শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

রাজশাহী বিভাগ

বাংলাদেশের একটি প্রশাসনিক বিভাগ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

রাজশাহী বিভাগmap
Remove ads

রাজশাহী বিভাগ বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। ঢাকা বিভাগচট্টগ্রাম বিভাগের পর এটি বাংলাদেশের তৃতীয় জনবহুল বিভাগ। এবং আয়তনে চতুর্থ বৃহত্তম বিভাগ। ২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী জনসংখ‍্যা ২ কোটি ৩৩ লাখ ৫৩ হাজার ১১৯ জন। এবং আয়তন ১৮,১৫৪ বর্গ কিলোমিটার। রাজশাহী বিভাগটি একটি প্রাচীন এলাকা হ‌ওয়ার সুবাদে এখানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি প্রত্নস্থান দেখা যায়। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী রাজশাহী বিভাগে ১৩৪ টি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে। এরমধ্যে বৃহত্তর রাজশাহীর বর্তমান ন‌ওগাঁর পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। এছাড়া এই বিভাগে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি আম ও পান চাষ হয়। মিঠা পানির মাছ চাষে প্রথম সারির বিভাগ রাজশাহী। এছাড়া গবাদি পশুর চাহিদার সবচেয়ে বড় অবদান রাখে রাজশাহী বিভাগ। রাজশাহী বিভাগে আয়তনে সবচেয়ে বড় জেলা ন‌ওগাঁ জেলা। এবং জনসংখ্যার দিক দিয়ে সবচেয়ে বড় সিরাজগঞ্জ জেলা। রাজশাহী ও বগুড়া শহর বাংলাদেশের প্রথম সারির শহর। রাজশাহী শহরে দেশের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রধান কার্যালয় অবস্থিত ‌ যেমন রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পোস্টাল একাডেমী, বাংলাদেশ স্টাডিজ ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশের রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল সদর দপ্তর, বাংলাদেশ পুলিশ এডাকেমী, ইত্যাদি। রাজশাহী বিভাগে আটটি জেলা, ৬৭টি উপজেলা, ৬২টি পৌরসভার এবং ৫৬৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।[] রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া এবং পাবনা রাজশাহী বিভাগের চারটি প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র এবং বড় শহর। নাটোর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট প্রধান কৃষি এলাকা। বগুড়াকে রাজশাহী বিভাগের তথা উত্তরবঙ্গের রাজধানী বলা হয়।

দ্রুত তথ্য রাজশাহী বিভাগ, দেশ ...
Remove ads

পটভূমি

সারাংশ
প্রসঙ্গ

বৃহত্তর রাজশাহীর ঐতিহাসিক পটভূমি

১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু হওয়ার পরে রাজা-জমিদার ও মহারাজাদের প্রভাব বিস্তার ঘটে। ১৭৮৬ সালে রাজশাহীর আয়তন ছিল প্রায় ৩৪ হাজার বর্গ কিলোমিটার, অর্থাৎ পাবনা, বগুড়া, রংপুর, মালদহ ও দিনাজপুরের অনেক অংশ রাজশাহীর অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৭৯৩ সালে রাজস্ব আদায়ের জটিলতা দেখা দিলে সীমানা পরিবর্তিত হয়ে গঙ্গার দক্ষিণাংশ মুর্শীদাবাদ, নদীয়া যশোরের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[]

১৮১৩ সালে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার প্রশ্নে সীমানা আরও সংকুচিত করে রাজশাহী হতে চাঁপাই নবাবগঞ্জ, রহনপুর, পুর্ণিয়াদিনাজপুরের অংশ নিয়ে মালদহ, ১৮২১ সালে আদমদিঘী, নোয়াকিল্লা, শেরপুর ও বগুড়া রাজশাহী থেকে পৃথক হয়ে রংপুর ও দিনাজপুরের ১২ টি থানা নিয়ে বগুড়া গঠিত হয় বগুড়া জেলা। খেতুপাড়া, রায়গঞ্জ, শাহাজাদপুর, মথুরা নিয়ে পাবনা জেলা গঠিত হয় ১৮৩২ সালে। তখন নাটোরের রাজ বংশগুলো সমগ্র অঞ্চল তাদের প্রভাব বিস্তার করার ফলে নাটোর তখন রাজশাহীর সদর দপ্তর হয়ে যায়। ছোট নাগপুর, ভাগলপুর, পূর্ণিয়া বিহারের অংশ হলেও রাজশাহীর অন্তর্গত ছিল। তৎকালীন বাঙলা প্রেসিডেন্সির সমগ্র অঞ্চল পরিদর্শনে তার সময় লেগেছিল একটানা ৩৫ দিন। ১৮২৫ সালে পর্যন্ত রাজশাহীর সদর দপ্তর ছিল নাটোর।[]

বিভাগীয় সদর দপ্তর

১৮২৯ সালে উত্তরবঙ্গের বিশাল অংশ নিয়ে একটি বিভাগ গঠিত হয়েছিল। সে সময় এর সদর দপ্তর ছিল ভারতের মুর্শিদাবাদ। ৮টি জেলা নিয়ে এই বিভাগটি গঠিত হয়েছিল। জেলাগুলো ছিলঃ মুর্শিদাবাদ, মালদহ, জলপাইগুড়ি, রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া, পাবনারাজশাহী। কয়েক বছর পর বিভাগীয় সদর দপ্তর বর্তমান রাজশাহী শহরের রামপুর-বোয়ালিয়া মৌজায় স্থানান্তরিত হয়েছিল। পরবর্তীতে ১৮৮৮ সালে বিভাগীয় সদর দপ্তর ভারতের জলপাইগুড়িতে স্থানান্তরিত হয়। ১৯৪৭ সালের পাক-ভারত বিভাজনের পর তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের বিভাগে পরিণত করা হয় রাজশাহীকে এবং এই বিভাগের সদর দফতর রাজশাহী শহরে প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলো ছিলঃ কুষ্টিয়া, খুলনা, দিনাজপুর, বগুড়া, পাবনা, যশোর, রংপুর ও রাজশাহী। ১৯৬০ সালে রাজশাহী বিভাগের খুলনা, কুষ্টিয়া, যশোর এবং ঢাকা বিভাগের বরিশাল জেলা কর্তন করে খুলনা বিভাগ গঠন করা হয়। ফলে রাজশাহী বিভাগের জেলার সংখ্যা দাঁড়ায় ৫ এবং জেলগুলো ছিলঃ দিনাজপুর, পাবনা, বগুড়া, রংপুর ও রাজশাহী। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর, ৫ টি জেলা নিয়ে রাজশাহী বিভাগ বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৮৪ সালে এই বিভাগের প্রতিটি জেলার মহকুমা জেলাতে পরিণত হয়। তখন এই বিভাগের মোট জেলার সংখ্যা ছিল ১৬টি।[] যে ৫ জেলাকে ভেঙে যে নতুন জেলাগুলো হয়ঃ

২০১০ সালে রংপুর অঞ্চলের ৮টি জেলা নিয়ে রংপুর বিভাগ গঠন করা হয় এবং রাজশাহী অঞ্চলের ৮টি জেলা নিয়ে বর্তমান রাজশাহী বিভাগ পুনঃগঠিত হয়।

Remove ads

নদ-নদী

বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের মত রাজশাহী বিভাগেও নদ-নদীর অভাব নেই। রাজশাহী বিভাগের উল্লেখযোগ্য নদ-নদীসমূহ হচ্ছে পদ্মা, যমুনা, মহানন্দা, আত্রাই, ইছামতি, করতোয়া, বড়াল, তুলসীগঙ্গা, পুনর্ভবা, গুমানি, নাগর, বাঙ্গালী প্রধান। এছাড়াও রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলে ছোট ছোট নদ-নদী রয়েছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

উচ্চ শিক্ষার জন্য বর্তমানে রাজশাহী বিভাগে সাতটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ১টি আর্মি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় গুলো হল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়[], রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

এই বিভাগে সরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে পাঁচটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, পাবনা মেডিকেল কলেজ, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ, শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ, নওগাঁ মেডিকেল কলেজ এবং বগুড়া সেনানিবাসে আর্মি মেডিকেল কলেজ, বগুড়া

এই অঞ্চলে অনেক প্রাচীন ও প্রসিদ্ধ কলেজ রয়েছে। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ১৮৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত রাজশাহী কলেজ (বাংলাদেশের তৃতীয় প্রাচীনতম কলেজ), ১৮৯৮ সালে পাবনায় প্রতিষ্ঠিত সরকারি সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ, উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি আজিজুল হক কলেজ

ভৌগোলিক অবস্থান

এই বিভাগের দক্ষিণে খুলনা বিভাগ, উত্তরে রংপুর বিভাগ ও ভারত, পশ্চিমে ভারত, পূর্বে ঢাকা বিভাগময়মনসিংহ বিভাগ অবস্থিত।

প্রশাসনিক জেলাসমূহ

৮টি জেলা নিয়ে এই বিভাগটি গঠিত; এগুলো হলো:

আরও তথ্য নাম, প্রশাসনিক কেন্দ্র ...
Remove ads

শস্য, খাবার ও পণ্য

রাজশাহী সাধারনত ফলের জন্য সুপরিচিত, বিশেষ করে আমলিচু। এছাড়াও রাজশাহীতে অনেক ধরনের শস্য এবং সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে, এর মধ্যে আলু, গাজর, পটল, পেঁয়াজ, আখ, কলা, ধান, গমমরিচ প্রভৃতি অন্যতম। বগুড়া জেলার দই ও ক্ষীর পুরো বাংলাদেশে বিখ্যাত। বাংলাদেশে জয়পুরহাট খাদ্য সংরক্ষণ এলাকা হিসাবে সুপরিচিত।

বাংলাদেশের মধ্যে বগুড়ার লাল মরিচ বিখ্যাত। বগুড়ার দইনাটোরের কাঁচাগোল্লা দেশ ও দেশের বাহিরে বিখ্যাত।

বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলার শান্তাহারএ আছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম খাদ্য সংরক্ষণ গুদাম (সাইলো)।

জেলাভিত্তিক উল্লেখযোগ্য কৃষিজ পণ্য
Remove ads

দর্শনীয় স্থানসমূহ

রাজশাহী বিভাগ বিশাল অঞ্চলজুড়ে ঐতিহাসিক অংখ্য নিদর্শন রয়েছে। এসবের মধ্যে উল্লখযোগ্য হল অষ্টম শতকে নির্মিত প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার "সোমপুর বিহার", পুণ্ড্রবর্ধনের রাজধানী "মহাস্থানগড়", প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার "ভাসু বিহার", বেহুলার বাসর ঘর নামে পরিচিত প্রাচীন বৌদ্ধ মঠ "গোকুল মেধ", মহারানী হেমন্তকুমারী দেবীর বাসভবন "পুঠিয়া রাজবাড়ি", বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন মসজিদ "ছোট সোনা মসজিদ", দিঘাপতিয়া মহারাজাদের বাসস্থান "উত্তরা গণভবন" ইত্যাদি।

এই অঞ্চলে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য জাদুঘর রয়েছে। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল রাজশাহী শহরে অবস্থিত "বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর", যা বাংলাদেশের প্রথম জাদুঘর। এছাড়া বগুড়ার মহাস্থানগড়ে রয়েছে ১৯৬৭ সালে সালে প্রতিষ্ঠিত মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর

নাটোর ও নওগাঁ জেলায় বিলগুলো এই অঞ্চলের সেরা নৈসর্গিক দর্শনীয় স্থান। উল্লেখযোগ্য বিলগুলোর মধ্যে রয়েছে চলন বিল, হালতি বিল, জবই বিল ইত্যাদি।

Remove ads

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads