শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
চন্দ্র রাজবংশ
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
চন্দ্র রাজবংশ নবম ও দশম শতাব্দীতে ভারতবর্ষে শাসন করা একটি বৌদ্ধ ধর্মালম্বী রাজবংশ ছিল। ভারতীয় উপমহাদেশের এই রাজবংশ মূলত বাংলার সমতট অঞ্চল ও উত্তর আরাকান শাসন করত। চন্দ্র রাজবংশের শাসনকাল দশম ও একাদশ শতাব্দীর মধ্যে ছিল। চন্দ্র রাজ্যকালে বাংলার উত্তরে আরও একটি শক্তিশালী পাল রাজবংশ ছিল।

ইতিহাস
চন্দ্র রাজ্যটি ভারতীয় উপমহাদেশের বৌদ্ধদের শেষ কয়েকটি দুর্গের মধ্যে একটি ছিল। রাজ্যটি বৌদ্ধ ধর্মের তান্ত্রিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্র হিসাবে প্রচার ও প্রসার লাভ করেছিল। এটি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় মহাযান ও বৌদ্ধধর্মের আদর্শের বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।[১]
চন্দ্র রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন পূর্ণ চন্দ্র। ত্রিলোকচন্দ্র কুমিল্লা ও ত্রিপুরার মধ্যবর্তী লালমাই অঞ্চলে জমিদারদের বংশধর ছিলেন। চন্দ্র শাসনের দ্বিতীয় শাসক শ্রীচন্দ্র কামরূপ রাজ্য আক্রমণ করেছিলেন ও রাজ্যের বিস্তার ঘটিয়েছিলেন। চন্দ্ররা পূর্ববাংলার আঞ্চলিক রাজনীতি এবং সামরিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। উত্তর ভারতীয় ও দক্ষিণ ভারতীয় আক্রমণগুলির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে চন্দ্ররা পশ্চিম ভারতে পাল সাম্রাজ্যকে সমর্থন করেছিল।[২]
দক্ষিণ ভারতীয় চোল রাজবংশের আক্রমণে পরাস্ত হয়ে চন্দ্ররা শেষ পর্যন্ত বাংলা থেকে উচ্ছেদ হয়েছিল।[২]
Remove ads
বাণিজ্যিক সম্পর্ক
উপকূলীয় রাজ্য যেমন: মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া এবং ভিয়েতনামের সাথে চন্দ্র বংশের বাণিজ্য সম্পর্ক ছিল। দশম শতাব্দীতে জাভা দ্বীপপুঞ্জের বণিকেরা দক্ষিণ-পূর্ব বাংলা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সমুদ্র সংযোগ ও বাণিজ্য করার পথ সুগম করে। ব্রোঞ্জের ভাস্কর্যগুলি জাভা দ্বীপের ব্যবসায়ীরা দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার চন্দ্র রাজ্য থেকে আমদানি করেছিলেন। আরব বণিকরাও এই রাজ্যের সাথে ব্যবসা করতে পছন্দ করত।[১]
Remove ads
পুরাতত্ত্ব
চন্দ্রবংশের সময়কালের প্রচুর শিলালিপি পাওয়া গেছে। চন্দ্র রাজবংশ সম্পর্কিত তিনটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থল বিদ্যমান। এগুলো হল-
- বিক্রমপুর
- কুমিল্লার ময়নামতি এবং
- মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ওয়াইথালি।
রাজাদের তালিকা
শ্রীচন্দ্র ছিলেন চন্দ্র রাজবংশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজা। তিনি দীর্ঘ ৪৫ বছর শৌর্য-বীর্য ও সাফল্যের সঙ্গে রাজত্ব করেন। সমগ্র বঙ্গ এবং উত্তর-পূর্বে কামরূপ পর্যন্ত চন্দ্রদের ক্ষমতা সম্প্রসারণের কৃতিত্ব শুধুই শ্রীচন্দ্রের। মৌলভীবাজার জেলার পশ্চিমভাগে প্রাপ্ত একটি তাম্রশাসনে কামরূপ অভিযান সম্পর্কে তথ্য রয়েছে। একই তাম্রশাসনে তাঁর উদ্যোগে সিলেট এলাকায় বিপুলসংখ্যক ব্রাহ্মণের বসতি স্থাপনের কথা জানা যায়। তিনি গৌড়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। দ্বিতীয় গোপাল এর শাসনকালে পালদের ক্ষমতা রক্ষাকল্পে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ভূমিদান সম্পর্কিত তাঁর ৬টি তাম্রশাসন এবং তাঁর উত্তরাধিকারীদের তাম্রশাসনে শ্রীচন্দ্র সম্পর্কে যে তথ্য পাওয়া যায় তা থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে বঙ্গ ও সমতটের বিস্তীর্ণ এলাকায় তাঁর শাসন প্রতিষ্ঠিত ছিল। চন্দ্র রাজবংশের পাঁচজন উল্লেখযোগ্য রাজার নাম নিম্নরূপ-
- ত্রিলোকচন্দ্র (৯০০-৯৩০ খ্রিস্টাব্দ)
- শ্রীচন্দ্র (৯৩০-৯৭৫ খ্রিস্টাব্দ)
- কল্যাণচন্দ্র (৯৭৫-১০০০ খ্রিস্টাব্দ)
- লড়হচন্দ্র (১০০০-১০২০ খ্রিস্টাব্দ)
- গোবিন্দচন্দ্র (১০২০-১০৫০ খ্রিস্টাব্দ)
Remove ads
সংস্কৃতি
চন্দ্র রাজাগণ ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। তাঁদের হাতেই ময়নামতি এবং লালমাই এলাকায় বৌদ্ধদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড নতুন শক্তি লাভ করে। কিন্তু চন্দ্রগণ উদার ধর্মীয় নীতি অনুসরণ করেছিলেন বলেই ঐতিহাসিকদের ধারণা সিলেট অঞ্চলে শ্রীচন্দ্র ব্রাহ্মণ্য ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা করেন। শেষ দুজন চন্দ্ররাজার অবশ্য বৈষ্ণব ধর্মের প্রতি প্রবল ঝোঁক ছিল।
তথ্যসূত্র
গ্রন্থপঞ্জি
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads