয়োগ করে এবং গ্রাহক ও ব্যবসার ওপর.লক্ষ্য করে নানা ধরনের ইন্টারনেট স্ক্যাম সংঘঠিত হচ্ছে।
সরকারী কর্মকর্তাগণ এবং তথ্য প্রযুক্তি নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞগণ ২০০১ সাল হতে ইন্টারনেটের সমস্যার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি নথিভুক্ত করেছেন। কিন্তু ফেডারেল কর্মকর্তাদের নিকট ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের বিষয় এইযে, এরূপ অনুপ্রবেশ সিস্টেমের মধ্যে থাকা নিরাপত্তা ত্রুটি নির্ণয়ের জন্য সাইবার সন্ত্রাসী, বিদেশী গোয়েন্দা, বা অন্যান্য দল কর্তৃক একটি সংগঠিত প্রচেষ্টার অংশ। সাইবার সন্ত্রাসী হলো সেই ব্যক্তি যে সরকার বা প্রশাসনকে একটি কম্পিউটার ভিত্তিক আক্রমণ করে তাঁদের রাজনৈতিক বা সামাজিক উদ্দেশ্য জানতে ভয় প্রদর্শন বা বাধ্য করে।
সাধারণভাবে, সাইবার সন্ত্রাসবাদকে সাইবারস্পেস বা কম্পিউটার সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা যায়। (পার্কার, ১৯৮৩)। যেমন, ইন্টারনেটের একটি সহজ অপপ্রচার, যে ছুটির সময় বোমা হামলা হবে, এটাকে সাইবার সন্ত্রাস হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। হ্যাকিংএর মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠিত দল কর্তৃক কোনো ব্যক্তি বা পরিবারকে ভীতি বা শক্তি প্রদর্শন, হুমকি প্রদান, তথ্য ছিনতাই প্রভূতিও সাইবার সন্ত্রাসবাদের অন্তর্ভুক্ত।
সাইবার চাঁদাবাজি তখনই ঘটে যখন একটি ওয়েবসাইট, ই-মেইল সার্ভার, বা কম্পিউটার সিস্টেম ক্ষতিকারক হ্যাকার দ্বারা বশীভূত হয় অথবা পুনরাবৃত্তি হামলার সম্মুখীন হয়। এই হ্যাকাররা হামলা বন্ধ করার জন্য এবং "সুরক্ষা" প্রদানের প্রস্তাব করার বিনিময়ে অর্থ দাবি করে। ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন মতে, সাইবার চাঁদাবাজরা ক্রমবর্ধমানভাবে কর্পোরেট ওয়েবসাইট এবং নেটওয়ার্ক আক্রমণ করছে, তাঁদের কাজ করার ক্ষমতা পঙ্গু করে দিচ্ছে এবং তাদের সেবা পুনরুদ্ধার করতে অর্থ দাবী করছে। এফবিআই এর কাছে প্রতি মাসে ২০ টিরও বেশি মামলা রিপোর্ট করা হয় এবং অনেক ক্ষেত্রে নিহতের নাম পাবলিক ডোমেইনের বাইরে রাখায় তা অপ্রকাশ্য থেকে য়ায়।.[6]
সাইবার চাঁদাবাজির একটি উদাহরণ হলো ২০১৪ সালে সনি পিকচার্সের উপর আক্রমণ।
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ (ডিওডি) উল্লেখ করেছে যে, বেশ কিছু সাম্প্রতিক ঘটনার কারণে ভূ-কৌশলগত গুরুত্ব বিবেচনায় সাইবারস্পেস একটি জাতীয় পর্যায়ের উদ্বেগ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। ২০০৭ সালে এস্তোনিয়ার পরিকাঠামোতে রাশিয়ান হ্যাকার দ্বারা হামলা এর অন্তর্ভুক্ত। ২০০৮ এর আগস্টে রাশিয়া আবার জর্জিয়া দেশের বিরুদ্ধে একটি সমন্বিত ও সুসংগত কথিত সাইবার আক্রমণ চালায়। ভয়ের বিষয় এইযে, এ ধরনের আক্রমণ ভবিষ্যতে জাতি-রাষ্ট্রের মধ্যে সমস্য সৃষ্টি করতে পারে, সাইবারস্পেসের ধারণা বদলে দিতে পারে এবং যুদ্ধপরিস্থিতির উদ্ভব ঘটাতে পারে।[7]
এই অপরাধ অপরাধীদের একটি নির্বাচিত দল দ্বারা সংঘটিত হয়। এই অপরাধে অপরাধীদের প্রযুক্তিগত জ্ঞান প্রয়োজন। প্রযুক্তির সাথে সাথে অপরাধের ধরনও উন্নত হয়। এই অপরাধসমূহ অপেক্ষাকৃত নতুন,যতক্ষণ কম্পিউটার আছে ততক্ষণ এর অস্তিত্ব থাকে, যা ব্যাখ্যা করে এসব অপরাধের বিরোধিতায় অপ্রস্তুত সমাজ ও জগত কতটা অপ্রস্তুত। ইন্টারনেটে এধরনের অসংখ্য অপরাধ আছে, যেমনঃ
ব্যক্তি যখন সাইবার অপরাধের প্রধান লক্ষ্য হয়, তখন কম্পিউটার লক্ষ্য হিসেবে বিবেচিত না হয়ে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই অপরাধের সাধারণত কম প্রযুক্তিগত দক্ষতার প্রয়োজন। এক্ষেত্রে মানবিক দূর্বলতাকে ব্যবহার করা হয়। ক্ষতিসমূহ মনস্তাত্ত্বিক ও অধরা নয়, তবে ধরনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এই অপরাধ অফলাইন বিশ্বে শত শত বছর ধরে হয়ে আসছে। স্ক্যাম, চুরি এবং লাইক ইত্যাদির উচ্চ প্রযুক্তির সরঞ্জাম উন্নয়নের আগেও অস্তিত্ব ছিল। একই অপরাধীকে কেবল এমন একটি হাতিয়ার দেয়া হয়েছে যা তার দক্ষতা বৃদ্ধি করে এবং তাঁর সব সন্ধান পাওয়া কষ্টকর করে তোলে।
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা ডিভাইস ব্যবহার করে অপরাধসমূহ নিম্নরূপঃ
বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে অনাহুত বাল্ক ইমেল (স্প্যাম) পাঠানো কিছু বিচারব্যবস্থায় বেআইনি বলে গণ্য হয়।
ফিশিং বেশিরভাগ ই-মেইলের মাধ্যমে প্রচারিত হয়। ফিশিং ইমেল অন্যান্য ওয়েবসাইটের ম্যালওয়ার দ্বারা আক্রান্ত লিঙ্ক সরবরাহ করতে পারে। অথবা সেগুলো ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের তথ্য চুরি করার জন্য নকল অনলাইন ব্যাংকিং বা অন্যান্য ওয়েবসাইটের লিঙ্ক সরবরাহ করতে পারে।
ওয়েবসাইট এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক যোগাযোগের বিষয়বস্তু বিভিন্ন কারণে অরূচিকর, অশ্লীল বা আক্রমণাত্মক হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এই যোগাযোগ আইনি হতে পারে।
দেশ-কাল-জাতিভেদে এই যোগাযোগ বেআইনিও হতে পারে। এটা একটি স্পর্শকাতর বিষয় যেখানে আদালত বিভিন্ন দলের মধ্যে তাঁদের শক্তিশালী বিশ্বাসের সঙ্গে মধ্যস্থতায় জড়িত হতে পারে।
বর্তমানে ইন্টারনেট পর্ণোগ্রাফির মধ্যে শিশু পর্নোগ্রাফি হ্রাসের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিষয়বস্তু আক্রমণাত্মক হলে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে তাঁর লিঙ্গ, জাতি, ধর্ম, জাতীয়তা, যৌনতা ইত্যাদি উল্লেখ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং অবমাননাকর মন্তব্যের মাধ্যমে হয়রানি সাধিত হতে পারে। এটা প্রায়ই আড্ডার আসরে নিউজগ্রুপের মাধ্যমে আগ্রহী পক্ষকে ঘৃণাযুক্ত ই-মেইল পাঠিয়ে ঘটে থাকে। প্রতিশোধমূলক যৌন হয়রানিও এর অন্তর্ভুক্ত।
এরকম উদাহরণও আছে, যেখানে একটি কম্পিউটার ব্যবহার করে সাধিত অপরাধের ফলে উচ্চ কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বনাম নেইল স্কট ক্রেমার মামলায় ক্রেমার তার সেলফোন ব্যবহার করে সংখ্যালঘুদের নিষিদ্ধ যৌনকর্মে প্ররোচিত করা, প্রভাব খাটানো, প্রলুব্ধ করা, বাধ্য করা বা সাহায্য করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দন্ডবিধি অনুযায়ী উচ্চদন্ডে দণ্ডিত হন। ক্রেমার যুক্তি দেখান যে, এই দাবি অপর্যাপ্ত ছিল কারণ তার চার্জ একটি কম্পিউটার ডিভাইসের মাধ্যমে দায়ের করা হয়েছিল এবং তার সেলুলার ফোন টেকনিক্যালি একটি কম্পিউটার নয়। এ বিষয়ে ক্রেমার যুক্তি দেখালেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দণ্ডিত নির্দেশিকা ম্যানুয়াল উল্লেখ করে যে, কম্পিউটার শব্দটি বলতে বুঝায় ইলেকট্রনিক, চৌম্বকীয়, অপটিক্যাল, তাড়িত রাসায়নিক বা অন্যান্য উচ্চ গতির ডাটা প্রসেসিং ডিভাইসকে যা লজিক্যাল, গাণিতিক, বা স্টোরেজ কার্যাবলী সম্পাদনে সক্ষম এবং তথ্য স্টোরেজ সুবিধা, যোগাযোগ সুবিধা বা এই ধরনের ডিভাইসের সাথে একত্রীকরণের সুবিধা প্রদান করে।[9]
মার্কিন রাজ্য কানেকটিকাটে সঙ্গিবিধি পাশ করা হয় যে, কম্পিউটার দ্বারা হয়রানি করা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। মিশিগান, অ্যারিজোনা, ভার্জিনিয়া এবং দক্ষিণ ক্যারোলিনায়ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমে হয়রানি নিষিদ্ধ আইন পাস করা হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কম্পিউটার হয়রানিকে সাধারণত সাইবারগুন্ডামি থেকে স্বতন্ত্র বিধি হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে যেখানে প্রাক্তন সংজ্ঞায় একজন ব্যক্তির "অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ, অপবিত্র, লুচ্চা, লম্পট, বা অশালীন ভাষা প্রয়োগ অথবা কোন পরামর্শ বা কোনো অশোভন প্রস্তাব করা,বা কোনো অবৈধ বা অনৈতিক কাজ শাসানোর জন্য যোগাযোগ করার জন্য কম্পিউটার বা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ব্যবহার বোঝালেও পরের সংজ্ঞায় যৌন প্রকৃতির কিছুর সাথে জড়িত করার দরকার হয়না।
যদিও অধিকাংশ গণতান্ত্রিক দেশে বাকস্বাধীনতা আইন দ্বারা সুরক্ষিত, সব ধরনের কথা এর অন্তর্ভুক্ত নয়। প্রকৃতপক্ষে উচ্চারিত বা লিখিত 'সত্যিকারের হুমকি ", বক্তৃতা বা টেক্সট "ক্ষতি বা ভয় দেখানোর জন্য অভিপ্রায়" এর জন্য অপরাধ বলে গণ্য হয়। মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট সত্যিকারের হুমকিকে সংজ্ঞায়িত করেছে এভাবে, "কোন বিবৃতি যেখানে বক্তা কোন ব্যক্তি বা দলের চরম ক্ষতিসাধনের অভিপ্রায় ব্যক্ত করে"।[10]
বিনোদনমূলক মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যম হিসেবে ডার্কনেট ব্যবহৃত হয়। কিছু মাদক পাচারকারী যোগাযোগের জন্য সাংকেতিক মেসেজিং সরঞ্জাম ব্যবহার করে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক বন্ধ হওয়ার পূর্বে ডার্কনেট সাইট সিল্ক রোড একটি প্রধান অনলাইন মার্কেটপ্লেস ছিল। সিল্ক রোড 2.0 বন্ধ হওয়ার পর সিল্ক রোড 3 রিলোড আবির্ভূত হয়। যাইহোক, একটি পুরোনো মার্কেট Diabolus কেবলমাত্র বাজারে ছিল, যেটি এর ব্র্যান্ড এর পূর্ববর্তী সাফল্য থেকে আরো বেশি প্রকাশিত হওয়ার জন্য নামটি ব্যবহার করে।[11]
কম্পিউটার অপরাধ সনাক্তকরণ এবং শাস্তির ব্যাপারে সাইবার অপরাধী কার্যক্রমবিরোধী কর্মসূচী একটি বড় ব্যাপার। জাঁ-লুপ রিসেটের (ইএসএসইসি আইএসআইএসে রিসার্চ ফেলো) মতে, প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং অভিগম্যতা আর সাইবার অপরাধের বাধা হিসাবে কাজ করে না। মূলত ইন্টারনেটের মাধ্যমে হ্যাকিং সম্প্রদায় ব্যাপকভাবে তাদের জ্ঞান বৃদ্ধি করায় কয়েক বছর আগের তুলনায় হ্যাকিং এখন অনেক কম জটিল। ব্লগিং সম্প্রদায় অনেক বেশি তথ্য শেয়ারিংএ অবদান রাখায় নতুনরা পুরোনো হ্যাকারদের 'জ্ঞান এবং পরামর্শ থেকে উপকৃত হতে পারছে। উপরন্তু, হ্যাকিং তুলনামূলক সস্তা হয়ে গেছে। ক্লাউড কম্পিউটিং যুগের আগে,স্প্যাম বা কেলেঙ্কারী করতে একটি ডেডিকেটেড সার্ভার, সার্ভার ব্যবস্থাপনা, নেটওয়ার্ক কনফিগারেশন এবং রক্ষণাবেক্ষণ, ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী মান জ্ঞান, ইত্যাদি দক্ষতা প্রয়োজন ছিল। সেবা হিসেবে ইমেইল সফটওয়্যারটি পরিমাপযোগ্য, সস্তা, বিশাল এবং এর দ্বারা সহজে স্প্যাম ছড়ানো যেতে পারে।[12] জাঁ-লুপ রিসেট ব্যাখ্যা করেন যে,ক্লাউড কম্পিউটিং আক্রমনের একটি উপায় হিসেবে যেমন - জোরপূর্বক পাসওয়ার্ড, বুটনেট নাগালের উন্নতি, অথবা স্প্যামিং প্রচারণা সুবিধা, একটি সাইবার অপরাধী জন্য সহায়ক হতে পারে।
কম্পিউটার প্রমাণের একটি উৎস হতে পারে। এমনকি যেখানে একটি কম্পিউটার সরাসরি অপরাধমূলক কাজের জন্য ব্যবহার করা হয় না, সেখানেও একটি লগ ফাইল আকারে অপরাধমূলক রেকর্ড থাকতে পারে। অধিকাংশ দেশে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের পূর্বা-নির্ধারিত সময় পরিমাপের জন্য তাদের লগ ফাইল রাখার প্রয়োজন হয়। উদাহরণস্বরুপঃ ইউরোপীয় ব্যাপক তথ্য ধারণ নির্দেশিকার (ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশে প্রযোজ্য) মতে, সব ই-মেইল ট্রাফিক সর্বনিম্ন ১২ মাসের জন্য রেখে দেওয়া উচিত।
নানারকম সহজ আইনের দরূন সনাক্তকরণ থেকে বাচতে সাইবার অপরাধীরা উন্নয়নশীল দেশগুলো বেছে নিচ্ছে। এসব উন্নয়নশীল দেশ, যেমন ফিলিপাইনে, সাইবার অপরাধের আইনগুলো নামমাত্র হয়ে থাকে। এই দুর্বল আইন সাইবার অপরাধীদের আন্তর্জাতিক সীমানায় অলক্ষিত থাকার অনুমতি দেয়। এমনকি যখন পরিচয় প্রকাশ পায়, এই অপরাধীরা শাস্তি বা একটি দেশের কাছে হস্তান্তর হওয়া এড়াতে পারে, যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ, যেখানে আইন বিকশিত হয়েছে ও যা প্রসিকিউশনের জন্য অনুমতি দেয়। কিছু ক্ষেত্রে এটি কঠিন প্রমাণিত হওয়ায় এফবিআইয়ের মতো এজেন্সিগুলো অপরাধী গ্রেফতার এড়িয়ে প্রবঞ্চনার আশ্রয় নেয়। উদাহরণস্বরূপ, দুই রাশিয়ান হ্যাকার কিছু সময়ের জন্য এফবিআইকে ফাঁকি দিচ্ছিল। এফবিআই একটি সিয়াটল, ওয়াশিংটন ভিত্তিক জাল কম্পিউটিং কোম্পানির ফাদ পাতে। তারা তাদের এই কোম্পানিতে কাজ প্রদানের মাধ্যমে দুই রাশিয়ান হ্যাকারকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আকৃষ্ট করাতে সমর্থ হয়। সাক্ষাৎকার সমাপ্তির পরে, সন্দেহভাজনদের ভবনের বাইরে গ্রেপ্তার করা হয়। এমন চালাক কৌশল কখনও কখনও সাইবার অপরাধীদের ধরার একটা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা হতে পারে যখন দুর্বল আইন এটা অন্যথায় অসম্ভব করে তোলে।
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সাইবার অপরাধ লড়াইয়ে ২০১৫ সালের এপ্রিলে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন। নির্বাহী আদেশটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দোষী সাব্যস্ত সাইবার অপরাধীদের সম্পদ জব্দ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তাদের অর্থনৈতিক কার্যকলাপ রোধ করতে পারবে। এই প্রথম কঠিন আইন প্রণয়ন করে সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্দেশনা ২০১৩/৪০ /ইইউ গ্রহণ করেছে। নির্দেশনার অপরাধসমূহ, এবং অন্যান্য সংজ্ঞা ও প্রক্রিয়াগত প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে ইউরোপ কাউন্সিলের সাইবার অপরাধ কনভেনশন রয়েছে।
বাংলাদেশ তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩)-এর ৫৪ ধারা অনুযায়ী, কম্পিউটার বা কম্পিউটার সিস্টেম ইত্যাদির ক্ষতি, অনিষ্ট সাধন যেমন ই-মেইল পাঠানো, ভাইরাস ছড়ানো, সিস্টেমে অনধিকার প্রবেশ বা সিস্টেমের ক্ষতি করা ইত্যাদি অপরাধ। এর শাস্তি সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং সর্বনিম্ন ৭ বছর কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রয়েছে।[13]
যাইহোক, কিছু হ্যাকারকে কম্পিউটার অপরাধের তাদের জ্ঞানের কারণে প্রাইভেট কোম্পানি দ্বারা তথ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ হিসেবে ভাড়া করা হয়, যা তাত্ত্বিকভাবে বিপথগামী ইনসেনটিভ তৈরী করতে পারে। এর একটি সম্ভাব্য পাল্টা যুক্তি হতে পারে, আদালত কর্তৃক সাব্যস্ত হ্যাকারদের ইন্টারনেট বা কম্পিউটার ব্যবহার থেকে বিরত রাখা, এমনকি তাদের কারাগার থেকে মুক্তি দেযর পরেও -যদিও কম্পিউটার ও ইন্টারনেট এবং আরো অনেক কিছু দৈনন্দিন জীবনে কেন্দ্রীয় হয়ে উঠেছে, এই ধরনের শাস্তি আরো কঠোর ও নির্মম হিসেবে দেখা যেতে পারে। যাইহোক, সূক্ষ্ম পন্থা উদ্ভাবন করা হয়েছে যা কম্পিউটার এবং / অথবা ইন্টারনেটের নিষিদ্ধ ছাড়াই সাইবার অপরাধী আচরণ পরিচালনা করতে পারে।এই পন্থা ব্যক্তির কম্পিউটার পর্যবেক্ষণ এবং / অথবা পরীক্ষাকাল এবং / অথবা প্যারোলে কর্মকর্তাদের কম্পিউটার অনুসন্ধান দ্বারা নির্দিষ্ট ডিভাইস ব্যবহারের বিষয়ে জড়িত।
প্রযুক্তির উন্নতি এবং আরও অনেক বেশি মানুষের ইন্টারনেটের উপর নির্ভরতা হিসাবে সংবেদনশীল তথ্য যেমন ব্যাঙ্কিং বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য সংরক্ষণ করায় অপরাধীরা সে তথ্য চুরি করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। সাইবার অপরাধ বিশ্ব জুড়ে মানুষের জন্য একটি হুমকি হয়ে উঠছে। কীভাবে তথ্য রক্ষা করা হচ্ছে ও অপরাধীরা তথ্য চুরি করার জন্য কী কৌশল ব্যবহার করছে সে সম্পর্কে সচেতনতা আজকের বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এফবিআই এর ইন্টারনেট ক্রাইম অভিযোগ কেন্দ্র অনুযায়ী ২০১৪ সালে ২৬৯৪২২টি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। সব দাবি মিলিয়ে সেখানে $ ৮০০.৪৯২.০৭৩ মোট ক্ষতিই ছিল। কিন্তু এখনো সাইবার অপরাধ গড় ব্যক্তির ধরাছোয়ার বাইরে হবে বলে মনে হচ্ছে না। বার্ষিক ১.৫ মিলিয়ন সাইবার আক্রমণের ঘটনা ঘটে,এর মানে হল দিনে ৪০০০ আক্রমণ, ঘণ্টায় ১৭০ বা প্রতি মিনিটে প্রায় তিন আক্রমণ হচ্ছে। গবেষণায় দেখাচ্ছে যে শিকারদের মাত্র ১৬% মানুষ হামলা থামাতে জিজ্ঞেস করেছিল। যেকেউ যেকোন কারণে ইন্টারনেট ব্যবহারের দ্বারা শিকারে পরিণত হতে পারে, এজন্য কীভাবে অনলাইনে সবাইকে রক্ষা করা হচ্ছে, সে বিষয়ে সচেতন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.