শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
তারেক রহমান
বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
তারেক রহমান (জন্ম: ২০ নভেম্বর ১৯৬৫)[১][৫] হলেন একজন বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।[৬] এছাড়াও তিনি দৈনিক দিনকাল সংবাদপত্রের সম্পাদক ও প্রকাশক (ভারপ্রাপ্ত)।[৭] তিনি সাধারণত তারেক জিয়া নামে পরিচিত; যার শেষাংশটি এসেছে তার পিতা বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম থেকে।[৮][৯]
তারেকের অল্প বয়স থেকেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়[১০] এবং ২০০০ সালের শুরুর দিকে তার মা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বিএনপিতে তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।[১১] ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর, তার নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি লন্ডনে স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান, এবং দাবি করেন যে গ্রপ্তারকালীন সময়ে কর্তৃপক্ষ তাকে জেলহাজতে নির্যাতন করছে।[১২][১৩][১৪][১৫][১৬]
দুর্নীতি, ঘুষগ্রহণ, মানি লন্ডারিং, অবৈধ সম্পদ অর্জন, গ্রেনেড হামলাসহ একাধিক অভিযোগে তিনি শেখ হাসিনা সরকারের আমলে আদালক কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত হন। ২০০৭ সালের পর তার বিরুদ্ধে মোট ৮৪টি মামলা হয়।[১৭] তার দল বিএনপি দাবি করে যে এগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা অভিযোগ।[১৮][১৯][২০] পরবর্তীকালে ২০২৪ সালে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, আদালত তাকে দণ্ডপ্রাপ্ত সকল অভিযোগ থেকে খালাস দেয় এবং তার সাজা বাতিল করা হয়।[২১][২২][২৩] বর্তমানে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বিচারাধীন নেই।[১৭][২৪][২৫]
২০০৮ সালের পর থেকে বর্তমানে তিনি যুক্তরাজ্যে স্বেচ্ছা নির্বাসনে রয়েছেন।[২৬]
Remove ads
প্রাথমিক জীবন
তারেক রহমানের জন্ম ১৯৬৫ সালের ২০ নভেম্বর।[৫][২৭] তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দম্পতির প্রথম সন্তান।[৫] তারেক শিক্ষা জীবনের শুরুতে বিএএফ শাহীন কলেজ ঢাকাতে পড়াশোনা শুরু করেন এরপর সেন্ট যোসেফ কলেজ এবং ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে পড়াশোনা করেন।[২৮] তিনি ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ হতে মাধ্যমিক ও আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ হতে উচ্চ মাধ্যমিক[২৯] শেষ করে ১৯৮৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। দ্বিতীয় বর্ষে পড়াকালীন তিনি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ইতি ঘটিয়ে বস্ত্রশিল্প ও নৌ-যোগাযোগ খাতে ব্যবসা শুরু করেন।[৩০]
Remove ads
ব্যক্তিগত জীবন
১৯৯৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তারেক রহমানের সাথে জোবাইদা রহমানের বিয়ে হয়।[২৯] জোবাইদা সাবেক নৌ বাহিনী প্রধান রিয়ার এডমিরাল মাহবুব আলী খান এর মেয়ে। তারেক ও জোবাইদা দম্পতির জাইমা রহমান নামে এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
রাজনীতি
সারাংশ
প্রসঙ্গ

পিতা জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বগুড়া কমিটির সদস্য হিসেবে যোগদান করে তারেক রহমানের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে সংগঠনে যোগ দেয়ার পূর্বেই তারেক রাজনীতিতে অত্যন্ত সক্রিয় ছিলেন।[৩১] ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তারেক তার মা খালেদা জিয়ার সহচর হিসেবে সারা দেশের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। ২০০১ সালের নির্বাচনেও তারেক রহমান বেগম জিয়ার প্রচারণা কার্যক্রমের পাশাপাশি পৃথক পরিকল্পনায় দেশব্যাপী নির্বাচনী প্রচারণা চালান। মূলত ২০০১ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় তার অংশগ্রহণের মাধ্যমে রাজনীতিতে তারেক রহমানের সক্রিয় আগমন ঘটে।[৩১]
২০০২ সালের পর গণ-সংযোগ
