শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
বিজয়পুর জেলা
কর্ণাটকের একটি জেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
বিজয়পুর জেলা, অতীতে যা বিজাপুর জেলা রূপেও পরিচিত ছিল, ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের একটি প্রশাসনিক জেলা। বিজয়পুর শহরটি জেলার সদর শহর, এবং এটি বেঙ্গালুরুর ৫৩০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত।
Remove ads
ইতিহাস
সারাংশ
প্রসঙ্গ
যদিও প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ ইঙ্গিত দেয় যে অঞ্চলটি প্যালিওলিথিকের[১] শেষের দিকে এসে স্হাপিত হয়েছিল, আধুনিক ইতিহাস অনুযায়ী বিজয়পুর শহরের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল নবম শতাব্দীর শেষদিকে দ্বিতীয় তাইলাপের অধীনে। তিনি ছিলেন তর্দাবদীর রাষ্ট্রকূট রাজবংশের রাজ্যপাল এবং মালওয়ার পরমার আক্রমণের ফলে সাম্রাজ্যের ধ্বংসের পরে কল্যাণী চালুক্য বংশ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি শহরটিকে বিজয়পুর ("বিজয়ের শহর") হিসাবে চিহ্নিত করেন। ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষের দিকে, অঞ্চলটি খলজি সালতানাতের অধীনস্থ হয়। ১৩৪৭ সালে, অঞ্চলটি গুলবর্গার বাহমানি সুলতানি দ্বারা দখল করা হয়েছিল। তখন শহরটির বিজয়পুর নাম পরিবর্তন করে বিজাপুর করা হয়েছিল।
১৫১৮ সালে, বাহমানি সুলতানিটি পাঁচটি রাজ্যে বিভক্ত হয়ে যায়, যাদের একত্রে দাক্ষিণাত্য সুলতানি বলা হয়। এদের মধ্যে একটি ছিল বিজাপুর, যেখানে আদিল শাহী রাজবংশের রাজারা (১৪৯০-১৬৮৬) শাসন করতেন। স্বাধীন বিজাপুর সুলতানতের প্রতিষ্ঠাতা ইউসুফ আদিল শাহ বিজাপুর শহরের উন্নতি সাধন করেছিলেন। এই রাজবংশের শাসন শেষ হয়েছিল ১৬৮৬ সালে, যখন বিজাপুর মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব দ্বারা অধিকৃত হয়। ১৭২৪ সালে হায়দরাবাদের নিজাম দাক্ষিণাত্যে তাঁর স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করেন এবং বিজাপুরকে তাঁর রাজত্বের অন্তর্ভুক্ত করেন। ১৭৬০ সালে, নিজাম মারাঠাদের দ্বারা পরাজিত হন এবং বিজাপুর অঞ্চলটিকে মারাঠা পেশোয়াকে সমর্পণ করেন। তৃতীয় অ্যাংলো-মারাঠা যুদ্ধে ১৮৮১ সালে ব্রিটিশদের দ্বারা মারাঠাদের পরাজয়ের পরে বিজাপুর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে চলে যায় এবং বিজাপুরকে সাতরা দেশীয় রাজ্যে যুক্ত করা হয়।
১৮৪৮ সালে বিজাপুর সহ সাতারা অঞ্চলটি ব্রিটিশ ভারতের বোম্বে প্রেসিডেন্সি-তে সংযুক্ত হয়েছিল যখন সাতারার শেষ অধিপতি কোন পুরুষ উত্তরাধিকারী ব্যতীত মারা যান। ব্রিটিশরা কালাডগী নামে একটি নতুন জেলা তৈরি করেছিল। এই জেলার মধ্যে ছিল বর্তমান বিজাপুর এবং বাগলকোট জেলাগুলি। ১৮৮৫ সালে বিজাপুরকে জেলা প্রশাসনিক সদর দফতর করা হয়, এবং সদর দফতর বাগলকোট থেকে সরানো হয়। ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পরে, জেলাটি বোম্বাই রাজ্যের অংশে পরিণত হয়েছিল এবং ১৯৫৬ সালে কর্ণাটকের মহীশূর রাজ্যেএকে যোগ করা হয়। জেলাটির দক্ষিণ পূর্ব তালুকগুলি ১৯৯৭ সালে পৃথক হয়ে বাগলকোট জেলা গঠন করেছিল।
Remove ads
বিভাগ
বিজয়পুর জেলাটি পাঁচটি মহকুমা এবং ১৯৯ টি গ্রাম পঞ্চায়েত বিভক্ত।.[২]
ভূগোল
সারাংশ
প্রসঙ্গ
বিজয়পুর জেলার ক্ষেত্রফল ১০,৫৪১ বর্গকিলোমিটার। জেলাটির উত্তর দিকে রয়েছে মহারাষ্ট্র রাজ্যের সোলাপুর জেলা, উত্তর-পশ্চিমে রয়েছে সাংলি জেলা, পশ্চিমে রয়েছে কর্ণাটকের বেলগাভি জেলা, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে রয়েছে বাগলকোট জেলা, দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে রায়চুর জেলা, পূর্বে রয়েছে যাদগিরি জেলা এবং উত্তর-পূর্বে রয়েছে গুলবার্গা জেলা৷
ভৌগলিকভাবে, জেলাটি দাক্ষিণাত্য মালভূমির ক্ষেত্রে অবস্থিত। জেলার জমিগুলি বিস্তৃতভাবে তিনটি অঞ্চলে বিভক্ত হতে পারে: ইন্দি ও সিন্দগী সহ বিজাপুর তালুকের উত্তর অংশ; বিজয়পুর শহর নিয়ে গঠিত কেন্দ্রীয় অংশ; এবং কৃষ্ণা নদীর সমৃদ্ধ পলল সমভূমি নিয়ে গঠিত দক্ষিণ অংশ। উত্তরের অংশ হ'ল প্রায় অনুর্বর, রুক্ষ নীচু টিলা সমৃদ্ধ উচ্চভূমি। জেলার মধ্য অংশে পশ্চিম থেকে পূর্ব পর্যন্ত প্রসারিত গভীর কালো মাটির সমৃদ্ধ ট্র্যাক রয়েছে এবং ডন নদী উপত্যকার সমভূমিও রয়েছে। কৃষ্ণা নদীর পথ বেয়ে একটি সমৃদ্ধ সমভূমি পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে বয়ে চলেছে। মধ্য অংশের রুক্ষ ভূমি থেকে দুটি বেলে পাথরের পাহাড় এই অংশকে আলাদা করেছে। আরও দক্ষিণে বাদামি এবং হুনাগুন্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমে, পাহাড়গুলির সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং কালো মাটি জায়গায় লাল মাটি দেখা যায়।[৮]
বিজাপুর জেলায় ৩৪টি রেইনগেজ স্টেশন রয়েছে। জেলার বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ৫৫৩ মিমি; গড়ে ৩৭.২ দিন বৃষ্টিপাত হয়। বর্ষা সাধারণত জুন মাস থেকে অক্টোবর পর্যন্ত স্থায়ী হয়। সর্বোচ্চ গড় মাসিক বৃষ্টিপাত সেপ্টেম্বর মাসে ১৪৯ মিমি এবং ফেব্রুয়ারিতে সর্বনিম্ন ৩ মিমি থাকে।
জনমিতি
২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী বিজয়পুর জেলার জনসংখ্যা ২,১৭৭,৩৩১ জন [১০] যা প্রায় লাতভিয়া[১১] রাষ্ট্রের জনসংখ্যা অথবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো[১২] রাজ্যের জনসংখ্যার সমতুল্য। জনসংখ্যার বিচারে ভারতের ৬৪০টি জেলার মধ্যে বিজয়পুরের স্থান ২১০তম। জেলায় জনসংখ্যার ঘনত্ব ২০৭ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (৫৪০ জন/বর্গমাইল) । ২০০১ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে জেলার জনসংখ্যা-বৃদ্ধির হার ছিল ২০.৩৮ শতাংশ।[১৩] জেলার লিঙ্গানুপাত প্রতি ১০০০ জন পুরুষ পিছু ৯৫৪ জন নারী এবং সাক্ষরতার হার ৬৭.২ শতাংশ[১৩]।[১৪]
Remove ads
আকর্ষণ এবং পর্যটন
সারাংশ
প্রসঙ্গ
বিজাপুর ঐতিহাসিক আকর্ষণে সমৃদ্ধ। ৮৫ ফুট দীর্ঘ শিবপ্রতিমা, পার্শ্বনাথের মূর্তি ছাড়াও, গোল গুম্বাজ, জুম্মা মসজিদ, উৎপালী বুরুজ টাওয়ার এবং দ্বিতীয় ইব্রাহিম আদিল শাহ (ইব্রাহিম রাউজা) এর সমাধিসৌধ সহ বিজাপুর শহরের অনেক আকর্ষণীয় স্থান রয়েছে।
- শিব মূর্তি: ৮৫ ফুট লম্বা এই মূর্তিটি বিজাপুর শহর থেকে উকালি রোডে তিন কিলোমিটার দূরে। ১৫০০ টন ওজনের বিশাল মূর্তির নিচে একটি গোলাকার মন্দির রয়েছে। এটি উত্তর কন্নড় জেলার মুর্দেশ্বরে অবস্থিত শিব মূর্তি অপেক্ষা ছোট.[১৫]
- পার্শ্বনাথ: শহর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে পার্শ্বনাথের একটি বাসাদি রয়েছে। কালো পাথরের প্রতিমাটি প্রায় এক মিটার উঁচু এবং সুন্দর কারুকাজের। মূর্তির মাথায় ১০০৮টি মাথা বিশিষ্ট একটি সর্প ছায়া দিচ্ছে বলে উতকীর্ণ করা রয়েছে। কিছু বছর আগেপ্রত্নতাত্বিক খনন করার সময়,মূর্তিটি পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।
- গোলাগিরিi - শহর থেকে ৭৮ কিলোমিটার দূরে রয়েছে গোল্লালেশ্বরী দেব মন্দির।
- তোরাভি - বিজয়পুরের জেলা শহরটির পশ্চিম দিকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে তোরাভি গ্রাম রয়েছে ঐতিহাসিক লক্ষ্মী-নরসিংহ গুহ মন্দির, গ্রামের দেবী মহলক্ষ্মী মন্দির এবং নবরসপুরা সংগীত মহল যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
- বাসবান্না বাগেবাড়ি – শহর থেকে ৪৩ কিলোমিটার দূরে, লিঙ্গায়াত ধর্মের লোকদের তীর্থস্থান, বাসবদেবের জন্মস্থান।
- কোরওয়ার -বিজাপুর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে, সিন্দগি তালকের করোয়ারে রয়েছে শ্রী কোরওয়ারেশ্বর মন্দির। এই মন্দিরটি আদি শঙ্করাচারর্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
Remove ads
পরিবহন
বিজয়পুর জেলাটি রেল ও সড়ক দ্বারা সংযুক্ত। সোলাপুরে একটি অ-বাণিজ্যিক বিমানবন্দর রয়েছে (আইএটিএ: এসএসই),যা শহর থেকে উত্তরে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে। ইন্ডিয়ান এয়ারওয়েজ এবং জেট এয়ারওয়েজের ফ্লাইট সহ নিকটতম বাণিজ্যিক বিমানবন্দরটি প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে বেলগাঁওতে (আইএটিএ: আইএক্সজি) রয়েছে।এছাড়া সৈনিক বিদ্যালয়ের হেলিপ্যাড সরকারি অতিথি বা সরকারি অফিসারদের জন্যে ব্যবহৃত হয়।
বিজাপুর শহর কেন্দ্র থেকে প্রায় দু' কিলোমিটার দূরে রেলের একটি ব্রডগেজ স্টেশন রয়েছে। এটি বেঙ্গালুরু, মুম্বাই, হায়দরাবাদ, হুবলি, সোলাপুর এবং শিরদির সাথে সরাসরি ট্রেন দ্বারা যুক্ত রয়েছে[১৬] ।
Remove ads
আরও দেখুন
- বিজাপুর সালতানাত
- বিজাপুর দুর্গ
তথ্যসূত্র
সংস্করণ
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads