Loading AI tools
ইংরেজ ক্রিকেটার উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
উইলফ্রেড রোডস (ইংরেজি: Wilfred Rhodes; জন্ম: ২৯ অক্টোবর, ১৮৭৭ - মৃত্যু: ৮ জুলাই, ১৯৭৩) ইয়র্কশায়ারের কির্কহিটনে জন্মগ্রহণকারী ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ও পেশাদার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ১৮৯৯ থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার ছিলেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | উইলফ্রেড রোডস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | কির্কহিটন, ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড | ২৯ অক্টোবর ১৮৭৭|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ৮ জুলাই ১৯৭৩ ৯৫) পুল, ডরসেট, ইংল্যান্ড | (বয়স|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | অল-রাউন্ডার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১২১) | ১ জুন ১৮৯৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ৩ এপ্রিল ১৯৩০ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৮৯৮ - ১৯৩০ | ইয়র্কশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৯ আগস্ট ২০১৫ |
প্রথম ইংরেজ ক্রিকেটার হিসেবে ১,০০০ রান ও ১০০ উইকেট নিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে ডাবল লাভ করেন।[1] কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।
হাডার্সফিল্ডের অদূরে কির্কহিটন গ্রামে রোডস জন্মগ্রহণ করেন তিনি। খুব ছোটবেলায় তার পরিবার দুই মাইল দূরে স্থানান্তরিত হন।[2] হপটনের কাছাকাছি একটি বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। পরবর্তীকালে হাডার্সফিল্ডের স্প্রিং গ্রোভ স্কুলে চলে যান। তার বাবা আলফ্রেড রোডস কির্কহিটন ক্রিকেট দলের দ্বিতীয় একাদশের অধিনায়ক ছিলেন। তিনি তাকে ক্রিকেট খেলায় উদ্বুদ্ধ করতে প্রয়াস চালান ও সফলকাম হন। আনুসাঙ্গিক ক্রীড়া সরঞ্জামাদি ক্রয় করে বাড়ীর কাছাকাছি থাকা পিচে উইলফ্রেডকে অনুশীলনে সহায়তা করেন।[2][3]
১৮৯৬ ও ১৮৯৭ সালে গালা ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতে থাকেন। ব্যাটিং উদ্বোধনসহ মিডিয়াম পেস সিম বোলিং করতেন তিনি।[4] প্রথম মৌসুমেই ৯২ উইকেট পান। ১৮৯৭ মৌসুমের শেষদিকে এমসিসি’র জনৈক স্কটিশ সদস্যের অনুপ্রেরণায় গালা দল ত্যাগ করে ইংল্যান্ডে কাজের সন্ধানে বেড়িয়ে পড়েন।[5]
প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের প্রেক্ষিতে ওয়ারউইকশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের মাঠকর্মী হিসেবে রোডস আবেদন করেন। কিন্তু আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে ক্লাব কর্তৃপক্ষ তাকে নিয়োগ দেয়নি।[6] আগস্ট, ১৮৯৭ সালে দলীয় অধিনায়ক লর্ড হকের সাথে মাঠে শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে স্পিনার ববি পিলকে বিতাড়িত করা হয়। ফলে তার স্থলে রোডসের আবেদনক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[7]
১৮৯৮ সালে ধীরগতির বামহাতি বোলার হিসেবে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে খেলা শুরু করেন। কাউন্টি একাদশের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত প্রথম খেলায় তার অংশগ্রহণ বেশ হতাশাব্যঞ্জক ছিল। পিলের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী আলবার্ট কর্ডিংলি পান নয় উইকেট।[8] পাশাপাশি কার্যকরী ব্যাটসম্যান হিসেবেও দলে অবদান রাখেন। তিনি খুব দ্রুত বিশ্বের অন্যতম সেরা স্লো বোলার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে তার ব্যাটিংয়ে দক্ষতা বেশ বাড়তে থাকে ও জ্যাক হবসের সাথে ইংল্যান্ড দলের ব্যাটিং উদ্বোধনে মাঠে নামতেন।[9] এসময় তার বোলিংও ছিল ঈর্ষনীয়।[10] কিন্তু বিশ্বযুদ্ধের পর ইয়র্কশায়ারের প্রথমসারির বোলারের মর্যাদা হারাতে থাকেন।[11] ১৯২০-এর দশকে অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতে থাকেন ও ১৯৩০ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। দলে তার স্থলাভিষিক্ত হন হেডলি ভেরিটি।
১৯২৩ মৌসুমে ছয়জন ব্যাটসম্যানের একজন হিসেবে দলের পক্ষে সহস্রাধিক প্রথম-শ্রেণীর রান সংগ্রহ করেছিলেন। অন্যরা হচ্ছেন - মরিস লেল্যান্ড, পার্সি হোমস, হার্বার্ট সাটক্লিফ, রয় কিলনার ও এডগার ওল্ডরড।[12] ১৯২২ থেকে ১৯২৫ সময়কালে ইয়র্কশায়ার দল উপর্যুপরী চার মৌসুমে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয়ে সক্ষমতা দেখিয়েছিল। তন্মধ্যে, ইয়র্কশায়ারকে ধারাবাহিকভাবে চারটি কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা বিজয়ের প্রথমটিতে ভীষণ অবদান রাখেন।[13] এ মৌসুমে বোলিং গড়ে উইলফ্রেড রোডস দলের শীর্ষস্থানীয় বোলারে পরিণত হন।[14]
১৯২৬ সালে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের মুকুট লাভের আশা ত্যাগ করতে হয় ইয়র্কশায়ার দলকে। ১৯২১ সালে শিরোপাবিহীন অবস্থায় থাকার পর এবারই প্রথম এ ঘটনা ঘটে।[13] উইজডেন লক্ষ্য করে যে, উইলফ্রেড রোডস পূর্বের সাথে তুলনান্তে কম কার্যকরী বোলিং করলেও ইয়র্কশায়ারের বোলিং আক্রমণে তিনিই ব্যতিক্রম ছিলেন। [15]
১৮৯৯ সালে ইংল্যান্ড দলে প্রথমবারের মতো টেস্টে অংশ নেন যা ১৯২১ সাল পর্যন্ত চলমান ছিল। পাঁচ টেস্টের সিরিজে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের বিপক্ষে তার অভিষেক ঘটে।[16] ১ থেকে ৩ জুন, ১৮৯৯ তারিখে নটিংহামের ট্রেন্টব্রিজে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে অ্যাশেজ সিরিজের ঐ টেস্টটি ট্রেন্ট ব্রিজে প্রথম টেস্ট খেলা ছিল ও খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়। জয়ের জন্যে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ১৩৫ রান ও অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩ উইকেট। ঐ খেলায় ডব্লিউ জি গ্রেস তার সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণ করেন এবং ভিক্টর ট্রাম্পার ও অস্ট্রেলিয়ার ফ্রাঙ্ক লেভারের সাথে তারও একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়েছিল।
এরপর ৪৯ বছর বয়সে ১৯২৬ সালে পুনরায় দলে ফিরে আসেন[17] ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাশেজের চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ঐ খেলায় ইংল্যান্ডের জয়লাভে তিনি প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন ও ১৯১২ সালের পর প্রথমবারের মতো অ্যাশেজ পুণরুদ্ধারে সক্ষম হয় তার দল। এপ্রিল, ১৯৩০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণ করেন। ১৯০২ সালের ওভাল টেস্টে তিনি ও তার ইয়র্কশায়ারের বোলিং সঙ্গী জর্জ হার্স্ট শেষ উইকেটে ১৫ রান তুলে নিয়ে দলকে জয় এনে দেন।[18]
রোডস তার সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ১২৭টি টেস্ট উইকেটের পাশাপাশি ২,৩২৫ রান তোলেন। ১৯৩০ সালে ৫২ বছর ১৬৫ দিন বয়সে তিনি সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন।[19] এরফলে তিনি সর্বাপেক্ষা বয়োজ্যেষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে অংশগ্রহণের রেকর্ড সৃষ্টি করেন।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সর্বাধিক ১,১১০ খেলায় অংশগ্রহণসহ ৪,২০৪টি উইকেট লাভ করে বিশ্বরেকর্ডের অধিকারী তিনি। এছাড়াও ইংরেজ ক্রিকেট মৌসুমে ১৬বার ১,০০০ রান ও ১০০ উইকেট নিয়েছেন তিনি। পঞ্চাশ বছর বয়সেও ইয়র্কশায়ার ও ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলে খেলেছেন। তিনি ও হার্স্ট ইয়র্কশায়ারকে ধারাবাহিকভাবে তিনবার চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা এনে দেন।
সর্বাধিক ২৩ মৌসুম শতাধিক উইকেট লাভের দৃষ্টান্ত গড়েন; তবে তা ধারাবাহিকভাবে ছিল না। তারপরই ২০ মৌসুমে ধারাবাহিকভাবে শতাধিক উইকেট পেয়েছেন ডেরেক শ্যাকলটন। ১৮৯৯ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটারের মর্যাদা পান তিনি। উইলফ্রেড রোডস এক মৌসুমে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় এক হাজার বা ততোধিক রান এবং একশত বা ততোধিক উইকেট লাভের ন্যায় অনন্য সাধারণ কৃতিত্ব সর্বাধিক ১৬বার ডাবল লাভ করেছেন। তার পরবর্তী স্থানে রয়েছে জর্জ হার্স্টের ১৪বার ডাবল লাভের কৃতিত্ব।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে এক ইনিংসে দশ উইকেট লাভকারী বোলারদের অন্যতম তিনি। এ তালিকায় তার পরই টিচ ফ্রিম্যান, চার্লি পার্কার, জে. টি. হার্ন, টম গডার্ড, ডব্লিউ. জি. গ্রেস ও অ্যালেক কেনেডি অবস্থান করছেন। ২০১৩ সাল পর্যন্ত ইয়র্কশায়ারের পক্ষে এক মৌসুমে জর্জ ম্যাকাউলি, উইলফ্রেড রোডস, জর্জ হার্স্ট ও বব এপলইয়ার্ড ২০০ উইকেট লাভের মাইলফলক স্পর্শ করতে পেরেছিলেন।[20]
খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর নেয়ার পর তিনি হ্যারো স্কুলে প্রশিক্ষণের কাজে অংশ নেন।[21] কিন্তু ১৯৩৯ সালের দিকে তার দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পেতে থাকে। এরপর ১৯৫২ সালের দিকে তিনি পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যান। ১৯৪৯ সালে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি) কর্তৃপক্ষ তাকে সম্মানসূচক সদস্যপদে মনোনীত করে।[22] ৮ জুলাই, ১৯৭৩ তারিখে ৯৫ বছর বয়সে দেহাবসানের পূর্ব-পর্যন্ত ক্রিকেটের পূজনীয় ব্যক্তি হিসেবে মর্যাদা লাভ করেছিলেন।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.