২০০২ সালে তারেক রহমান দলের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্মপ্রাপ্ত হন। দলের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে নিয়োগ লাভের পরপরই তারেক রহমান দেশব্যাপী দলের মাঠপর্যায়ের নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের সাথে ব্যাপক গণসংযোগ শুরু করেন।[৩২] মূল সংগঠন সহ সহযোগী সংগঠন যেমন জাতীয়তাবাদী যুব দল, জাতীয়তাবাদী ছাত্র দল, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ইত্যাদি আয়োজিত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে তারেক রহমান কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন ও মাঠপর্যায়ের নেতৃবৃন্দের বক্তব্য ও মতামত গ্রহণ করেন। মূলত এই জনসংযোগ কার্যক্রমের ফলে দলের নেতাকর্মীদের তরুণ অংশটির মাঝে তারেক রহমান শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধানমন্ত্রীর সন্তানের পরিচিত থেকে বেরিয়ে এসে দলের একজন দক্ষ সংগঠক ও সক্রিয় নেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।[৩৩]
বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিল
৮ই ডিসেম্বর, ২০০৯ তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে তারেক রহমান সংগঠনের জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।[৩৪] উক্ত কাউন্সিলে তারেক রহমানের একটি ধারণকৃত বক্তব্য উপস্থিত জনসমাবেশের উদ্দেশ্যে প্রচার করা হয়। বক্তব্যটিতে তারেক রহমান জানুয়ারি ২০০৭-এ ক্ষমতায় আসা অগণতান্ত্রিক সরকারের হাতে তার অন্যায় গ্রেপ্তার ও বন্দি অবস্থায় নির্যাতনের বর্ণনা দেন। তিনি নিশ্চিত করেন যে আপাতদৃষ্টিতে মনে হওয়া বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থার আড়ালে তাকে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। তারেক রহমান তার শারীরিক অবস্থার বর্ণনা দেন ও জানান তার চিকিৎসা সম্পন্ন হতে আরও সময় প্রয়োজন।[৩৫]
উক্ত কাউন্সিলে আরও বক্তব্য রেখেছেন ব্রিটিশ সংসদ সদস্য জর্জ গ্যালোওয়ে, আওয়ামী লীগের প্রচারমাধ্যম বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল প্রমুখ।[৩৬]
তত্ত্বাবধায়ক সরকার কর্তৃক গ্রেপ্তার
রাজনৈতিক দলগুলোর ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের কারণে দেশে বিশৃঙ্খল অবস্থা সৃষ্টি হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ১১ই জানুয়ারি, ২০০৭ তারিখে নিয়মতান্ত্রিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অপসারণ করে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয় যার প্রধান ছিলেন ফখরুদ্দীন আহমদ এবং সেনাপ্রধান ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল মঈন উদ্দিন আহমেদ। ১২ জানুয়ারি উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হওয়ার পর সরকারের পক্ষ থেকে দেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ মামলা দায়ের করা হয়।[৩৭] ৭ মার্চ, ২০০৭ তারিখে একটি দুর্নীতি মামলার আসামি হিসেবে তারেক রহমানকে তার ঢাকা ক্যান্টনমেন্টস্থ মইনুল রোডের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে আরও ১৩টি দুর্নীতির মামলা দায়ের করা হয় ও তাকে বিচারের সম্মুখীন করা হয়।[৩৮]
আটকাবস্থায় শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ
গ্রেপ্তারের কিছুদিন পর তারেককে আদালতে হাজির করা হলে তার শারীরিক অবস্থার অবনতির জন্য তার আইনজীবীরা আদালতে অভিযোগ করেন যে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে তারেক রহমানের উপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে।[৩৯] আদালতের নির্দেশে চিকিৎসকদের একটি দল পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আদালতকে জানায় যে তারেক রহমানের উপর শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ যুক্তিযুক্ত। এই পর্যায়ে আদালত রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ শিথিল করে তা কমিয়ে ১ দিন ধার্য করেন ও জিজ্ঞাসাবাদকারীদের সাবধানতা অবলম্বনের আদেশ দেন। এরপর তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পরিবর্তে ঢাকার শাহবাগস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।[৪০] ২৫ আগস্ট, ২০০৭ তারিখে খবর ছড়িয়ে পড়ে যে তারেক রহমান তার হাসপাতাল কক্ষে পা পিছলে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন। এতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ দেখা দেয়, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।[৪১]
মুক্তিলাভ
২০০৮ এর আগস্টে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলাগুলো আদালতে গতি লাভ করে। প্রায় আঠারো মাস কারান্তরীণ থাকার পর ৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৮ তারিখে সবগুলো মামলায় তারেক রহমান জামিন লাভ করেন ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুক্তি লাভ করেন।[৪২]
চিকিৎসা ও বিদেশে অবস্থান
১১ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ তারিখে বিশেষ কারাগার থেকে বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাওয়ার পর তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পুত্র তারেক রহমানকে দেখতে যান। সেদিন রাতেই তারেক রহমান উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্যে রওনা হন।[৪৩] বর্তমানে লন্ডনের সাউথ ওয়েলিংটন হসপিটাল ও লন্ডন হসপিটালে তার চিকিৎসা চলছে এবং চিকিৎসার সুবিধার্থে তিনি সেন্ট্রাল লন্ডনের এডমন্টনে সপরিবারে বসবাস করছেন।
তারেক বিদেশে অবস্থান করায় তার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো বর্তমানে অমীমাংসিত অবস্থায় রয়েছে। সিঙ্গাপুরে অর্থপাচার মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন কর্মকর্তার করা আবেদনের প্রেক্ষিতে, ২০১৩ সালের মে মাসে ঢাকার একটি আদালত তারেক রহমানকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারের পরোয়ানা জারি করে। এর প্রতিবাদে বিএনপি দেশের বিভিন্ন এলাকায় হরতালসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।[৪৪][৪৫]
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে বৈঠক
১৩ই জুন ২০২৫, যুক্তরাজ্য সফররত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।[৪৬][৪৭] বৈঠক শেষে উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা যৌথ বিবৃতি দেন।[৪৮][৪৯] বিএনপির পক্ষ থেকে এ বৈঠককে টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে উল্ল্যেখ করা হয়।[৫০]

Remove ads
অভিযোগ ও বিতর্ক
সারাংশ
প্রসঙ্গ
রাজনৈতিক দলের উত্থাপিত অভিযোগ
২০০২ সালে ৩৫ বছর বয়সি তারেক রহমানকে দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের একজন নেতা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার ফলে কোনো কোনো রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং সংসদের তৎকালীন বিরোধী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এই সিদ্ধান্তকে স্বজনপ্রীতি বলে চিহ্নিত করে এই সিদ্ধান্তের নিন্দা করেন।[৫১] আওয়ামী লীগ বিভিন্ন সময় তারেকের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ দূর্নীতির অভিযোগ আনে।[৫২] বিশেষ করে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম জিয়া সহ তারেক রহমানের কার্যালয় ঢাকার বনানীস্থ হাওয়া ভবনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অভিযোগ প্রচারিত হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অভিযোগ ছিল যে, তারেক রহমানের তত্ত্বাবধানে হাওয়া ভবন সরকারের অদৃশ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করছে এবং তার বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতিসহ আরো অনেক অভিযোগ আনা হয়।[৫৩][৫৪] তৎকালীন বিরোধীদল আওয়ামীলীগের সমাবেশে ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ছিল।[২৩][৫৫] এছাড়া তার বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগও রয়েছে এবং এই মামলায় এফবিআই কর্মকর্তা ডেবরা লাপ্রেভেটি বাংলাদেশে এসে সাক্ষ্য দেন।[৫৬]
২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তিনি ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ বেশকিছু মামলা থেকে খালাস পান।[৫৭][৫৮][৫৯][৬০][৬১]
উইকিলিক্সের তথ্য
২০০৮ সালের ৩ নভেম্বর সাড়া জাগানো ওয়েবসাইট উইকিলিক্স বাংলাদেশে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের গোপন তারবার্তা ফাঁস করে। বার্তায় বলা হয় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বিশ্বাস করে, “গুরুতর রাজনৈতিক দুর্নীতির জন্য দোষী, মার্কিন জাতীয় স্বার্থের উপর একটি বিরূপ প্রভাব ফেলছে।”[৬২][৬৩]
Remove ads
দুর্নীতির অভিযোগ
সারাংশ
প্রসঙ্গ
হাওয়া ভবনের মাধ্যমে ঘুষ গ্রহণ
হাওয়া ভবনের মাধ্যমে ঘুষ গ্রহণ ও মানি লন্ডারিং বিষয়টি বাংলাদেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং বিতর্কিত কেলেঙ্কারি হিসেবে পরিচিত।[৬৪][৬৫][৬৬][৬৭][৬৮] তারেক রহমান এবং বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতা এই অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন।[৬৯][৭০][৭১][৭২]
হাওয়া ভবন বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরে একটি প্রচলিত নাম, যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক দুর্নীতির সাথে গভীরভাবে জড়িত বলে অভিযোগ করা হয়।[৭৩][৭৪][৭৫][৭৬] অভিযোগ রয়েছে যে, তারেক রহমান ও তার সহযোগীরা হাওয়া ভবনের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করেছেন এবং সেই অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন।[৭৭][৭৮][৭৯][৮০] ২০০৭ সালে এই অভিযোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত শুরু করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই ও সিঙ্গাপুরের আদালতেও তার বিরুদ্ধে তদন্ত করা হয়।[৮১][৮২]
২০০৭ সালে, বাংলাদেশের সরকার ঘুষ গ্রহণ ও অর্থ পাচারের অভিযোগে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। এতে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবসায়িক লেনদেন এবং আন্তর্জাতিক মানি লন্ডারিং এর প্রমাণ উঠে আসে।[৬৯][৮২][৮৩][৮৪][৮৫]
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) ও সিঙ্গাপুরের আদালতেও তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়। তদন্তে তার বিরুদ্ধে প্রায় ২০ মিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচারের অভিযোগ ওঠে।[৮১][৮৬]
২০১০ সালে বাংলাদেশে অর্থপাচার ও ঘুষের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়।[৬৪] অভিযোগের মধ্যে রয়েছে হাওয়া ভবনের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ,[৮১] এবং সেই অর্থ বিদেশে পাচার করা।[৬৪][৮২]
বর্তমানে তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত আছেন, এর মধ্যে তারেক রহমানকে আন্তর্জাতিকভাবে অর্থপাচার ও দুর্নীতির জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলোর বিচারিক প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিকভাবে নজরদারিতে রয়েছে।[৬৯][৮৭]
এ মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করা হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে, যেখানে তারা অভিযোগ করেছে যে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ হিসেবে। অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন দল এই মামলাকে দুর্নীতি বিরোধী পদক্ষেপ হিসেবে তুলে ধরেছে।[৭১][৮৭]
২০শে মার্চ ২০২৫, এ মামলায় আদালত তাকে অব্যাহতি প্রদান করে।[৮৮]
মানি লন্ডারিং
মার্কিন ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-এফবিআই তারেক রহমান এবং তার ঘনিষ্ট বন্ধু ও ব্যবসায়িক সঙ্গী গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে ঘুষ ও মানি লন্ডারিং নিয়ে তদন্ত করে এবং এফবিআইয়ের সাবেক বিশেষ প্রতিনিধি বাংলাদেশের আদালতে এসে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রদান করেন। [৮৭] এফবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে যে, তারেক ও মামুন তাদের সিঙ্গাপুরের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নির্মান কনস্ট্রাকশন লিমিটেড এর পরিচালক এবং চীনের হারবিন ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন এর এদেশীয় এজেন্ট খাদিজা ইসলামের কাছ থেকে সাড়ে ৭ লাখ মার্কিন ডলার ঘুষ নিয়েছিলেন।[৮৯]
হারবিন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির লোকাল এজেন্ট হিসেবে টঙ্গীতে ৮০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মানের কাজ পাওয়ার জন্য তারেক ও মামুনকে ওই টাকা দিয়েছিল ঘুষ হিসেবে। এফবিআইয়ের এজেন্ট ডেব্রা লাপ্রিভেট গ্রিফিথ এই বিষয়ে তারেক ও মামুনের দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করেছিলেন।
তিনি বাংলাদেশের আদালতের সামনে সাক্ষ্য দেন যে, ব্যবসায়ী খাদিজা ইসলাম সিঙ্গাপুরে মামুনের সিটি ব্যাংকে ঘুষের টাকা জমা দিয়েছিলেন।[৮৭] একই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে তারেক রহমানের নামে সাপ্লিমেন্টারি গোল্ড ভিসা কার্ড ইস্যু করা হয়।[৯০] তারেক রহমান এই কার্ড বিভিন্ন দেশে যেমন; গ্রিস, জার্মানী, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রমোদ ভ্রমণের জন্য ব্যবহার করেছিল এমন তথ্যই উঠে এসেছে এফবিআইয়ের তদন্তে। [৯১]
২১ জুলাই ২০১৬ সালে বাংলাদেশের উচ্চ আদালত মানি লন্ডারিং এর জন্য অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ২০ কোটি টাকা জরিমানা করে।[৮৫][৯২] রায়ের পর্যবেক্ষণে উচ্চ আদালত মন্তব্য করেন:
"দুর্নীতি চর্চা ও রাজনৈতিক প্রভাব ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে মানি লন্ডারিংয়ের মতো আর্থিক অপরাধ করার সুযোগ করে দিচ্ছে। দেশের কল্যাণ ও উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় এই ধরনের অপরাধ বন্ধ করার এখন সময় এসেছে।"[৯২][৯৩]
১০ই ডিসেম্বর ২০২৪ তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।[৯৪][৯৫][৯৬][৯৭][৯৮]
২০২৫ সালের ৬ মার্চ, এই মামলায় সাত বছরের সাজা থেকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক খালাস পান তিনি।[৯৯][১০০]
অবৈধ সম্পদ অর্জন
তারেক রহমান ও তার স্ত্রীর ঘোষিত আয়ের বাইরেও ৪ কোটি ৮০ লাখ টাকারও বেশি পরিমাণ অর্থের অবৈধ সম্পদ রয়েছে এমন অভিযোগে ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তারেক, তার স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও জোবাইদা রহমানের মা সৈয়দা ইকবাল বানুর বিরুদ্ধে মামলাটি করেছিল দুদক।[১০১][১০২][১০৩][১০৪][১০৫]
২০০৯ সালের ৩১ মার্চ তদন্ত কর্মকর্তা তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দায়ের করেন।[১০৪] তবে পরে জোবাইদার মা সৈয়দা ইকবাল বানুর বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম বাতিল করা হয়।[১০৩] আদালত মামলার অভিযোগকারীসহ বাদীপক্ষের ৪২ জন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন।[১০১][১০২][১০৪]
মামলায় তারেক রহমানের নয় বছর কারাদণ্ড এবং তিন কোটি টাকা জরিমানা এবং তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানের তিন বছরের কারাদণ্ড ও ৩৫ লাখ টাকা জরিমানার রায় দেয় ঢাকার একটি আদালত।[১০১][১০৩][১০৬] একই সঙ্গে তারেকের প্রায় পৌনে তিন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।[১০২][১০৪]
২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলায় তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমানের সাজা আত্মসমর্পণ ও আপিলের শর্তে[১০৭] এক বছরের জন্য স্থগিত করে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।[১০৮][১০৯][১১০] ২০২৫ সালের ২৮ মে এই মামলায় নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী জোবাইদা রহমান বেকুসুর খালাস পান।[১১১][১১২]
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা একটি বহুল আলোচিত এবং বিতর্কিত মামলা, যা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং তার পুত্র তারেক রহমানসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়।[১১৩] ২০০৮ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই মামলাটি দায়ের করে।[১১৪] অভিযোগ ছিল, ২০০৪ সালে প্রায় ২.১ কোটি টাকার একটি বিদেশি অনুদান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে দেওয়া হলেও তা ট্রাস্টের কাজে ব্যয় না করে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা হয়েছে।[১১৫][১১৬] এর ফলে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে।[১১৭][১১৮][১১৯]
এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের নাম উল্লেখ করা হয়, যেখানে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় যে তারা বিদেশি অনুদানের টাকা ব্যক্তিগতভাবে আত্মসাৎ করেছেন। যদিও খালেদা জিয়া এই মামলায় সরাসরি অভিযুক্ত হন, তারেক রহমানের নাম মামলায় তৎকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং তার রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে আলোচিত হয়।[১১৭][১১৮]
মামলার বিচারকার্য শুরু হয় ২০১১ সালে। তদন্ত ও বিচারিক কার্যক্রমের পরিপ্রেক্ষিতে, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ আদালত খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেয় এবং তারেক রহমানসহ অন্যান্য অভিযুক্তদের ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।[১২০][১২১] যেহেতু তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে স্বেচ্ছা নির্বাসনে ছিলেন, তিনি আদালতে হাজির হননি এবং তার অনুপস্থিতিতেই রায় দেওয়া হয়।[১১৩][১২২][১২৩] রায় ঘোষণার পরপরই বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোড়ন সৃষ্টি হয়, এবং এর প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হয়।[১১৬][১২৪]
খালেদা জিয়া তার সাজা স্থগিত করার জন্য উচ্চ আদালতে আপিল করেন এবং কিছু সময়ের জন্য জামিনে মুক্ত থাকেন। তারেক রহমান যদিও যুক্তরাজ্যে নির্বাসনে ছিলেন, তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। মামলাটি রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এর প্রভাব বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিশেষভাবে দেখা যায়।[১২২]
এই মামলাকে নিয়ে দেশে-বিদেশে অনেক বিতর্ক দেখা যায়।[১১৯] বিএনপি এবং এর সমর্থকরা এই মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে, যেখানে আওয়ামী লীগ এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করে।[১১৭] মামলার রায়কে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষণ এবং আইন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা যায়।[১২৫]
২০২৫ সালের ১৫ই জানুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানসহ সব আসামি খালাস পান।[১২৬][১২৭]
২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা
২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট ঢাকায় আওয়ামী লীগের এক জনসভায় গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত হয় এবং তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা সহ প্রায় ৩০০ লোক আহত হয়।[১২৮][১২৯] ২২ আগস্ট মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে মামলা করেন।[১৩০] তারেক রহমানকে এ মামলায় আসামি করা হয়নি। তৎকালীন বিএনপি সরকারের অধীনে তদন্ত ধীর এবং বিভ্রান্তিকর, এবং হামলার প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারীদের আড়াল করার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ।[১৩১]
২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় মামলার পুনঃতদন্ত শুরু হলে সেখানে নিষিদ্ধ সংগঠন হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান এবং তৎকালীন বিএনপি সরকারের উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর নাম আসে।[১৩২][১৩৩]
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে পুনরায় অধিকতর তদন্ত হয়।[১৩৪] ঐ তদন্তে তারেক রহমানসহ বিএনপির উচ্চপর্যায়ের নেতাদের নাম উঠে আসে।[১৩১][১৩২][১৩৫] ২০১১ সালে সম্পূরক চার্জশিটে তারেক রহমানকে প্রধান ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয় এবং তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে মামলার আসামি করা হয়।[১৩৬] ২০১২ সালে বিচার প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।[১৩৭] দীর্ঘ শুনানির পর ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণা করে।[১৩২][১৩৭]
রায়ে তারেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।[১৩৮] এবং তারেক রহমানকে হামলার প্রধান ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এবং তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।[১২৮][১৩২] তবে তিনি বিদেশে অবস্থান করায় তার অনুপস্থিতিতে এ রায় দেওয়া হয়।[১৩৯] অভিযোগপত্রে তাকে 'পলাতক' হিসেবে দেখানো হয়েছে।[১৩৯] এ মামলায় রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছিল:
"রাষ্ট্রীয় যন্ত্রের সহায়তায় এ হামলার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার চেষ্টা করা হয়।"[১৪০]
রায় প্রত্যাখান করে বিএনপি দাবি করেছে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য তারেককে এ মামলায় জড়ানো এবং সাজা দেওয়া হয়েছে।[১৪০] ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর তিনি এই মামলায় হাইকোর্ট থেকে খালাস পান।[১৪১][১৪২] এ মামলায় রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছিলেন:
"ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী অভিযোগপত্র প্রাথমিকভাবে দাখিল করতে হয় ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে। সেখান থেকে তা যাবে সেশন (দায়রা) কোর্টে। কিন্তু এখানে দ্বিতীয় যে অভিযোগপত্র সেটি সরাসরি সেশন কোর্টে দাখিল করা হয়। বিচারক এটি আমলে নিয়ে সরাসরি বিচার কাজ করেছেন। সুতরাং এ বিচার কাজ পরিচালনা ও সাজা দেওয়া অবৈধ।"[১৪৩]
১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা
১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও বিতর্কিত মামলা, যা ২০০৪ সালের ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রামে ১০টি ট্রাকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দের ঘটনায় শুরু হয়। এই ঘটনায় তারেক রহমানের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আসে।[১৪৪][১৪৫][১৪৬][১৪৭]
২০০৪ সালের ২৮ এপ্রিল, চট্টগ্রাম বন্দরে ১০টি ট্রাকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়। এই অস্ত্রগুলো ভারতে নিষিদ্ধ সশস্ত্র গোষ্ঠীর কাছে পাচার করার পরিকল্পনা ছিল বলে অভিযোগ করা হয়।[১৪৮][১৪৯] এই ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার কারণে তারেক রহমান ও অন্যান্য বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়।[১৫০]
অভিযোগ করা হয় যে, তারেক রহমান এই অস্ত্র পাচার পরিকল্পনায় জড়িত ছিলেন।[১৪৫][১৫১] তাঁকে এই অস্ত্রের সঙ্গে জড়িত হওয়ার জন্য অভিযুক্ত করা হয় এবং দাবি করা হয় যে, এই অস্ত্র বিএনপি সরকারের সময় বন্দুকযুদ্ধে ব্যবহারের জন্য সংগৃহীত হয়েছিল।
এই মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে বিবেচনা করে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।[১৫২] তাদের দাবি, এই মামলাটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ এবং তারেক রহমানকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নিশানা করা হয়েছে। অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন দল এই মামলাকে রাজনৈতিক অপরাধের বিরুদ্ধে একটি শক্ত পদক্ষেপ হিসেবে তুলে ধরে।[১৪৯]
২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর এই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী-সহ ৪ জনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।[১৫৩][১৫৪]
Remove ads
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads